ঢাকা ০৬:২৪ অপরাহ্ন, শনিবার, ১৯ জুলাই ২০২৫, ৪ শ্রাবণ ১৪৩২ বঙ্গাব্দ
সংবাদ শিরোনাম ::
সংবাদমাধ্যমের স্বাধীনতা এখনো আক্রমণের মুখে: সম্পাদক পরিষদ হিউম্যান রাইটস ওয়াচ ট্রাষ্টের মাসবপ্যাপী সেহরি বিতরণ চলমান প্রাথমিকে প্রধান শিক্ষকের শূন্যপদে দ্রু ত নিয়োগের নির্দেশ ১৫ টাকা দরে চাল পাবে ৫৫ লাখ পরিবার গাড়ি থামিয়ে ঘুষ আদায়, ওসিসহ ৬ পুলিশ প্রত্যাহার মৌলভীবাজার কুলাউড়ায় চাঁদাবাজি – সন্ত্রাস দমনে কঠোর অবস্থানে পুলিশ ঢাকায় বিমানের সাথে বৈঠক করলেন সিলেটের ব্যবসায়ীরা তিনমাস পর বিমানের সিলেট-ম্যানচেস্টার ফ্লাইট চালু সিলেট শাহ মাদানী ঈদগাহ ইকোপার্ক সড়কের ঢালাই কাজের ভিত্তিপ্রস্তর স্থাপন শ্রীমঙ্গলে টাকার জন্য কলেজ ছাত্র খুন – গ্রেফতার ২ সিলেট সীমান্তে কোটি টাকার চোরাই পণ্য জব্দ ৭ লাখ টাকা নেওয়ার ভিডিও ভাইরাল, যা বললেন এনসিপি নেতা

স্ক্যাবিস কী? এই রোগ থেকে মুক্তির উপায়

প্রতিনিধির নাম
  • আপডেট সময় : ০১:১৫:০৫ অপরাহ্ন, রবিবার, ১৮ মে ২০২৫ ৩০ বার পড়া হয়েছে

ভিউ নিউজ ৭১ ডেস্ক :

চুলকানি বলতে খুব পরিচিত একটি স্বাস্থ্য সমস্যাকেই বুঝি আমরা। কিন্তু এই সাধারণ সমস্যাটিই জীবন করে তোলে দুর্বিষহ। বর্তমানে দেশের অসংখ্য মানুষ ভুগছেন স্ক্যাবিস নামে এক ধরনের চুলকানিতে। যা বাংলায় খোসপাঁচড়া নামেও পরিচিত। সারকোপ্টেস স্ক্যাবিই নামের একটি ক্ষুদ্র বরোজিং মাইট দ্বারা সৃষ্ট হয় স্ক্যাবিস। মাইটের গর্তের জায়গায় তীব্র চুলকানি অনুভব করেন স্ক্যাবিসে আক্রান্ত ব্যক্তিরা।

স্ক্যাবিস কি:  
স্ক্যাবিস হলো সারকোপ্টেস স্ক্যাবি নামক ক্ষুদ্র মাইট দ্বারা সৃষ্ট একটি সংক্রমণ। শরীরের সেই অংশে চুলকানি ও ফুসকুড়ি সৃষ্টি হতে পারে সেসব স্থানে এই মাইটগুলো জমে থাকে। এই মাইটগুলো ত্বকের ভেতর ডিম পাড়ে। ফলে সংক্রমণটি ক্রমাগত চুলকানি এবং তীব্র ফুসকুড়ি সৃষ্টি করে।

স্ক্যাবিস একটি অত্যন্ত সংক্রামক সংক্রমণ এবং এর মাধ্যমে সহজেই ছড়িয়ে পড়তে পারে। রাতে চুলকানির ইচ্ছা তীব্র হতে পারে। স্ক্যাবিস নিয়ে আতঙ্কিত হওয়ার কিছু নেই। খুব তাড়াতাড়ি শনাক্ত হলে এটি সহজেই চিকিত্সাযোগ্য।

স্ক্যাবিস দুই উপায়ে দ্রুত সংক্রমণ করতে পারে: 
শারীরিক স্পর্শ
সংক্রামিত পোশাক এবং বিছানাপত্র
স্ক্যাবিস সহজে ওষুধের মাধ্যমে নিরাময়যোগ্য হলেও চিকিত্সার পরে বেশ কয়েক দিন পর্যন্ত চুলকানি চলতে পারে।

