ঢাকা ০৪:২০ পূর্বাহ্ন, মঙ্গলবার, ১৮ নভেম্বর ২০২৫, ৩ অগ্রহায়ণ ১৪৩২ বঙ্গাব্দ
সংবাদ শিরোনাম ::
সংবাদমাধ্যমের স্বাধীনতা এখনো আক্রমণের মুখে: সম্পাদক পরিষদ হিউম্যান রাইটস ওয়াচ ট্রাষ্টের মাসবপ্যাপী সেহরি বিতরণ চলমান ইতিহাসে বিচারের মুখোমুখি হওয়া রাষ্ট্রপ্রধানরা হাসিনাকে কি ভারত ফেরত দেবে? যা জানা গেল হাসিনার মৃত্যুদণ্ডের রায় ‘অতীতের প্রতিশোধ নয়’: চিফ প্রসিকিউটর মওলানা ভাসানীর সংস্কৃতি দর্শন সিলেটের সাময়িক অসুবিধার জন্য কিছু গুরুত্বপূর্ণ এলাকায় বুধবার বিদ্যুৎ থাকবেনা সিলেটে পাস করলেন ৩১ শিক্ষার্থী, জিপিএ-৫ পেয়েছেন ৭জন সিলেটে ৯টি গাড়ি অগ্নিকাণ্ডের ঘঠনা ঘটেছে সিলেটে আটক মা’কে হত্যা, ঘাতক ছেলে ফজল ফেটে যাওয়া ঠোঁট যেসব টোটকায় হবে নরম ও মসৃণ ক্যালসিয়ামের ঘাটতি হলে শারীরে যে সমস্যা দেখা দিতে পারে

চিকিৎসাধীন ইলিয়াস কা ঞ্চ ন, দোয়া চাইলেন মিশা, আমিন খান ও নাঈম

প্রতিনিধির নাম
  • আপডেট সময় : ০৩:০৯:৪২ অপরাহ্ন, শুক্রবার, ১০ অক্টোবর ২০২৫ ১৮ বার পড়া হয়েছে

বিনোদন ডেস্ক :

নিরাপদ সড়ক চাই (নিসচা) আন্দোলনের প্রতিষ্ঠাতা ও আলোড়ন সৃষ্টিকারী সিনেমা ‘বেদের মেয়ে জ্যোৎস্না’খ্যাত অভিনেতা ইলিয়াস কাঞ্চন ভালো নেই। বর্তমানে লন্ডনে হার্লি স্ট্রিট ক্লিনিকে ব্রেন টিউমারে চিকিৎসাধীন। তার বর্তমান শারীরিক অবস্থা সম্পর্কে সংবাদমাধ্যমকে জানিয়েছেন তার জামাতা আরিফুল ইসলাম। 

এদিকে জাতীয় চলচ্চিত্র পুরস্কারে আজীবন সম্মাননা পাওয়া এই গুণী অভিনেতা ইলিয়াস কাঞ্চনের দ্রুত সুস্থতা কামনা করেছেন ঢালিউড সিনেমা জগতের চলচ্চিত্র শিল্পী সমিতির সভাপতি ও খলঅভিনেতা—মিশা সওদাগর, অভিনেতা নাঈম ও আমিন খান।

মিশা সওদাগর বলেন, ইলিয়াস কাঞ্চন ভাই আমাদের চলচ্চিত্র শিল্পের অন্যতম অভিভাবক। একসময় তিনি শিল্পী সমিতির সভাপতিও ছিলেন। তার অবদান অনস্বীকার্য। সবার মতো তিনি আমারও শ্রদ্ধার মানুষ। তিনি বলেন, কাঞ্চন ভাইয়ের অসুস্থতার খবর কিছু দিন আগেই জেনেছি। পারিবারিকভাবে এটি গোপন রাখা হয়েছিল, তাই কাউকে বলিনি। এখন পরিবার থেকেই দোয়া চাওয়া হয়েছে। 

এ খলঅভিনেতা বলেন, এ মানুষটি শুধু সিনেমার মানুষ নন, তিনি একজন সমাজ সচেতন মানুষ। তার গড়া ‘নিরাপদ সড়ক চাই’ উদ্যোগ ব্যাপক সাড়া ফেলেছে। আমি চাই, অসমাপ্ত কাজগুলো যেন তিনি শেষ করতে পারেন। 

