ঢাকা ১১:৪৮ অপরাহ্ন, মঙ্গলবার, ১৭ জুন ২০২৫, ৩ আষাঢ় ১৪৩২ বঙ্গাব্দ
সংবাদ শিরোনাম ::
সংবাদমাধ্যমের স্বাধীনতা এখনো আক্রমণের মুখে: সম্পাদক পরিষদ হিউম্যান রাইটস ওয়াচ ট্রাষ্টের মাসবপ্যাপী সেহরি বিতরণ চলমান শাকিবের যে সিনেমায় ‘বুবলী’ হয়েছিলেন অপু বিশ্বাস গাজার মুসলমানদের সমর্থনে বলিউড অভিনেত্রীর পোস্ট আরেকটি এফ-৩৫ ধ্বংস, ইসরাইলের জন্য অন্ধকার পূর্বাভাস ইসরাইলের সামরিক গোয়েন্দা স্থাপনায় ইরানের হামলা বিমান দুর্ঘটনায় ভারতীয় ক্রিকেটারের মৃত্যু গল টেস্টের প্রথম দিনে দুই সেঞ্চুরি, ভালো পজিশনে বাংলাদেশ সেনাপ্রধানের সঙ্গে ডব্লিউজিইআইডি ভাইস চেয়ারপারসনের সৌজন্য সাক্ষাৎ জরিপের ফল-পথে বেড়ে উঠা শিশুদের ৫৮ শতাংশেরই নেই জন্মসনদ চুনারুঘাট সীমান্তে বিজিবির হাতে ভারতীয় নাগরিক আটক কুলাউড়ায় ৫০০ চক্ষু রোগীকে ফ্রি চিকিৎসা সেবা দিল ‘এনএসএস’

বিশ্বনাথের ৩ইউনিয়নে সেতুর অভাবে জনদুর্ভোগ

প্রতিনিধির নাম
  • আপডেট সময় : ০৮:৪৮:৫০ পূর্বাহ্ন, মঙ্গলবার, ১৩ মে ২০২৫ ১৬ বার পড়া হয়েছে

বিশ্বনাথ প্রতিনিধি :

একটি পাকা সেতু নির্মাণ হলে খুলে যেতে পারে ৩টি ইউনিয়নের মানুষের ভাগ্যের দুয়ার। কম সময়ে যোগাযোগ করা যাবে সিলেট শহরের সাথে। বারোমাসি সবজি উৎপাদনে বিখ্যাত এই অঞ্চলের মানুষের মাঝে আসবে অর্থনৈতিক সমৃদ্ধি। পাশাপাশি জনজীবনে লাঘব হবে দুর্ভোগ। সিলেট শহর থেকে মাত্র ১৫ কিলোমিটার দূরের এই জনপদের সাথে শহরকেন্দ্রিক ব্যবসা, চিকিৎসা, শিক্ষার ক্ষেত্রে অভাবনীয় সফলতা এবং উন্নয়ন সাধিত হবে- এটা বোদ্ধা মহলের দাবি। 

পিছিয়ে থাকা এই জনপদের বিশ্বনাথ উপজেলার খাজাঞ্চি, লামাকাজী, রামপাশা ইউনিয়ন নিয়ে গঠিত উত্তর বিশ্বনাথ এলাকা। এই এলাকার কমপক্ষে ১৪০টির বেশি গ্রামে দেড় লাখের বেশি মানুষের বসবাস রয়েছে। লামাকাজী ও খাজাঞ্চি ইউনিয়নের সীমান্ত দিয়ে প্রবাহিত খাজাঞ্চি নদীর উপর নির্মিত রেলসেতুর ২০ মিটার দক্ষিণাংশে একটি পাকা সেতু নির্মাণের দাবি যুগের পর যুগ ধরে এই এলাকার বাসিন্দাদের। সর্বসাকুল্যে ২ কোটি টাকা খরচে একটি সেতু নির্মাণ হলে সরকারের রাজস্ব আয় হবে কয়েকগুণ বেশি। 

