ঢাকা ১০:০৪ অপরাহ্ন, মঙ্গলবার, ২০ মে ২০২৫, ৬ জ্যৈষ্ঠ ১৪৩২ বঙ্গাব্দ
সংবাদ শিরোনাম ::
সংবাদমাধ্যমের স্বাধীনতা এখনো আক্রমণের মুখে: সম্পাদক পরিষদ হিউম্যান রাইটস ওয়াচ ট্রাষ্টের মাসবপ্যাপী সেহরি বিতরণ চলমান সিলেটে জাফলংয়ে যৌথ অভিযানে ৫০ লিস্টার ও ৪ বোমা মেশিন ধ্বংস  মৌলভীবাজার সদর হাসপাতালে দুদকের অভিযান সিলেটে গাঁজাসহ ৩ জনকে গ্রেফতার করেছে র‌্যাব-৯ সিলেট ও সুনামগঞ্জে ২৪ ঘণ্টার মধ্যে বন্যার শঙ্কা সিলেটের গোয়াইনঘাট উপজেলায় বৃদ্ধি পেয়েছে নদ-নদীর পানি সিলেটে মৌলভীবাজারে চালু হচ্ছে আরও একটি বিমানবন্দর সিলেটে অতি বৃষ্টিতে বন্যার আতঙ্ক তেলাপোকার উপদ্রব কমাতে যা করবেন এক ঘণ্টায় ৩০ বার বিমান হামলা গাজায় রিউমার স্ক্যানার ‘হাসিনা এখনো প্রধানমন্ত্রী’, এমন কথা বলেননি ট্রাম্প

ভূমিকম্পের ঝুঁকিতে সিলেটসহ ১৩ জেলা

প্রতিনিধির নাম
  • আপডেট সময় : ০৭:৫০:২৩ পূর্বাহ্ন, রবিবার, ৫ মার্চ ২০২৩ ১৩১ বার পড়া হয়েছে

 সিলেটসহ দেশের ১৩টি এলাকা ভূমিকম্পের ঝুঁকিতে রয়েছে। ভূগর্ভস্থ ফাটল বা চ্যুতি থাকার কারণে ওই কম্পন হতে পারে। সবচেয়ে তীব্র ভূমিকম্পের ঝুঁকিতে রয়েছে পার্বত্য চট্টগ্রামের তিনটি জেলা ও সিলেটের জৈন্তাপুর এলাকা।
সব এলাকাই ঢাকা থেকে কমপক্ষে ১০০ কিলোমিটার দূরে। কিন্তু সেখানে সাত থেকে আট মাত্রার ভূমিকম্প হলে তা বড় ধরনের বিপর্যয় তৈরি করতে পারে। যুক্তরাষ্ট্রের কলম্বিয়া বিশ্ববিদ্যালয় ও ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের কয়েক জন শিক্ষকের গবেষণায় এসব তথ্য উঠে এসেছে।

দেশের ভূমিকম্পবিশেষজ্ঞরা বলছেন, রাজধানীর ১০০ থেকে ২০০ কিলোমিটার দূরে সাত থেকে আট মাত্রার ভূমিকম্প হলে তীব্র কম্পন অনুভূত হতে পারে, যা এই শহরের দুর্বল ভবনগুলোকে ক্ষতিগ্রস্ত করতে পারে। ঢাকার সম্প্রসারিত বা নতুন নতুন আবাসিক এলাকার মাটি নরম ও দুর্বল। এ ধরনের মাটিতে ইমারত নির্মাণ বিধিমালা না মেনে বহুতল ভবন হলে তা মাঝারি মাত্রার কম্পনেই ভেঙে পড়ার আশঙ্কা থাকে। লালমাটির এলাকায় যেসব এক থেকে তিনতলা ভবন নির্মিত হয়েছে, সেগুলোর ঝুঁকি তুলনামূলকভাবে কম।

ভূমিকম্পে মানুষের মৃত্যুর ৯০ শতাংশই হয় ভবনধসে। বাংলাদেশ উন্মুক্ত বিশ্ববিদ্যালয়ের উপাচার্য এবং ভূমিকম্পগবেষক অধ্যাপক সৈয়দ হুমায়ুন আখতার বলেন, বাংলাদেশের ভেতরে ১৩টি ভূগর্ভস্থ চ্যুতি রয়েছে। তবে তার সব কটি ঢাকা থেকে বেশ দূরে। কিন্তু পার্বত্য চট্টগ্রাম ও সিলেটে মাঝারি থেকে তীব্র ভূমিকম্প হলে ঢাকায় অনেক ভবন ভেঙে পড়তে পারে। তিনি বলেন, ভূমিকম্প ছাড়াও যে ভবন ভেঙে পড়ে, তার প্রমাণ রানা প্লাজা ধস।

