ঢাকা ০৩:০৬ পূর্বাহ্ন, রবিবার, ১৮ মে ২০২৫, ৩ জ্যৈষ্ঠ ১৪৩২ বঙ্গাব্দ
সংবাদ শিরোনাম ::
সংবাদমাধ্যমের স্বাধীনতা এখনো আক্রমণের মুখে: সম্পাদক পরিষদ হিউম্যান রাইটস ওয়াচ ট্রাষ্টের মাসবপ্যাপী সেহরি বিতরণ চলমান সিলেটে রবিবার যে সব এলাকায় বিদ্যুৎ থাকবে না বিপিজেএ সিলেট বিভাগীয় কমিটির নতুন সভাপতি পাভেল ও সাধারণ সম্পাদক রাব্বী বিশ্বনাথের ১৩৩টি প্রাথমিক বিদ্যালয়ে গাছের চারা বিতরণ করলেন- ইউএনও সিলেটে চোরাই পণ্যের বিশাল চালান আটক রাষ্ট্র যদি ন্যায়বিচার নিশ্চিত না করে, তবে জনগণের নিরাপত্তা ও স্বাধীনতা চরম হুমকির মুখে পড়বে-সাকি বলিউড নায়িকাদের রূপের রহস্য ফাঁস করলেন চিকিৎসক নারীর ক্ষমতায়ন নিয়ে কানে যা বললেন বর্ষা বছরে রোনালদো পান সাড়ে তিন হাজার কোটি, উপার্জন কমেছে মেসির সাফ অনূর্ধ্ব-১৯ চ্যাম্পিয়নশিপ ভারতকে হারিয়েই শিরোপা জিততে হবে বাংলাদেশকে ফিলিস্তিন রাষ্ট্রকে স্বীকৃতি দিতে জুনে আন্তর্জাতিক সম্মেলন

সিলেট মেডিকেল বিশ্ববিদ্যালয়-উপাচার্যকে ৪৮ ঘন্টার আল্টিমেটাম

প্রতিনিধির নাম
  • আপডেট সময় : ০৩:২৪:১২ অপরাহ্ন, শনিবার, ১৯ এপ্রিল ২০২৫ ১৫ বার পড়া হয়েছে

ভিউ নিউজ ৭১ ডেস্ক :

সিলেট মেডিকেল বিশ্ববিদ্যালয়ের উপাচার্যকে ৪৮ ঘন্টার আল্টিমেটাম দিয়েছে বেতন-ভাতাবঞ্চিত কর্মকর্তা-কর্মচারীরা। শনিবার (১৯ এপ্রিল) নগরীর চৌহাট্টাস্থ বিশ্ববিদ্যালয়ের অস্থায়ী ক্যাম্পাসে সংবাদ সম্মেলন করে এ আল্টিমেটাম দেন তারা।

সংবাদ সম্মেলনে কর্মকর্তা-কর্মচারীদের পক্ষে লিখিত বক্তব্য পাঠ করেনে বিশ্ববিদ্যালয়ের প্রশাসনিক কর্মকর্তা কাজী মাসুদ।

তিনি বলেন, আমরা সিলেট মেডিকেল বিশ্ববিদ্যালয়ে ইতোপূর্বে এডহক ভিত্তিতে নিয়োগপ্রাপ্ত কর্মকর্তা-কর্মচারীগণ, ২০১৮ সালে বিশ্ববিদ্যালয় প্রতিষ্ঠার পর থেকে অত্যন্ত সূচারুভাবে যাবতীয় কার্যক্রম চালিয়ে যাচ্ছি। যার ফলশ্রুতিতে এখনো পর্যন্ত বিশ্ববিদ্যালয়ে কোন সেশন জট তৈরী হয়নি।

বিশ্ববিদ্যালয়ের সাবেক ভাইস চ্যান্সেলর অধ্যাপক ডা. এনায়েত হোসেন মুকুলের আশ্বাসে বিনা বেতন-ভাতায় আমরা কাজ করেছি। একটি দিনের জন্যও কাজ বন্ধ রাখিনি। সাবেক ভিসি আমাদেরকে একাধিকবার চাকরি স্থায়ী করার আশ্বাস দিয়েছেন। তিনি আমাদের বিশ্বাস জন্মাতে ২০২৩ সালের ১৭ জুন সম্পুর্ণ অস্থায়ী ভিত্তিতে ছয় মাসের জন্য একটি নিয়োগ বিজ্ঞপ্তি প্রকাশ করেন। এরপর ২০২৩ সালের ২৬ জুন শূণ্য পদের বিপরীতে আরেকটি নিয়োগ বিজ্ঞপ্তি প্রকাশ করেন। আজ অবদি সেই দুটি নিয়োগ বিজ্ঞপ্তির চূড়ান্ত নিষ্পত্তি হয়নি।

