ঢাকা ০২:৫০ অপরাহ্ন, মঙ্গলবার, ২২ এপ্রিল ২০২৫, ৯ বৈশাখ ১৪৩২ বঙ্গাব্দ
সংবাদ শিরোনাম ::
সংবাদমাধ্যমের স্বাধীনতা এখনো আক্রমণের মুখে: সম্পাদক পরিষদ হিউম্যান রাইটস ওয়াচ ট্রাষ্টের মাসবপ্যাপী সেহরি বিতরণ চলমান জাতিসংঘকে শান্তিরক্ষী মিশনে বাংলাদেশি নারীদের সংখ্যা বাড়ানোর আহ্বান ড. ইউনূস শায়েস্তাগঞ্জে ভয়াবহ অগ্নিকান্ডে ১৫টি দোকান পুড়ে চাই কোটি টাকার ক্ষতি চুনারুঘাটে প্রকাশ্য দিবালোকে এক ব্যক্তিকে কুপিয়ে হত্যা গোয়াইনঘাটে টাস্কফোর্সের অভিযান: ১৫ টি নৌকা, ১০ টি শ্যালো মেশিন ধ্বংস ব্যাটিংয়ের পর বোলিংয়েও ব্যর্থ বাংলাদেশ জামায়াতে যোগ দেওয়া নেতাকে ব হি ষ্কা র করলো ছাত্রদল সিলেট ছয় দফা দাবিতে পলিটেকনিক শিক্ষার্থীদের আন্দোলন তুষারের খুনি, মূল আসামি পারভেজকে ঢাকা গাজীপুর জেলার কালিগঞ্জ থেকে গ্রেফতার আল-আকসা মসজিদ ভাঙার পরিকল্পনা ইসরাইলিদের হামাসের হামলায় ইসরাইলের ৬ সেনা হতাহত

হঠাৎ রণক্ষেত্র সিলেট-ঢাকা মহাসড়ক

প্রতিনিধির নাম
  • আপডেট সময় : ০২:০৭:৩৮ অপরাহ্ন, বুধবার, ৯ এপ্রিল ২০২৫ ২৩ বার পড়া হয়েছে

ভিউ নিউজ ৭১ ডেস্ক :

পোশাক কারখানায় শ্রমিক অসন্তোষে টানা ৪ ঘণ্টা ঢাকা-সিলেট মহাসড়ক অবরোধ ছিলো। এসময় আইনশৃঙ্খলা বাহিনীর সদস্যদের সঙ্গে শ্রমিকদের ধাওয়া-পাল্টা ধাওয়ায় ঢাকা-সিলেট মহাসড়ক রণক্ষেত্রে পরিণত হয়। শৃঙ্খলা বাহিনীর সদস্যসহ প্রায় শতাধিক শ্রমিক আহত হয় বলে জানা গেছে। নারায়ণগঞ্জের রূপগঞ্জে বিনা কারণে ছাঁটাই, বোনাস ও বকেয়া বেতনের দাবিতে রবিনটেক্স রপ্তানিমুখী এই অবরোধ করেন।

বুধবার (৯ এপ্রিল) সকাল থেকে দিনব্যাপী সিলেট-ঢাকা মহাসড়কে আউখাবো রবিনটেক্স পোশাক কারখানার সামনে এ ঘটনা ঘটে। ঢাকা-সিলেট মহাসড়কের বিক্ষোভের কারণে দীর্ঘ যানজটের সৃষ্টি হয়। ভোগান্তিতে পড়তে হয় সাধারণ মানুষকে।