সৈয়দ হুমায়ুন আখতার আরও বলেন, দুর্ভাগ্যজনক হলেও সত্য, ঢাকার ভবনগুলোর বেশির ভাগই ইমারত নির্মাণ বিধিমালা এবং ভূমিরূপ মেনে নির্মাণ করা হয়নি। এ কারণে তুরস্কে গতকাল হয়ে যাওয়া ভূমিকম্পের চেয়ে কম মাত্রার ভূমিকম্প আরও বড় ক্ষতি হতে পারে।
বাংলাদেশ প্রকৌশল বিশ্ববিদ্যালয়ের (বুয়েট) পুরকৌশল বিভাগের হিসাবে, ঢাকা শহরে মোট ভবন আছে ২১ লাখ। এর মধ্যে ৬ লাখ ভবন ছয়তলা বা তার চেয়ে উঁচু।

বুয়েট ও ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের ইতিহাস বিভাগের এক যৌথ গবেষণায় দেখা যায়, ভারতের আসামে ১৮৯৭ সালে রিখটার স্কেলে ৮ দশমিক ৭ মাত্রার একটি ভূমিকম্প আঘাত হানে। ভূমিকম্পটির কেন্দ্র ছিল ঢাকা থেকে ২৫০ কিলোমিটার দূরে। ওই সময় ঢাকায় মাত্র ১০০টি পাকা দালান ছিল, অধিবাসী ছিল ৯০ হাজার। ওই ভূমিকম্পে আহসান মঞ্জিলসহ ১০টি ভবন ক্ষতিগ্রস্ত হয়।
ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের দুর্যোগবিজ্ঞান ও ব্যবস্থাপনা বিভাগের অধ্যাপক এবং সহ–উপাচার্য এ এস এম মাকসুদ কামালের গবেষণায় বলা হয়েছে, ঢাকা শহরের ৩০৫ বর্গকিলোমিটার এলাকার ৩৫ শতাংশ মূলত লাল মাটির ওপরে গড়ে ওঠা। এই মাটি বহুতল ভবন নির্মাণের জন্য উপযুক্ত। বাকি ৬৫ শতাংশ এলাকা মূলত নদীর তীরবর্তী কাদামাটি ও বালুমাটির এলাকা। মোহাম্মদপুর, উত্তরা ও পূর্বাচল নতুন শহর এ ধরনের মাটির। বেশির ভাগ বেসরকারি আবাসন প্রকল্প মূলত নরম মাটিতে গড়ে উঠেছে।

নিউজটি শেয়ার করুন

আপনার মন্তব্য

Your email address will not be published. Required fields are marked *

আপনার ইমেইল এবং অন্যান্য তথ্য সংরক্ষন করুন

আপলোডকারীর তথ্য
ট্যাগস :

ভূমিকম্পের ঝুঁকিতে সিলেটসহ ১৩ জেলা

আপডেট সময় : ০৭:৫০:২৩ পূর্বাহ্ন, রবিবার, ৫ মার্চ ২০২৩

 সিলেটসহ দেশের ১৩টি এলাকা ভূমিকম্পের ঝুঁকিতে রয়েছে। ভূগর্ভস্থ ফাটল বা চ্যুতি থাকার কারণে ওই কম্পন হতে পারে। সবচেয়ে তীব্র ভূমিকম্পের ঝুঁকিতে রয়েছে পার্বত্য চট্টগ্রামের তিনটি জেলা ও সিলেটের জৈন্তাপুর এলাকা।
সব এলাকাই ঢাকা থেকে কমপক্ষে ১০০ কিলোমিটার দূরে। কিন্তু সেখানে সাত থেকে আট মাত্রার ভূমিকম্প হলে তা বড় ধরনের বিপর্যয় তৈরি করতে পারে। যুক্তরাষ্ট্রের কলম্বিয়া বিশ্ববিদ্যালয় ও ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের কয়েক জন শিক্ষকের গবেষণায় এসব তথ্য উঠে এসেছে।

