ঢাকা ০৯:২৪ অপরাহ্ন, শনিবার, ১৯ জুলাই ২০২৫, ৪ শ্রাবণ ১৪৩২ বঙ্গাব্দ
সংবাদ শিরোনাম ::
সংবাদমাধ্যমের স্বাধীনতা এখনো আক্রমণের মুখে: সম্পাদক পরিষদ হিউম্যান রাইটস ওয়াচ ট্রাষ্টের মাসবপ্যাপী সেহরি বিতরণ চলমান প্রাথমিকে প্রধান শিক্ষকের শূন্যপদে দ্রু ত নিয়োগের নির্দেশ ১৫ টাকা দরে চাল পাবে ৫৫ লাখ পরিবার গাড়ি থামিয়ে ঘুষ আদায়, ওসিসহ ৬ পুলিশ প্রত্যাহার মৌলভীবাজার কুলাউড়ায় চাঁদাবাজি – সন্ত্রাস দমনে কঠোর অবস্থানে পুলিশ ঢাকায় বিমানের সাথে বৈঠক করলেন সিলেটের ব্যবসায়ীরা তিনমাস পর বিমানের সিলেট-ম্যানচেস্টার ফ্লাইট চালু সিলেট শাহ মাদানী ঈদগাহ ইকোপার্ক সড়কের ঢালাই কাজের ভিত্তিপ্রস্তর স্থাপন শ্রীমঙ্গলে টাকার জন্য কলেজ ছাত্র খুন – গ্রেফতার ২ সিলেট সীমান্তে কোটি টাকার চোরাই পণ্য জব্দ ৭ লাখ টাকা নেওয়ার ভিডিও ভাইরাল, যা বললেন এনসিপি নেতা

ডলারের দাম কাগজে কলমে এক,বাস্তবে অমিল

প্রতিনিধির নাম
  • আপডেট সময় : ০৭:১৮:৩১ পূর্বাহ্ন, সোমবার, ২৫ ডিসেম্বর ২০২৩ ৩৪৪ বার পড়া হয়েছে

ভিউ নিউজ ৭১ : অনলাইন প্রিন্ট সংস্করণ

প্রভাবশালীদের কাছে ডলারের এক দাম, অন্যদের কাছে আরেক। কোনো কোনো ক্ষেত্রে দাম ১২৮ টাকা পর্যন্ত।

দেশের শীর্ষস্থানীয় এক ব্যবসাপ্রতিষ্ঠান গত সপ্তাহে একটি ব্যাংকে ৪ লাখ মার্কিন ডলারের আমদানি দায় পরিশোধ করে। প্রতি ডলারের জন্য নির্ধারিত দাম ১১০ টাকা হিসাবে প্রতিষ্ঠানটি ব্যাংকে জমা দিয়েছে ৪ কোটি ৪০ লাখ টাকা।

তবে এর বাইরে প্রতি ডলারে আরও ১৩ টাকা হিসাবে পে-অর্ডারের মাধ্যমে দিতে হয়েছে ৫২ লাখ টাকা। তাতে ওই আমদানিকারকের ৪ লাখ ডলারের দায় পরিশোধে প্রতি ডলারের দাম পড়েছে ১২৩ টাকা। এভাবেই বাংলাদেশের সব ব্যাংকের নথিপত্রে এখন আমদানিতে ডলারের সর্বোচ্চ দর ১১০ টাকা। তবে বাস্তবে ডলারের দাম আরেক।

একই অবস্থার মধ্য দিয়ে যেতে হচ্ছে দেশের বেশির ভাগ আমদানিকারক প্রতিষ্ঠানকে। অবশ্য প্রভাবশালী কিছু ব্যবসায়ী ব্যাংক থেকে কিছুটা কম দামে ডলার কিনতে পারলেও সাধারণ ব্যবসায়ীদের আমদানি দায় পরিশোধে ঘোষিত দামের চেয়ে বেশি দরে ডলার কিনতে হচ্ছে। একইভাবে ঋণপত্র খোলার ক্ষেত্রে বড় ও প্রভাবশালী ব্যবসায়ী ব্যাংকের কাছ থেকে সুবিধা পেলেও সাধারণ ব্যবসায়ীদের অনেককেই ডলার-সংকটের কারণে ঋণপত্র খুলতে হিমশিম খেতে হচ্ছে।

আমদানিকারকেরা যখন ঘোষিত দামের চেয়ে ১২-১৩ টাকা বেশিতে ডলার কিনছেন, তখন ব্যাংকারদের দুই সংগঠন মিলে একাধিক দফায় ডলারের ঘোষিত দাম কমিয়েছে। এতে ঘোষণা অনুযায়ী ডলারের দাম কমলেও বাস্তবে ওই দামে ডলার মিলছে কমই।

ডলারের চাহিদা ও সরবরাহের বাস্তব পরিস্থিতি জানতে বেশ কয়েকজন ব্যবসায়ীর সঙ্গে কথা বলেছে। নাম প্রকাশ না করার শর্তে তাঁরা জানান, আগের যেকোনো সময়ের চেয়ে চলতি মাসে ঋণপত্র খুলতে তাঁরা বেশি সমস্যায় পড়ছেন। আর ঘোষিত দামে ডলার পাওয়া যাচ্ছে না। তাই বাধ্য হয়ে বেশি দামে ডলার কিনতে হচ্ছে। বাড়তি সেই দাম পরিশোধ করা হচ্ছে ভিন্ন উপায়ে।