বিক্ষুব্ধ ও প্রত্যক্ষদর্শীরা জানান, রূপগঞ্জ উপজেলার আউখাবো এলাকায় রবিনটেক্স নামে রপ্তানিমুখী পোশাক কারখানায় প্রায় ৮-১০ হাজার শ্রমিক কাজ করেন। ঈদুল ফিতর উপলক্ষে গত ২৯ মার্চ থেকে ৭ এপ্রিল পর্যন্ত পোশাক পোশাক কারখানাটি বন্ধ রাখা হয়৷ বন্ধ দেওয়ার আগে গত ২৮ মার্চ বিনা নোটিশে কোনো প্রকার কারণ ছাড়াই ৬৫ জন শ্রমিককে ছাঁটাই করা হয়। এছাড়া পোশাক কারখানা বন্ধ দেওয়ার আগে শ্রমিকদের ৬৫ শতাংশ বোনাস দেওয়ার কথা থাকলেও ৫০ শতাংশ মালিকপক্ষ প্রদান করেন। এছাড়া এক মাসের বেতন প্রদানের কথা থাকলেও ২০ দিনের বেতন দিয়েই কারখানা বন্ধ ঘোষণা করা হয়। গত ৮ এপ্রিল মঙ্গলবার কারখানা খোলার দিন শ্রমিকরা মালিকপক্ষকে ছাঁটাইয়ের কারণ, বেতন ও বোনাস দেওয়ার কথা বললে মালিকপক্ষ নানা রকম টালবাহানা শুরু করেন। বুধবার সকালে আগের মতোই তাদের দাবি নিয়ে কারখানার ভেতরে অবস্থান করছিল। এসময় আইনশৃঙ্খলা বাহিনীর সদস্যরা তাদের কাজে যোগ দেওয়ার কথা বললে তাদের সঙ্গে বাকবিতণ্ডা হয়। পরে শ্রমিকরা আইনশৃঙ্খলা বাহিনীর সদস্যদের পানির বোতল নিক্ষেপ করে। পরে আইনশৃঙ্খলা বাহিনীর তাদেরকে লাঠিচার্জ করে সরিয়ে দেন। পরে শ্রমিকরা কারখানার বাইরে গিয়ে ঢাকা-সিলেট মহাসড়কে বিদ্যুতের খুঁটি ফেলে মহাসড়ক অবরোধ করে রাখেন।

এসময় মহাসড়ক থেকে শ্রমিকদের সরাতে গেলে আইনশৃঙ্খলা বাহিনীর সঙ্গে শ্রমিকদের দফায় দফায় সংঘর্ষের ঘটনা ঘটে। এসময় শ্রমিকরা আইনশৃঙ্খলা বাহিনী সদস্যদের লক্ষ্য করে ইটপাটকেল নিক্ষেপ করে। এসময় ধাওয়া-পাল্টা ধাওয়ায় আইনশৃঙ্খলা বাহিনীর সদস্য সেনাবাহিনীর লেফটেনেন্ট মুবীন, সৈনিক বাঁধন, সোহরাব, মেহেদী, শ্রমিকদের মাঝে শাফিয়া, রুনা, মলিনা, মাজেদা, রুপুসহ শতাধিক আহত হয়েছেন। আহতদের উদ্ধার করে বিভিন্ন হাসপাতালে নেওয়া হয়েছে।

আন্দোলনরত কয়েকজন শ্রমিক বলেন, ঈদের আগে আমাদের ৬৫ জন শ্রমিককে বিনা নোটিশে ছাঁটাই করে দেয় কর্তৃপক্ষ। আমরা আমাদের দাবি জানিয়ে আসছিলাম। আমরা কারখানার ভেতরে শান্তিপূর্ণভাবে আমাদের দাবি আদায়ের চেষ্টা করছিলাম। কিন্তু আইনশৃঙ্খলা বাহিনীর সদস্যরা আমাদের ওপর লাঠিচার্জ শুরু করেন। এতে নারীসহ আমাদের ৬৫ জন শ্রমিক আহত হয়। আহতদের উদ্ধার করে বিভিন্ন হাসপাতালে নেওয়া হয়েছে।

ভুলতা পুলিশ ফাঁড়ির পরিদর্শক মিজানুর রহমান মিজান বলেন, রবিনটেক্স গার্মেন্টস কর্মীদের মাঝে অসন্তোষ দেখা দেয়। এসময় আইনশৃঙ্খলা বাহিনী তাদেরকে কাজে যোগ দেওয়ার কথা বললে তারা আইনশৃঙ্খলা বাহিনীর সদস্যদের ওপর হামলা চালায়। এতে আইনশৃঙ্খলা বাহিনীর সদস্য কয়েকজন আহত হয়েছেন।