স্থানীয়রা জানান, উত্তর বিশ্বনাথ দ্বিপাক্ষিক উচ্চবিদ্যালয় রেলসেতু সংলগ্ন স্থানে পাকা সেতু নির্মিত হলে খাজাঞ্চী ইউনিয়নের পশ্চিম পার ও পূর্ব পারের মানুষের এবং লামাকাজী ও রামপাশা ইউনিয়নের তথা উত্তর বিশ্বনাথ এলাকার বাসিন্দাদের মধ্যে দ্রুত যোগাযোগসহ স্থানীয় উন্নয়ন সাধিত হবে অনায়াসে। এছাড়া সেতু সংলগ্ন উত্তর বিশ্বনাথ দ্বিপাক্ষিক উচ্চবিদ্যালয়ে আগত ছাত্রছাত্রীদের রেলসেতু পারাপারের ঝুঁকি লাঘব হবে। ১৯৭২ সালে স্কুলটি প্রতিষ্ঠার পর এ যাবত অনেকবার সেতু নির্মাণের দাবি এলাকাবাসী করে এলেও স্থানীয় জনপ্রতিনিধিরা কখনও কোনো উদ্যোগ নিতে আগ্রহ না দেখাননি। এ কারণে আজও এই দাবি বাস্তবায়ন হয়নি। একটি ইউনিয়নকে দুই পারে বিভাজন করা খাজাঞ্চি নদীর পূর্ব পার থেকে স্থানীয় জনসাধারণ ও স্কুল-কলেজে পড়ুয়ারা প্রতিনিয়ত জীবনের ঝুঁকি নিয়ে এপার-ওপার হন। আর কতদিন রেলসেতু দিয়ে পারাপার হতে হবে- এমন প্রশ্ন কোমলমতি ছাত্র-ছাত্রীদের। 

পাকা সেতু নির্মাণের দাবি জানানো ব্যক্তিদের মধ্যে আছেন খাজাঞ্চি ইউনিয়নের কান্দিগ্রামের কৃতী সন্তান ইসলামি স্কলার মাওলানা আব্দুল হাই জেহাদি, মাস্টার শাহীন উদ্দিন, পাহাড়পুর গ্রামের তেরা মিয়া, আকদ্দুছ আলী, পাকিছিরি গ্রামের সাংবাদিক মো. সায়েস্তা মিয়া, মাসুক আহমদ, মো. লোকমান উদ্দিন, জালাল উদ্দীন, প্রয়াগমহল গ্রামের সাংবাদিক মুহিবুর রহমান খালেদ, অবসরপ্রাপ্ত বিজিবি কর্মকর্তা জালাল উদ্দীন, কাবিলপুর গ্রামের বাসিন্দা আব্দুল কাহার, বাদশা মিয়া, ভোলাগঞ্জ গ্রামের সালিশ ব্যক্তিত্ব এস এম রফিক আহমদ, সাংবাদিক আব্দুল কাইয়ুম, চন্দ্র গ্রামের বাসিন্দা ব্যবসায়ী সমুজ আলী, শিক্ষানবিশ আইনজীবী পলাশ সেনাপতি, আইনজীবী সহকারী শাহ নুর আলী, মদনপুর গ্রামের শিক্ষানবিশ আইনজীবী বিপ্লব দেব, লামাকাজী ইউনিয়নের দুর্লভপুর গ্রামের বাসিন্দা ও প্রীতিগঞ্জ বাজার পরিচালনা কমিটির সভাপতি মো. আব্দুল গফুর, ইউপি সদস্য লাল মিয়া, কৃষ্ণপুর গ্রামের আব্দুল খালিক, আব্দুল গফুর, রামপাশা ইউনিয়নের আমতৈল গ্রামের সাংবাদিক আব্দুল করিম ও শামস উদ্দিনসহ অনেকে। 

তারা জানান, খাজাঞ্চী রেলস্টেশন থেকে পশ্চিম দিকে নদী পর্যন্ত পাহাড়পুর গ্রামের নদীর পার এবং পশ্চিম পার্শ্বে প্রীতিগঞ্জ বাজার থেকে পূর্বদিক হয়ে নদীর পার পর্যন্ত রেললাইনের পাশ ঘেঁষে রাস্তা নির্মাণ ইতোমধ্যে সম্পন্ন হয়েছে। সেতুটি নির্মাণ হলে উভয়পারে রাস্তার চলমান সংযোগ স্থাপিত হবে। সেতু নির্মিত হলে কম সময়ে অত্র এলাকার মানুষ সিলেট শহরে যাতায়াতের সুযোগ পাবেন। প্রত্যন্ত অঞ্চলে বসবাস করা ঝুঁকিপূর্ণ রোগীরা শহরে গিয়ে দ্রæত চিকিৎসাসেবা পাওয়ার সুযোগ পাবেন। বাঁচবে রোগীর জীবন, সাশ্রয় হবে অর্থ।

