ঢাকা ০৩:২৪ অপরাহ্ন, বুধবার, ১৯ মার্চ ২০২৫, ৫ চৈত্র ১৪৩১ বঙ্গাব্দ
সংবাদ শিরোনাম ::
সংবাদমাধ্যমের স্বাধীনতা এখনো আক্রমণের মুখে: সম্পাদক পরিষদ হিউম্যান রাইটস ওয়াচ ট্রাষ্টের মাসবপ্যাপী সেহরি বিতরণ চলমান নারী ও শিশু নির্যাতন দমন আইন সংশোধন হচ্ছে- অস্ত্রসহ আটক বিএনপি নেতার ছেলে এডভোকেট গাফফার ও বাবলুর সুস্থতা কামনায় সিলেট জেলা স্বেচ্ছাসেবক দলের দোয়া ভোর রাতে সিলেটে গোয়াইনঘাটে যুবক খু ন বিশ্বনাথে শিশু নির্যাতন, ইউপি চেয়ারম্যান’সহ ৫ জনের বিরুদ্ধে মা ম লা ৫০কোটি টাকার ভারতীয় চিনির চালান আটক বিশ্বনাথে ঘুষ নেওয়ার অভিযােগে এস আই আলীম উদ্দিন ক্লো জ নারকেল তেলের সঙ্গে যা মেশালে কমবে চু ল পড়া প্রখ্যাত ফিলিস্তিনি সাংবাদিক লতিফেহকে গ্রেফতার করল ইসরাইল অনলাইন এডিটরস অ্যালায়েন্স ও জেসিআই ঢাকা ইউনাইটেডের সমঝোতা চুক্তি

মানবতাবিরোধী অপরাধে ৭ জনের রায় বৃহস্পতিবার

প্রতিনিধির নাম
  • আপডেট সময় : ০৫:৩৪:৫৩ অপরাহ্ন, মঙ্গলবার, ২৮ নভেম্বর ২০২৩ ৫৯ বার পড়া হয়েছে

ভিউ নিউজ ৭১ প্রতিবেদন : অনলাইন সংস্করণ

মুক্তিযুদ্ধের সময় হত্যা, গণহত্যাসহ মানবতাবিরোধী অপরাধের মামলায় বাগেরহাটের খান আকরামসহ সাতজনের বিরুদ্ধে রায় ঘোষণার জন্য আগামী বৃহস্পতিবার ৩০ নভেম্বর দিন ধার্য করেছেন আন্তর্জাতিক অপরাধ ট্রাইব্যুনাল।ট্রাইব্যুনালের চেয়ারম্যান বিচারপতি মো. শাহিনুর ইসলামের নেতৃত্বে তিন সদস্যের বিচারিক প্যানেল রায় ঘোষণার দিন ধার্য করে আদেশ দেন।

ট্রাইব্যুনালের অন্য দুই সদস্য হলেন- বিচারপতি আবু আহমেদ জমাদার ও বিচারপতি কেএম হাফিজুল আলম। আন্তর্জাতিক অপরাধ ট্রাইব্যুলের রেজিস্ট্রার মেজবাহ উদ্দিন আহমেদ আজ বিষয়টি সাংবাদিকদের জানান।এ মামলায় মোট আসামি ছিলেন নয়জন। তাদের মধ্যে ২ জন মারা যাওয়ায় এখন আসামি সাতজন। তাদের মধ্যে খান আকরাম হোসেন, মকবুল মোল্লা ও শেখ মো. উকিল উদ্দিন কারাবন্দি রয়েছেন। বাকি ৪ জন পলাতক। পলাতক আসামিরা হলেন-খান আশরাফ আলী, রুস্তম আলী মোল্লা, শেখ ইদ্রিস ও শেখ রফিকুল ইসলাম বাবুল। 