এদিকে আন্তর্জাতিক মুদ্রা তহবিল বা আইএমএফের শর্ত অনুযায়ী, চলতি মাসের মধ্যে রিজার্ভে অতিরিক্ত ডলার যোগ করতে হবে। অর্থাৎ ডিসেম্বর শেষে বাংলাদেশকে নিট বা প্রকৃত রিজার্ভ ১৭ দশমিক ৭৮ বিলিয়ন বা ১ হাজার ৭৭৮ কোটি ডলারে উন্নীত করতে হবে। নিট রিজার্ভ এখন ১৬ বিলিয়ন ডলারের কিছুটা বেশি।

গত বছরের ফেব্রুয়ারিতে ইউক্রেনে রাশিয়ার হামলা শুরুর পর বিশ্বে সরবরাহ ব্যবস্থায় সংকট শুরু হয়, দাম বাড়ে বিভিন্ন ভোগ্যপণ্যের। খরচ বাড়ে জ্বালানি ও পরিবহন খাতে।

এ অবস্থায় অবশ্য রিজার্ভ ধরে রাখতে বাজারে ডলারের সরবরাহ কমিয়ে দিয়েছে বাংলাদেশ ব্যাংক। পাশাপাশি রপ্তানি উন্নয়ন তহবিলের (ইডিএফ) আকার ৭০০ কোটি থেকে কমিয়ে ৩১০ কোটি ডলারে নামিয়ে এনেছে। কেন্দ্রীয় ব্যাংক সূত্রে জানা গেছে, বাণিজ্যিক ব্যাংক থেকে ডলার কিনে ডিসেম্বরের শেষ দিনে রিজার্ভ কাঙ্ক্ষিত পর্যায়ে নেওয়ার পরিকল্পনা করছে বাংলাদেশ ব্যাংক।

বাজারে ডলারের সংকট কতটা কাটল এই প্রশ্নের জবাবে মিউচুয়াল ট্রাস্ট ব্যাংকের ব্যবস্থাপনা পরিচালক সৈয়দ মাহবুবুর রহমান সাংবাদিকদের জানান সংকট পুরোপুরি কাটেনি। এ বিষয়ে এর বেশি কিছু তিনি বলতে রাজি হননি।

তবে একটি শীর্ষ ব্যাংকের প্রধান নির্বাহী নাম প্রকাশ না করার শর্তে সাংবাদিকদের বলেন, এখন যার ক্ষমতা আছে, তারা কেন্দ্রীয় ব্যাংকের নির্দেশনা উপেক্ষা করে বেশি দামে ডলার কিনে আনছে। যারা বেশি দামে ডলার কিনছে, আমদানির দায় পরিশোধেও তারা বেশি দাম নিচ্ছে। ব্যবসা এখন প্রভাব খাটানো ব্যাংকগুলোই বেশি করছে।

সংকট কতটা

গত বছরের ফেব্রুয়ারিতে ইউক্রেনে রাশিয়ার হামলা শুরুর পর বিশ্বে সরবরাহ ব্যবস্থায় সংকট শুরু হয়, দাম বাড়ে বিভিন্ন ভোগ্যপণ্যের। খরচ বাড়ে জ্বালানি ও পরিবহন খাতে। ফলে দেশে আমদানির জন্য ডলারের চাহিদা বেড়ে যায়। ডলারের আনুষ্ঠানিক দাম তখন ৮৬ টাকা থেকে বাড়তে শুরু করে, যা এখন ১১০ টাকা। ঠিক এই সময়েই ডলারের দাম নিয়ে নানা পরীক্ষা চালায় কেন্দ্রীয় ব্যাংক। ব্যাংকগুলোকে এখন ডলারের দাম নির্ধারণের দায়িত্ব দেওয়া হলেও তারা এই কাজটি করে কেন্দ্রীয় ব্যাংকের পরামর্শে। এ ক্ষেত্রে বাজার পরিস্থিতি উপেক্ষিত থেকে যায়। ফলে দেখা গেছে, গত এক মাসে তিন দফায় ডলারের দাম ১ টাকা কমানো হয়েছে।

ব্যাংকগুলো এখন প্রবাসী ও রপ্তানি আয়ে ডলারের দাম ১০৯ টাকা ৫০ পয়সা নির্ধারণ করছে। গত বৃহস্পতিবার বিদেশি রেমিট্যান্স হাউস ট্যাপ ট্যাপ সেন্ড ডলার সংগ্রহ করেছে ১২০ টাকা দামে ও স্মল ওয়ার্ল্ড ১১৭ টাকা ৮০ পয়সায়। সংকটে থাকা কয়েকটি শরিয়াধারার ব্যাংক ও কিছু প্রচলিত ব্যাংক ১২২ টাকা দরে সেই প্রবাসী আয় কিনছে বলে জানা গেছে। অন্যদিকে প্রবাসী আয় কেনার ক্ষেত্রে ব্যাংকগুলো সরকারের আড়াই শতাংশের প্রণোদনার পাশাপাশি নিজেরাও সমপরিমাণ প্রণোদনা দিচ্ছে। ফলে ডলারের দাম ঘোষিত দরের চেয়ে বেশি পড়ছে, আর আমদানিকারকদের বেশি দামে ডলার কিনতে হচ্ছে।