এমতাবস্থায় আমরা চাকরি স্থায়ীকরণ ও বকেয়া বেতন-ভাতার দাবিতে আন্দোলনে নামি। এক পর্যায়ে সাবেক ভিসি ও রেজিষ্ট্রার দাবি মেনে নেওয়ার আশ্বাস দিলে আমরা আন্দোলন স্থগিত করে কাজে যোগ দেই।

কাজী মাসুদ আরও বলেন, ২০২৪ সালের ছাত্র-জনতার গণঅভ্যূত্থানে ফ্যাসিস্ট হাসিনার পতন হলে সাবেক ভিসি এনায়েত ও রেজিস্ট্রার গা ঢাকা দেন। আপনারা জানেন সাবেক ভিসি এনায়েত স্বৈরশাসক হাসিনার ব্যক্তিগত চোখের চিকিৎসক ছিলেন। আর রেজিস্ট্রার ফজলুর রহমান ছিলেন এমসি কলেজ ছাত্রলীগের সাবেক সভাপতি ও টিলাগড় গ্রুপের ক্যাডার। দুজনই ফ্যাসিস্টের দোসর হওয়ায় জনরোষ থেকে বাঁচতে লাপাত্তা হয়ে যান। এক পর্যায়ে বৈষম্যবিরোধী কর্মকর্তা-কর্মচারীদের ব্যানারে আন্দোলনরতরা ফ্যাসিস্টের দোসর ভিসি এনায়েত ও ফজলুর রহমানের পদত্যাগের দাবি তোলেন। এরই প্রেক্ষিতে ২০২৪ সালের ৩০ সেপ্টেম্বর রেজিস্ট্রার ফজলুর রহমান পদত্যাগ করেন। প্রায় ৪ মাস পর ২০২৪ সালের ৭ নভেম্বর ভিসি ডা. এনায়েত হোসেন ক্যাম্পাসে ফেরেন।

খবর পেয়ে বৈষম্য বিরোধী কর্মকর্তা-কর্মচারীরা ক্যাম্পাসে এসে তাদের চাকরি স্থায়ী ও বেতন ভাতার বিষয়ে ভিসির কাছে জানতে চান। এক পর্যায়ে ভিসিকে অবরুদ্ধ করেন বেতন বঞ্চিতরা। প্রায় আড়াই ঘন্টা পর পুলিশ, সেনাবাহিনী, র‍্যাব, এনএসআই, ডিজিএফআই ও জেলা প্রশাসকের মনোনীত প্রতিনিধি অতিরিক্ত জেলা প্রশাসক (শিক্ষা ও আইসিটি) জনাব মো. নূরের জামান চৌধুরীর উপস্থিতিতে ১৫ দিনের মধ্যে চাকরি স্থায়ীকরণসহ সব দাবি-দাওয়া মেনে নেওয়ার আশ্বাস দেন ভিসি অধ্যাপক ডা. এনায়েত হোসেন। পরে ঘটনাস্থলে উপস্থিত সেনাবাহিনীর কমান্ডিং অফিসার মেজর মেহেদীর অনুরোধে আমরা অবরোধ তুলে নেই।

