ঢাকা ০৫:২৫ পূর্বাহ্ন, মঙ্গলবার, ১৬ সেপ্টেম্বর ২০২৫, ৩১ ভাদ্র ১৪৩২ বঙ্গাব্দ
সংবাদ শিরোনাম ::
সংবাদমাধ্যমের স্বাধীনতা এখনো আক্রমণের মুখে: সম্পাদক পরিষদ হিউম্যান রাইটস ওয়াচ ট্রাষ্টের মাসবপ্যাপী সেহরি বিতরণ চলমান শাহী ঈদগাহে অভিযান, আটক ৬ সিলেটে ৪ লক্ষ ৭৮ হাজার টাকার চোরাই পণ্য জব্দ সিলেটের কিছু হোটেলে অনৈতিক ও অসামাজিক কর্মকাণ্ড চলছে, যা তরুণ প্রজন্মকে বিপথগামী করছে এবং শহরের ভাবমূর্তি ক্ষুণ্ন করছে সিলেটে আন্তর্জাতিক প্রবীণ দিবস উদযাপনে প্রস্তুতি সভা অনুষ্ঠিত ঈদে মীলাদুন্নবী সা. উপলক্ষে সিলেট এম সি কলেজ তালামীযের মুবারক র‌্যালী সম্পন্ন হবিগঞ্জ রশিদপুর থেকে প্রতিদিন ৮ মিলিয়ন ঘনফুট গ্যাস যাচ্ছে জাতীয় গ্রিডে যুক্ত গ্র্যাজুয়েটরা যাতে  মানবসম্পদে পরিণত হয় এই লক্ষে গবেষণা চলছে: সিকৃবি ভিসি সিলেটে জুয়াখেলা থেকে গ্রেফতার ৭ বৃন্দাবন টিভি পরিবারের উদ্যোগে গীতা একাডেমিতে উপহার প্রদান সিলেট সীমান্তে ভারতীয় গরু, মদ ও বিভিন্ন পণ্য জব্দ

সাংবাদিক-রুহুল আমীন তালুকদারের ছোট বোনের ওয়ালিমাহ আনন্দময় সুন্নতে বোনের স্বামীর সাথে

প্রতিনিধির নাম
  • আপডেট সময় : ০২:৪২:০৭ অপরাহ্ন, শুক্রবার, ৫ সেপ্টেম্বর ২০২৫ ১০ বার পড়া হয়েছে

সিলেট জেলা প্রতিনিধিঃ

সিলেটের ফেঞ্চুগঞ্জ উপজেলার উত্তর কুশিয়ারা ইউনিয়নের কটালপুর (ডন্ডিপাড়া) গ্রামের জনাব, সুলতান মিয়ার ছেলে, আলমগীর আহমেদের জীবনের প্রথম সূচনাপর্বের ওয়ালিমাহ وليمة আনন্দময় সুন্নতে ছোট বোনের স্বামীর সাথে স্মৃতিতে জড়িয়েছেন সাংবাদিক- রুহুল আমীন তালুকদার।

তিনি বলেন, সামাজিক জীবনের প্রথম বলয় হলো পরিবার ,পরিবারের মূল স্তম্ভ হলো দম্পতি দাম্পত্য জীবনের সূচনাপর্ব আর এসূচনাপর্ব হলো বিয়ে হাদিস শরিফে রয়েছে, যে বিবাহ করল তার ইমান পূর্ণ হলো, (আত-তারগিব ওয়াত তারহিব- ১৯১৬) অন্য হাদিসে আছে রাসুলুল্লাহ (সাঃ) বলেন, বিবাহ আমার সুন্নত তরিকা, যে আমার এই সুন্নত তরিকা হতে বিমুখ হলো সে আমার দলভুক্ত উম্মত নয়, (ইবনু মাজাহ- ১৮৪৬)।

