সময় বাড়িয়েও শেষ হয়নি এমসি কলেজের দশ তলা ভবনের নির্মাণ কাজ

- আপডেট সময় : ০৪:৫২:২১ পূর্বাহ্ন, মঙ্গলবার, ৭ মার্চ ২০২৩ ১১৪ বার পড়া হয়েছে
দুই দফা সময় বাড়িয়েও শেষ হয়নি এমসি কলেজের দশ তলা ভবনের নির্মাণ কাজ। ২০১৯ সালে নির্মাণ কাজ শেষ হওয়ার কথা থাকলেও এখনও ভবনটির কাজ অসম্পূর্ণ রয়ে গেছে। বর্তমানে ভবনটির ৯৫ ভাগ কাজ সম্পন্ন হয়েছে বলে দাবি করছেন প্রকৌশল কর্তৃপক্ষ।
কলেজ সূত্রে জানা যায়, জাতীয় অর্থনৈতিক পরিষদ নির্বাহী কমিটি (একনেক) ২০১৪ সালে এমসি কলেজে দশ তলা ভবন নির্মাণ প্রকল্প অনুমোদন করে। এই প্রকল্পটির নির্মাণ কাজ পায় শিক্ষা প্রকৌশল অধিদপ্তর। পান্না এন্টারপ্রাইজ নামে একটি প্রতিষ্ঠান এটির নির্মাণ কাজ করছে। ২০১৭ সালের ১০ আগস্ট ১২ কোটি ৪৩ লক্ষ টাকা (লিফট ও ফার্নিচারের আলাদা বাজেট) বাজেটের এই একাডেমিক ভবনের ভিত্তিপ্রস্তর স্থাপন করেন তৎকালীন শিক্ষামন্ত্রী নুরুল ইসলাম নাহিদ। তখন কাজ শুরু হওয়ার কথা থাকলেও শুরু হয় তারও ৩ বছর পর ২০২০ সালের শুরুর দিকে। তবে, রাজনৈতিক একটি পক্ষ চাঁদা দাবি করলে নির্দিষ্ট সময়ে কাজ শুরু করতে পারেনি বলে জানায় প্রকৌশল কর্তৃপক্ষ।
এমসি কলেজ ক্যাম্পাসের ভেতরের প্রধান সড়কের পাশে ও পুকরের উত্তরপাড়ে এই ভবনটির অবস্থান। ভবনটি নির্মিত হলে এটিই হবে কলেজের সর্বোচ্চ ভবন। এর আগে কলেজ ক্যাম্পাসের উত্তর দিকের শেষ প্রান্তের একাডেমিক ভবনটি ছিল সর্ব উঁচু ভবন। দশ তলা ভবন নির্মাণের পূর্বে সেখানে ছিল ছাত্র মিলনায়তন, ক্যান্টিন ও স্পোর্টস রুম। সেগুলো ভেঙে তার জায়গায় নির্মাণ করা হয় এই ভবন। এর পর থেকেই কলেজে আর কোনো ছাত্র মিলনায়তন, ক্যান্টিন ও স্পোর্টস রুম হয়নি। অবশ্য ভবনটি নির্মাণের পূর্ব থেকেই কলেজের ক্যান্টিন বন্ধ ছিল। একসময় কলেজের ছাত্র মিলনায়তনে ছোট পরিসরে সামাজিক, সাংস্কৃতিক সংগঠনগুলো বিভিন্ন অনুষ্ঠানাদি করলেও এখন উন্মুক্ত স্থানে অনুষ্ঠান করা ছাড়া গত্যন্তর নেই তাদের। নতুন এই ভবনটির নিচতলায় রয়েছে ২টি সেমিনার কক্ষ এবং প্রতি তলায় ৪টি করে ক্লাস রুম। ছেলে ও মেয়েদের জন্য প্রতি তলায় ৩টি করে বাথরুম রয়েছে এবং ছেলেদের প্রশ্রাবখানা ২টি। ভবনটির ২ পাশে ২টি লিফট রয়েছে, যার মাধ্যমে খুব সহজেই দশতলায় উঠা সম্ভব। এছাড়াও বিদ্যুৎ চলে যাওয়ার পর তার বিকল্প হিসেবে জেনারেটরের জন্য আলাদা একটি রুম রয়েছে। তবে, শব্দদূষণ রোধে এটি দশ তলা ভবনের পাশে নির্মাণ করবেন বলে জানান এমসি কলেজের ভারপ্রাপ্ত অধ্যক্ষ। ভবনটিতে একটি ইলেকট্রিক্যাল সাব স্টেশন থাকবে। ভবনটির কার্পেট এরিয়া ৭ হাজার ৪০০ বর্গফুট ও বিল্ডআপ এরিয়া ৮ হাজার বর্গফুট।
কলেজ কর্তৃপক্ষ জানান, আগামী জুন মাসের মধ্যেই কলেজের দশতলা ভবনের নির্মাণ কাজ শেষ করে নির্দিষ্ট কর্তৃপক্ষের কাছে ভবনটি হস্তান্তর করবে শিক্ষা প্রকৌশল অধিদপ্তর। তারপরই এটির উদ্বোধন হবে। নতুন এই ভবনটিতে স্থান পাবে কলেজের ইংরেজি বিভাগ, পরিসংখ্যান বিভাগ ও ইসলাম শিক্ষা বিভাগ। এছাড়াও এখানে ক্লাস হবে পদার্থবিদ্যা বিভাগ, রসায়ন বিভাগ ও ইতিহাস বিভাগের এবং স্থান পাবে আইসিটি ল্যাব।দশ তলা ভবনের প্রজেক্ট ইঞ্জিনিয়ার রায়হান উদ্দিন জানান, ভবনটির ৯৫ ভাগ কাজ শেষ হয়েছে। বর্তমানে এর রংয়ের কাজ চলছে। ভবনটির প্রতি রুমে দরজা লাগানো শেষ হয়েছে। আর ভবনটির প্রতি তলায় বেসিন, কমোড, টয়লেট ফিটিং, জানালার গ্লাস লাগানো, ফ্যান-লাইট, ফিনিশিং বাকি রয়েছে। বর্তমানে বাজেট পাওয়া যাচ্ছে না বলে এই কাজগুলো তাড়াতাড়ি করা সম্ভব হচ্ছে না।এমসি কলেজের অধ্যক্ষ (ভারপ্রাপ্ত) প্রফেসর মো. আশরাফুল কবীর বলেন, শিক্ষা প্রকৌশল অধিদপ্তর জুন মাসে ভবনটির কাজ সম্পূর্ণ করে নির্দিষ্ট কর্তৃপক্ষের কাছে হস্তান্তর করলে ঐ মাসেই উদ্বোধন করা হবে।