এছাড়া খাজাঞ্চী ইউনিয়নের পশ্চিম পারে অসংখ্য কৃষক, শ্রমিক, সবজি চাষির জীবনেও আসবে গতি। তাজা সবজি কম সময়ে পরিবহনের ব্যবস্থা করে কাক্সিক্ষত আয়ে স্বাচ্ছন্দ্য জীবনের দ্বার উম্মোচন হতে পারে অনেকের। বিষয়টি নিয়ে স্থানীয় নেতৃবৃন্দ ও প্রশাসন এবং উন্নয়ন কর্তৃপক্ষকে জরুরি ভিত্তিতে ভেবে দেখার আকুল আহব্বান জানিয়েছেন এলাকার গণ্যমান্য ব্যক্তিরা।

নিউজটি শেয়ার করুন

আপনার মন্তব্য

Your email address will not be published. Required fields are marked *

আপনার ইমেইল এবং অন্যান্য তথ্য সংরক্ষন করুন

আপলোডকারীর তথ্য
ট্যাগস :

বিশ্বনাথের ৩ইউনিয়নে সেতুর অভাবে জনদুর্ভোগ

আপডেট সময় : ০৮:৪৮:৫০ পূর্বাহ্ন, মঙ্গলবার, ১৩ মে ২০২৫

বিশ্বনাথ প্রতিনিধি :

একটি পাকা সেতু নির্মাণ হলে খুলে যেতে পারে ৩টি ইউনিয়নের মানুষের ভাগ্যের দুয়ার। কম সময়ে যোগাযোগ করা যাবে সিলেট শহরের সাথে। বারোমাসি সবজি উৎপাদনে বিখ্যাত এই অঞ্চলের মানুষের মাঝে আসবে অর্থনৈতিক সমৃদ্ধি। পাশাপাশি জনজীবনে লাঘব হবে দুর্ভোগ। সিলেট শহর থেকে মাত্র ১৫ কিলোমিটার দূরের এই জনপদের সাথে শহরকেন্দ্রিক ব্যবসা, চিকিৎসা, শিক্ষার ক্ষেত্রে অভাবনীয় সফলতা এবং উন্নয়ন সাধিত হবে- এটা বোদ্ধা মহলের দাবি। 

পিছিয়ে থাকা এই জনপদের বিশ্বনাথ উপজেলার খাজাঞ্চি, লামাকাজী, রামপাশা ইউনিয়ন নিয়ে গঠিত উত্তর বিশ্বনাথ এলাকা। এই এলাকার কমপক্ষে ১৪০টির বেশি গ্রামে দেড় লাখের বেশি মানুষের বসবাস রয়েছে। লামাকাজী ও খাজাঞ্চি ইউনিয়নের সীমান্ত দিয়ে প্রবাহিত খাজাঞ্চি নদীর উপর নির্মিত রেলসেতুর ২০ মিটার দক্ষিণাংশে একটি পাকা সেতু নির্মাণের দাবি যুগের পর যুগ ধরে এই এলাকার বাসিন্দাদের। সর্বসাকুল্যে ২ কোটি টাকা খরচে একটি সেতু নির্মাণ হলে সরকারের রাজস্ব আয় হবে কয়েকগুণ বেশি। 

স্থানীয়রা জানান, উত্তর বিশ্বনাথ দ্বিপাক্ষিক উচ্চবিদ্যালয় রেলসেতু সংলগ্ন স্থানে পাকা সেতু নির্মিত হলে খাজাঞ্চী ইউনিয়নের পশ্চিম পার ও পূর্ব পারের মানুষের এবং লামাকাজী ও রামপাশা ইউনিয়নের তথা উত্তর বিশ্বনাথ এলাকার বাসিন্দাদের মধ্যে দ্রুত যোগাযোগসহ স্থানীয় উন্নয়ন সাধিত হবে অনায়াসে। এছাড়া সেতু সংলগ্ন উত্তর বিশ্বনাথ দ্বিপাক্ষিক উচ্চবিদ্যালয়ে আগত ছাত্রছাত্রীদের রেলসেতু পারাপারের ঝুঁকি লাঘব হবে। ১৯৭২ সালে স্কুলটি প্রতিষ্ঠার পর এ যাবত অনেকবার সেতু নির্মাণের দাবি এলাকাবাসী করে এলেও স্থানীয় জনপ্রতিনিধিরা কখনও কোনো উদ্যোগ নিতে আগ্রহ না দেখাননি। এ কারণে আজও এই দাবি বাস্তবায়ন হয়নি। একটি ইউনিয়নকে দুই পারে বিভাজন করা খাজাঞ্চি নদীর পূর্ব পার থেকে স্থানীয় জনসাধারণ ও স্কুল-কলেজে পড়ুয়ারা প্রতিনিয়ত জীবনের ঝুঁকি নিয়ে এপার-ওপার হন। আর কতদিন রেলসেতু দিয়ে পারাপার হতে হবে- এমন প্রশ্ন কোমলমতি ছাত্র-ছাত্রীদের। 

