ঢাকা ১২:৩০ অপরাহ্ন, মঙ্গলবার, ২৫ মার্চ ২০২৫, ১১ চৈত্র ১৪৩১ বঙ্গাব্দ
সংবাদ শিরোনাম ::
সংবাদমাধ্যমের স্বাধীনতা এখনো আক্রমণের মুখে: সম্পাদক পরিষদ হিউম্যান রাইটস ওয়াচ ট্রাষ্টের মাসবপ্যাপী সেহরি বিতরণ চলমান সীমান্তবর্তী এলাকায় বিজিবি’র জনসচেতনামূলক সভা অনুষ্ঠিত জেলরোড থেকে আক্তার হোসেন গ্রেফতার মাহে রামাদ্বান উপলক্ষে অসহায় ও হতদরিদ্রদের মধ্যে ফুড প্যাক বিতরণ এনসিপি’র শ্রমিক উইং এর কেন্দ্রীয় সংগঠক হলেন সিলেটের শিব্বির আহমদ পথশিশুদের নিয়ে ইউনিস্যাবের ঈদ উৎসব-২০২৫ উদ্যাপন তিন খানকে নিয়ে আসছে সিনেমা আমার বয়স নিয়ে নায়িকার সমস্যা না হলে আপনার কেন সমস্যা: সালমান সকালে খালি পেটে পানি পান করলে কী হয় শরীরে? মানসিক অবসাদ কাটাতে রাতে যা করবেন গাজীপুরে আইজিপি

এই-১৪ই ডিসেম্বর তারিখে সকল প্রথম শ্রেণীর বুদ্ধিজীবীকে হত্যা করা হয়েছিল

প্রতিনিধির নাম
  • আপডেট সময় : ১২:০৫:২২ অপরাহ্ন, বৃহস্পতিবার, ১৪ ডিসেম্বর ২০২৩ ৯০ বার পড়া হয়েছে

ভিউ নিউজ ৭১ প্রতিবেদন:

শহীদ বুদ্ধিজীবী দিবস বাংলাদেশে পালিত একটি বিশেষ দিবস। প্রতিবছর বাংলাদেশে ১৪ই ডিসেম্বর তারিখের দিনটিকে শহীদ বুদ্ধিজীবী দিবস হিসেবে পালন করা হয়।১৯৭১ সালের ১০ই ডিসেম্বর থেকে ১৪ই ডিসেম্বর পর্যন্ত সময়কালের মধ্যে পাকিস্তান সেনাবাহিনী বাংলাদেশের প্রায় সকল প্রথম শ্রেণীর বুদ্ধিজীবীকে হত্যা করে।এ কাজে বাংলাদেশীদের মধ্যে রাজাকারআল বদর,আল শামস বাহিনীর সদস্যরা পাকিস্তানি সেনাদেরকে প্রত্যক্ষ ও পরোক্ষভাবে সহযোগিতা করেছিল।

১৯৭১ সালের ১৪ই ডিসেম্বর বাংলাদেশে স্বাধীনতা যুদ্ধের চূড়ান্ত বিজয়ের প্রাক্কালে পাকিস্তানি সেনাবাহিনী ও তাদের সাথে রাজাকার,আল বদর, আল শামস বাহিনী বাংলাদেশের অসংখ্য শিক্ষাবিদ,গবেষক,চিকিৎসকপ্রকৌশলী, সাংবাদিক, কবি ও সাহিত্যিকদের চোখ বেঁধে বাড়ি থেকে ধরে নিয়ে তাঁদের নির্যাতনের পর হত্যা করে।বাংলাদেশের মুক্তিবাহিনীর চূড়ান্ত বিজয়ের প্রাক্কালে স্বাধীন বাংলাদেশকে মেধাশূন্য করতে পরিকল্পিতভাবে এ হত্যাযজ্ঞ সংগঠিত হয়।পরবর্তীতে ঢাকার মিরপুর, রায়ের বাজারসহ বিভিন্ন স্থানে গণকবরে তাঁদের মৃতদেহ পাওয়া যায়।১৬ই ডিসেম্বর মুক্তিযুদ্ধে বিজয় অর্জনের পর নিকটাত্মীয়রা মিরপুর ও রাজারবাগ বধ্যভূমিতে স্বজনের মৃতদেহ শনাক্ত করেন।