এখন কৃষি মৌসুম। এ জন্য ট্রাক্টর ও হারভেস্টারের চাহিদাও বেশি। কিন্তু ডলারের কারণে চাহিদামতো ঋণপত্র খুলতে পারছি না। আবার যেসব ঋণপত্র খোলা যাচ্ছে, তাতে নির্ধারিত দামের চেয়ে প্রতি ডলারে ১২-১৩ টাকা বেশি দিতে হচ্ছে। চলতি মাসে ঋণপত্র খুলতেই চাইছে না ব্যাংকগুলো।

কৃষি যন্ত্রপাতি আমদানি ও বাজারজাতকারী প্রতিষ্ঠান মেটালের ব্যবস্থাপনা পরিচালক সাদিদ জামিল

চাপে রপ্তানিকারকেরাও

আমদানিতে ডলারের দাম নথিপত্রে ১১০ টাকা হলেও বাস্তবে কোনো কোনো ক্ষেত্রে এমনকি ১২৮ টাকা পর্যন্ত দাম দিতে হচ্ছে। ব্যাংকিং খাতের সূত্রগুলো জানিয়েছে, কিছু শরিয়া ব্যাংক সরাসরি এই টাকা নিচ্ছে, আবার অন্য কিছু ব্যাংক পে-অর্ডারের মাধ্যমে ডলারের বাড়তি দাম সংগ্রহ করছে। গ্রাহকদের থেকে ব্যাংকগুলো ডলারের বাড়তি দাম নেওয়ার নথিপত্র দেখেছে সাংবাদিকরা।

কৃষি যন্ত্রপাতি আমদানি ও বাজারজাতকারী প্রতিষ্ঠান মেটালের ব্যবস্থাপনা পরিচালক সাদিদ জামিল সাংবাদিকদের কে বলেন, ‘এখন কৃষি মৌসুম। এ জন্য ট্রাক্টর ও হারভেস্টারের চাহিদাও বেশি। কিন্তু ডলারের কারণে চাহিদামতো ঋণপত্র খুলতে পারছি না। আবার যেসব ঋণপত্র খোলা যাচ্ছে, তাতে নির্ধারিত দামের চেয়ে প্রতি ডলারে ১২-১৩ টাকা বেশি দিতে হচ্ছে। চলতি মাসে ঋণপত্র খুলতেই চাইছে না ব্যাংকগুলো।’

আমদানিকারকদের পাশাপাশি রপ্তানিকারকেরাও বিপদে পড়ছেন। কারণ, তাঁদের রপ্তানি আয়ের ডলার অন্যদের কাছে বিক্রি করে দিচ্ছে ব্যাংকগুলো। পরে কাঁচামাল আমদানির জন্য তাঁদেরই আবার বেশি দামে ডলার কিনতে হচ্ছে।

ব্যাংকারদের দুটি সংগঠন ডলারের যে দাম নির্ধারণ করছে, ব্যাংকগুলোই সেই দাম অনুসরণ করছে না। অর্থনীতিবিদদের অনেকেই ডলারের বিনিময় মূল্য বাজারের ওপর ছেড়ে দেওয়ার জন্য পরামর্শ দিচ্ছেন।

বিষয়টি নিয়ে নিট পোশাকশিল্পের মালিকদের সংগঠন বিকেএমইএর নির্বাহী সভাপতি মোহাম্মদ হাতেম সাংবাদিকদের বলেন, ‘যে যত শক্তিশালী, তার কাছে ডলারের দাম তত কম, যারা দুর্বল তাদের কাছে তত বেশি। এটাই এখন নীতি হয়ে গেছে। আমদানিতে ডলারের দাম ১১৫ থেকে ১২৮ টাকা পর্যন্ত নিচ্ছে ব্যাংকগুলো। আমাদের রপ্তানি আয়ের ডলার অন্যদের কাছে বিক্রি করে দিচ্ছে, এরপর আমাদেরই তা আবার বেশি দামে কিনতে হচ্ছে। ডলার নিয়ে ব্যাংকগুলো সিন্ডিকেট তৈরি করেছে। এর ফলে রপ্তানিকারক প্রতিষ্ঠানের ওপর যে ক্ষত তৈরি হচ্ছে, তার দায় আমরা নেব না।’

বাজারের কাছাকাছি দাম ঠিক করতে হবে। নথিতে থাকা দামে নয়, বাজারের দামে রিজার্ভ থেকে ডলার কেনাবেচা করা উচিত।