তিনি আরও বলেন, ইসলাম বিয়েকে ইবাদত রূপে গণ্য করেছে এবং এর জন্য বিশেষ সুন্নত পদ্ধতি রয়েছে, যথা- বিয়ে সাদাসিধে ও অনাড়ম্বর হওয়া সুন্নত, যা অপচয়- অপব্যয় কুসংস্কার ও অপসংস্কৃতিমুক্ত হবে এবং তাতে যৌতুকের শর্ত বা সামর্থ্যের অধিক মহর শর্ত থাকবে না, (তাবারানি আউসাত, হাদিস- ৩৬১২)।

সৎ ও খোদাভীরু পাত্র-পাত্রীর সন্ধান করা, বিয়ের আগে কোনো বাহানা বা সুযোগে পাত্রী দেখা সম্ভব হলে দেখে নেওয়া মুস্তাহাব, কিন্তু আনুষ্ঠানিকভাবে ঘটা করে পাত্রী দেখানোর যে প্রথা আমাদের সমাজে প্রচলিত তা সুন্নতের পরিপন্থী ও পরিত্যাজ্য, (বুখারি- ৫০৯০, ইমদাদুল ফাতাওয়া- খণ্ড ৪, পৃষ্ঠা- ২০০)। সম্ভব হলে শাওয়াল মাসে এবং জুমার দিনে মসজিদে বিয়ে সম্পাদন করা সুন্নত তবে সব মাসের যেকোনো দিনে বা রাতে বিয়ে সম্পাদন করা জায়েজ আছে, (মুসলিম: ১৪২৩; বায়হাকি: ১৪৬৯৯)।

ইসলামি বিধিবিধান মানুষের জীবনকে সহজ করেছে যুগলজীবন পরিক্রমার সূচনাকেও করেছে অধিকতর সহজ, কনেপক্ষের জন্য কোনো ব্যয়ের পথই রাখেনি আর বরপক্ষের জন্যও দিয়েছে সহজ পথ, হাদিস শরিফে রয়েছে যে বিয়েতে খরচ কম সে বিয়ে বেশি বরকতপূর্ণ।

ইসলামে বিয়ের নিয়মে বরযাত্রী নামে কোনো কিছু নেই, তাই শর্তারোপ করে বরযাত্রীর নামে বরের সঙ্গে অধিক সংখ্যক লোকজন নিয়ে যাওয়া এবং কনের বাড়িতে মেহমান হয়ে কনের বাবার ওপর চাপ সৃষ্টি করা আজকের সমাজের একটি জঘন্য কুপ্রথা যা সম্পূর্ণ রূপে বর্জন করা আবশ্যক। (মুসনাদে আহমাদ- ২০৭২২, বুখারি- ২৬৯৭) অনুরূপভাবে ছেলের পক্ষ থেকে যৌতুক চাওয়া হারাম। (আহসানুল ফাতাওয়া-খণ্ড ৫, পৃষ্ঠা- ১৩)

সামর্থ্য অনুযায়ী মহর ধার্য করা বাঞ্ছনীয়। (আবু দাউদ- ২১০৬) আকদ অনুষ্ঠানে উপস্থিত লোকজনের মধ্যে খেজুর বণ্টন করা সুন্নত। (বুখারি-৫১৪৭) বাসররাতে স্ত্রীর কপালের ওপরের চুল হাতে নিয়ে এই দোয়া পড়া, (আল্লাহুম্মা ইন্নি আসআলুকা খয়রাহা ওয়া খয়রা মা জাবালতাহা আলাইহা- ওয়া আউযুবিকা মিন শার্রিহা ওয়া মিন শার্রি মা জাবালতাহা আলাইহা)।