অনেকের দেহে আঘাতের চিহ্ন, চোখ, হাত-পা বাঁধা, কারও কারও শরীরে একাধিক গুলির চিহ্ন দেখা যায়। অনেককে ধারালো অস্ত্র দিয়ে জবাই করে হত্যা করা হয়েছিল।হত্যার পূর্বে যে তাঁদেরকে নির্যাতন করা হয়েছিল, সে তথ্যও বের হয়ে আসে।১৯৭২ সালে বাংলাদেশে জাতীয়ভাবে প্রকাশিত বুদ্ধিজীবী দিবসের সংকলন,পত্রিকায় প্রকাশিত সংবাদ ও আন্তর্জাতিক সংবাদ সাময়িকী থেকে জানা যায় যে নিহত শহীদ বুদ্ধিজীবীর সংখ্যা মোট ১ হাজার ৭০ জন।

২০২১ সালের ১০ই ফেব্রুয়ারি বাংলাদেশ সরকারের মুক্তিযুদ্ধ বিষয়ক মন্ত্রণালয় “শহীদ বুদ্ধিজীবী” কথাটির একটি সংজ্ঞা প্রদান করে। সংজ্ঞাটি অনুযায়ী-১৯৭১ সালের ২৫ মার্চ থেকে ৩১ জানুয়ারি ১৯৭২ পর্যন্ত সময়কালে যেসব বাঙালি সাহিত্যিক, দার্শনিক,বিজ্ঞানী, চিত্রশিল্পী,শিক্ষক,গবেষক, সাংবাদিক,আইনজীবী, চিকিৎসক,প্রকৌশলী, স্থপতি,ভাস্কর, সরকারি ও বেসরকারি কর্মচারী,রাজনীতিক,সমাজসেবী,সংস্কৃতিসেবী, চলচ্চিত্র,নাটক ও সংগীতের সঙ্গে সংশ্লিষ্ট ব্যক্তি বুদ্ধিবৃত্তিক কর্মকাণ্ডের মাধ্যমে বাংলাদেশের অভ্যুদয়ে গুরুত্বপূর্ণ অবদান রেখেছেন এবং এর ফলে দখলদার পাকিস্তানি বাহিনী কিংবা তাদের সহযোগীদের হাতে শহীদ কিংবা ওই সময়ে চিরতরে নিখোঁজ হয়েছেন,তাঁরা শহীদ বুদ্ধিজীবী।

বাংলা একাডেমি কর্তৃক প্রকাশিত ‘শহিদ বুদ্ধিজীবী কোষগ্রন্থ’ (১৯৯৪) থেকে জানা যায়,২৩২ জন বুদ্ধিজীবী নিহত হয়েছেন।তবে তালিকায় অসম্পূর্ণতার কথাও একই গ্রন্থে স্বীকার করা হয়।১৯৭১ সালের ডিসেম্বরের ১৮,মতান্তরে ২৯ তারিখে বেসরকারীভাবে গঠিত বুদ্ধিজীবী নিধন তদন্ত কমিশনের প্রতিবেদন প্রকাশিত হয়নি।এরপর “বুদ্ধিজীবী তদন্ত কমিটি” গঠিত হয়।এই কমিটির প্রাথমিক প্রতিবেদনে বলা হয়, রাও ফরমান আলী এদেশের ২০ হাজার বুদ্ধিজীবীকে হত্যার পরিকল্পনা করেছিলেন।কিন্তু এই পরিকল্পনা মতো হত্যাযজ্ঞ চলেনি।কারণ ফরমান আলীর লক্ষ্য ছিল শীর্ষ বুদ্ধিজীবীদেরকে গভর্নর হাউজে নিমন্ত্রণ করে নিয়ে গিয়ে হত্যা করা।বুদ্ধিজীবী তদন্ত কমিটির প্রধান জহির রায়হান বলেছিলেন,এরা নির্ভুলভাবে বাংলাদেশের গণতন্ত্রমনষ্ক বুদ্ধিজীবীদেরকে বাছাই করে আঘাত হেনেছে।তবে ১৯৭২ সালের ৩০শে জানুয়ারি জহির রায়হানও নিখোঁজ হন।

