ঢাকা ১০:১২ পূর্বাহ্ন, রবিবার, ১৮ মে ২০২৫, ৪ জ্যৈষ্ঠ ১৪৩২ বঙ্গাব্দ
সংবাদ শিরোনাম ::
সংবাদমাধ্যমের স্বাধীনতা এখনো আক্রমণের মুখে: সম্পাদক পরিষদ হিউম্যান রাইটস ওয়াচ ট্রাষ্টের মাসবপ্যাপী সেহরি বিতরণ চলমান সিলেটে রবিবার যে সব এলাকায় বিদ্যুৎ থাকবে না বিপিজেএ সিলেট বিভাগীয় কমিটির নতুন সভাপতি পাভেল ও সাধারণ সম্পাদক রাব্বী বিশ্বনাথের ১৩৩টি প্রাথমিক বিদ্যালয়ে গাছের চারা বিতরণ করলেন- ইউএনও সিলেটে চোরাই পণ্যের বিশাল চালান আটক রাষ্ট্র যদি ন্যায়বিচার নিশ্চিত না করে, তবে জনগণের নিরাপত্তা ও স্বাধীনতা চরম হুমকির মুখে পড়বে-সাকি বলিউড নায়িকাদের রূপের রহস্য ফাঁস করলেন চিকিৎসক নারীর ক্ষমতায়ন নিয়ে কানে যা বললেন বর্ষা বছরে রোনালদো পান সাড়ে তিন হাজার কোটি, উপার্জন কমেছে মেসির সাফ অনূর্ধ্ব-১৯ চ্যাম্পিয়নশিপ ভারতকে হারিয়েই শিরোপা জিততে হবে বাংলাদেশকে ফিলিস্তিন রাষ্ট্রকে স্বীকৃতি দিতে জুনে আন্তর্জাতিক সম্মেলন

বিশ্ব ইতিহাসে সর্বোচ্চ তেল উৎপাদনকারী দেশ যুক্তরাষ্ট্র

প্রতিনিধির নাম
  • আপডেট সময় : ০১:১০:২৭ অপরাহ্ন, বুধবার, ২০ ডিসেম্বর ২০২৩ ৮৮ বার পড়া হয়েছে

বাণিজ্য ডেস্ক

বিশ্ব এখন জলবায়ু পরিবর্তনের কারণে টিকে থাকার লড়াইয়ে ব্যস্ত। এ অবস্থায় পরিবেশকর্মীরা যুক্তরাষ্ট্রের প্রেসিডেন্ট জো বাইডেনের কাছে তেল উৎপাদন শিল্পকে পর্যায়ক্রমে কমিয়ে আনার দাবি জানিয়ে আসছেন। তবে আশ্চর্য হওয়ার মতো বাস্তবতা হলো, যুক্তরাষ্ট্রে বরং এর উল্টোটাই ঘটছে। পৃথিবীর ইতিহাসে যেকোনো দেশের চেয়ে বর্তমানে বেশি পরিমাণে তেল উৎপাদনের পথে রয়েছে যুক্তরাষ্ট্র।

এসঅ্যান্ডপি গ্লোবাল কমডিটি ইনসাইটসের এক প্রতিবেদনের বরাত দিয়ে সিএনএন জানিয়েছে, চলতি বছরের চতুর্থ ত্রৈমাসিকে প্রতিদিন ১ কোটি ৩৩ লাখ ব্যারেল অপরিশোধিত তেল ও কনডেনসেট উৎপাদনের লক্ষ্যমাত্রা নির্ধারণ করেছে যুক্তরাষ্ট্র, যা এযাবৎকালের মধ্যে সর্বোচ্চ।ইতিমধ্যে লক্ষ্যমাত্রা অনুসারে উৎপাদন বৃদ্ধি পেয়েছে দেশটিতে। যুক্তরাষ্ট্রের এনার্জি ইনফরমেশন অ্যাডমিনিস্ট্রেশনের তথ্য অনুসারে, দেশটিতে গত মাসে দৈনিক ১ কোটি ৩২ লাখ ব্যারেল তেল উৎপাদিত হয়েছে।