অর্থাৎ (হে আল্লাহ) আমি আপনার কাছে প্রার্থনা করি এর কল্যাণের এবং এর ওপর অর্পিত কল্যাণের; আর আমি পানাহ চাই এর অকল্যাণ হতে এবং এতে সমর্পিত অকল্যাণ হতে। (আবু দাউদ- ২১৬০) একান্ত অন্তরঙ্গতা ও স্বামী- স্ত্রীসুলভ আচরণের আগে এই দোয়া পড়া সুন্নত, (বিসমিল্লাহি আল্লাহুম্মা জান্নিবনাশ শায়তান- ওয়া জান্নিবিশ শায়তানা মা রজাকতানা) অর্থ আল্লাহর নামে- হে আল্লাহ। আমাদের শয়তানের কবল হতে রক্ষা করুন এবং আমাদের যা দান করবেন, তাকেও শয়তানের অনিষ্ট হতে হেফাজতে রাখুন। (মুসলিম-১৪৩৪)

বাসররাতের পর আত্মীয়স্বজন, বন্ধুবান্ধব, শুভাকাঙ্ক্ষী, প্রতিবেশী এবং গরিব-মিসকিনদের তৌফিক অনুযায়ী দাওয়াত করে খাওয়ানো সুন্নত। (মুসলিম- ১৪২৭) একে আরবিতে ওয়ালিমাহ وليمة এবং বাংলায় বউভাত বলে, রাসুলুল্লাহ (সাঃ) বলেন, তুমি ওয়ালিমাহ وليمة করো একটি বকরি দিয়ে হলেও।

(বুখারি-২০৪৮, মিশকাত ৩২১০)। বাসররাতের পরের দিন ওয়ালিমাহ وليمة করাই সুন্নত, রাসুলুল্লাহ (সাঃ) জয়নব বিনতে জাহাশ (রাঃ) এর সঙ্গে বাসররাত অতিবাহিত করার পর ওয়ালিমাহ وليمة করেছিলেন, (বুখারি- ৫১৭০)। ওয়ালিমাহ وليمة এক থেকে তিন দিন পর্যন্তও দীর্ঘায়িত করা যায়, রাসুলুল্লাহ (সাঃ) ছাফিয়াহ (রাঃ) কে বিয়ের পর তিন দিন ধরে ওয়ালিমাহ وليمة খাইয়েছিলেন, (মুসনাদে আবু ইয়ালা-৩৮৩৪, সনদ হাসান)।

ওয়ালিমাহ وليمة তথা বউভাতে অতিরিক্ত ব্যয় করা কিংবা খুব উন্নত মানের খানাপিনার ব্যবস্থা করা জরুরি নয়, বরং সামর্থ্য অনুযায়ী আয়োজন করাই সুন্নত, যে ওয়ালিমাহ وليمة তে শুধু ধনী ও দুনিয়াদার লোকদের দাওয়াত দেওয়া হয়, দীনদার ও গরিব- মিসকিনদের দাওয়াত দেওয়া হয় না, সে ওয়ালিমাহ وليمة কে হাদিস শরিফে নিকৃষ্টতম ওয়লিমাহ وليمة বলে আখ্যায়িত করা হয়েছে। (আবু দাউদ-৩৭৫৪) বিয়েতে মেয়েপক্ষের কোনো খরচ করার কথা নয়, এরপরও স্বেচ্ছায় যেটা করা হয়, সেটা সৌজন্যমূলক আপ্যায়ন, (বুখারি-৬০১৮)।

রাসুল (সাঃ) নিজে ওয়ালিমাহ وليمة করেছেন এবং সাহাবীদের করতে বলেছেন। তাই ওয়ালিমাহ وليمة করা বা বউভাত খাওয়ানো এক গুরুত্বপূর্ণ সুন্নত আমল। আনাস (রাঃ) বলেন, নবী (সাঃ) আবদুর রহমান ইবনে আওফের গায়েহলুদ রঙ্গের চিহ্ন দেখে জিজ্ঞেস করলেন, এটা কি তিনি বললেন, আমি এক খেজুর আঁটির ওজন স্বর্ণ দিয়ে একজন মহিলাকে বিয়ে করেছি। রাসুল (সাঃ) বললেন, ‘আল্লাহ তোমার বিয়েতে বরকত দান করুক। একটি ছাগল দ্বারা হলেও তুমি ওয়ালিমাহ وليمة করো, (বুখারি-৫১৫৫, মুসলিম। মিশকাত- ৩২১০)