শরীরের যেসব অংশে স্ক্যাবিস হয়: 
প্রাথমিক সংস্পর্শে আসার চার থেকে ছয় সপ্তাহ পর্যন্ত স্ক্যাবিসের লক্ষণগুলো পুরোপুরি প্রকাশ নাও পেতে পারে। সাধারণত ত্বকের ভাঁজে এই সমস্যা দেখা দেয়। যদিও শরীরের প্রায় সব অংশেই স্ক্যাবিস হতে পারে তবে সবচেয়ে বেশি আক্রান্ত হয় যেসব এলাকা সেগুলো হলো- 

আঙ্গুলের ফাঁক বা ভাঁজ
বগল
কোমরের চারপাশ
কব্জির ভেতর বরাবর
ভেতরের কনুইয়ের ওপর
পায়ের তলায়
স্তনের চারপাশ
পুরুষের যৌনাঙ্গের চারপাশ
নিতম্বের ওপর
হাঁটু

স্ক্যাবিস প্রতিরোধের উপায়:
স্ক্যাবিস বা খোস-পাঁচড়া প্রতিরোধের জন্য ব্যক্তিগত পরিচ্ছন্নতা বজায় রাখা জরুরি। এছাড়া আরও কিছু বিষয়ে খেয়াল রাখতে হবে। চলুন বিস্তারিত জেনে নিই- 

১. পরিচ্ছন্নতা:
স্ক্যাবিস প্রতিরোধ করতে নিয়মিত গোসল করা, কাপড়-চোপড় ধোয়া, এবং হাত ধোয়া গুরুত্বপূর্ণ। পরিষ্কার থাকার চেষ্টা করুন। নিয়মিত পোশাক পরিবর্তন করুন। অনেকে এক অন্তর্বাস টানা ৩-৪ দিন পরেন। যা মোটেও উচিত নয়।

২. আক্রান্ত ব্যক্তির সঙ্গে সরাসরি যোগাযোগ এড়িয়ে যাওয়া:
কেউ স্ক্যাবিসে আক্রান্ত হলে আক্রান্ত ব্যক্তির সঙ্গে সরাসরি শারীরিক সংস্পর্শ এড়িয়ে চলুন। সরাসরি স্পর্শে এই রোগ সবচেয়ে দ্রুত ছড়ায় 

৩. পোশাক ও বিছানার চাদর পরিষ্কার:
পোশাক, বিছানার চাদর, তোয়ালে গরম পানি (৫০° সেলসিয়াস বা তার বেশি) দিয়ে ধুয়ে রোদে শুকানো উচিত।

৪. গণ-চিকিৎসা গ্রহণ:
স্ক্যাবিসের আক্রমণ থেকে রক্ষা পেতে গণ-চিকিৎসা প্রোগ্রামে অংশ নিতে পারেন। পারমেথ্রিন বা আইভারমেক্টিন ব্যবহার করতে পারেন। তবে এই ব্যাপারে আগে অভিজ্ঞ চিকিৎসকের পরামর্শ নিন।

৫. পরিবারের অন্য সদস্যদের চিকিৎসা:
পরিবারের কেউ আক্রান্ত হলে, অন্যান্য সদস্যদেরও চিকিৎসকের পরামর্শ অনুযায়ী চিকিৎসা করানো উচিত। কারণ একজন আক্রান্ত হলে সহজেই অন্য সদস্যরা এই রোগে আক্রান্ত হতে পারেন।

৬. আসবাবপত্র পরিষ্কার করা:
কেবল নিজে পরিষ্কার থাকলেই চলবে না। স্ক্যাবিস প্রতিরোধে আসবাবপত্র ভালোভাবে পরিষ্কার করা ও জীবাণুমুক্ত করা জরুরি।

৭. অন্যান্য সতর্কতা:
সাধারণত, একজন ব্যক্তি একবার পারমেথ্রিন লাগালেই যথেষ্ট। কিছু ক্ষেত্রে দ্বিতীয়বারও ব্যবহার করা যেতে পারে। আইভারমেক্টিন একবার ব্যবহারের মাধ্যমেই ভালো ফল পাওয়া যেতে পারে। এ বিষয়ে চর্মরোগ বিশেষজ্ঞের পরামর্শ নিন।