গবেষণাপ্রতিষ্ঠান পলিসি রিসার্চ ইনস্টিটিউটের নির্বাহী পরিচালক আহসান এইচ মনসুর

ব্যাংকারদের দুটি সংগঠন ডলারের যে দাম নির্ধারণ করছে, ব্যাংকগুলোই সেই দাম অনুসরণ করছে না। অর্থনীতিবিদদের অনেকেই ডলারের বিনিময় মূল্য বাজারের ওপর ছেড়ে দেওয়ার জন্য পরামর্শ দিচ্ছেন। আইএমএফের পক্ষ থেকেও নমনীয় বিনিময় হার গ্রহণের ওপর জোর দেওয়া হয়েছে। তবে কেন্দ্রীয় ব্যাংক বৈদেশিক মুদ্রার বিনিময় হার বাজারের ওপর ছাড়তে আগ্রহী নয়।

গবেষণাপ্রতিষ্ঠান পলিসি রিসার্চ ইনস্টিটিউটের নির্বাহী পরিচালক আহসান এইচ মনসুর সাংবাদিকদের বলেন, ‘বাজারে এক দাম, নথিতে আরেক—এর মাধ্যমে সংকটকে বরং আরও বাড়ানো হচ্ছে। যদি ঘোষিত দামের চেয়ে এক টাকা কম-বেশি হতো, তাহলে হয়তো ঠিক ছিল। সমস্যা হলো, পার্থক্যটা অনেক বেশি হয়ে গেছে। এর প্রভাব পড়ছে ভোক্তাপর্যায়েও। এ জন্য বাজারের কাছাকাছি দাম ঠিক করতে হবে। নথিতে থাকা দামে নয়, বাজারের দামে রিজার্ভ থেকে ডলার কেনাবেচা করা উচিত।’

চ্যালেঞ্জ রিজার্ভ বাড়ানো নিয়ে

আইএমএফ এবং এশিয়ান ডেভেলপমেন্ট ব্যাংকের (এডিবি) ঋণের কিস্তির অর্থ পাওয়ার পর বৈদেশিক মুদ্রার রিজার্ভ কিছুটা বেড়েছে। ১৫ ডিসেম্বর আইএমএফের ঋণের দ্বিতীয় কিস্তির ৬৮ কোটি ৯৮ লাখ ডলার ও এডিবির ঋণের ৪০ কোটি ডলার রিজার্ভে যোগ হয়েছে। মোট বা গ্রস রিজার্ভ বেড়ে এখন হয়েছে ২ হাজার ৬০৪ কোটি ডলার বা ২৬ দশমিক শূন্য ৫ বিলিয়ন ডলার। আর আইএমএফের বিপিএম ৬ হিসাব পদ্ধতি অনুযায়ী রিজার্ভের পরিমাণ ২ হাজার ৬৮ কোটি ডলার বা ২০ দশমিক ৬৮ বিলিয়ন ডলার। তবে নিট বা প্রকৃত রিজার্ভ ১৬ বিলিয়ন ডলারের কিছুটা বেশি।

কেন্দ্রীয় ব্যাংকের কর্মকর্তারা বলছেন, চলতি মাসের শেষ কয় দিনে বিদেশ থেকে ঋণের আরও অর্থ রিজার্ভে যোগ হবে। পাশাপাশি ব্যাংক থেকে ডলার কিনে রিজার্ভ বাড়ানো হবে। আইএমএফের লক্ষ্য পূরণে এবার সর্বোচ্চ চেষ্টা করবে কেন্দ্রীয় ব্যাংক। এর আগে রিজার্ভ সংরক্ষণসংক্রান্ত শর্ত পূরণ করতে পারেনি সংস্থাটি।

চলতি মাসের প্রথম ২২ দিনে দেশে এসেছে ১৫৭ কোটি ডলারের প্রবাসী আয়। চলতি মাসের প্রথম ১৮ দিনে ঋণপত্র খোলা হয়েছে ৩২০ কোটি ডলারের। তিনটি বেসরকারি ব্যাংকের ট্রেজারি বিভাগের প্রধান সাংবাদিকদের কে বলেন, বেশি দামে প্রবাসী আয় কেনায় কড়াকড়ি আরোপ করার পর কিছু ব্যাংক প্রবাসী আয় কেনা বন্ধ করে দিয়েছে। নির্ধারিত দামে অল্প কিছু আয় এলেও কিছু শরিয়া ও প্রচলিত ধারার ব্যাংক আবার বেশি দামে প্রবাসী আয় কিনছে।

এটা যে করেই হোক অর্জন করতে হবে। সেটা বিদেশ থেকে ঋণ এনে, ব্যাংক থেকে কিনে বা অন্য যেকোনো উপায়ে হতে পারে। আইএমএফ পাশে থাকলে অন্য বৈশ্বিক সংস্থাগুলোও ইতিবাচক দৃষ্টিতে দেখে, যা দেশের আর্থিক সংকট কাটাতে সহায়ক হবে।

পলিসি রিসার্চ ইনস্টিটিউটের নির্বাহী পরিচালক আহসান এইচ মনসুর

ব্যাংকগুলো এ-ও জানিয়েছে, পুরোনো আমদানি দায়ের একটা অংশ ইতিমধ্যে পরিশোধ করা হয়েছে। আইএমএফের ঋণের কিস্তি আসায় বাংলাদেশের ওপর বিদেশি ব্যাংকগুলোর বিশ্বাস বেড়েছে। ফলে ঋণের সীমা পেতে সামনে সুবিধা হবে।