ইসলামি বিধিবিধান মানুষের জীবনকে সহজ করেছে, যুগলজীবন পরিক্রমার সূচনাকেও করেছে অধিকতর সহজ। কনেপক্ষের জন্য কোনো ব্যয়ের পথই রাখেনি আর বরপক্ষের জন্যও দিয়েছে সহজ পথ। হাদিস শরিফে রয়েছে, যে বিয়েতে খরচ কম, সে বিয়ে বেশি বরকতপূর্ণ হবে, তাই সাংবাদিক-রুহুল আমীন তালুকদার তার ছোট বোনের এ’ওয়ালিমাহ وليمة ‘তে যান।

নিউজটি শেয়ার করুন

আপনার মন্তব্য

Your email address will not be published. Required fields are marked *

আপনার ইমেইল এবং অন্যান্য তথ্য সংরক্ষন করুন

আপলোডকারীর তথ্য
ট্যাগস :

সাংবাদিক-রুহুল আমীন তালুকদারের ছোট বোনের ওয়ালিমাহ আনন্দময় সুন্নতে বোনের স্বামীর সাথে

আপডেট সময় : ০২:৪২:০৭ অপরাহ্ন, শুক্রবার, ৫ সেপ্টেম্বর ২০২৫

সিলেট জেলা প্রতিনিধিঃ

সিলেটের ফেঞ্চুগঞ্জ উপজেলার উত্তর কুশিয়ারা ইউনিয়নের কটালপুর (ডন্ডিপাড়া) গ্রামের জনাব, সুলতান মিয়ার ছেলে, আলমগীর আহমেদের জীবনের প্রথম সূচনাপর্বের ওয়ালিমাহ وليمة আনন্দময় সুন্নতে ছোট বোনের স্বামীর সাথে স্মৃতিতে জড়িয়েছেন সাংবাদিক- রুহুল আমীন তালুকদার।

তিনি বলেন, সামাজিক জীবনের প্রথম বলয় হলো পরিবার ,পরিবারের মূল স্তম্ভ হলো দম্পতি দাম্পত্য জীবনের সূচনাপর্ব আর এসূচনাপর্ব হলো বিয়ে হাদিস শরিফে রয়েছে, যে বিবাহ করল তার ইমান পূর্ণ হলো, (আত-তারগিব ওয়াত তারহিব- ১৯১৬) অন্য হাদিসে আছে রাসুলুল্লাহ (সাঃ) বলেন, বিবাহ আমার সুন্নত তরিকা, যে আমার এই সুন্নত তরিকা হতে বিমুখ হলো সে আমার দলভুক্ত উম্মত নয়, (ইবনু মাজাহ- ১৮৪৬)।

তিনি আরও বলেন, ইসলাম বিয়েকে ইবাদত রূপে গণ্য করেছে এবং এর জন্য বিশেষ সুন্নত পদ্ধতি রয়েছে, যথা- বিয়ে সাদাসিধে ও অনাড়ম্বর হওয়া সুন্নত, যা অপচয়- অপব্যয় কুসংস্কার ও অপসংস্কৃতিমুক্ত হবে এবং তাতে যৌতুকের শর্ত বা সামর্থ্যের অধিক মহর শর্ত থাকবে না, (তাবারানি আউসাত, হাদিস- ৩৬১২)।