এ ব্যাপারে জেলা নারায়ণগঞ্জ সার্কেলের সহকারী পুলিশ সুপার (এএসপি) মেহেদী হাসান জানান, বর্তমানে পরিস্থিতি কিছুটা স্বাভাবিক রয়েছে। আমার গাড়ির ভাঙচুর করা হয়েছে৷ আমাদের প্রায় ১০ জন পুলিশ সদস্য আহত হয়েছেন। শ্রমিকরা এখনো বিক্ষিপ্তভাবে বিভিন্ন জায়গায় অবস্থান করছেন। এখনো পরিস্থিতি পুরোপুরি নিয়ন্ত্রণে আসেনি। আমরা পরিস্থিতি নিয়ন্ত্রণে কাজ করে যাচ্ছি।

নিউজটি শেয়ার করুন

আপনার মন্তব্য

Your email address will not be published. Required fields are marked *

আপনার ইমেইল এবং অন্যান্য তথ্য সংরক্ষন করুন

আপলোডকারীর তথ্য
ট্যাগস :

হঠাৎ রণক্ষেত্র সিলেট-ঢাকা মহাসড়ক

আপডেট সময় : ০২:০৭:৩৮ অপরাহ্ন, বুধবার, ৯ এপ্রিল ২০২৫

ভিউ নিউজ ৭১ ডেস্ক :

পোশাক কারখানায় শ্রমিক অসন্তোষে টানা ৪ ঘণ্টা ঢাকা-সিলেট মহাসড়ক অবরোধ ছিলো। এসময় আইনশৃঙ্খলা বাহিনীর সদস্যদের সঙ্গে শ্রমিকদের ধাওয়া-পাল্টা ধাওয়ায় ঢাকা-সিলেট মহাসড়ক রণক্ষেত্রে পরিণত হয়। শৃঙ্খলা বাহিনীর সদস্যসহ প্রায় শতাধিক শ্রমিক আহত হয় বলে জানা গেছে। নারায়ণগঞ্জের রূপগঞ্জে বিনা কারণে ছাঁটাই, বোনাস ও বকেয়া বেতনের দাবিতে রবিনটেক্স রপ্তানিমুখী এই অবরোধ করেন।

বুধবার (৯ এপ্রিল) সকাল থেকে দিনব্যাপী সিলেট-ঢাকা মহাসড়কে আউখাবো রবিনটেক্স পোশাক কারখানার সামনে এ ঘটনা ঘটে। ঢাকা-সিলেট মহাসড়কের বিক্ষোভের কারণে দীর্ঘ যানজটের সৃষ্টি হয়। ভোগান্তিতে পড়তে হয় সাধারণ মানুষকে।

বিক্ষুব্ধ ও প্রত্যক্ষদর্শীরা জানান, রূপগঞ্জ উপজেলার আউখাবো এলাকায় রবিনটেক্স নামে রপ্তানিমুখী পোশাক কারখানায় প্রায় ৮-১০ হাজার শ্রমিক কাজ করেন। ঈদুল ফিতর উপলক্ষে গত ২৯ মার্চ থেকে ৭ এপ্রিল পর্যন্ত পোশাক পোশাক কারখানাটি বন্ধ রাখা হয়৷ বন্ধ দেওয়ার আগে গত ২৮ মার্চ বিনা নোটিশে কোনো প্রকার কারণ ছাড়াই ৬৫ জন শ্রমিককে ছাঁটাই করা হয়। এছাড়া পোশাক কারখানা বন্ধ দেওয়ার আগে শ্রমিকদের ৬৫ শতাংশ বোনাস দেওয়ার কথা থাকলেও ৫০ শতাংশ মালিকপক্ষ প্রদান করেন। এছাড়া এক মাসের বেতন প্রদানের কথা থাকলেও ২০ দিনের বেতন দিয়েই কারখানা বন্ধ ঘোষণা করা হয়। গত ৮ এপ্রিল মঙ্গলবার কারখানা খোলার দিন শ্রমিকরা মালিকপক্ষকে ছাঁটাইয়ের কারণ, বেতন ও বোনাস দেওয়ার কথা বললে মালিকপক্ষ নানা রকম টালবাহানা শুরু করেন। বুধবার সকালে আগের মতোই তাদের দাবি নিয়ে কারখানার ভেতরে অবস্থান করছিল। এসময় আইনশৃঙ্খলা বাহিনীর সদস্যরা তাদের কাজে যোগ দেওয়ার কথা বললে তাদের সঙ্গে বাকবিতণ্ডা হয়। পরে শ্রমিকরা আইনশৃঙ্খলা বাহিনীর সদস্যদের পানির বোতল নিক্ষেপ করে। পরে আইনশৃঙ্খলা বাহিনীর তাদেরকে লাঠিচার্জ করে সরিয়ে দেন। পরে শ্রমিকরা কারখানার বাইরে গিয়ে ঢাকা-সিলেট মহাসড়কে বিদ্যুতের খুঁটি ফেলে মহাসড়ক অবরোধ করে রাখেন।

