রমজানে তরমুজে আগুন, ছোঁয়া যাচ্ছে না বেগুন

- আপডেট সময় : ০৫:৪৮:১৯ পূর্বাহ্ন, শনিবার, ১ এপ্রিল ২০২৩ ৮৩ বার পড়া হয়েছে
অনলাইন সংস্করণ,

শীতের পর থেকেই বাড়তি দামে সব ধরনের সবজি বিক্রি শুরু হয়।তবে রমজান উপলক্ষ্যে অধিকাংশই সবজির দাম বেড়েছে। এ মাসে বেশি দাম বেড়েছে বেগুন,শসা,ক্ষিরা,লেবু,মরিচ,গাজর।তবে কোনো সবজিই এখন ৫০-৬০ টাকার কমে পাওয়া যাচ্ছে না বললেই চলে।সবজির সঙ্গে পাল্লা দিয়ে বেড়েছে তরমুজের দাম।শুধু তাই নয়, পানিরও দাম বেড়েছে। এদিকে সম্প্রতি সময়ে দেশের ইতিহাসে মুরগির সর্বোচ্চ দাম হয়েছিল।তবে সরকারের হস্তক্ষেপে গত দুই দিন আগে প্রায় ৯০ টাকা কমেছিল।আগের চেয়ে আজ আবার প্রতি কেজি ২৫ টাকা বেশি দামে বিক্রি হচ্ছে।কয়েক মাস ধরে গরু ও খাসির মাংস ছোঁয়াই যাচ্ছে না।অনেক বেশি হওয়ায় পোয়ায় (২৫০ গ্রাম) বিক্রি হচ্ছে মাংস।বর্তমানে বাজারের ঊর্ধ্বগতির ফলে নাজেহাল হয়ে পড়েছেন নিম্নআয়ের মানুষ।
শনিবার রাজধানীর বসন্ধুরা এলাকার বাজার ঘুরে দেখা গেছে, ব্রয়লার বিক্রি হচ্ছে প্রতি কেজি ২২০, যা দুই দিন আগে ছিল ১৯৫ টাকা,সোনালি মুরগি বিক্রি হচ্ছে ৩১০ টাকা, গরুর মাংস বিক্রি হচ্ছে ৭৮০ এবং খাসি এক হাজার টাকা কেজি বিক্রি হচ্ছে।এদিকে ফলের দোকানে গিয়ে দেখা গেছে,৩০টাকা কেজির তরমুজ বিক্রি হচ্ছে প্রতি কেজি ৪৫ টাকা, কলা প্রতি হালি বিক্রি হচ্ছে ৫০ টাকা, যা আগে ছিল ৪০ টাকা। আপেল ৩০০ টাকা,কমলা ২৩০ টাকা কেজিপ্রতি। রমজানকে ঘিরে সব ধরনের খেজুরে ৫০-১০০ টাকা বেড়েছে। পানির হাফ কেজির বোতল ২০টাকা করে বিক্রি হচ্ছে; অথচ কয়েকদিন আগে ১৫টাকা ছিল। প্রতি লিটারে বেড়েছে ১০টাকা করে।
সবজি বাজারে দেখা গেছে, পটোল প্রতি কেজি ৮০ টাকা,টমেটো ৫০ টাকা;অথচ কয়েক দিন আগে ছিল ৩০ টাকা, শসা প্রতি কেজি ৭০ টাকা; অথচ কয়েক দিন আগেই ছিল ৫০ টাকা, বেগুন প্রতি কেজি ৮০ টাকা, যা আগে ছিল ৬০ টাকা,বরবটি প্রতি কেজি ৮০ টাকা,সাজনা বিক্রি হচ্ছে প্রতি কেজি ১২০ টাকা কেজি দরে ।সিম প্রতি কেজি ৮০ টাকা,যা আগে ছিল ৬০ টাকা,লেবু প্রতি হালি বিক্রি হচ্ছে ৭০ টাকা, যা আগে ছিল ২০-৩০ টাকা,মুলা বিক্রি হচ্ছে ৫০ টাকা,যা আগে ছিল ৪০ টাকা,পেঁয়াজ বিক্রি হচ্ছে প্রতি কেজি ৪০ টাকা,আদা প্রতি কেজি বিক্রি হচ্ছে ১৪০ টাকা, যা আগে ছিল ১০০ টাকা।