১৯৭১ সালের ৩১শে ডিসেম্বর তারিখে তাজউদ্দিন আহমেদ এ বিষয়ে একটি তদন্ত কমিশন গঠনের সিদ্ধান্ত নেন।কিন্ত তাঁর ঐ সিদ্ধান্ত কার্যকর হয়নি।১৯৭১ সালের ২৭শে ডিসেম্বর দৈনিক আজাদের একটি প্রতিবেদনে উল্লেখ করা হয় যে বাঙালি বুদ্ধিজীবীদের হত্যার পরিকল্পনাটি পূর্বেই করা হয়েছিল। আর এতে সহায়তা করে জামায়াতে ইসলামী ও এর ছাত্র সংগঠন ছাত্রসংঘ।এ হত্যাকাণ্ডে সবচেয়ে সক্রিয় ছিলেন ব্রি. জে. আসলাম,ক্যাপ্টেন তারেক,কর্নেল তাজ,কর্নেল তাহের,উপাচার্য অধ্যাপক ডঃ সৈয়দ সাজ্জাদ হোসায়েন, ডঃ মোহর আলী, আল বদরের এবিএম খালেক মজুমদার,আশরাফুজ্জামান খান ও চৌধুরী মাইনুদ্দিন;আর তাদের নেতৃত্ব দেয় মেজর জেনারেল রাও ফরমান আলী।

১৯৯৭ সালের ২৪শে সেপ্টেম্বর বুদ্ধিজীবী হত্যার ঘটনায় রমনা থানায় প্রথম মামলা দায়ের করা হয় (মামলা নম্বর ১৫)।সেখানে আলবদর বাহিনীর চৌধুরী মাইনুদ্দীন ও আশরাফুজ্জামানকে আসামি করা হয়। মামলাটি দায়ের করেন অধ্যাপক গিয়াসউদ্দিনের বোন ফরিদা বানু।১৯৭১ সালে বছরব্যাপী পাকিস্তান সেনাবাহিনী বুদ্ধিজীবীদের হত্যা করে।পরিকল্পিতভাবে ১৪ ডিসেম্বরে সবচেয়ে বেশীসংখ্যক বুদ্ধিজীবী হত্যা করা হয়েছিল।বাংলাদেশের প্রথম প্রধানমন্ত্রী তাজউদ্দিন আহমেদ এই দিনকে  শহীদ বুদ্ধিজীবী দিবস ঘোষণা করেন।

নিচে ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয় ব্যতীত জেলাভিত্তিক নিহত বুদ্ধিজীবীদের সংখ্যা দেওয়া হলঃ

জেলা বিভাগশিক্ষাবিদআইনজীবী
প্রাথমিকমাধ্যমিককলেজ
ঢাকা৩৭১০
ফরিদপুর২৭১২
টাঙ্গাইল২০
ময়মনসিংহ৪৬২৮
ঢাকা বিভাগ১৩০৫৫১৭১১
চট্টগ্রাম৩৯১৬
পার্বত্য চট্টগ্রাম
সিলেট১৯
কুমিল্লা৪৫৩৩
নোয়াখালী২৬১৩
চট্টগ্রাম বিভাগ১৩৮৭৩১৩১০
খুলনা৪৮১৫
যশোর৫৫৩১
বরিশাল৫০২১
পটুয়াখালী
কুষ্টিয়া২৮১৩
খুলনা বিভাগ১৮৪৮১১৫
রাজশাহী৩৯
রংপুর৪১২২
দিনাজপুর৫০১০
বগুড়া১৪১২
পাবনা৪৩
রাজশাহী বিভাগ১৮৭৬১১৪১৫
বাংলাদেশ৬৩৯২৭০৫৯৪১
শহীদ শিক্ষাবিদের (বিশ্ববিদ্যালয় ছাড়া) মোট সংখ্যা = ৯৬৮
শহীদ বিশ্ববিদ্যালয়ের শিক্ষক সংখ্যা = ২১
শহীদ শিক্ষাবিদের মোট সংখ্যা = ৯৮৯