সংবাদ সম্মেলনে কাজী মাসুদ জানান- ভিসির আশ্বাসের ১৫ দিনের ডেডলাইনের ১৪ দিনের মাথায় বিশ্ববিদ্যালয়ের ১১তম সিন্ডিকেট সভা ডাকেন উপাচার্য। এ সিন্ডিকেট সভায় বিশ্ববিদ্যালয়ের ডিন অধ্যাপক ডা. নাজমুল ইসলামকে সভাপতি করে ৬ সদস্য বিশিষ্ট একটি কমিটি গঠিত হয়। কমিটিকে ইতোপূর্বে অস্থায়ী ভিত্তিতে নিয়োগকৃতদের চাকরি নিয়মিতকরণ ও বেতন-ভাতাদি প্রদান প্রসঙ্গে একটি সুষ্পষ্ট প্রতিবেদন জমা দিতে বলা হয়। এছাড়াও উক্ত সিন্ডিকেট সভায় উপস্থিত সকল সম্মানিত সদস্যের মূল্যবান আলোচনার প্রেক্ষিতে বর্তমান পরিস্থিতি বিবেচনায় বিশ্ববিদ্যালয়ের সার্বিক কার্যক্রমের গতিশীলতা আনয়নের লক্ষ্যে আদালতের নির্দেশনা, বিশ্ববিদ্যালয়ের আর্থিক ও প্রশাসনিক বিধি-বিধান, মন্ত্রণালয় ও ইউজিসি এর নির্দেশনা ইত্যাদি বিষয় পর্যালোচনাপূর্বক মানবিক দৃষ্টিকোণ বিবেচনা করে বর্ণিত নিয়োগের বিষয়ে সুস্পষ্টভাবে প্রতিবেদন প্রদানের জন্য কমিটি গঠন করার সিদ্ধান্ত গৃহীত হয়।

তিনি বলেন, এমতাবস্থায় ২০২৪ সালের ৬ ডিসেম্বর অনিয়মিত নিয়োগপ্রাপ্তদের চাকুরি নিয়মিতকরণের লক্ষ্যে বিশ্ববিদ্যালয়ের আচার্য মহামান্য রাষ্ট্রপতির অনুমোদনক্রমে দৈনিক ইত্তেফাক ও সিলেটের ডাক পত্রিকায় কমিটির সভাপতি প্রফেসর ডা. নাজমুল ইসলাম স্বাক্ষরিত একটি নিয়োগ বিজ্ঞপ্তি প্রকাশিত হয়। আবেদন জমা প্রদানের শেষ সময় ছিলো ১৯ ডিসেম্বর। যথাযথ প্রক্রিয়া মেনে আমরা আবেদনপত্র জমা দেই। এরপর ২০ ডিসেম্বর ভিসি এনায়েত হোসেন পদত্যাগ পত্র মন্ত্রণালয়ে জমা দেন। ২০২৫ সালের ৩১ জানুয়ারি ও ১ ফেব্রুয়ারী আমরা ভাইভা পরীক্ষায় অংশগ্রহণ করি। ভাইভা পরীক্ষার বোর্ড কমিটির সভাপতি অধ্যাপক ডা. নাজমুল ইসলাম ছাড়াও বিএমএন্ডডিসির চেয়ারম্যান অধ্যাপক ডা. সাইফুল ইসলাম, ইউজিসির সদস্য অধ্যাপক ড. আনোয়ার হোসেন ও বিশ্ববিদ্যালয়ের প্রতিনিধি হিসেবে কোষাধ্যক্ষ মো. শাহ আলম উপস্থিত ছিলেন।

সংবাদ সম্মেলনে বলা হয়- চলতি বছরের ২৬ ফেব্রুয়ারি বিশ্ববিদ্যালয়ের নতুন ভিসি হিসেবে যোগ দেন অধ্যাপক ডা. ইসমাইল হোসেন পাটোয়ারি। তিনি যোগদানের পর গত ১৬ মার্চ উপাচার্যের কাছে সুপারিশসহ প্রতিবেদন জমা দেন কমিটির সভাপতি অধ্যাপক ডা. নাজমুল ইসলাম। নাজমুল ইসলাম প্রতিবেদন জমা দেওয়ার সাথে চলতি বছরের ১৯ মার্চ থেকে ২৫ মার্চ পর্যন্ত উমরাহ পালনের জন্য সৌদি আরবে অবস্থান করবেন বলে লিখিত পত্রের মাধ্যমে উপাচার্যকে অবহিত করেন। এরপরও তাঁর অনুপস্থিতিতে ২৩ মার্চ উপাচার্য ১২তম সিন্ডিকেট সভা আহ্বান করেন। তবে কমিটির সভাপতি ডা. নাজমুল ইসলাম সিন্ডিকেটে উপস্থিত না হওয়ায় উক্ত প্রতিবেদনের বিষয়ে চূড়ান্ত সিদ্ধান্ত গ্রহণ করা হয়নি। এ সিন্ডিকেটের পর থেকে উপাচার্য চৌহাট্টাস্থ কার্যালয়ে অফিস করেননি। তিনি পূর্বের ভিসির রেখে যাওয়া স্বৈরাচার দোসরের মতালম্বী মানুষ দিয়ে দৈনিক মজুরি ভিত্তিতে সিলেট এম এ জি ওসমানী মেডিকেল কলেজে পরীক্ষা নিয়ন্ত্রকের অস্থায়ী কার্যালয়ে অফিসিয়াল কার্যক্রম পরিচালনা করছেন।