মিশা সওদাগর বলেন, দেশবাসীর কাছে আমার অনুরোধ—কাঞ্চন ভাইয়ের জন্য দোয়া করবেন। তিনি পুরোপুরি সুস্থ হয়ে যেন দেশে ফিরে আসতে পারেন। চলচ্চিত্রের নক্ষত্র ইলিয়াস কাঞ্চন। এক এক করে সিনিয়র ও গুণী শিল্পীরা হারিয়ে যাচ্ছেন। মন থেকে দোয়া করছি, কাঞ্চন ভাই যেন সুস্থ হয়ে উঠেন।

নব্বই দশকের সাড়াজাগানো অভিনেতা নাঈম সিনেমা থেকে দূরে আছেন। কিন্তু সিনেমার মানুষের প্রতি রয়েছে তার অগাধ ভালোবাসা। প্রবীণ অভিনেতা ইলিয়াস কাঞ্চনের অসুস্থতার খবরে তিনি চুপ থাকেননি। তার খোঁজখবর নেওয়ার চেষ্টা করেছেন।

নাঈম বলেন, হঠাৎ করে ইলিয়াস কাঞ্চন ভাইয়ের অসুস্থতার খবর শুনে কষ্ট পেয়েছি, খুব খারাপ লেগেছে। একটাই চাওয়া—তিনি সুস্থ হয়ে ফিরে আসুক। ‘নিরাপদ সড়ক চাই’ আন্দোলনের মাধ্যমে মানুষের মনে তিনি বড় জায়গা করে নিয়েছেন। এই কাজটি যেন চলমান থাকে।

এ অভিনেতা বলেন, আমি প্রথমবার ইলিয়াস কাঞ্চনকে টাঙাইল জেলার করটিয়া জমিদাবাড়িতে দেখেছি। তখন আমি খুব ছোট ছিলাম। করটিয়া জমিদারবাড়ি আমার নানাবাড়ি। সেই ছোটবেলায় নালিশ সিনেমার শুটিং দেখার সময় তাকে প্রথম দেখি।

তিনি বলেন, একসময় আমিও চলচ্চিত্রে অভিনয় শুরু করি এবং তখনই তার সঙ্গে পরিচয় হয়। পরিচয়ের শুরু থেকেই বোঝা যায়, তিনি একজন ভালো মানুষ—সহজ, সরল ও নীতিবান। সিনেমায় তার অবদানও অনেক। রেকর্ডসংখ্যক সিনেমা যেমন করেছেন, তেমনই মানুষের মনে গেঁথে আছেন সুঅভিনয় দিয়ে।

ইলিয়াস কাঞ্চনের অসুস্থতায় অভিনেতা আমিন খান বলেন, কাঞ্চন ভাইয়ের সঙ্গে অনেক সিনেমায় অভিনয় করেছি। তিনি বলেন, খবরটি শোনার পর প্রচণ্ড খারাপ লেগেছে। কাঞ্চন ভাই আমাদের চলচ্চিত্রের একজন অভিভাবক। সবচেয়ে বড় কথা— তিনি একজন ভালো মানুষ। 

আমিন খান বলেন, ঢালিউড সিনেমা ও সমাজের রত্নও ইলিয়াস কাঞ্চন ভাই। তার সঙ্গে আমার শত শত স্মৃতি রয়েছে। সিনেমা করতে গিয়েই আমাদের পরিচয়। সবসময় মনে হয়েছে, তিনি একজন বড় ভাই। তাই তার এত বড় অসুস্থতার খবর আমাকে সত্যিই কষ্ট দিয়েছে। এখনো মন খারাপ আছে। সৃষ্টিকর্তার কাছে প্রার্থনা করছি— কাঞ্চন ভাই যেন সুস্থ হয়ে উঠেন।

উল্লেখ্য, গত সাত মাস ধরে অসুস্থ ইলিয়াস কাঞ্চন মানসিকভাবে ভেঙে পড়েছেন। কর্মব্যস্ত জীবন ছেড়ে লন্ডনের ঘরবন্দি জীবন তাকে বিচলিত করে তোলে। থেরাপির কারণে তার শরীরে ক্লান্তি এসেছে এবং কথা বলতেও কষ্ট হচ্ছে। তাই চিকিৎসকরা তাকে ফোনে কথা বলতে নিষেধ করেছেন।

ইলিয়াস কাঞ্চন লন্ডনে তার মেয়ে ইসরাত জাহানের বাসায় থাকছেন। জামাতা আরিফুল ইসলাম জানান, ইলিয়াস কাঞ্চন গত ২৬ এপ্রিল থেকে লন্ডনে আছেন। সেখানে হার্লি স্ট্রিট ক্লিনিকের অনকোলজিস্ট ভিনায়ার তত্ত্বাবধানে তার চিকিৎসা চলছে। 