নিউজটি শেয়ার করুন

আপনার মন্তব্য

Your email address will not be published. Required fields are marked *

আপনার ইমেইল এবং অন্যান্য তথ্য সংরক্ষন করুন

আপলোডকারীর তথ্য
ট্যাগস :

এই-১৪ই ডিসেম্বর তারিখে সকল প্রথম শ্রেণীর বুদ্ধিজীবীকে হত্যা করা হয়েছিল

আপডেট সময় : ১২:০৫:২২ অপরাহ্ন, বৃহস্পতিবার, ১৪ ডিসেম্বর ২০২৩

ভিউ নিউজ ৭১ প্রতিবেদন:

শহীদ বুদ্ধিজীবী দিবস বাংলাদেশে পালিত একটি বিশেষ দিবস। প্রতিবছর বাংলাদেশে ১৪ই ডিসেম্বর তারিখের দিনটিকে শহীদ বুদ্ধিজীবী দিবস হিসেবে পালন করা হয়।১৯৭১ সালের ১০ই ডিসেম্বর থেকে ১৪ই ডিসেম্বর পর্যন্ত সময়কালের মধ্যে পাকিস্তান সেনাবাহিনী বাংলাদেশের প্রায় সকল প্রথম শ্রেণীর বুদ্ধিজীবীকে হত্যা করে।এ কাজে বাংলাদেশীদের মধ্যে রাজাকারআল বদর,আল শামস বাহিনীর সদস্যরা পাকিস্তানি সেনাদেরকে প্রত্যক্ষ ও পরোক্ষভাবে সহযোগিতা করেছিল।

১৯৭১ সালের ১৪ই ডিসেম্বর বাংলাদেশে স্বাধীনতা যুদ্ধের চূড়ান্ত বিজয়ের প্রাক্কালে পাকিস্তানি সেনাবাহিনী ও তাদের সাথে রাজাকার,আল বদর, আল শামস বাহিনী বাংলাদেশের অসংখ্য শিক্ষাবিদ,গবেষক,চিকিৎসকপ্রকৌশলী, সাংবাদিক, কবি ও সাহিত্যিকদের চোখ বেঁধে বাড়ি থেকে ধরে নিয়ে তাঁদের নির্যাতনের পর হত্যা করে।বাংলাদেশের মুক্তিবাহিনীর চূড়ান্ত বিজয়ের প্রাক্কালে স্বাধীন বাংলাদেশকে মেধাশূন্য করতে পরিকল্পিতভাবে এ হত্যাযজ্ঞ সংগঠিত হয়।পরবর্তীতে ঢাকার মিরপুর, রায়ের বাজারসহ বিভিন্ন স্থানে গণকবরে তাঁদের মৃতদেহ পাওয়া যায়।১৬ই ডিসেম্বর মুক্তিযুদ্ধে বিজয় অর্জনের পর নিকটাত্মীয়রা মিরপুর ও রাজারবাগ বধ্যভূমিতে স্বজনের মৃতদেহ শনাক্ত করেন।