যদি ক্রাস্টেড স্ক্যাবিস হয়, তাহলে ঘর এবং আসবাবপত্র পুঙ্খানুপুঙ্খভাবে পরিষ্কার ও জীবাণুমুক্ত করা উচিত।

(এই লেখাটি সচেতনতা সৃষ্টির উদ্দেশ্যে লেখা। কোনো ওষুধ সেবন বা ব্যবহারের পূর্বে অবশ্যই বিশেষজ্ঞ চিকিৎসকের পরামর্শ নেওয়া উচিত)

নিউজটি শেয়ার করুন

আপনার মন্তব্য

Your email address will not be published. Required fields are marked *

আপনার ইমেইল এবং অন্যান্য তথ্য সংরক্ষন করুন

আপলোডকারীর তথ্য
ট্যাগস :

স্ক্যাবিস কী? এই রোগ থেকে মুক্তির উপায়

আপডেট সময় : ০১:১৫:০৫ অপরাহ্ন, রবিবার, ১৮ মে ২০২৫

ভিউ নিউজ ৭১ ডেস্ক :

চুলকানি বলতে খুব পরিচিত একটি স্বাস্থ্য সমস্যাকেই বুঝি আমরা। কিন্তু এই সাধারণ সমস্যাটিই জীবন করে তোলে দুর্বিষহ। বর্তমানে দেশের অসংখ্য মানুষ ভুগছেন স্ক্যাবিস নামে এক ধরনের চুলকানিতে। যা বাংলায় খোসপাঁচড়া নামেও পরিচিত। সারকোপ্টেস স্ক্যাবিই নামের একটি ক্ষুদ্র বরোজিং মাইট দ্বারা সৃষ্ট হয় স্ক্যাবিস। মাইটের গর্তের জায়গায় তীব্র চুলকানি অনুভব করেন স্ক্যাবিসে আক্রান্ত ব্যক্তিরা।

স্ক্যাবিস কি:  
স্ক্যাবিস হলো সারকোপ্টেস স্ক্যাবি নামক ক্ষুদ্র মাইট দ্বারা সৃষ্ট একটি সংক্রমণ। শরীরের সেই অংশে চুলকানি ও ফুসকুড়ি সৃষ্টি হতে পারে সেসব স্থানে এই মাইটগুলো জমে থাকে। এই মাইটগুলো ত্বকের ভেতর ডিম পাড়ে। ফলে সংক্রমণটি ক্রমাগত চুলকানি এবং তীব্র ফুসকুড়ি সৃষ্টি করে।

স্ক্যাবিস একটি অত্যন্ত সংক্রামক সংক্রমণ এবং এর মাধ্যমে সহজেই ছড়িয়ে পড়তে পারে। রাতে চুলকানির ইচ্ছা তীব্র হতে পারে। স্ক্যাবিস নিয়ে আতঙ্কিত হওয়ার কিছু নেই। খুব তাড়াতাড়ি শনাক্ত হলে এটি সহজেই চিকিত্সাযোগ্য।

স্ক্যাবিস দুই উপায়ে দ্রুত সংক্রমণ করতে পারে: 
শারীরিক স্পর্শ
সংক্রামিত পোশাক এবং বিছানাপত্র
স্ক্যাবিস সহজে ওষুধের মাধ্যমে নিরাময়যোগ্য হলেও চিকিত্সার পরে বেশ কয়েক দিন পর্যন্ত চুলকানি চলতে পারে।

শরীরের যেসব অংশে স্ক্যাবিস হয়: 
প্রাথমিক সংস্পর্শে আসার চার থেকে ছয় সপ্তাহ পর্যন্ত স্ক্যাবিসের লক্ষণগুলো পুরোপুরি প্রকাশ নাও পেতে পারে। সাধারণত ত্বকের ভাঁজে এই সমস্যা দেখা দেয়। যদিও শরীরের প্রায় সব অংশেই স্ক্যাবিস হতে পারে তবে সবচেয়ে বেশি আক্রান্ত হয় যেসব এলাকা সেগুলো হলো- 