সাবেক প্রেসিডেন্ট ডোনাল্ড ট্রাম্পও তেল উৎপাদন অনেক বাড়িয়েছিলেন। ২০২০ সালের শুরুতে দৈনিক উৎপাদন রেকর্ড ১ কোটি ৩১ লাখ ব্যারেল হয়েছিল। পরে করোনাভাইরাস মহামারির প্রকোপ বৃদ্ধি ও দামে বড় ধরনের পরিবর্তন আসায় তেলের উৎপাদন আবার কমিয়ে দেয় দেশটি। এখন উৎপাদন আবার বাড়ানো হচ্ছে।যুক্তরাষ্ট্রের পশ্চিম টেক্সাস ও নিউ মেক্সিকোর পারমিয়ান বেসিনে তেল উৎপাদন এত বেড়েছে যে সরবরাহকারীরা সেখান থেকে বিদেশে রপ্তানি শুরু করেছেন। এসঅ্যান্ডপির তথ্য অনুসারে, বর্তমানে সৌদি আরব বা রাশিয়ার মতো একই পরিমাণ অপরিশোধিত তেল, পরিশোধিত পণ্য ও তরলীকৃত প্রাকৃতিক গ্যাস রপ্তানি করছে যুক্তরাষ্ট্র।

জ্বালানি বাজারের তথ্য বিশ্লেষণকারী প্রতিষ্ঠান র‌্যাপিডান এনার্জি গ্রুপের প্রেসিডেন্ট বব ম্যাকনালি বলেন, বিষয়টি মনে করিয়ে দিচ্ছে যে যুক্তরাষ্ট্রে কাছে তেলের প্রচুর মজুত রয়েছে এবং এ শিল্পকে কখনোই অবমূল্যায়ন করা উচিত নয়।এদিকে যুক্তরাষ্ট্রের দেখাদেখি কানাডা, ব্রাজিলসহ ওপেকবহির্ভূত তেল উৎপাদনকারী অন্যান্য দেশও আগের চেয়ে বেশি পরিমাণে তেল উৎপাদন করছে। রেকর্ড তেল উৎপাদনের ফলে বিশ্ববাজারে তেলের দামে প্রভাব পড়েছে। বিশেষ করে সৌদি আরব ও রাশিয়ার নেতৃত্বাধীন ওপেক দেশগুলো তেলের উৎপাদন কমিয়ে মূল্যবৃদ্ধির যে চেষ্টা করছে, তাতে খুব একটা সুবিধা হচ্ছে না।

গত রোববার যুক্তরাষ্ট্রের বিনিয়োগ ব্যাংক গোল্ডম্যান স্যাকস আগামী বছরে তেলের দামের বিষয়ে পূর্বাভাস কমিয়ে দিয়েছে। ব্যাংকটি বলেছে, দামের পূর্বাভাস কমানোর পেছনে মূল কারণ তেলের সরবরাহ বৃদ্ধি। এসঅ্যান্ডপির তথ্য অনুসারে, আগামী বছরে বিশ্ববাজারে সবচেয়ে বেশি তেলের চাহিদা থাকবে।রেকর্ড তেল উৎপাদন সত্ত্বেও মার্কিন প্রেসিডেন্ট জো বাইডেন তাঁর জ্বালানি নীতির জন্য সমালোচনার মুখে পড়েছেন। বাইডেন যুক্তরাষ্ট্রের স্থল ও জলভাগ থেকে তেল উৎপাদন কমানোর পক্ষে।

যুক্তরাষ্ট্রের পেট্রোলিয়াম ইনস্টিটিউটের পলিসি, ইকোনমিকস ও রেগুলেটরি অ্যাফেয়ার্স বিভাগের জ্যেষ্ঠ ভাইস প্রেসিডেন্ট ডাস্টিন মেয়ার বলেছেন, বিশ্বে জ্বালানির চাহিদা কমবে না, বরং বাড়তে থাকবে। এ ক্ষেত্রে মার্কিন ভূখণ্ড ও জলভাগ থেকে উৎপাদিত জ্বালানি দেশটিসহ সারা বিশ্বের ভোক্তাদের জন্য স্থিতিশীল পরিস্থিতি তৈরিতে ভূমিকা রাখতে পারে।‘কিন্তু দুর্ভাগ্যবশত বর্তমান (বাইডেন) প্রশাসন উৎপাদন সীমিত করার জ্বালানি নীতি অনুসরণ করে সামনে এগোচ্ছে,’ বলেন ডাস্টিন মেয়ার।