তিনি বলেন, গত ৫ আগস্ট লন্ডনের উইলিংটন হাসপাতালের অধ্যাপক ডিমিট্রিয়াসের নেতৃত্বে তার মস্তিষ্কে একটি সফল অস্ত্রোপচার করা হয়। টিউমারের কিছু অংশ ইতোমধ্যে অপসারণ করা হয়। পুরো টিউমার অপসারণ করা হলে জীবনহানিসহ প্যারালাইজড হয়ে চলনশক্তি ও কথা বলার ক্ষমতা হারিয়ে ফেলার ঝুঁকি ছিল বলেও চিকিৎসকরা জানান। তাই চিকিৎসকদের পরামর্শে টিউমারের কিছু অংশ অপসারণ করা হয়।

নিউজটি শেয়ার করুন

আপনার মন্তব্য

Your email address will not be published. Required fields are marked *

আপনার ইমেইল এবং অন্যান্য তথ্য সংরক্ষন করুন

আপলোডকারীর তথ্য
ট্যাগস :

চিকিৎসাধীন ইলিয়াস কা ঞ্চ ন, দোয়া চাইলেন মিশা, আমিন খান ও নাঈম

আপডেট সময় : ০৩:০৯:৪২ অপরাহ্ন, শুক্রবার, ১০ অক্টোবর ২০২৫

বিনোদন ডেস্ক :

নিরাপদ সড়ক চাই (নিসচা) আন্দোলনের প্রতিষ্ঠাতা ও আলোড়ন সৃষ্টিকারী সিনেমা ‘বেদের মেয়ে জ্যোৎস্না’খ্যাত অভিনেতা ইলিয়াস কাঞ্চন ভালো নেই। বর্তমানে লন্ডনে হার্লি স্ট্রিট ক্লিনিকে ব্রেন টিউমারে চিকিৎসাধীন। তার বর্তমান শারীরিক অবস্থা সম্পর্কে সংবাদমাধ্যমকে জানিয়েছেন তার জামাতা আরিফুল ইসলাম। 

এদিকে জাতীয় চলচ্চিত্র পুরস্কারে আজীবন সম্মাননা পাওয়া এই গুণী অভিনেতা ইলিয়াস কাঞ্চনের দ্রুত সুস্থতা কামনা করেছেন ঢালিউড সিনেমা জগতের চলচ্চিত্র শিল্পী সমিতির সভাপতি ও খলঅভিনেতা—মিশা সওদাগর, অভিনেতা নাঈম ও আমিন খান।

মিশা সওদাগর বলেন, ইলিয়াস কাঞ্চন ভাই আমাদের চলচ্চিত্র শিল্পের অন্যতম অভিভাবক। একসময় তিনি শিল্পী সমিতির সভাপতিও ছিলেন। তার অবদান অনস্বীকার্য। সবার মতো তিনি আমারও শ্রদ্ধার মানুষ। তিনি বলেন, কাঞ্চন ভাইয়ের অসুস্থতার খবর কিছু দিন আগেই জেনেছি। পারিবারিকভাবে এটি গোপন রাখা হয়েছিল, তাই কাউকে বলিনি। এখন পরিবার থেকেই দোয়া চাওয়া হয়েছে। 

এ খলঅভিনেতা বলেন, এ মানুষটি শুধু সিনেমার মানুষ নন, তিনি একজন সমাজ সচেতন মানুষ। তার গড়া ‘নিরাপদ সড়ক চাই’ উদ্যোগ ব্যাপক সাড়া ফেলেছে। আমি চাই, অসমাপ্ত কাজগুলো যেন তিনি শেষ করতে পারেন। 

মিশা সওদাগর বলেন, দেশবাসীর কাছে আমার অনুরোধ—কাঞ্চন ভাইয়ের জন্য দোয়া করবেন। তিনি পুরোপুরি সুস্থ হয়ে যেন দেশে ফিরে আসতে পারেন। চলচ্চিত্রের নক্ষত্র ইলিয়াস কাঞ্চন। এক এক করে সিনিয়র ও গুণী শিল্পীরা হারিয়ে যাচ্ছেন। মন থেকে দোয়া করছি, কাঞ্চন ভাই যেন সুস্থ হয়ে উঠেন।

নব্বই দশকের সাড়াজাগানো অভিনেতা নাঈম সিনেমা থেকে দূরে আছেন। কিন্তু সিনেমার মানুষের প্রতি রয়েছে তার অগাধ ভালোবাসা। প্রবীণ অভিনেতা ইলিয়াস কাঞ্চনের অসুস্থতার খবরে তিনি চুপ থাকেননি। তার খোঁজখবর নেওয়ার চেষ্টা করেছেন।