উপাচার্যকে ৪৮ ঘন্টার সময় বেঁধে দিয়ে কাজী মাসুদ বলেন, আগামী ১ সপ্তাহের মধ্যে সিন্ডিকেট সভা আহ্বান করে উক্ত সুপারিশের বিষয়ে চূড়ান্ত সিদ্ধান্ত গ্রহণের জন্য আমরা অনুরোধ করছি। এছাড়া উদ্ভুত পরিস্থিতি নিয়ন্ত্রণের লক্ষ্যে উপাচার্য মহোদয়কে ৪৮ ঘন্টার মধ্যে বিদ্যমান কর্মকর্তা-কর্মচারীদের সাথে আলোচনা করে এ বিষয়ে সুস্পষ্ট নির্দেশনা প্রদানের অনুরোধ করা হলো। অন্যথায় দাবি আদায়ে আমরা ব্লকেড কর্মসূচীসহ অন্যান্য কঠোর কর্মসূচি ঘোষণা করব।

সংবাদ সম্মেলন সিলেট মেডিকেল বিশ্ববিদ্যালয়ের অর্ধশতাধিক কর্মকর্তা-কর্মচারী উপস্থিত ছিলেন।

নিউজটি শেয়ার করুন

আপনার মন্তব্য

Your email address will not be published. Required fields are marked *

আপনার ইমেইল এবং অন্যান্য তথ্য সংরক্ষন করুন

আপলোডকারীর তথ্য
ট্যাগস :

সিলেট মেডিকেল বিশ্ববিদ্যালয়-উপাচার্যকে ৪৮ ঘন্টার আল্টিমেটাম

আপডেট সময় : ০৩:২৪:১২ অপরাহ্ন, শনিবার, ১৯ এপ্রিল ২০২৫

ভিউ নিউজ ৭১ ডেস্ক :

সিলেট মেডিকেল বিশ্ববিদ্যালয়ের উপাচার্যকে ৪৮ ঘন্টার আল্টিমেটাম দিয়েছে বেতন-ভাতাবঞ্চিত কর্মকর্তা-কর্মচারীরা। শনিবার (১৯ এপ্রিল) নগরীর চৌহাট্টাস্থ বিশ্ববিদ্যালয়ের অস্থায়ী ক্যাম্পাসে সংবাদ সম্মেলন করে এ আল্টিমেটাম দেন তারা।

সংবাদ সম্মেলনে কর্মকর্তা-কর্মচারীদের পক্ষে লিখিত বক্তব্য পাঠ করেনে বিশ্ববিদ্যালয়ের প্রশাসনিক কর্মকর্তা কাজী মাসুদ।

তিনি বলেন, আমরা সিলেট মেডিকেল বিশ্ববিদ্যালয়ে ইতোপূর্বে এডহক ভিত্তিতে নিয়োগপ্রাপ্ত কর্মকর্তা-কর্মচারীগণ, ২০১৮ সালে বিশ্ববিদ্যালয় প্রতিষ্ঠার পর থেকে অত্যন্ত সূচারুভাবে যাবতীয় কার্যক্রম চালিয়ে যাচ্ছি। যার ফলশ্রুতিতে এখনো পর্যন্ত বিশ্ববিদ্যালয়ে কোন সেশন জট তৈরী হয়নি।