আইএমএফের রিজার্ভ রাখার শর্ত অর্জন প্রসঙ্গে পলিসি রিসার্চ ইনস্টিটিউটের নির্বাহী পরিচালক আহসান এইচ মনসুর বলেন, এটা যে করেই হোক অর্জন করতে হবে। সেটা বিদেশ থেকে ঋণ এনে, ব্যাংক থেকে কিনে বা অন্য যেকোনো উপায়ে হতে পারে। আইএমএফ পাশে থাকলে অন্য বৈশ্বিক সংস্থাগুলোও ইতিবাচক দৃষ্টিতে দেখে, যা দেশের আর্থিক সংকট কাটাতে সহায়ক হবে।

নিউজটি শেয়ার করুন

আপনার মন্তব্য

Your email address will not be published. Required fields are marked *

আপনার ইমেইল এবং অন্যান্য তথ্য সংরক্ষন করুন

আপলোডকারীর তথ্য
ট্যাগস :

ডলারের দাম কাগজে কলমে এক,বাস্তবে অমিল

আপডেট সময় : ০৭:১৮:৩১ পূর্বাহ্ন, সোমবার, ২৫ ডিসেম্বর ২০২৩

ভিউ নিউজ ৭১ : অনলাইন প্রিন্ট সংস্করণ

প্রভাবশালীদের কাছে ডলারের এক দাম, অন্যদের কাছে আরেক। কোনো কোনো ক্ষেত্রে দাম ১২৮ টাকা পর্যন্ত।

দেশের শীর্ষস্থানীয় এক ব্যবসাপ্রতিষ্ঠান গত সপ্তাহে একটি ব্যাংকে ৪ লাখ মার্কিন ডলারের আমদানি দায় পরিশোধ করে। প্রতি ডলারের জন্য নির্ধারিত দাম ১১০ টাকা হিসাবে প্রতিষ্ঠানটি ব্যাংকে জমা দিয়েছে ৪ কোটি ৪০ লাখ টাকা।

তবে এর বাইরে প্রতি ডলারে আরও ১৩ টাকা হিসাবে পে-অর্ডারের মাধ্যমে দিতে হয়েছে ৫২ লাখ টাকা। তাতে ওই আমদানিকারকের ৪ লাখ ডলারের দায় পরিশোধে প্রতি ডলারের দাম পড়েছে ১২৩ টাকা। এভাবেই বাংলাদেশের সব ব্যাংকের নথিপত্রে এখন আমদানিতে ডলারের সর্বোচ্চ দর ১১০ টাকা। তবে বাস্তবে ডলারের দাম আরেক।

একই অবস্থার মধ্য দিয়ে যেতে হচ্ছে দেশের বেশির ভাগ আমদানিকারক প্রতিষ্ঠানকে। অবশ্য প্রভাবশালী কিছু ব্যবসায়ী ব্যাংক থেকে কিছুটা কম দামে ডলার কিনতে পারলেও সাধারণ ব্যবসায়ীদের আমদানি দায় পরিশোধে ঘোষিত দামের চেয়ে বেশি দরে ডলার কিনতে হচ্ছে। একইভাবে ঋণপত্র খোলার ক্ষেত্রে বড় ও প্রভাবশালী ব্যবসায়ী ব্যাংকের কাছ থেকে সুবিধা পেলেও সাধারণ ব্যবসায়ীদের অনেককেই ডলার-সংকটের কারণে ঋণপত্র খুলতে হিমশিম খেতে হচ্ছে।

আমদানিকারকেরা যখন ঘোষিত দামের চেয়ে ১২-১৩ টাকা বেশিতে ডলার কিনছেন, তখন ব্যাংকারদের দুই সংগঠন মিলে একাধিক দফায় ডলারের ঘোষিত দাম কমিয়েছে। এতে ঘোষণা অনুযায়ী ডলারের দাম কমলেও বাস্তবে ওই দামে ডলার মিলছে কমই।

ডলারের চাহিদা ও সরবরাহের বাস্তব পরিস্থিতি জানতে বেশ কয়েকজন ব্যবসায়ীর সঙ্গে কথা বলেছে। নাম প্রকাশ না করার শর্তে তাঁরা জানান, আগের যেকোনো সময়ের চেয়ে চলতি মাসে ঋণপত্র খুলতে তাঁরা বেশি সমস্যায় পড়ছেন। আর ঘোষিত দামে ডলার পাওয়া যাচ্ছে না। তাই বাধ্য হয়ে বেশি দামে ডলার কিনতে হচ্ছে। বাড়তি সেই দাম পরিশোধ করা হচ্ছে ভিন্ন উপায়ে।

এদিকে আন্তর্জাতিক মুদ্রা তহবিল বা আইএমএফের শর্ত অনুযায়ী, চলতি মাসের মধ্যে রিজার্ভে অতিরিক্ত ডলার যোগ করতে হবে। অর্থাৎ ডিসেম্বর শেষে বাংলাদেশকে নিট বা প্রকৃত রিজার্ভ ১৭ দশমিক ৭৮ বিলিয়ন বা ১ হাজার ৭৭৮ কোটি ডলারে উন্নীত করতে হবে। নিট রিজার্ভ এখন ১৬ বিলিয়ন ডলারের কিছুটা বেশি।