দেশের ভূমিকম্পবিশেষজ্ঞরা বলছেন, রাজধানীর ১০০ থেকে ২০০ কিলোমিটার দূরে সাত থেকে আট মাত্রার ভূমিকম্প হলে তীব্র কম্পন অনুভূত হতে পারে, যা এই শহরের দুর্বল ভবনগুলোকে ক্ষতিগ্রস্ত করতে পারে। ঢাকার সম্প্রসারিত বা নতুন নতুন আবাসিক এলাকার মাটি নরম ও দুর্বল। এ ধরনের মাটিতে ইমারত নির্মাণ বিধিমালা না মেনে বহুতল ভবন হলে তা মাঝারি মাত্রার কম্পনেই ভেঙে পড়ার আশঙ্কা থাকে। লালমাটির এলাকায় যেসব এক থেকে তিনতলা ভবন নির্মিত হয়েছে, সেগুলোর ঝুঁকি তুলনামূলকভাবে কম।

ভূমিকম্পে মানুষের মৃত্যুর ৯০ শতাংশই হয় ভবনধসে। বাংলাদেশ উন্মুক্ত বিশ্ববিদ্যালয়ের উপাচার্য এবং ভূমিকম্পগবেষক অধ্যাপক সৈয়দ হুমায়ুন আখতার বলেন, বাংলাদেশের ভেতরে ১৩টি ভূগর্ভস্থ চ্যুতি রয়েছে। তবে তার সব কটি ঢাকা থেকে বেশ দূরে। কিন্তু পার্বত্য চট্টগ্রাম ও সিলেটে মাঝারি থেকে তীব্র ভূমিকম্প হলে ঢাকায় অনেক ভবন ভেঙে পড়তে পারে। তিনি বলেন, ভূমিকম্প ছাড়াও যে ভবন ভেঙে পড়ে, তার প্রমাণ রানা প্লাজা ধস।

সৈয়দ হুমায়ুন আখতার আরও বলেন, দুর্ভাগ্যজনক হলেও সত্য, ঢাকার ভবনগুলোর বেশির ভাগই ইমারত নির্মাণ বিধিমালা এবং ভূমিরূপ মেনে নির্মাণ করা হয়নি। এ কারণে তুরস্কে গতকাল হয়ে যাওয়া ভূমিকম্পের চেয়ে কম মাত্রার ভূমিকম্প আরও বড় ক্ষতি হতে পারে।
বাংলাদেশ প্রকৌশল বিশ্ববিদ্যালয়ের (বুয়েট) পুরকৌশল বিভাগের হিসাবে, ঢাকা শহরে মোট ভবন আছে ২১ লাখ। এর মধ্যে ৬ লাখ ভবন ছয়তলা বা তার চেয়ে উঁচু।

বুয়েট ও ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের ইতিহাস বিভাগের এক যৌথ গবেষণায় দেখা যায়, ভারতের আসামে ১৮৯৭ সালে রিখটার স্কেলে ৮ দশমিক ৭ মাত্রার একটি ভূমিকম্প আঘাত হানে। ভূমিকম্পটির কেন্দ্র ছিল ঢাকা থেকে ২৫০ কিলোমিটার দূরে। ওই সময় ঢাকায় মাত্র ১০০টি পাকা দালান ছিল, অধিবাসী ছিল ৯০ হাজার। ওই ভূমিকম্পে আহসান মঞ্জিলসহ ১০টি ভবন ক্ষতিগ্রস্ত হয়।
ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের দুর্যোগবিজ্ঞান ও ব্যবস্থাপনা বিভাগের অধ্যাপক এবং সহ–উপাচার্য এ এস এম মাকসুদ কামালের গবেষণায় বলা হয়েছে, ঢাকা শহরের ৩০৫ বর্গকিলোমিটার এলাকার ৩৫ শতাংশ মূলত লাল মাটির ওপরে গড়ে ওঠা। এই মাটি বহুতল ভবন নির্মাণের জন্য উপযুক্ত। বাকি ৬৫ শতাংশ এলাকা মূলত নদীর তীরবর্তী কাদামাটি ও বালুমাটির এলাকা। মোহাম্মদপুর, উত্তরা ও পূর্বাচল নতুন শহর এ ধরনের মাটির। বেশির ভাগ বেসরকারি আবাসন প্রকল্প মূলত নরম মাটিতে গড়ে উঠেছে।