সৎ ও খোদাভীরু পাত্র-পাত্রীর সন্ধান করা, বিয়ের আগে কোনো বাহানা বা সুযোগে পাত্রী দেখা সম্ভব হলে দেখে নেওয়া মুস্তাহাব, কিন্তু আনুষ্ঠানিকভাবে ঘটা করে পাত্রী দেখানোর যে প্রথা আমাদের সমাজে প্রচলিত তা সুন্নতের পরিপন্থী ও পরিত্যাজ্য, (বুখারি- ৫০৯০, ইমদাদুল ফাতাওয়া- খণ্ড ৪, পৃষ্ঠা- ২০০)। সম্ভব হলে শাওয়াল মাসে এবং জুমার দিনে মসজিদে বিয়ে সম্পাদন করা সুন্নত তবে সব মাসের যেকোনো দিনে বা রাতে বিয়ে সম্পাদন করা জায়েজ আছে, (মুসলিম: ১৪২৩; বায়হাকি: ১৪৬৯৯)।

ইসলামি বিধিবিধান মানুষের জীবনকে সহজ করেছে যুগলজীবন পরিক্রমার সূচনাকেও করেছে অধিকতর সহজ, কনেপক্ষের জন্য কোনো ব্যয়ের পথই রাখেনি আর বরপক্ষের জন্যও দিয়েছে সহজ পথ, হাদিস শরিফে রয়েছে যে বিয়েতে খরচ কম সে বিয়ে বেশি বরকতপূর্ণ।

ইসলামে বিয়ের নিয়মে বরযাত্রী নামে কোনো কিছু নেই, তাই শর্তারোপ করে বরযাত্রীর নামে বরের সঙ্গে অধিক সংখ্যক লোকজন নিয়ে যাওয়া এবং কনের বাড়িতে মেহমান হয়ে কনের বাবার ওপর চাপ সৃষ্টি করা আজকের সমাজের একটি জঘন্য কুপ্রথা যা সম্পূর্ণ রূপে বর্জন করা আবশ্যক। (মুসনাদে আহমাদ- ২০৭২২, বুখারি- ২৬৯৭) অনুরূপভাবে ছেলের পক্ষ থেকে যৌতুক চাওয়া হারাম। (আহসানুল ফাতাওয়া-খণ্ড ৫, পৃষ্ঠা- ১৩)

সামর্থ্য অনুযায়ী মহর ধার্য করা বাঞ্ছনীয়। (আবু দাউদ- ২১০৬) আকদ অনুষ্ঠানে উপস্থিত লোকজনের মধ্যে খেজুর বণ্টন করা সুন্নত। (বুখারি-৫১৪৭) বাসররাতে স্ত্রীর কপালের ওপরের চুল হাতে নিয়ে এই দোয়া পড়া, (আল্লাহুম্মা ইন্নি আসআলুকা খয়রাহা ওয়া খয়রা মা জাবালতাহা আলাইহা- ওয়া আউযুবিকা মিন শার্রিহা ওয়া মিন শার্রি মা জাবালতাহা আলাইহা)।

অর্থাৎ (হে আল্লাহ) আমি আপনার কাছে প্রার্থনা করি এর কল্যাণের এবং এর ওপর অর্পিত কল্যাণের; আর আমি পানাহ চাই এর অকল্যাণ হতে এবং এতে সমর্পিত অকল্যাণ হতে। (আবু দাউদ- ২১৬০) একান্ত অন্তরঙ্গতা ও স্বামী- স্ত্রীসুলভ আচরণের আগে এই দোয়া পড়া সুন্নত, (বিসমিল্লাহি আল্লাহুম্মা জান্নিবনাশ শায়তান- ওয়া জান্নিবিশ শায়তানা মা রজাকতানা) অর্থ আল্লাহর নামে- হে আল্লাহ। আমাদের শয়তানের কবল হতে রক্ষা করুন এবং আমাদের যা দান করবেন, তাকেও শয়তানের অনিষ্ট হতে হেফাজতে রাখুন। (মুসলিম-১৪৩৪)