আঙ্গুলের ফাঁক বা ভাঁজ
বগল
কোমরের চারপাশ
কব্জির ভেতর বরাবর
ভেতরের কনুইয়ের ওপর
পায়ের তলায়
স্তনের চারপাশ
পুরুষের যৌনাঙ্গের চারপাশ
নিতম্বের ওপর
হাঁটু

স্ক্যাবিস প্রতিরোধের উপায়:
স্ক্যাবিস বা খোস-পাঁচড়া প্রতিরোধের জন্য ব্যক্তিগত পরিচ্ছন্নতা বজায় রাখা জরুরি। এছাড়া আরও কিছু বিষয়ে খেয়াল রাখতে হবে। চলুন বিস্তারিত জেনে নিই- 

১. পরিচ্ছন্নতা:
স্ক্যাবিস প্রতিরোধ করতে নিয়মিত গোসল করা, কাপড়-চোপড় ধোয়া, এবং হাত ধোয়া গুরুত্বপূর্ণ। পরিষ্কার থাকার চেষ্টা করুন। নিয়মিত পোশাক পরিবর্তন করুন। অনেকে এক অন্তর্বাস টানা ৩-৪ দিন পরেন। যা মোটেও উচিত নয়।

২. আক্রান্ত ব্যক্তির সঙ্গে সরাসরি যোগাযোগ এড়িয়ে যাওয়া:
কেউ স্ক্যাবিসে আক্রান্ত হলে আক্রান্ত ব্যক্তির সঙ্গে সরাসরি শারীরিক সংস্পর্শ এড়িয়ে চলুন। সরাসরি স্পর্শে এই রোগ সবচেয়ে দ্রুত ছড়ায় 

৩. পোশাক ও বিছানার চাদর পরিষ্কার:
পোশাক, বিছানার চাদর, তোয়ালে গরম পানি (৫০° সেলসিয়াস বা তার বেশি) দিয়ে ধুয়ে রোদে শুকানো উচিত।

৪. গণ-চিকিৎসা গ্রহণ:
স্ক্যাবিসের আক্রমণ থেকে রক্ষা পেতে গণ-চিকিৎসা প্রোগ্রামে অংশ নিতে পারেন। পারমেথ্রিন বা আইভারমেক্টিন ব্যবহার করতে পারেন। তবে এই ব্যাপারে আগে অভিজ্ঞ চিকিৎসকের পরামর্শ নিন।

৫. পরিবারের অন্য সদস্যদের চিকিৎসা:
পরিবারের কেউ আক্রান্ত হলে, অন্যান্য সদস্যদেরও চিকিৎসকের পরামর্শ অনুযায়ী চিকিৎসা করানো উচিত। কারণ একজন আক্রান্ত হলে সহজেই অন্য সদস্যরা এই রোগে আক্রান্ত হতে পারেন।

৬. আসবাবপত্র পরিষ্কার করা:
কেবল নিজে পরিষ্কার থাকলেই চলবে না। স্ক্যাবিস প্রতিরোধে আসবাবপত্র ভালোভাবে পরিষ্কার করা ও জীবাণুমুক্ত করা জরুরি।

৭. অন্যান্য সতর্কতা:
সাধারণত, একজন ব্যক্তি একবার পারমেথ্রিন লাগালেই যথেষ্ট। কিছু ক্ষেত্রে দ্বিতীয়বারও ব্যবহার করা যেতে পারে। আইভারমেক্টিন একবার ব্যবহারের মাধ্যমেই ভালো ফল পাওয়া যেতে পারে। এ বিষয়ে চর্মরোগ বিশেষজ্ঞের পরামর্শ নিন।

যদি ক্রাস্টেড স্ক্যাবিস হয়, তাহলে ঘর এবং আসবাবপত্র পুঙ্খানুপুঙ্খভাবে পরিষ্কার ও জীবাণুমুক্ত করা উচিত।

(এই লেখাটি সচেতনতা সৃষ্টির উদ্দেশ্যে লেখা। কোনো ওষুধ সেবন বা ব্যবহারের পূর্বে অবশ্যই বিশেষজ্ঞ চিকিৎসকের পরামর্শ নেওয়া উচিত)