এসময় মহাসড়ক থেকে শ্রমিকদের সরাতে গেলে আইনশৃঙ্খলা বাহিনীর সঙ্গে শ্রমিকদের দফায় দফায় সংঘর্ষের ঘটনা ঘটে। এসময় শ্রমিকরা আইনশৃঙ্খলা বাহিনী সদস্যদের লক্ষ্য করে ইটপাটকেল নিক্ষেপ করে। এসময় ধাওয়া-পাল্টা ধাওয়ায় আইনশৃঙ্খলা বাহিনীর সদস্য সেনাবাহিনীর লেফটেনেন্ট মুবীন, সৈনিক বাঁধন, সোহরাব, মেহেদী, শ্রমিকদের মাঝে শাফিয়া, রুনা, মলিনা, মাজেদা, রুপুসহ শতাধিক আহত হয়েছেন। আহতদের উদ্ধার করে বিভিন্ন হাসপাতালে নেওয়া হয়েছে।

আন্দোলনরত কয়েকজন শ্রমিক বলেন, ঈদের আগে আমাদের ৬৫ জন শ্রমিককে বিনা নোটিশে ছাঁটাই করে দেয় কর্তৃপক্ষ। আমরা আমাদের দাবি জানিয়ে আসছিলাম। আমরা কারখানার ভেতরে শান্তিপূর্ণভাবে আমাদের দাবি আদায়ের চেষ্টা করছিলাম। কিন্তু আইনশৃঙ্খলা বাহিনীর সদস্যরা আমাদের ওপর লাঠিচার্জ শুরু করেন। এতে নারীসহ আমাদের ৬৫ জন শ্রমিক আহত হয়। আহতদের উদ্ধার করে বিভিন্ন হাসপাতালে নেওয়া হয়েছে।

ভুলতা পুলিশ ফাঁড়ির পরিদর্শক মিজানুর রহমান মিজান বলেন, রবিনটেক্স গার্মেন্টস কর্মীদের মাঝে অসন্তোষ দেখা দেয়। এসময় আইনশৃঙ্খলা বাহিনী তাদেরকে কাজে যোগ দেওয়ার কথা বললে তারা আইনশৃঙ্খলা বাহিনীর সদস্যদের ওপর হামলা চালায়। এতে আইনশৃঙ্খলা বাহিনীর সদস্য কয়েকজন আহত হয়েছেন।

এ ব্যাপারে জেলা নারায়ণগঞ্জ সার্কেলের সহকারী পুলিশ সুপার (এএসপি) মেহেদী হাসান জানান, বর্তমানে পরিস্থিতি কিছুটা স্বাভাবিক রয়েছে। আমার গাড়ির ভাঙচুর করা হয়েছে৷ আমাদের প্রায় ১০ জন পুলিশ সদস্য আহত হয়েছেন। শ্রমিকরা এখনো বিক্ষিপ্তভাবে বিভিন্ন জায়গায় অবস্থান করছেন। এখনো পরিস্থিতি পুরোপুরি নিয়ন্ত্রণে আসেনি। আমরা পরিস্থিতি নিয়ন্ত্রণে কাজ করে যাচ্ছি।