আসামিদের বিরুদ্ধে সাত অভিযোগ
প্রথম অভিযোগ:
 ১৯৭১ সালের ২৬ মে ১৫-২০ জন রাজাকার ও ২৫-৩০ জন পাকিস্তান দখলদার সেনা সদস্যসহ বাগেরহাট জেলার মোড়লগঞ্জ থানার চাপড়ী ও তেলিগাতীতে নিরীহ নিরস্ত্র মুক্তিকামী মানুষদের ওপর অবৈধভাবে হামলা চালিয়ে ৪০-৫০টি বাড়ির সমস্ত মালামাল লুণ্ঠন করে, বাড়িঘর অগ্নিসংযোগে সম্পূর্ণ ধ্বংস করে, দুইজন নিরীহ নিরস্ত্র মানুষকে হত্যার উদ্দেশ্যে গুরুতর জখম করে এবং ১০ জন নিরীহ নিরস্ত্র স্বাধীনতার পক্ষের মানুষকে গুলি করে হত্যা করে।

দ্বিতীয় অভিযোগ: ১৯৭১ সালের ৭ জুলাই আসামিরা বাগেরহাট জেলার কচুয়া থানার হাজরাখালী ও বৈখালী রামনগরে হামলা চালিয়ে অবৈধভাবে নিরীহ নিরস্ত্র স্বাধীনতার পক্ষের চারজনকে আটক ও অপহরণ করে আবাদের খালের ব্রিজে হত্যা করে লাশ খালে ফেলে দেয়।

তৃতীয় অভিযোগ: ১৯৭১ সালের ১৩ নভেম্বর বাগেরহাটের মোড়লগঞ্জ থানার ঢুলিগাতী গ্রামে হামলা চালিয়ে দুইজন নিরস্ত্র মুক্তিযোদ্ধাকে অবৈধ আটক, নির্যাতন ও গুলি করে হত্যা করে।

চতুর্থ অভিযোগ: ১৯৭১ সালের ১৭ নভেস্বর বাগেরহাট জেলার কচুয়া থানার বিলকুল ও বিছট গ্রামে হামলা চালিয়ে চারজন নিরীহ নিরস্ত্র স্বাধীনতার পক্ষের লোককে আটক ও অপহরণ করে কাঠালতলা ব্রিজে এনে নির্যাতনের পর গুলি করে হত্যা করে লাশ নদীতে ফেলে দেয়।

পঞ্চম অভিযোগ: ১৯৭১ সালের ৩০ নভেম্বর বাগেরহাটের কচুয়া থানার বিলকুল গ্রাম হতে নিরস্ত্র মুক্তিযোদ্ধা মুনসুর আলী নকীবকে অন্যায় আটক ও অপহরণ করে মোড়লগঞ্জ থানার দৈবজ্ঞহাটির গরুর হাঁটির ব্রিজের উপর নিয়ে নির্যাতনের পর গুলি করে হত্যা করে।

ষষ্ঠ অভিযোগ: ১৯৭১ সালের ১৬ অক্টোবর কচুয়া থানার উদানখালী গ্রামে হামলা চালিয়ে স্বাধীনতার পক্ষের নিরীহ নিরস্ত্র উকিল উদ্দিন মাঝিকে হত্যা করে এবং তার মেয়েকে কচুয়া রাজাকার ক্যাম্পে নিয়ে যায়। কচুয়া রাজাকার ক্যাম্প ও আশপাশের রাজাকার ক্যাম্পে উকিল উদ্দিন মাঝির মেয়েসহ চারজনকে পালাক্রমে ধর্ষণ করে। ১৬ ডিসেম্বর বিকাল ৪টায় বাংলাদেশ দখলদার মুক্ত হলে মুক্তিযোদ্ধারা রাজাকার ক্যাম্প তল্লাশি করে উকিল উদ্দিন মাঝির মেয়েকে উদ্ধার করে বাড়িতে পৌঁছে দেন।