বিশ্ববিদ্যালয়ের সাবেক ভাইস চ্যান্সেলর অধ্যাপক ডা. এনায়েত হোসেন মুকুলের আশ্বাসে বিনা বেতন-ভাতায় আমরা কাজ করেছি। একটি দিনের জন্যও কাজ বন্ধ রাখিনি। সাবেক ভিসি আমাদেরকে একাধিকবার চাকরি স্থায়ী করার আশ্বাস দিয়েছেন। তিনি আমাদের বিশ্বাস জন্মাতে ২০২৩ সালের ১৭ জুন সম্পুর্ণ অস্থায়ী ভিত্তিতে ছয় মাসের জন্য একটি নিয়োগ বিজ্ঞপ্তি প্রকাশ করেন। এরপর ২০২৩ সালের ২৬ জুন শূণ্য পদের বিপরীতে আরেকটি নিয়োগ বিজ্ঞপ্তি প্রকাশ করেন। আজ অবদি সেই দুটি নিয়োগ বিজ্ঞপ্তির চূড়ান্ত নিষ্পত্তি হয়নি।

এমতাবস্থায় আমরা চাকরি স্থায়ীকরণ ও বকেয়া বেতন-ভাতার দাবিতে আন্দোলনে নামি। এক পর্যায়ে সাবেক ভিসি ও রেজিষ্ট্রার দাবি মেনে নেওয়ার আশ্বাস দিলে আমরা আন্দোলন স্থগিত করে কাজে যোগ দেই।

কাজী মাসুদ আরও বলেন, ২০২৪ সালের ছাত্র-জনতার গণঅভ্যূত্থানে ফ্যাসিস্ট হাসিনার পতন হলে সাবেক ভিসি এনায়েত ও রেজিস্ট্রার গা ঢাকা দেন। আপনারা জানেন সাবেক ভিসি এনায়েত স্বৈরশাসক হাসিনার ব্যক্তিগত চোখের চিকিৎসক ছিলেন। আর রেজিস্ট্রার ফজলুর রহমান ছিলেন এমসি কলেজ ছাত্রলীগের সাবেক সভাপতি ও টিলাগড় গ্রুপের ক্যাডার। দুজনই ফ্যাসিস্টের দোসর হওয়ায় জনরোষ থেকে বাঁচতে লাপাত্তা হয়ে যান। এক পর্যায়ে বৈষম্যবিরোধী কর্মকর্তা-কর্মচারীদের ব্যানারে আন্দোলনরতরা ফ্যাসিস্টের দোসর ভিসি এনায়েত ও ফজলুর রহমানের পদত্যাগের দাবি তোলেন। এরই প্রেক্ষিতে ২০২৪ সালের ৩০ সেপ্টেম্বর রেজিস্ট্রার ফজলুর রহমান পদত্যাগ করেন। প্রায় ৪ মাস পর ২০২৪ সালের ৭ নভেম্বর ভিসি ডা. এনায়েত হোসেন ক্যাম্পাসে ফেরেন।

খবর পেয়ে বৈষম্য বিরোধী কর্মকর্তা-কর্মচারীরা ক্যাম্পাসে এসে তাদের চাকরি স্থায়ী ও বেতন ভাতার বিষয়ে ভিসির কাছে জানতে চান। এক পর্যায়ে ভিসিকে অবরুদ্ধ করেন বেতন বঞ্চিতরা। প্রায় আড়াই ঘন্টা পর পুলিশ, সেনাবাহিনী, র‍্যাব, এনএসআই, ডিজিএফআই ও জেলা প্রশাসকের মনোনীত প্রতিনিধি অতিরিক্ত জেলা প্রশাসক (শিক্ষা ও আইসিটি) জনাব মো. নূরের জামান চৌধুরীর উপস্থিতিতে ১৫ দিনের মধ্যে চাকরি স্থায়ীকরণসহ সব দাবি-দাওয়া মেনে নেওয়ার আশ্বাস দেন ভিসি অধ্যাপক ডা. এনায়েত হোসেন। পরে ঘটনাস্থলে উপস্থিত সেনাবাহিনীর কমান্ডিং অফিসার মেজর মেহেদীর অনুরোধে আমরা অবরোধ তুলে নেই।