বাসররাতের পর আত্মীয়স্বজন, বন্ধুবান্ধব, শুভাকাঙ্ক্ষী, প্রতিবেশী এবং গরিব-মিসকিনদের তৌফিক অনুযায়ী দাওয়াত করে খাওয়ানো সুন্নত। (মুসলিম- ১৪২৭) একে আরবিতে ওয়ালিমাহ وليمة এবং বাংলায় বউভাত বলে, রাসুলুল্লাহ (সাঃ) বলেন, তুমি ওয়ালিমাহ وليمة করো একটি বকরি দিয়ে হলেও।

(বুখারি-২০৪৮, মিশকাত ৩২১০)। বাসররাতের পরের দিন ওয়ালিমাহ وليمة করাই সুন্নত, রাসুলুল্লাহ (সাঃ) জয়নব বিনতে জাহাশ (রাঃ) এর সঙ্গে বাসররাত অতিবাহিত করার পর ওয়ালিমাহ وليمة করেছিলেন, (বুখারি- ৫১৭০)। ওয়ালিমাহ وليمة এক থেকে তিন দিন পর্যন্তও দীর্ঘায়িত করা যায়, রাসুলুল্লাহ (সাঃ) ছাফিয়াহ (রাঃ) কে বিয়ের পর তিন দিন ধরে ওয়ালিমাহ وليمة খাইয়েছিলেন, (মুসনাদে আবু ইয়ালা-৩৮৩৪, সনদ হাসান)।

ওয়ালিমাহ وليمة তথা বউভাতে অতিরিক্ত ব্যয় করা কিংবা খুব উন্নত মানের খানাপিনার ব্যবস্থা করা জরুরি নয়, বরং সামর্থ্য অনুযায়ী আয়োজন করাই সুন্নত, যে ওয়ালিমাহ وليمة তে শুধু ধনী ও দুনিয়াদার লোকদের দাওয়াত দেওয়া হয়, দীনদার ও গরিব- মিসকিনদের দাওয়াত দেওয়া হয় না, সে ওয়ালিমাহ وليمة কে হাদিস শরিফে নিকৃষ্টতম ওয়লিমাহ وليمة বলে আখ্যায়িত করা হয়েছে। (আবু দাউদ-৩৭৫৪) বিয়েতে মেয়েপক্ষের কোনো খরচ করার কথা নয়, এরপরও স্বেচ্ছায় যেটা করা হয়, সেটা সৌজন্যমূলক আপ্যায়ন, (বুখারি-৬০১৮)।

রাসুল (সাঃ) নিজে ওয়ালিমাহ وليمة করেছেন এবং সাহাবীদের করতে বলেছেন। তাই ওয়ালিমাহ وليمة করা বা বউভাত খাওয়ানো এক গুরুত্বপূর্ণ সুন্নত আমল। আনাস (রাঃ) বলেন, নবী (সাঃ) আবদুর রহমান ইবনে আওফের গায়েহলুদ রঙ্গের চিহ্ন দেখে জিজ্ঞেস করলেন, এটা কি তিনি বললেন, আমি এক খেজুর আঁটির ওজন স্বর্ণ দিয়ে একজন মহিলাকে বিয়ে করেছি। রাসুল (সাঃ) বললেন, ‘আল্লাহ তোমার বিয়েতে বরকত দান করুক। একটি ছাগল দ্বারা হলেও তুমি ওয়ালিমাহ وليمة করো, (বুখারি-৫১৫৫, মুসলিম। মিশকাত- ৩২১০)

ইসলামি বিধিবিধান মানুষের জীবনকে সহজ করেছে, যুগলজীবন পরিক্রমার সূচনাকেও করেছে অধিকতর সহজ। কনেপক্ষের জন্য কোনো ব্যয়ের পথই রাখেনি আর বরপক্ষের জন্যও দিয়েছে সহজ পথ। হাদিস শরিফে রয়েছে, যে বিয়েতে খরচ কম, সে বিয়ে বেশি বরকতপূর্ণ হবে, তাই সাংবাদিক-রুহুল আমীন তালুকদার তার ছোট বোনের এ’ওয়ালিমাহ وليمة ‘তে যান।