শীত নিয়ে যে বার্তা দিল আবহাওয়া অফিস

- আপডেট সময় : ০৭:২৮:০০ পূর্বাহ্ন, শনিবার, ২০ জানুয়ারী ২০২৪ ৮০ বার পড়া হয়েছে
ভিউ নিউজ ৭১ : অনলাইন সংস্করণ
শীত নিয়ে যে বার্তা দিল আবহাওয়া অফিস-গত বুধবার রাত ও বৃহস্পতিবার সারা দিন দেশের বিভিন্ন অঞ্চলে বৃষ্টি হয়। এর পর শুক্রবার সারা দিন রাজধানীসহ সারা দেশে শীতের তীব্রতা অনেকটা কমে যায়। শুক্রবার রাজধানীতে রোদ ঝলমলে আবহাওয়া বিরাজ করেছে। তাতে মনে হয়েছে শীত মনে হয় বিদায় নিল। তবে তাপমাত্রা কমে আজ শনিবার থেকে দেশের কিছু অঞ্চলে নতুন করে শৈত্যপ্রবাহ দেখা দিতে পারে বলে জানিয়েছে আবহাওয়া অফিস। সেই সঙ্গে আজ থেকে সারা দেশে শীতের অনুভূতি আরও বাড়তে পারে।
গতকাল শুক্রবার সন্ধ্যায় আবহাওয়া অধিদপ্তরের বুলেটিনের (বার্তা) তথ্য অনুযায়ী, সারা দেশে আজ রাতের তাপমাত্রা সামান্য কমতে পারে। এ ছাড়া আজ মধ্যরাত থেকে আগামীকাল রোববার সকাল পর্যন্ত দেশের নদী অববাহিকায় মাঝারি থেকে ঘন কুয়াশা থাকতে পারে। অন্য অঞ্চলেও হালকা থেকে মাঝারি মাত্রায় কুয়াশা পড়তে পারে।রাজশাহী, যশোর ও চুয়াডাঙ্গা জেলা এবং রংপুর বিভাগের বেশ কিছু এলাকায় আজ থেকে শৈত্যপ্রবাহ দেখা দিতে পারে।
আবহাওয়াবিদ মো. ওমর ফারুক বলেন, আর বৃষ্টি হওয়ার সম্ভাবনা নেই। মেঘও কেটে গেছে। মেঘ কেটে যাওয়ায় তাপমাত্রা কমবে এবং তা অব্যাহত থাকতে পারে। ফলে সারা দেশেই শীতের অনুভূতি বাড়বে। এছাড়া রাজশাহী, যশোর ও চুয়াডাঙ্গা জেলা এবং রংপুর বিভাগের বেশ কিছু এলাকায় আজ থেকে শৈত্যপ্রবাহ দেখা দিতে পারে।
মৌসুমের স্বাভাবিক লঘুচাপ দক্ষিণ বঙ্গোপসাগরে অবস্থান করছে। ফলে শৈত্যপ্রবাহ আরও বেশ কয়েক দিন থাকতে পারে। সেই সঙ্গে পাঁচ বিভাগের দু–এক জায়গায় বৃষ্টি হতে পারে। রাতে তাপমাত্রা আরও কমতে পারে। এ ছাড়া আগামী মঙ্গলবার পর্যন্ত তাপমাত্রা বৃদ্ধির সম্ভাবনা কম। অর্থাৎ শীত থাকছে আরও কয়েক দিন।
শুক্রবার সকাল ৯টায় আবহাওয়াবিদ মো. হাফিজুর রহমানের সই করা এক বিজ্ঞপ্তিতে এই তথ্য জানানো হয়েছে।বিবৃতিতে বলা হয়েছে, অস্থায়ীভাবে আংশিক মেঘলা আকাশসহ সারা দেশের আবহাওয়া প্রধানত শুষ্ক থাকতে পারে। মধ্যরাত থেকে সকাল পর্যন্ত দেশের নদী-অববাহিকায় মাঝারি থেকে ঘন কুয়াশা এবং কিছু কিছু এলাকায় হালকা থেকে মাঝারি ধরনের কুয়াশা পড়তে পারে। কুয়াশার কারণে বিমান চলাচল, অভ্যন্তরীণ নৌপরিবহণ এবং সড়ক যোগাযোগে সাময়িকভাবে বিঘ্ন ঘটতে পারে।
বিবৃতিতে আরও বলা হয়েছে, সারা দেশে রাতের তাপমাত্রা এক থেকে ২ ডিগ্রি কমতে পারে। তবে দিনের তাপমাত্রা কিছুটা বৃদ্ধি পেতে পারে। এ ছাড়া দেশের উত্তর-পশ্চিমাঞ্চলের কোথাও কোথাও দিনেও শৈতপ্রবাহ বিরাজ করতে পারে। আবহাওয়া অধিদপ্তর বলছে, শুক্রবার শৈত্যপ্রবাহের এলাকা আরও বাড়তে পারে। আর সেই সঙ্গে পাঁচ বিভাগের দু–এক জায়গায় বৃষ্টি হতে পারে। আগামী মঙ্গলবার পর্যন্ত তাপমাত্রা আর বৃদ্ধির সম্ভাবনা কম।
