ফসল রক্ষা বেড়িবাঁধ নির্মাণ ও সংস্কার কাজ ধীরগতি, চিন্তিত কৃষকরা

- আপডেট সময় : ০৫:৪৩:৪২ পূর্বাহ্ন, বৃহস্পতিবার, ১৮ জানুয়ারী ২০২৪ ৭৭ বার পড়া হয়েছে
ভিউ নিউজ ৭১ প্রতিবেদন :
সুনামগঞ্জের অধিকাংশ হাওরের বোরো ফসল রক্ষা বেড়িবাঁধ নির্মাণ ও সংস্কার কাজ এখনো পুরোপুরি শুরু হয়নি। নামমাত্র কয়েকটি প্রকল্পের কাজ শুরু হলেও অধিকাংশ প্রকল্পের কাজ শুরু হয়নি। ফলে সময়মতো কাজ শেষ করা নিয়ে চিন্তিত কৃষকরা।
স্থানীয়রা কৃষকরা বলছেন, প্রতিবছরই সময় মতো বাঁধের কাজ শুরু না হয়ে বিলম্ব কাজ শুরু হয়। এতে আগাম বন্যার ঝুঁকিতে পড়তে হয়। যেকারণে ফসল গোলায় তুলেতে দুশ্চিতায় সময় কাঁটে কৃষকদের।জগন্নাথপুর উপজেলার নলুয়ার হাওরের দাসনোওয়াগাঁও গ্রামের বাসিন্দা ৩ নং প্রকল্প বাস্তবায়ন কমিটি সভাপতি রনধীর দাস বলেন, দ্বাদশ জাতীয় সংসদ নির্বাচনী প্রচারণার কাজে ব্যস্ত থাকায় উদ্বোধনের পর কাজ বন্ধ ছিল। তিন দিন ধরে কাজ শুরু হয়েছে। নিদিষ্ট সময়ের আগেই আমার প্রকল্পের কাজ শেষ হবে।
এই উপজেলার পানি উন্নয়ন বোর্ডের উপ সহকারী প্রকৌশলী মাঠ কর্মকর্তা সবুজ কুমার শীল জানান, এবার ৩৩টি প্রকল্প বাস্তবায়ন কমিটির মাধ্যমে হাওরের ফসল রক্ষা বেড়িবাঁধের কাজ বাস্তবায়ন করা হবে। ইতিমধ্যে ৩১ প্রকল্পের অনুমোদন হয়েছে তাদেরকে কার্যাদেশ দিয়ে কাজ শুরু করতে বলা হয়েছে। এ পর্যন্ত ১৬ টি প্রকল্পের কাজ শুরু হয়েছে। কিছু কিছু প্রকল্পে পানি না কমায় মাটি ভেজা থাকায় কাজ শুরু করা যাচ্ছে না।বিশ্বম্ভরপুর উপজেলায় বাঁধের কাজের দায়িত্বে থাকা পাউবোর শাখা কর্মকর্তা গোলাম কিবরিয়া জানান, এই উপজেলায় ৩১টি প্রকল্প নেওয়া হয়েছে। এর মধ্যে ১৮টিতে কাজ চলছে। এক সপ্তাহের মধ্যে সব প্রকল্পে কাজ শুরু হবে।
বিশ্বম্ভরপুর উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা (ইউএনও) মফিজুর রহমান বলেন, ‘সবাইকে বলে দেওয়া হয়েছে দ্রুত কাজ শুরু করার জন্য। আমরা কঠোর তদারকি করব।’জেলার ১২টি উপজেলার একই অবস্থা। জেলার যেসব উপজেলা বাঁধের কাজ বেশি হয়, সেগুলোর মধ্যে গত বুধবার (১৭ জানুয়ারি) তাহিরপুর উপজেলায় পর্যন্ত ৮২টি প্রকল্পের মধ্যে ৫২টিতে, জামালগঞ্জে ৪৪টির মধ্যে ১৭টিতে, শাল্লায় ১৩১টির মধ্যে ৪৮টি, দিরাইয়ে ১১০টির মধ্যে ৩২টি ও জগন্নাথপুরে ৩২টির মধ্যে ১৬ টি প্রকল্পে কাজ শুরু হয়েছে।
হাওর বাঁচাও আন্দোলনের নেতা ও সাবেক ইউপি চেয়ারম্যান সিরাজুল ইসলাম বলেন, হাওরের ফসল রক্ষা বেড়িবাঁধ নির্মাণ সংস্কার কাজ এখনো পুরোপুরি শুরু না হওয়ায় আমরা চিন্তিত। সময়মতো কাজ শুরু না হলে নিদিষ্ট সময়ে কাজ শেষ হয়না ফলে অকাল বন্যার ঝুঁকিতে পড়তে হয় হাওরের ফসল।
সুনামগঞ্জ পাউবোর নির্বাহী প্রকৌশলী ও জেলা হাওরে বাঁধ নির্মাণ-সংক্রান্ত জেলা কমিটির সদস্যসচিব মো. মামুন হাওলাদার বলেন, এখন পুরোদমে কাজ শুরু হয়েছে। নির্বাচনের কারণে কাজে গতি কিছুটা কম ছিল।সুনামগঞ্জের জেলা প্রশাসক মোহাম্মদ রাশেদ ইকবাল চৌধুরী বলেন, ‘সব প্রকল্পের কাজ যত দ্রুত সম্ভব শুরু করতে হবে। আমরা মাঠে কঠোর তদারকি করব। কাজে কোনো ধরনের গাফিলতি হলে সঙ্গে সঙ্গে ব্যবস্থা নেওয়া হবে।
হাওরে একসময় ঠিকাদারদের মাধ্যমে ফসল রক্ষা বাঁধ নির্মাণের কাজ হতো। ২০১৭ সালে হাওরে ব্যাপক ফসলহানির পর বাঁধ নির্মাণে অনিয়ম-দুর্নীতির অভিযোগ ওঠে। এরপর পাউবো হাওরে বাঁধ নির্মাণে নতুন নীতিমালা করে। প্রতিটি প্রকল্পের জন্য প্রকৃত কৃষক ও স্থানীয় সুবিধাভোগীদের নিয়ে পাঁচ থেকে সাত সদস্যের একটি পিআইসি থাকে। একটি পিআইসি সর্বোচ্চ ২৫ লাখ টাকার কাজ করতে পারে।