গত বছরের ফেব্রুয়ারিতে ইউক্রেনে রাশিয়ার হামলা শুরুর পর বিশ্বে সরবরাহ ব্যবস্থায় সংকট শুরু হয়, দাম বাড়ে বিভিন্ন ভোগ্যপণ্যের। খরচ বাড়ে জ্বালানি ও পরিবহন খাতে।

এ অবস্থায় অবশ্য রিজার্ভ ধরে রাখতে বাজারে ডলারের সরবরাহ কমিয়ে দিয়েছে বাংলাদেশ ব্যাংক। পাশাপাশি রপ্তানি উন্নয়ন তহবিলের (ইডিএফ) আকার ৭০০ কোটি থেকে কমিয়ে ৩১০ কোটি ডলারে নামিয়ে এনেছে। কেন্দ্রীয় ব্যাংক সূত্রে জানা গেছে, বাণিজ্যিক ব্যাংক থেকে ডলার কিনে ডিসেম্বরের শেষ দিনে রিজার্ভ কাঙ্ক্ষিত পর্যায়ে নেওয়ার পরিকল্পনা করছে বাংলাদেশ ব্যাংক।

বাজারে ডলারের সংকট কতটা কাটল এই প্রশ্নের জবাবে মিউচুয়াল ট্রাস্ট ব্যাংকের ব্যবস্থাপনা পরিচালক সৈয়দ মাহবুবুর রহমান সাংবাদিকদের জানান সংকট পুরোপুরি কাটেনি। এ বিষয়ে এর বেশি কিছু তিনি বলতে রাজি হননি।

তবে একটি শীর্ষ ব্যাংকের প্রধান নির্বাহী নাম প্রকাশ না করার শর্তে সাংবাদিকদের বলেন, এখন যার ক্ষমতা আছে, তারা কেন্দ্রীয় ব্যাংকের নির্দেশনা উপেক্ষা করে বেশি দামে ডলার কিনে আনছে। যারা বেশি দামে ডলার কিনছে, আমদানির দায় পরিশোধেও তারা বেশি দাম নিচ্ছে। ব্যবসা এখন প্রভাব খাটানো ব্যাংকগুলোই বেশি করছে।

সংকট কতটা

গত বছরের ফেব্রুয়ারিতে ইউক্রেনে রাশিয়ার হামলা শুরুর পর বিশ্বে সরবরাহ ব্যবস্থায় সংকট শুরু হয়, দাম বাড়ে বিভিন্ন ভোগ্যপণ্যের। খরচ বাড়ে জ্বালানি ও পরিবহন খাতে। ফলে দেশে আমদানির জন্য ডলারের চাহিদা বেড়ে যায়। ডলারের আনুষ্ঠানিক দাম তখন ৮৬ টাকা থেকে বাড়তে শুরু করে, যা এখন ১১০ টাকা। ঠিক এই সময়েই ডলারের দাম নিয়ে নানা পরীক্ষা চালায় কেন্দ্রীয় ব্যাংক। ব্যাংকগুলোকে এখন ডলারের দাম নির্ধারণের দায়িত্ব দেওয়া হলেও তারা এই কাজটি করে কেন্দ্রীয় ব্যাংকের পরামর্শে। এ ক্ষেত্রে বাজার পরিস্থিতি উপেক্ষিত থেকে যায়। ফলে দেখা গেছে, গত এক মাসে তিন দফায় ডলারের দাম ১ টাকা কমানো হয়েছে।

ব্যাংকগুলো এখন প্রবাসী ও রপ্তানি আয়ে ডলারের দাম ১০৯ টাকা ৫০ পয়সা নির্ধারণ করছে। গত বৃহস্পতিবার বিদেশি রেমিট্যান্স হাউস ট্যাপ ট্যাপ সেন্ড ডলার সংগ্রহ করেছে ১২০ টাকা দামে ও স্মল ওয়ার্ল্ড ১১৭ টাকা ৮০ পয়সায়। সংকটে থাকা কয়েকটি শরিয়াধারার ব্যাংক ও কিছু প্রচলিত ব্যাংক ১২২ টাকা দরে সেই প্রবাসী আয় কিনছে বলে জানা গেছে। অন্যদিকে প্রবাসী আয় কেনার ক্ষেত্রে ব্যাংকগুলো সরকারের আড়াই শতাংশের প্রণোদনার পাশাপাশি নিজেরাও সমপরিমাণ প্রণোদনা দিচ্ছে। ফলে ডলারের দাম ঘোষিত দরের চেয়ে বেশি পড়ছে, আর আমদানিকারকদের বেশি দামে ডলার কিনতে হচ্ছে।

এখন কৃষি মৌসুম। এ জন্য ট্রাক্টর ও হারভেস্টারের চাহিদাও বেশি। কিন্তু ডলারের কারণে চাহিদামতো ঋণপত্র খুলতে পারছি না। আবার যেসব ঋণপত্র খোলা যাচ্ছে, তাতে নির্ধারিত দামের চেয়ে প্রতি ডলারে ১২-১৩ টাকা বেশি দিতে হচ্ছে। চলতি মাসে ঋণপত্র খুলতেই চাইছে না ব্যাংকগুলো।