অনেকের দেহে আঘাতের চিহ্ন, চোখ, হাত-পা বাঁধা, কারও কারও শরীরে একাধিক গুলির চিহ্ন দেখা যায়। অনেককে ধারালো অস্ত্র দিয়ে জবাই করে হত্যা করা হয়েছিল।হত্যার পূর্বে যে তাঁদেরকে নির্যাতন করা হয়েছিল, সে তথ্যও বের হয়ে আসে।১৯৭২ সালে বাংলাদেশে জাতীয়ভাবে প্রকাশিত বুদ্ধিজীবী দিবসের সংকলন,পত্রিকায় প্রকাশিত সংবাদ ও আন্তর্জাতিক সংবাদ সাময়িকী থেকে জানা যায় যে নিহত শহীদ বুদ্ধিজীবীর সংখ্যা মোট ১ হাজার ৭০ জন।

২০২১ সালের ১০ই ফেব্রুয়ারি বাংলাদেশ সরকারের মুক্তিযুদ্ধ বিষয়ক মন্ত্রণালয় “শহীদ বুদ্ধিজীবী” কথাটির একটি সংজ্ঞা প্রদান করে। সংজ্ঞাটি অনুযায়ী-১৯৭১ সালের ২৫ মার্চ থেকে ৩১ জানুয়ারি ১৯৭২ পর্যন্ত সময়কালে যেসব বাঙালি সাহিত্যিক, দার্শনিক,বিজ্ঞানী, চিত্রশিল্পী,শিক্ষক,গবেষক, সাংবাদিক,আইনজীবী, চিকিৎসক,প্রকৌশলী, স্থপতি,ভাস্কর, সরকারি ও বেসরকারি কর্মচারী,রাজনীতিক,সমাজসেবী,সংস্কৃতিসেবী, চলচ্চিত্র,নাটক ও সংগীতের সঙ্গে সংশ্লিষ্ট ব্যক্তি বুদ্ধিবৃত্তিক কর্মকাণ্ডের মাধ্যমে বাংলাদেশের অভ্যুদয়ে গুরুত্বপূর্ণ অবদান রেখেছেন এবং এর ফলে দখলদার পাকিস্তানি বাহিনী কিংবা তাদের সহযোগীদের হাতে শহীদ কিংবা ওই সময়ে চিরতরে নিখোঁজ হয়েছেন,তাঁরা শহীদ বুদ্ধিজীবী।

বাংলা একাডেমি কর্তৃক প্রকাশিত ‘শহিদ বুদ্ধিজীবী কোষগ্রন্থ’ (১৯৯৪) থেকে জানা যায়,২৩২ জন বুদ্ধিজীবী নিহত হয়েছেন।তবে তালিকায় অসম্পূর্ণতার কথাও একই গ্রন্থে স্বীকার করা হয়।১৯৭১ সালের ডিসেম্বরের ১৮,মতান্তরে ২৯ তারিখে বেসরকারীভাবে গঠিত বুদ্ধিজীবী নিধন তদন্ত কমিশনের প্রতিবেদন প্রকাশিত হয়নি।এরপর “বুদ্ধিজীবী তদন্ত কমিটি” গঠিত হয়।এই কমিটির প্রাথমিক প্রতিবেদনে বলা হয়, রাও ফরমান আলী এদেশের ২০ হাজার বুদ্ধিজীবীকে হত্যার পরিকল্পনা করেছিলেন।কিন্তু এই পরিকল্পনা মতো হত্যাযজ্ঞ চলেনি।কারণ ফরমান আলীর লক্ষ্য ছিল শীর্ষ বুদ্ধিজীবীদেরকে গভর্নর হাউজে নিমন্ত্রণ করে নিয়ে গিয়ে হত্যা করা।বুদ্ধিজীবী তদন্ত কমিটির প্রধান জহির রায়হান বলেছিলেন,এরা নির্ভুলভাবে বাংলাদেশের গণতন্ত্রমনষ্ক বুদ্ধিজীবীদেরকে বাছাই করে আঘাত হেনেছে।তবে ১৯৭২ সালের ৩০শে জানুয়ারি জহির রায়হানও নিখোঁজ হন।