যুক্তরাষ্ট্রের তেল উৎপাদন মূলত বাজার দ্বারা নির্ধারিত হয়। সাবেক প্রেসিডেন্ট জর্জ ডব্লিউ বুশের জ্বালানি কর্মকর্তা বব ম্যাকন্যালি সিএনএনকে বলেন, যুক্তরাষ্ট্রে তেল উৎপাদন সম্পর্কে প্রেসিডেন্টরা তেমন কিছু করতে পারেন না। বিষয়টি এমন নয় যে ওভাল অফিস থেকে ডায়াল করলেই তেলের উৎপাদন বাড়তে বা কমতে শুরু করবে। ফলে বর্তমানে যে তেলের উৎপাদন বেড়েছে, হোয়াইট হাউস তার জন্য কৃতিত্ব নেওয়ার চেষ্টা করবে না।

নিউজটি শেয়ার করুন

আপনার মন্তব্য

Your email address will not be published. Required fields are marked *

আপনার ইমেইল এবং অন্যান্য তথ্য সংরক্ষন করুন

আপলোডকারীর তথ্য
ট্যাগস :

বিশ্ব ইতিহাসে সর্বোচ্চ তেল উৎপাদনকারী দেশ যুক্তরাষ্ট্র

আপডেট সময় : ০১:১০:২৭ অপরাহ্ন, বুধবার, ২০ ডিসেম্বর ২০২৩

বাণিজ্য ডেস্ক

বিশ্ব এখন জলবায়ু পরিবর্তনের কারণে টিকে থাকার লড়াইয়ে ব্যস্ত। এ অবস্থায় পরিবেশকর্মীরা যুক্তরাষ্ট্রের প্রেসিডেন্ট জো বাইডেনের কাছে তেল উৎপাদন শিল্পকে পর্যায়ক্রমে কমিয়ে আনার দাবি জানিয়ে আসছেন। তবে আশ্চর্য হওয়ার মতো বাস্তবতা হলো, যুক্তরাষ্ট্রে বরং এর উল্টোটাই ঘটছে। পৃথিবীর ইতিহাসে যেকোনো দেশের চেয়ে বর্তমানে বেশি পরিমাণে তেল উৎপাদনের পথে রয়েছে যুক্তরাষ্ট্র।

এসঅ্যান্ডপি গ্লোবাল কমডিটি ইনসাইটসের এক প্রতিবেদনের বরাত দিয়ে সিএনএন জানিয়েছে, চলতি বছরের চতুর্থ ত্রৈমাসিকে প্রতিদিন ১ কোটি ৩৩ লাখ ব্যারেল অপরিশোধিত তেল ও কনডেনসেট উৎপাদনের লক্ষ্যমাত্রা নির্ধারণ করেছে যুক্তরাষ্ট্র, যা এযাবৎকালের মধ্যে সর্বোচ্চ।ইতিমধ্যে লক্ষ্যমাত্রা অনুসারে উৎপাদন বৃদ্ধি পেয়েছে দেশটিতে। যুক্তরাষ্ট্রের এনার্জি ইনফরমেশন অ্যাডমিনিস্ট্রেশনের তথ্য অনুসারে, দেশটিতে গত মাসে দৈনিক ১ কোটি ৩২ লাখ ব্যারেল তেল উৎপাদিত হয়েছে।

সাবেক প্রেসিডেন্ট ডোনাল্ড ট্রাম্পও তেল উৎপাদন অনেক বাড়িয়েছিলেন। ২০২০ সালের শুরুতে দৈনিক উৎপাদন রেকর্ড ১ কোটি ৩১ লাখ ব্যারেল হয়েছিল। পরে করোনাভাইরাস মহামারির প্রকোপ বৃদ্ধি ও দামে বড় ধরনের পরিবর্তন আসায় তেলের উৎপাদন আবার কমিয়ে দেয় দেশটি। এখন উৎপাদন আবার বাড়ানো হচ্ছে।যুক্তরাষ্ট্রের পশ্চিম টেক্সাস ও নিউ মেক্সিকোর পারমিয়ান বেসিনে তেল উৎপাদন এত বেড়েছে যে সরবরাহকারীরা সেখান থেকে বিদেশে রপ্তানি শুরু করেছেন। এসঅ্যান্ডপির তথ্য অনুসারে, বর্তমানে সৌদি আরব বা রাশিয়ার মতো একই পরিমাণ অপরিশোধিত তেল, পরিশোধিত পণ্য ও তরলীকৃত প্রাকৃতিক গ্যাস রপ্তানি করছে যুক্তরাষ্ট্র।