দক্ষিণের বিভিন্ন স্থানে বৃষ্টি যে হবে তা আগেই জানিয়েছিল আবহাওয়া অফিস। বৃহস্পতিবার ভোর থেকেই দক্ষিণের বিভিন্ন এলাকায় শুরু হয় বৃষ্টি। এর মধ্যে সবচেয়ে বেশি বৃষ্টি হয় যশোরে, ২২ মিলিমিটার। আর চুয়াডাঙ্গায় ২০ ও সাতক্ষীরায় ১২ মিলিমিটার বৃষ্টি হয়।বৃষ্টির কারণে এসব এলাকায় মানুষের দুর্ভোগ বাড়ে। গত বুধবার সন্ধ্যায় মাধ্যমিক বিদ্যালয়গুলোর শিক্ষা কার্যক্রম বন্ধ ঘোষণা করা হয় চুয়াডাঙ্গায়। প্রাথমিক বিদ্যালয়গুলো বন্ধ রাখার কোনো ঘোষণা না এলেও মাধ্যমিক বিদ্যালয় বন্ধের প্রভাব পড়ে সেখানে। এ ছাড়া শীতের কারণে চার জেলায় ছুটি ঘোষণা করা হয়েছে।
সারা দেশে মৃদু শৈত্যপ্রবাহ বয়ে যাচ্ছে। তবে পাবনা, চুয়াডাঙ্গা, বরিশাল ও মৌলভীবাজার জেলাসমূহের বয়ে যাচ্ছে শৈত্যপ্রবাহ। এর মধ্যে বুধবার রাতে চুয়াডাঙ্গায় গুঁড়িগুঁড়ি বৃষ্টি হয়েছে। এদিন সন্ধ্যা ৬টা থেকে পরবর্তী ৭২ ঘণ্টার আবহাওয়ার পূর্বাভাসে এ তথ্য জানানো হয়েছে।এছাড়া খুলনা ও বরিশাল বিভাগের অনেক জায়গায় এবং ঢাকা ও চট্টগ্রাম বিভাগের কিছু কিছু জায়গায় এবং রংপুর ও রাজশাহী বিভাগের দু-এক জায়গায় বৃষ্টি অথবা বজ্রসহ বৃষ্টি হতে পারে বলেও জানিয়েছে আবহাওয়া অধিদপ্তর।
চুয়াডাঙ্গা আবহাওয়া অফিসের জ্যেষ্ঠ পর্যবেক্ষক রাকিবুল হাসান জানান, বৃহস্পতিবার সকাল ৬টায় চুয়াডাঙ্গা জেলার সর্বনিম্ন তাপমাত্রা রেকর্ড করা হয় ১১ দশমিক ৫ ডিগ্রি সেলসিয়াস। ভোর ৫টা ৫০ মিনিট থেকে চুয়াডাঙ্গা সদর এলাকায় বৃষ্টিপাত শুরু হয়, যা অব্যাহত রয়েছে। তাপমাত্রা কম এবং বৃষ্টি অব্যাহত থাকার কারণে শীত অনুভূত হচ্ছে বেশি।
আবহাওয়াবিদ ড. মো. আবুল কালাম মল্লিকের সই করা ওই আবহাওয়া বার্তায় সিনপটিক অবস্থা সম্পর্কে বলা হয়েছে, উপমহাদেশীয় উচ্চচাপ বলয়ের বর্ধিতাংশ পশ্চিমবঙ্গ ও তৎসংলগ্ন বাংলাদেশের উত্তরপশ্চিমাঞ্চল পর্যন্ত বিস্তৃত রয়েছে। মৌসুমের স্বাভাবিক লঘুচাপ দক্ষিণ বঙ্গোপসাগরে অবস্থান করছে।
বৃহস্পতিবার (১৮ জানুয়ারি) সন্ধ্যা ৬টা থেকে শুক্রবার (১৯ জানুয়ারি) সন্ধ্যা ৬টা পর্যন্ত পূর্বাভাসে বলা হয়েছে, বরিশাল ও চট্টগ্রাম বিভাগের দু-এক জায়গায় বৃষ্টি বা বজ্রসহ বৃষ্টি হতে পারে। এছাড়া দেশের অন্যত্র অস্থায়ীভাবে আংশিক মেঘলা আকাশসহ আবহাওয়া প্রধানত শুষ্ক থাকতে পারে।
বাংলাদেশ আবহাওয়া অধিদপ্তরের (বিএমডি) পূর্বাভাসে আরও জানানো হয়েছে, উপমহাদেশীয় উচ্চচাপ বলয়ের বর্ধিতাংশ পশ্চিমবঙ্গ ও তার কাছাকাছি বাংলাদেশের উত্তর-পশ্চিমাঞ্চল পর্যন্ত বিস্তৃত রয়েছে। মৌসুমের স্বাভাবিক লঘুচাপ দক্ষিণ বঙ্গোপসাগরে অবস্থান করছে। বুধবার রাত থেকে বৃহস্পতিবার সকাল পর্যন্ত সারা দেশে মাঝারি থেকে ঘন কুয়াশা পড়তে পারে। কোথাও কোথাও তা দুপুর পর্যন্ত অব্যাহত থাকতে পারে। কুয়াশার কারণে বিমান চলাচল ও সড়ক এবং অভ্যন্তরীণ নৌ-যোগাযোগে সাময়িকভাবে বিঘ্ন ঘটতে পারে।