ঢাকা ০৭:২৬ পূর্বাহ্ন, বৃহস্পতিবার, ২০ নভেম্বর ২০২৫, ৬ অগ্রহায়ণ ১৪৩২ বঙ্গাব্দ
সংবাদ শিরোনাম ::
সংবাদমাধ্যমের স্বাধীনতা এখনো আক্রমণের মুখে: সম্পাদক পরিষদ হিউম্যান রাইটস ওয়াচ ট্রাষ্টের মাসবপ্যাপী সেহরি বিতরণ চলমান আজ বিশ্ব পুরুষ দিবস ৫ খাবারে কিডনি থাকবে সুস্থ দুবাইয়ে ঐশ্বর্য-সালমান-সানিয়া-শাহরুখদের বিলাসবহুল আবাসন, দাম কত? দুই কিংবদন্তিকে ছাড়িয়ে যাওয়ার পথে মুশফিক নির্বাচন উৎসবমুখর করতে সেনাবাহিনীর সহায়তা দরকার: প্রধান উপদেষ্টা জাতিসংঘ প্রতিবেদনকে ঐতিহাসিক ঘোষণা দিয়ে হাইকোর্টের পূর্ণাঙ্গ রায় প্রকাশ হবীগঞ্জ নবীগঞ্জে থামছেনা টিলা কাটা হবিগঞ্জ রোগীর মৃত্যুকে কেন্দ্র করে নার্সকে মারধরের ঘটনায় কর্মবিরতী সুনামগঞ্জে তাহিরপুরে অবৈধভাবে বালু উত্তোলন বন্ধে ইউএন অভিযান দ্বীপের শেষ বিদায়ে অশ্রুধারা

দ্বীপের শেষ বিদায়ে অশ্রুধারা

প্রতিনিধির নাম
  • আপডেট সময় : ০২:০০:৪৯ অপরাহ্ন, বুধবার, ১৯ নভেম্বর ২০২৫ ৪ বার পড়া হয়েছে

নিজস্ব প্রতিনিধি :

এক সপ্তাহের প্রতীক্ষা শেষে দেশে ফিরল অকালপ্রয়াত কনটেন্ট ক্রিয়েটর দ্বীপঙ্কর দাস দ্বীপের মরদেহ। বুধবার (১৯ নভেম্বর) ভোরে সিলেটের দক্ষিণ সুরমার গোপালটিলায় পৌঁছানোর পরই চারদিকে নেমে আসে শোকের ছায়া। প্রিয় মুখের নিথর দেহ দেখে স্বজন, প্রতিবেশী ও ভক্ত-অনুরাগীরা কান্নায় ভেঙে পড়েন।

গোপালটিলায় নির্মিত বেদীতে মরদেহ রাখা হলে একে একে ফুলেল শ্রদ্ধা জানান পরিবার, এলাকাবাসী, সাংস্কৃতিক সংগঠন ও রাজনৈতিক অঙ্গনের প্রতিনিধি। উপস্থিত সবার অনুরোধে কফিন উন্মুক্ত করা হলে আরও বেদনাবিধুর পরিবেশ সৃষ্টি হয়।

বক্তারা স্মৃতিচারণ করতে গিয়ে বলেন, দ্বীপ ছিলেন সিলেটের তরুণদের অনুপ্রেরণা-একজন প্রাণবন্ত, প্রতিভাবান কনটেন্ট নির্মাতা। হাসি-আনন্দ ছড়িয়ে দেওয়া ছিল তার স্বভাব। অল্প বয়সেই মানুষের ভালোবাসা অর্জন করার যে বিরল ক্ষমতা তার ছিল, তা তাকে সিলেটের সীমানা ছাড়িয়ে জনপ্রিয় করেছে। জকিগঞ্জ, কানাইঘাটসহ বিভিন্ন এলাকা থেকে মানুষ তাকে শেষবারের মতো দেখতে ছুটে আসেন।

তার প্রতি এ অগাধ ভালোবাসার পেছনে ছিল সৌম্য আচরণ, বড়দের প্রতি সম্মান এবং ছোটদের প্রতি স্নেহ। অহংকারহীন এই তরুণ মাত্র ২১ বছর বয়সেই মানুষের হৃদয়ে জায়গা করে নেন।

সবচেয়ে বেদনাদায়ক দৃশ্য ছিল তার বাবা দিব্যজ্যোতি দাসের অবস্থায়। নিস্তব্ধ, পাথর হয়ে যাওয়া এই পিতার চোখেও ছিল অশ্রুসিক্ত আবেদন-‘আমার ছেলের জন্য দোয়া করবেন।’

গোপালটিলায় শ্রদ্ধা নিবেদন শেষে মরদেহ নেওয়া হয় হবিগঞ্জের বাহুবল থানার পুটিজুড়ি গ্রামে। সেখানেও মানুষের ঢল নামে। এলাকার সর্বস্তরের মানুষ  শেষবার দেখতে ভিড় করেন। বন্ধু-স্বজনরা স্মৃতি ফিরে স্মৃতি শুনতে শুনতে আবেগে ভেঙে পড়েন। দুপুর একটার দিকে তার শেষকৃত্য সম্পন্ন হয়।