কৃষি যন্ত্রপাতি আমদানি ও বাজারজাতকারী প্রতিষ্ঠান মেটালের ব্যবস্থাপনা পরিচালক সাদিদ জামিল

চাপে রপ্তানিকারকেরাও

আমদানিতে ডলারের দাম নথিপত্রে ১১০ টাকা হলেও বাস্তবে কোনো কোনো ক্ষেত্রে এমনকি ১২৮ টাকা পর্যন্ত দাম দিতে হচ্ছে। ব্যাংকিং খাতের সূত্রগুলো জানিয়েছে, কিছু শরিয়া ব্যাংক সরাসরি এই টাকা নিচ্ছে, আবার অন্য কিছু ব্যাংক পে-অর্ডারের মাধ্যমে ডলারের বাড়তি দাম সংগ্রহ করছে। গ্রাহকদের থেকে ব্যাংকগুলো ডলারের বাড়তি দাম নেওয়ার নথিপত্র দেখেছে সাংবাদিকরা।

কৃষি যন্ত্রপাতি আমদানি ও বাজারজাতকারী প্রতিষ্ঠান মেটালের ব্যবস্থাপনা পরিচালক সাদিদ জামিল সাংবাদিকদের কে বলেন, ‘এখন কৃষি মৌসুম। এ জন্য ট্রাক্টর ও হারভেস্টারের চাহিদাও বেশি। কিন্তু ডলারের কারণে চাহিদামতো ঋণপত্র খুলতে পারছি না। আবার যেসব ঋণপত্র খোলা যাচ্ছে, তাতে নির্ধারিত দামের চেয়ে প্রতি ডলারে ১২-১৩ টাকা বেশি দিতে হচ্ছে। চলতি মাসে ঋণপত্র খুলতেই চাইছে না ব্যাংকগুলো।’

আমদানিকারকদের পাশাপাশি রপ্তানিকারকেরাও বিপদে পড়ছেন। কারণ, তাঁদের রপ্তানি আয়ের ডলার অন্যদের কাছে বিক্রি করে দিচ্ছে ব্যাংকগুলো। পরে কাঁচামাল আমদানির জন্য তাঁদেরই আবার বেশি দামে ডলার কিনতে হচ্ছে।

ব্যাংকারদের দুটি সংগঠন ডলারের যে দাম নির্ধারণ করছে, ব্যাংকগুলোই সেই দাম অনুসরণ করছে না। অর্থনীতিবিদদের অনেকেই ডলারের বিনিময় মূল্য বাজারের ওপর ছেড়ে দেওয়ার জন্য পরামর্শ দিচ্ছেন।

বিষয়টি নিয়ে নিট পোশাকশিল্পের মালিকদের সংগঠন বিকেএমইএর নির্বাহী সভাপতি মোহাম্মদ হাতেম সাংবাদিকদের বলেন, ‘যে যত শক্তিশালী, তার কাছে ডলারের দাম তত কম, যারা দুর্বল তাদের কাছে তত বেশি। এটাই এখন নীতি হয়ে গেছে। আমদানিতে ডলারের দাম ১১৫ থেকে ১২৮ টাকা পর্যন্ত নিচ্ছে ব্যাংকগুলো। আমাদের রপ্তানি আয়ের ডলার অন্যদের কাছে বিক্রি করে দিচ্ছে, এরপর আমাদেরই তা আবার বেশি দামে কিনতে হচ্ছে। ডলার নিয়ে ব্যাংকগুলো সিন্ডিকেট তৈরি করেছে। এর ফলে রপ্তানিকারক প্রতিষ্ঠানের ওপর যে ক্ষত তৈরি হচ্ছে, তার দায় আমরা নেব না।’

বাজারের কাছাকাছি দাম ঠিক করতে হবে। নথিতে থাকা দামে নয়, বাজারের দামে রিজার্ভ থেকে ডলার কেনাবেচা করা উচিত।

গবেষণাপ্রতিষ্ঠান পলিসি রিসার্চ ইনস্টিটিউটের নির্বাহী পরিচালক আহসান এইচ মনসুর

ব্যাংকারদের দুটি সংগঠন ডলারের যে দাম নির্ধারণ করছে, ব্যাংকগুলোই সেই দাম অনুসরণ করছে না। অর্থনীতিবিদদের অনেকেই ডলারের বিনিময় মূল্য বাজারের ওপর ছেড়ে দেওয়ার জন্য পরামর্শ দিচ্ছেন। আইএমএফের পক্ষ থেকেও নমনীয় বিনিময় হার গ্রহণের ওপর জোর দেওয়া হয়েছে। তবে কেন্দ্রীয় ব্যাংক বৈদেশিক মুদ্রার বিনিময় হার বাজারের ওপর ছাড়তে আগ্রহী নয়।