নাঈম বলেন, হঠাৎ করে ইলিয়াস কাঞ্চন ভাইয়ের অসুস্থতার খবর শুনে কষ্ট পেয়েছি, খুব খারাপ লেগেছে। একটাই চাওয়া—তিনি সুস্থ হয়ে ফিরে আসুক। ‘নিরাপদ সড়ক চাই’ আন্দোলনের মাধ্যমে মানুষের মনে তিনি বড় জায়গা করে নিয়েছেন। এই কাজটি যেন চলমান থাকে।

এ অভিনেতা বলেন, আমি প্রথমবার ইলিয়াস কাঞ্চনকে টাঙাইল জেলার করটিয়া জমিদাবাড়িতে দেখেছি। তখন আমি খুব ছোট ছিলাম। করটিয়া জমিদারবাড়ি আমার নানাবাড়ি। সেই ছোটবেলায় নালিশ সিনেমার শুটিং দেখার সময় তাকে প্রথম দেখি।

তিনি বলেন, একসময় আমিও চলচ্চিত্রে অভিনয় শুরু করি এবং তখনই তার সঙ্গে পরিচয় হয়। পরিচয়ের শুরু থেকেই বোঝা যায়, তিনি একজন ভালো মানুষ—সহজ, সরল ও নীতিবান। সিনেমায় তার অবদানও অনেক। রেকর্ডসংখ্যক সিনেমা যেমন করেছেন, তেমনই মানুষের মনে গেঁথে আছেন সুঅভিনয় দিয়ে।

ইলিয়াস কাঞ্চনের অসুস্থতায় অভিনেতা আমিন খান বলেন, কাঞ্চন ভাইয়ের সঙ্গে অনেক সিনেমায় অভিনয় করেছি। তিনি বলেন, খবরটি শোনার পর প্রচণ্ড খারাপ লেগেছে। কাঞ্চন ভাই আমাদের চলচ্চিত্রের একজন অভিভাবক। সবচেয়ে বড় কথা— তিনি একজন ভালো মানুষ। 

আমিন খান বলেন, ঢালিউড সিনেমা ও সমাজের রত্নও ইলিয়াস কাঞ্চন ভাই। তার সঙ্গে আমার শত শত স্মৃতি রয়েছে। সিনেমা করতে গিয়েই আমাদের পরিচয়। সবসময় মনে হয়েছে, তিনি একজন বড় ভাই। তাই তার এত বড় অসুস্থতার খবর আমাকে সত্যিই কষ্ট দিয়েছে। এখনো মন খারাপ আছে। সৃষ্টিকর্তার কাছে প্রার্থনা করছি— কাঞ্চন ভাই যেন সুস্থ হয়ে উঠেন।

উল্লেখ্য, গত সাত মাস ধরে অসুস্থ ইলিয়াস কাঞ্চন মানসিকভাবে ভেঙে পড়েছেন। কর্মব্যস্ত জীবন ছেড়ে লন্ডনের ঘরবন্দি জীবন তাকে বিচলিত করে তোলে। থেরাপির কারণে তার শরীরে ক্লান্তি এসেছে এবং কথা বলতেও কষ্ট হচ্ছে। তাই চিকিৎসকরা তাকে ফোনে কথা বলতে নিষেধ করেছেন।

ইলিয়াস কাঞ্চন লন্ডনে তার মেয়ে ইসরাত জাহানের বাসায় থাকছেন। জামাতা আরিফুল ইসলাম জানান, ইলিয়াস কাঞ্চন গত ২৬ এপ্রিল থেকে লন্ডনে আছেন। সেখানে হার্লি স্ট্রিট ক্লিনিকের অনকোলজিস্ট ভিনায়ার তত্ত্বাবধানে তার চিকিৎসা চলছে। 

তিনি বলেন, গত ৫ আগস্ট লন্ডনের উইলিংটন হাসপাতালের অধ্যাপক ডিমিট্রিয়াসের নেতৃত্বে তার মস্তিষ্কে একটি সফল অস্ত্রোপচার করা হয়। টিউমারের কিছু অংশ ইতোমধ্যে অপসারণ করা হয়। পুরো টিউমার অপসারণ করা হলে জীবনহানিসহ প্যারালাইজড হয়ে চলনশক্তি ও কথা বলার ক্ষমতা হারিয়ে ফেলার ঝুঁকি ছিল বলেও চিকিৎসকরা জানান। তাই চিকিৎসকদের পরামর্শে টিউমারের কিছু অংশ অপসারণ করা হয়।