এর আগে মঙ্গলবার বিকেলে ঢাকার হজরত শাহজালাল আন্তর্জাতিক বিমানবন্দরে মরদেহ গ্রহণ করেন পরিবারের সদস্যরা। মালয়েশিয়ায় বুকের ব্যথা অনুভব করলে তাকে কুয়ালালামপুরের একটি হাসপাতালে নেওয়া হয়, কিন্তু বুধবার ভোর ৫টায় তিনি শেষ নিঃশ্বাস ত্যাগ করেন। উচ্চশিক্ষার জন্য মাসখানেক আগেই তিনি সেখানে গিয়েছিলেন। দুই ভাইয়ের মধ্যে তিনি ছিলেন বড়।

অকালে নিভে যাওয়া এই তরুণ প্রতিভার মৃত্যুতে শোকের আবরণ নেমে এসেছে সিলেটজুড়ে।

নিউজটি শেয়ার করুন

আপনার মন্তব্য

Your email address will not be published. Required fields are marked *

আপনার ইমেইল এবং অন্যান্য তথ্য সংরক্ষন করুন

আপলোডকারীর তথ্য
ট্যাগস :

দ্বীপের শেষ বিদায়ে অশ্রুধারা

আপডেট সময় : ০২:০০:৪৯ অপরাহ্ন, বুধবার, ১৯ নভেম্বর ২০২৫

নিজস্ব প্রতিনিধি :

এক সপ্তাহের প্রতীক্ষা শেষে দেশে ফিরল অকালপ্রয়াত কনটেন্ট ক্রিয়েটর দ্বীপঙ্কর দাস দ্বীপের মরদেহ। বুধবার (১৯ নভেম্বর) ভোরে সিলেটের দক্ষিণ সুরমার গোপালটিলায় পৌঁছানোর পরই চারদিকে নেমে আসে শোকের ছায়া। প্রিয় মুখের নিথর দেহ দেখে স্বজন, প্রতিবেশী ও ভক্ত-অনুরাগীরা কান্নায় ভেঙে পড়েন।

গোপালটিলায় নির্মিত বেদীতে মরদেহ রাখা হলে একে একে ফুলেল শ্রদ্ধা জানান পরিবার, এলাকাবাসী, সাংস্কৃতিক সংগঠন ও রাজনৈতিক অঙ্গনের প্রতিনিধি। উপস্থিত সবার অনুরোধে কফিন উন্মুক্ত করা হলে আরও বেদনাবিধুর পরিবেশ সৃষ্টি হয়।

বক্তারা স্মৃতিচারণ করতে গিয়ে বলেন, দ্বীপ ছিলেন সিলেটের তরুণদের অনুপ্রেরণা-একজন প্রাণবন্ত, প্রতিভাবান কনটেন্ট নির্মাতা। হাসি-আনন্দ ছড়িয়ে দেওয়া ছিল তার স্বভাব। অল্প বয়সেই মানুষের ভালোবাসা অর্জন করার যে বিরল ক্ষমতা তার ছিল, তা তাকে সিলেটের সীমানা ছাড়িয়ে জনপ্রিয় করেছে। জকিগঞ্জ, কানাইঘাটসহ বিভিন্ন এলাকা থেকে মানুষ তাকে শেষবারের মতো দেখতে ছুটে আসেন।

তার প্রতি এ অগাধ ভালোবাসার পেছনে ছিল সৌম্য আচরণ, বড়দের প্রতি সম্মান এবং ছোটদের প্রতি স্নেহ। অহংকারহীন এই তরুণ মাত্র ২১ বছর বয়সেই মানুষের হৃদয়ে জায়গা করে নেন।

সবচেয়ে বেদনাদায়ক দৃশ্য ছিল তার বাবা দিব্যজ্যোতি দাসের অবস্থায়। নিস্তব্ধ, পাথর হয়ে যাওয়া এই পিতার চোখেও ছিল অশ্রুসিক্ত আবেদন-‘আমার ছেলের জন্য দোয়া করবেন।’

গোপালটিলায় শ্রদ্ধা নিবেদন শেষে মরদেহ নেওয়া হয় হবিগঞ্জের বাহুবল থানার পুটিজুড়ি গ্রামে। সেখানেও মানুষের ঢল নামে। এলাকার সর্বস্তরের মানুষ  শেষবার দেখতে ভিড় করেন। বন্ধু-স্বজনরা স্মৃতি ফিরে স্মৃতি শুনতে শুনতে আবেগে ভেঙে পড়েন। দুপুর একটার দিকে তার শেষকৃত্য সম্পন্ন হয়।

এর আগে মঙ্গলবার বিকেলে ঢাকার হজরত শাহজালাল আন্তর্জাতিক বিমানবন্দরে মরদেহ গ্রহণ করেন পরিবারের সদস্যরা। মালয়েশিয়ায় বুকের ব্যথা অনুভব করলে তাকে কুয়ালালামপুরের একটি হাসপাতালে নেওয়া হয়, কিন্তু বুধবার ভোর ৫টায় তিনি শেষ নিঃশ্বাস ত্যাগ করেন। উচ্চশিক্ষার জন্য মাসখানেক আগেই তিনি সেখানে গিয়েছিলেন। দুই ভাইয়ের মধ্যে তিনি ছিলেন বড়।

অকালে নিভে যাওয়া এই তরুণ প্রতিভার মৃত্যুতে শোকের আবরণ নেমে এসেছে সিলেটজুড়ে।