গবেষণাপ্রতিষ্ঠান পলিসি রিসার্চ ইনস্টিটিউটের নির্বাহী পরিচালক আহসান এইচ মনসুর সাংবাদিকদের বলেন, ‘বাজারে এক দাম, নথিতে আরেক—এর মাধ্যমে সংকটকে বরং আরও বাড়ানো হচ্ছে। যদি ঘোষিত দামের চেয়ে এক টাকা কম-বেশি হতো, তাহলে হয়তো ঠিক ছিল। সমস্যা হলো, পার্থক্যটা অনেক বেশি হয়ে গেছে। এর প্রভাব পড়ছে ভোক্তাপর্যায়েও। এ জন্য বাজারের কাছাকাছি দাম ঠিক করতে হবে। নথিতে থাকা দামে নয়, বাজারের দামে রিজার্ভ থেকে ডলার কেনাবেচা করা উচিত।’

চ্যালেঞ্জ রিজার্ভ বাড়ানো নিয়ে

আইএমএফ এবং এশিয়ান ডেভেলপমেন্ট ব্যাংকের (এডিবি) ঋণের কিস্তির অর্থ পাওয়ার পর বৈদেশিক মুদ্রার রিজার্ভ কিছুটা বেড়েছে। ১৫ ডিসেম্বর আইএমএফের ঋণের দ্বিতীয় কিস্তির ৬৮ কোটি ৯৮ লাখ ডলার ও এডিবির ঋণের ৪০ কোটি ডলার রিজার্ভে যোগ হয়েছে। মোট বা গ্রস রিজার্ভ বেড়ে এখন হয়েছে ২ হাজার ৬০৪ কোটি ডলার বা ২৬ দশমিক শূন্য ৫ বিলিয়ন ডলার। আর আইএমএফের বিপিএম ৬ হিসাব পদ্ধতি অনুযায়ী রিজার্ভের পরিমাণ ২ হাজার ৬৮ কোটি ডলার বা ২০ দশমিক ৬৮ বিলিয়ন ডলার। তবে নিট বা প্রকৃত রিজার্ভ ১৬ বিলিয়ন ডলারের কিছুটা বেশি।

কেন্দ্রীয় ব্যাংকের কর্মকর্তারা বলছেন, চলতি মাসের শেষ কয় দিনে বিদেশ থেকে ঋণের আরও অর্থ রিজার্ভে যোগ হবে। পাশাপাশি ব্যাংক থেকে ডলার কিনে রিজার্ভ বাড়ানো হবে। আইএমএফের লক্ষ্য পূরণে এবার সর্বোচ্চ চেষ্টা করবে কেন্দ্রীয় ব্যাংক। এর আগে রিজার্ভ সংরক্ষণসংক্রান্ত শর্ত পূরণ করতে পারেনি সংস্থাটি।

চলতি মাসের প্রথম ২২ দিনে দেশে এসেছে ১৫৭ কোটি ডলারের প্রবাসী আয়। চলতি মাসের প্রথম ১৮ দিনে ঋণপত্র খোলা হয়েছে ৩২০ কোটি ডলারের। তিনটি বেসরকারি ব্যাংকের ট্রেজারি বিভাগের প্রধান সাংবাদিকদের কে বলেন, বেশি দামে প্রবাসী আয় কেনায় কড়াকড়ি আরোপ করার পর কিছু ব্যাংক প্রবাসী আয় কেনা বন্ধ করে দিয়েছে। নির্ধারিত দামে অল্প কিছু আয় এলেও কিছু শরিয়া ও প্রচলিত ধারার ব্যাংক আবার বেশি দামে প্রবাসী আয় কিনছে।

এটা যে করেই হোক অর্জন করতে হবে। সেটা বিদেশ থেকে ঋণ এনে, ব্যাংক থেকে কিনে বা অন্য যেকোনো উপায়ে হতে পারে। আইএমএফ পাশে থাকলে অন্য বৈশ্বিক সংস্থাগুলোও ইতিবাচক দৃষ্টিতে দেখে, যা দেশের আর্থিক সংকট কাটাতে সহায়ক হবে।

পলিসি রিসার্চ ইনস্টিটিউটের নির্বাহী পরিচালক আহসান এইচ মনসুর

ব্যাংকগুলো এ-ও জানিয়েছে, পুরোনো আমদানি দায়ের একটা অংশ ইতিমধ্যে পরিশোধ করা হয়েছে। আইএমএফের ঋণের কিস্তি আসায় বাংলাদেশের ওপর বিদেশি ব্যাংকগুলোর বিশ্বাস বেড়েছে। ফলে ঋণের সীমা পেতে সামনে সুবিধা হবে।

আইএমএফের রিজার্ভ রাখার শর্ত অর্জন প্রসঙ্গে পলিসি রিসার্চ ইনস্টিটিউটের নির্বাহী পরিচালক আহসান এইচ মনসুর বলেন, এটা যে করেই হোক অর্জন করতে হবে। সেটা বিদেশ থেকে ঋণ এনে, ব্যাংক থেকে কিনে বা অন্য যেকোনো উপায়ে হতে পারে। আইএমএফ পাশে থাকলে অন্য বৈশ্বিক সংস্থাগুলোও ইতিবাচক দৃষ্টিতে দেখে, যা দেশের আর্থিক সংকট কাটাতে সহায়ক হবে।