জ্বালানি বাজারের তথ্য বিশ্লেষণকারী প্রতিষ্ঠান র‌্যাপিডান এনার্জি গ্রুপের প্রেসিডেন্ট বব ম্যাকনালি বলেন, বিষয়টি মনে করিয়ে দিচ্ছে যে যুক্তরাষ্ট্রে কাছে তেলের প্রচুর মজুত রয়েছে এবং এ শিল্পকে কখনোই অবমূল্যায়ন করা উচিত নয়।এদিকে যুক্তরাষ্ট্রের দেখাদেখি কানাডা, ব্রাজিলসহ ওপেকবহির্ভূত তেল উৎপাদনকারী অন্যান্য দেশও আগের চেয়ে বেশি পরিমাণে তেল উৎপাদন করছে। রেকর্ড তেল উৎপাদনের ফলে বিশ্ববাজারে তেলের দামে প্রভাব পড়েছে। বিশেষ করে সৌদি আরব ও রাশিয়ার নেতৃত্বাধীন ওপেক দেশগুলো তেলের উৎপাদন কমিয়ে মূল্যবৃদ্ধির যে চেষ্টা করছে, তাতে খুব একটা সুবিধা হচ্ছে না।

গত রোববার যুক্তরাষ্ট্রের বিনিয়োগ ব্যাংক গোল্ডম্যান স্যাকস আগামী বছরে তেলের দামের বিষয়ে পূর্বাভাস কমিয়ে দিয়েছে। ব্যাংকটি বলেছে, দামের পূর্বাভাস কমানোর পেছনে মূল কারণ তেলের সরবরাহ বৃদ্ধি। এসঅ্যান্ডপির তথ্য অনুসারে, আগামী বছরে বিশ্ববাজারে সবচেয়ে বেশি তেলের চাহিদা থাকবে।রেকর্ড তেল উৎপাদন সত্ত্বেও মার্কিন প্রেসিডেন্ট জো বাইডেন তাঁর জ্বালানি নীতির জন্য সমালোচনার মুখে পড়েছেন। বাইডেন যুক্তরাষ্ট্রের স্থল ও জলভাগ থেকে তেল উৎপাদন কমানোর পক্ষে।

যুক্তরাষ্ট্রের পেট্রোলিয়াম ইনস্টিটিউটের পলিসি, ইকোনমিকস ও রেগুলেটরি অ্যাফেয়ার্স বিভাগের জ্যেষ্ঠ ভাইস প্রেসিডেন্ট ডাস্টিন মেয়ার বলেছেন, বিশ্বে জ্বালানির চাহিদা কমবে না, বরং বাড়তে থাকবে। এ ক্ষেত্রে মার্কিন ভূখণ্ড ও জলভাগ থেকে উৎপাদিত জ্বালানি দেশটিসহ সারা বিশ্বের ভোক্তাদের জন্য স্থিতিশীল পরিস্থিতি তৈরিতে ভূমিকা রাখতে পারে।‘কিন্তু দুর্ভাগ্যবশত বর্তমান (বাইডেন) প্রশাসন উৎপাদন সীমিত করার জ্বালানি নীতি অনুসরণ করে সামনে এগোচ্ছে,’ বলেন ডাস্টিন মেয়ার।

যুক্তরাষ্ট্রের তেল উৎপাদন মূলত বাজার দ্বারা নির্ধারিত হয়। সাবেক প্রেসিডেন্ট জর্জ ডব্লিউ বুশের জ্বালানি কর্মকর্তা বব ম্যাকন্যালি সিএনএনকে বলেন, যুক্তরাষ্ট্রে তেল উৎপাদন সম্পর্কে প্রেসিডেন্টরা তেমন কিছু করতে পারেন না। বিষয়টি এমন নয় যে ওভাল অফিস থেকে ডায়াল করলেই তেলের উৎপাদন বাড়তে বা কমতে শুরু করবে। ফলে বর্তমানে যে তেলের উৎপাদন বেড়েছে, হোয়াইট হাউস তার জন্য কৃতিত্ব নেওয়ার চেষ্টা করবে না।