সপ্তম অভিযোগ: কচুয়া থানার গজালিয়া বাজারে হামলা চালিয়ে হিন্দু সম্প্রদায়ের নিরীহ নিরস্ত্র শ্রীধাম কর্মকার ও তার স্ত্রীকে নির্যাতন করতে থাকে। আসামিরা শ্রীধামকে হত্যা করে তার স্ত্রীকে কচুয়া রাজাকার ক্যাম্পে আটকে রাখে। সেখানে শ্রীধামের স্ত্রীসহ আটক চারজনকে পালাক্রমে ধর্ষণ করে। প্রায় এক মাস শারীরিক নির্যাতনের পর শ্রীধামের স্ত্রী অসুস্থ হয়ে পড়লে হাসপাতালে ভর্তি করা হয় এবং তিনি সেখান থেকে পালিয়ে যান।

নিউজটি শেয়ার করুন

আপনার মন্তব্য

Your email address will not be published. Required fields are marked *

আপনার ইমেইল এবং অন্যান্য তথ্য সংরক্ষন করুন

আপলোডকারীর তথ্য
ট্যাগস :

মানবতাবিরোধী অপরাধে ৭ জনের রায় বৃহস্পতিবার

আপডেট সময় : ০৫:৩৪:৫৩ অপরাহ্ন, মঙ্গলবার, ২৮ নভেম্বর ২০২৩

ভিউ নিউজ ৭১ প্রতিবেদন : অনলাইন সংস্করণ

মুক্তিযুদ্ধের সময় হত্যা, গণহত্যাসহ মানবতাবিরোধী অপরাধের মামলায় বাগেরহাটের খান আকরামসহ সাতজনের বিরুদ্ধে রায় ঘোষণার জন্য আগামী বৃহস্পতিবার ৩০ নভেম্বর দিন ধার্য করেছেন আন্তর্জাতিক অপরাধ ট্রাইব্যুনাল।ট্রাইব্যুনালের চেয়ারম্যান বিচারপতি মো. শাহিনুর ইসলামের নেতৃত্বে তিন সদস্যের বিচারিক প্যানেল রায় ঘোষণার দিন ধার্য করে আদেশ দেন।

ট্রাইব্যুনালের অন্য দুই সদস্য হলেন- বিচারপতি আবু আহমেদ জমাদার ও বিচারপতি কেএম হাফিজুল আলম। আন্তর্জাতিক অপরাধ ট্রাইব্যুলের রেজিস্ট্রার মেজবাহ উদ্দিন আহমেদ আজ বিষয়টি সাংবাদিকদের জানান।এ মামলায় মোট আসামি ছিলেন নয়জন। তাদের মধ্যে ২ জন মারা যাওয়ায় এখন আসামি সাতজন। তাদের মধ্যে খান আকরাম হোসেন, মকবুল মোল্লা ও শেখ মো. উকিল উদ্দিন কারাবন্দি রয়েছেন। বাকি ৪ জন পলাতক। পলাতক আসামিরা হলেন-খান আশরাফ আলী, রুস্তম আলী মোল্লা, শেখ ইদ্রিস ও শেখ রফিকুল ইসলাম বাবুল। 

আসামিদের বিরুদ্ধে সাত অভিযোগ
প্রথম অভিযোগ:
 ১৯৭১ সালের ২৬ মে ১৫-২০ জন রাজাকার ও ২৫-৩০ জন পাকিস্তান দখলদার সেনা সদস্যসহ বাগেরহাট জেলার মোড়লগঞ্জ থানার চাপড়ী ও তেলিগাতীতে নিরীহ নিরস্ত্র মুক্তিকামী মানুষদের ওপর অবৈধভাবে হামলা চালিয়ে ৪০-৫০টি বাড়ির সমস্ত মালামাল লুণ্ঠন করে, বাড়িঘর অগ্নিসংযোগে সম্পূর্ণ ধ্বংস করে, দুইজন নিরীহ নিরস্ত্র মানুষকে হত্যার উদ্দেশ্যে গুরুতর জখম করে এবং ১০ জন নিরীহ নিরস্ত্র স্বাধীনতার পক্ষের মানুষকে গুলি করে হত্যা করে।