পাকা সেতু নির্মাণের দাবি জানানো ব্যক্তিদের মধ্যে আছেন খাজাঞ্চি ইউনিয়নের কান্দিগ্রামের কৃতী সন্তান ইসলামি স্কলার মাওলানা আব্দুল হাই জেহাদি, মাস্টার শাহীন উদ্দিন, পাহাড়পুর গ্রামের তেরা মিয়া, আকদ্দুছ আলী, পাকিছিরি গ্রামের সাংবাদিক মো. সায়েস্তা মিয়া, মাসুক আহমদ, মো. লোকমান উদ্দিন, জালাল উদ্দীন, প্রয়াগমহল গ্রামের সাংবাদিক মুহিবুর রহমান খালেদ, অবসরপ্রাপ্ত বিজিবি কর্মকর্তা জালাল উদ্দীন, কাবিলপুর গ্রামের বাসিন্দা আব্দুল কাহার, বাদশা মিয়া, ভোলাগঞ্জ গ্রামের সালিশ ব্যক্তিত্ব এস এম রফিক আহমদ, সাংবাদিক আব্দুল কাইয়ুম, চন্দ্র গ্রামের বাসিন্দা ব্যবসায়ী সমুজ আলী, শিক্ষানবিশ আইনজীবী পলাশ সেনাপতি, আইনজীবী সহকারী শাহ নুর আলী, মদনপুর গ্রামের শিক্ষানবিশ আইনজীবী বিপ্লব দেব, লামাকাজী ইউনিয়নের দুর্লভপুর গ্রামের বাসিন্দা ও প্রীতিগঞ্জ বাজার পরিচালনা কমিটির সভাপতি মো. আব্দুল গফুর, ইউপি সদস্য লাল মিয়া, কৃষ্ণপুর গ্রামের আব্দুল খালিক, আব্দুল গফুর, রামপাশা ইউনিয়নের আমতৈল গ্রামের সাংবাদিক আব্দুল করিম ও শামস উদ্দিনসহ অনেকে। 

তারা জানান, খাজাঞ্চী রেলস্টেশন থেকে পশ্চিম দিকে নদী পর্যন্ত পাহাড়পুর গ্রামের নদীর পার এবং পশ্চিম পার্শ্বে প্রীতিগঞ্জ বাজার থেকে পূর্বদিক হয়ে নদীর পার পর্যন্ত রেললাইনের পাশ ঘেঁষে রাস্তা নির্মাণ ইতোমধ্যে সম্পন্ন হয়েছে। সেতুটি নির্মাণ হলে উভয়পারে রাস্তার চলমান সংযোগ স্থাপিত হবে। সেতু নির্মিত হলে কম সময়ে অত্র এলাকার মানুষ সিলেট শহরে যাতায়াতের সুযোগ পাবেন। প্রত্যন্ত অঞ্চলে বসবাস করা ঝুঁকিপূর্ণ রোগীরা শহরে গিয়ে দ্রæত চিকিৎসাসেবা পাওয়ার সুযোগ পাবেন। বাঁচবে রোগীর জীবন, সাশ্রয় হবে অর্থ।

এছাড়া খাজাঞ্চী ইউনিয়নের পশ্চিম পারে অসংখ্য কৃষক, শ্রমিক, সবজি চাষির জীবনেও আসবে গতি। তাজা সবজি কম সময়ে পরিবহনের ব্যবস্থা করে কাক্সিক্ষত আয়ে স্বাচ্ছন্দ্য জীবনের দ্বার উম্মোচন হতে পারে অনেকের। বিষয়টি নিয়ে স্থানীয় নেতৃবৃন্দ ও প্রশাসন এবং উন্নয়ন কর্তৃপক্ষকে জরুরি ভিত্তিতে ভেবে দেখার আকুল আহব্বান জানিয়েছেন এলাকার গণ্যমান্য ব্যক্তিরা।