এ ছাড়া পেঁপে প্রতি কেজি ৪০ টাকা, যা আগে ছিল ৩০ টাকা, মিষ্টি কুমড়া প্রতি কেজি ৪০ টাকা, মুলা প্রতি কেজি ৫০ টাকা, যা আগে ছিল ৪০ টাকা, ফুলকপি প্রতি পিস ৫০ টাকা, গাজর প্রতি কেজি ৬০ টাকা, যা আগে ছিল ৪০ টাকা এবং কাঁচাকলা প্রতি হালি ৪০ টাকায় বিক্রি হচ্ছে।মাছের বাজারে গিয়ে দেখা গেছে, মাঝারি আকৃতির রুই মাছ প্রতি কেজি ৩২০ টাকা বিক্রি হচ্ছে; অথচ কয়েক দিন আগেও ছিল ২৬০ টাকা।জাপানি মাছ প্রতি কেজি ২৩০ টাকা, যা আগে ছিল ১৯০ টাকা। মৃগেল মাছ ২৫০ টাকা,যা আগে ছিল ২১০ টাকা।কই মাছ কেজি প্রতি ৩০০ টাকা, যা আগে ছিল ২১০ টাকা।তেলাপিয়া প্রতি কেজি বিক্রি হচ্ছে ২২০ টাকা,যা আগে ছিল ১৮০ টাকা। গরিবের মাছ বলে পরিচিত পাঙাশও বিক্রি হচ্ছে ২২০ টাকা কেজি,যা আগে ছিল ১৮০ টাকা।
সবজির দাম বাড়ার বিষয়ে বসন্ধুরা এলাকার এক ব্যবসায়ী বলেন,রমজানে সবজির চাহিদাও একটু বেশি হয়। এ জন্য সবজির দামও কিছুটা বাড়তি হচ্ছে। তা ছাড়া এখন সবজির উৎপাদনও কমে গেছে।বসন্ধুরা এলাকায় বাজার করতে এসেছিলেন মাসুম। তিনি প্রাইভেট কোম্পানিতে চাকুরি করেন।তিনি বলেন,সামান্য বেতনে চাকরি করি। কী আর বলব, যেটাতেই হাত দেই, সেটারই দাম চড়া।কোনোভাবে বেঁচে আছি। মুরগি কিনতে এসেছিলেন শাহিন আলম। তিনি জানান,গত পরশু ব্রয়লার নিয়ে গেলাম ১৯৫ টাকা।আজ শনিবার ২২০ টাকা চাচ্ছে।বর্তমানে বাজারের কোনো ঠিক ঠিকানা নেই।
সবজি বাজারে দেখা হয় নাট্যকার শামীম রেজার সঙ্গে। বাজারের দাম সম্পর্কে জানতে চাইলে তিনি যুগান্তরকে বলেন, কী আর বলব ভাই?যে বেতনে চাকরি করি তা দিয়ে বর্তমানে মাংস কেনার সাহস করা যায় না। সবজির বাজারে ঘুরছি।কী নিতে পারি।সবজির দামও তো কম না।বাজারে কথা হয় এক বেসরকারি চাকরিজীবী সুমন আলীর সঙ্গে। তিনি জানান,মানুষ কোনো কিছু কিনতে না পারলে সবজি দিয়ে ভাত খেয়ে দিন পার করার চেষ্টা করে।কিন্তু বর্তমানে যে হারে সবজির দাম বৃদ্ধি পাচ্ছে,সেটা নিম্ন আয়ের মানুষ ক্রয় করতে অক্ষম হবেন।