১৯৭১ সালের ৩১শে ডিসেম্বর তারিখে তাজউদ্দিন আহমেদ এ বিষয়ে একটি তদন্ত কমিশন গঠনের সিদ্ধান্ত নেন।কিন্ত তাঁর ঐ সিদ্ধান্ত কার্যকর হয়নি।১৯৭১ সালের ২৭শে ডিসেম্বর দৈনিক আজাদের একটি প্রতিবেদনে উল্লেখ করা হয় যে বাঙালি বুদ্ধিজীবীদের হত্যার পরিকল্পনাটি পূর্বেই করা হয়েছিল। আর এতে সহায়তা করে জামায়াতে ইসলামী ও এর ছাত্র সংগঠন ছাত্রসংঘ।এ হত্যাকাণ্ডে সবচেয়ে সক্রিয় ছিলেন ব্রি. জে. আসলাম,ক্যাপ্টেন তারেক,কর্নেল তাজ,কর্নেল তাহের,উপাচার্য অধ্যাপক ডঃ সৈয়দ সাজ্জাদ হোসায়েন, ডঃ মোহর আলী, আল বদরের এবিএম খালেক মজুমদার,আশরাফুজ্জামান খান ও চৌধুরী মাইনুদ্দিন;আর তাদের নেতৃত্ব দেয় মেজর জেনারেল রাও ফরমান আলী।

১৯৯৭ সালের ২৪শে সেপ্টেম্বর বুদ্ধিজীবী হত্যার ঘটনায় রমনা থানায় প্রথম মামলা দায়ের করা হয় (মামলা নম্বর ১৫)।সেখানে আলবদর বাহিনীর চৌধুরী মাইনুদ্দীন ও আশরাফুজ্জামানকে আসামি করা হয়। মামলাটি দায়ের করেন অধ্যাপক গিয়াসউদ্দিনের বোন ফরিদা বানু।১৯৭১ সালে বছরব্যাপী পাকিস্তান সেনাবাহিনী বুদ্ধিজীবীদের হত্যা করে।পরিকল্পিতভাবে ১৪ ডিসেম্বরে সবচেয়ে বেশীসংখ্যক বুদ্ধিজীবী হত্যা করা হয়েছিল।বাংলাদেশের প্রথম প্রধানমন্ত্রী তাজউদ্দিন আহমেদ এই দিনকে  শহীদ বুদ্ধিজীবী দিবস ঘোষণা করেন।

নিচে ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয় ব্যতীত জেলাভিত্তিক নিহত বুদ্ধিজীবীদের সংখ্যা দেওয়া হলঃ

জেলা বিভাগশিক্ষাবিদআইনজীবী
প্রাথমিকমাধ্যমিককলেজ
ঢাকা৩৭১০
ফরিদপুর২৭১২
টাঙ্গাইল২০
ময়মনসিংহ৪৬২৮
ঢাকা বিভাগ১৩০৫৫১৭১১
চট্টগ্রাম৩৯১৬
পার্বত্য চট্টগ্রাম
সিলেট১৯
কুমিল্লা৪৫৩৩
নোয়াখালী২৬১৩
চট্টগ্রাম বিভাগ১৩৮৭৩১৩১০
খুলনা৪৮১৫
যশোর৫৫৩১
বরিশাল৫০২১
পটুয়াখালী
কুষ্টিয়া২৮১৩
খুলনা বিভাগ১৮৪৮১১৫
রাজশাহী৩৯
রংপুর৪১২২
দিনাজপুর৫০১০
বগুড়া১৪১২
পাবনা৪৩
রাজশাহী বিভাগ১৮৭৬১১৪১৫
বাংলাদেশ৬৩৯২৭০৫৯৪১
শহীদ শিক্ষাবিদের (বিশ্ববিদ্যালয় ছাড়া) মোট সংখ্যা = ৯৬৮
শহীদ বিশ্ববিদ্যালয়ের শিক্ষক সংখ্যা = ২১
শহীদ শিক্ষাবিদের মোট সংখ্যা = ৯৮৯