দ্বিতীয় অভিযোগ: ১৯৭১ সালের ৭ জুলাই আসামিরা বাগেরহাট জেলার কচুয়া থানার হাজরাখালী ও বৈখালী রামনগরে হামলা চালিয়ে অবৈধভাবে নিরীহ নিরস্ত্র স্বাধীনতার পক্ষের চারজনকে আটক ও অপহরণ করে আবাদের খালের ব্রিজে হত্যা করে লাশ খালে ফেলে দেয়।

তৃতীয় অভিযোগ: ১৯৭১ সালের ১৩ নভেম্বর বাগেরহাটের মোড়লগঞ্জ থানার ঢুলিগাতী গ্রামে হামলা চালিয়ে দুইজন নিরস্ত্র মুক্তিযোদ্ধাকে অবৈধ আটক, নির্যাতন ও গুলি করে হত্যা করে।

চতুর্থ অভিযোগ: ১৯৭১ সালের ১৭ নভেস্বর বাগেরহাট জেলার কচুয়া থানার বিলকুল ও বিছট গ্রামে হামলা চালিয়ে চারজন নিরীহ নিরস্ত্র স্বাধীনতার পক্ষের লোককে আটক ও অপহরণ করে কাঠালতলা ব্রিজে এনে নির্যাতনের পর গুলি করে হত্যা করে লাশ নদীতে ফেলে দেয়।

পঞ্চম অভিযোগ: ১৯৭১ সালের ৩০ নভেম্বর বাগেরহাটের কচুয়া থানার বিলকুল গ্রাম হতে নিরস্ত্র মুক্তিযোদ্ধা মুনসুর আলী নকীবকে অন্যায় আটক ও অপহরণ করে মোড়লগঞ্জ থানার দৈবজ্ঞহাটির গরুর হাঁটির ব্রিজের উপর নিয়ে নির্যাতনের পর গুলি করে হত্যা করে।

ষষ্ঠ অভিযোগ: ১৯৭১ সালের ১৬ অক্টোবর কচুয়া থানার উদানখালী গ্রামে হামলা চালিয়ে স্বাধীনতার পক্ষের নিরীহ নিরস্ত্র উকিল উদ্দিন মাঝিকে হত্যা করে এবং তার মেয়েকে কচুয়া রাজাকার ক্যাম্পে নিয়ে যায়। কচুয়া রাজাকার ক্যাম্প ও আশপাশের রাজাকার ক্যাম্পে উকিল উদ্দিন মাঝির মেয়েসহ চারজনকে পালাক্রমে ধর্ষণ করে। ১৬ ডিসেম্বর বিকাল ৪টায় বাংলাদেশ দখলদার মুক্ত হলে মুক্তিযোদ্ধারা রাজাকার ক্যাম্প তল্লাশি করে উকিল উদ্দিন মাঝির মেয়েকে উদ্ধার করে বাড়িতে পৌঁছে দেন।

সপ্তম অভিযোগ: কচুয়া থানার গজালিয়া বাজারে হামলা চালিয়ে হিন্দু সম্প্রদায়ের নিরীহ নিরস্ত্র শ্রীধাম কর্মকার ও তার স্ত্রীকে নির্যাতন করতে থাকে। আসামিরা শ্রীধামকে হত্যা করে তার স্ত্রীকে কচুয়া রাজাকার ক্যাম্পে আটকে রাখে। সেখানে শ্রীধামের স্ত্রীসহ আটক চারজনকে পালাক্রমে ধর্ষণ করে। প্রায় এক মাস শারীরিক নির্যাতনের পর শ্রীধামের স্ত্রী অসুস্থ হয়ে পড়লে হাসপাতালে ভর্তি করা হয় এবং তিনি সেখান থেকে পালিয়ে যান।