সংবাদ সম্মেলনে কাজী মাসুদ জানান- ভিসির আশ্বাসের ১৫ দিনের ডেডলাইনের ১৪ দিনের মাথায় বিশ্ববিদ্যালয়ের ১১তম সিন্ডিকেট সভা ডাকেন উপাচার্য। এ সিন্ডিকেট সভায় বিশ্ববিদ্যালয়ের ডিন অধ্যাপক ডা. নাজমুল ইসলামকে সভাপতি করে ৬ সদস্য বিশিষ্ট একটি কমিটি গঠিত হয়। কমিটিকে ইতোপূর্বে অস্থায়ী ভিত্তিতে নিয়োগকৃতদের চাকরি নিয়মিতকরণ ও বেতন-ভাতাদি প্রদান প্রসঙ্গে একটি সুষ্পষ্ট প্রতিবেদন জমা দিতে বলা হয়। এছাড়াও উক্ত সিন্ডিকেট সভায় উপস্থিত সকল সম্মানিত সদস্যের মূল্যবান আলোচনার প্রেক্ষিতে বর্তমান পরিস্থিতি বিবেচনায় বিশ্ববিদ্যালয়ের সার্বিক কার্যক্রমের গতিশীলতা আনয়নের লক্ষ্যে আদালতের নির্দেশনা, বিশ্ববিদ্যালয়ের আর্থিক ও প্রশাসনিক বিধি-বিধান, মন্ত্রণালয় ও ইউজিসি এর নির্দেশনা ইত্যাদি বিষয় পর্যালোচনাপূর্বক মানবিক দৃষ্টিকোণ বিবেচনা করে বর্ণিত নিয়োগের বিষয়ে সুস্পষ্টভাবে প্রতিবেদন প্রদানের জন্য কমিটি গঠন করার সিদ্ধান্ত গৃহীত হয়।

তিনি বলেন, এমতাবস্থায় ২০২৪ সালের ৬ ডিসেম্বর অনিয়মিত নিয়োগপ্রাপ্তদের চাকুরি নিয়মিতকরণের লক্ষ্যে বিশ্ববিদ্যালয়ের আচার্য মহামান্য রাষ্ট্রপতির অনুমোদনক্রমে দৈনিক ইত্তেফাক ও সিলেটের ডাক পত্রিকায় কমিটির সভাপতি প্রফেসর ডা. নাজমুল ইসলাম স্বাক্ষরিত একটি নিয়োগ বিজ্ঞপ্তি প্রকাশিত হয়। আবেদন জমা প্রদানের শেষ সময় ছিলো ১৯ ডিসেম্বর। যথাযথ প্রক্রিয়া মেনে আমরা আবেদনপত্র জমা দেই। এরপর ২০ ডিসেম্বর ভিসি এনায়েত হোসেন পদত্যাগ পত্র মন্ত্রণালয়ে জমা দেন। ২০২৫ সালের ৩১ জানুয়ারি ও ১ ফেব্রুয়ারী আমরা ভাইভা পরীক্ষায় অংশগ্রহণ করি। ভাইভা পরীক্ষার বোর্ড কমিটির সভাপতি অধ্যাপক ডা. নাজমুল ইসলাম ছাড়াও বিএমএন্ডডিসির চেয়ারম্যান অধ্যাপক ডা. সাইফুল ইসলাম, ইউজিসির সদস্য অধ্যাপক ড. আনোয়ার হোসেন ও বিশ্ববিদ্যালয়ের প্রতিনিধি হিসেবে কোষাধ্যক্ষ মো. শাহ আলম উপস্থিত ছিলেন।

সংবাদ সম্মেলনে বলা হয়- চলতি বছরের ২৬ ফেব্রুয়ারি বিশ্ববিদ্যালয়ের নতুন ভিসি হিসেবে যোগ দেন অধ্যাপক ডা. ইসমাইল হোসেন পাটোয়ারি। তিনি যোগদানের পর গত ১৬ মার্চ উপাচার্যের কাছে সুপারিশসহ প্রতিবেদন জমা দেন কমিটির সভাপতি অধ্যাপক ডা. নাজমুল ইসলাম। নাজমুল ইসলাম প্রতিবেদন জমা দেওয়ার সাথে চলতি বছরের ১৯ মার্চ থেকে ২৫ মার্চ পর্যন্ত উমরাহ পালনের জন্য সৌদি আরবে অবস্থান করবেন বলে লিখিত পত্রের মাধ্যমে উপাচার্যকে অবহিত করেন। এরপরও তাঁর অনুপস্থিতিতে ২৩ মার্চ উপাচার্য ১২তম সিন্ডিকেট সভা আহ্বান করেন। তবে কমিটির সভাপতি ডা. নাজমুল ইসলাম সিন্ডিকেটে উপস্থিত না হওয়ায় উক্ত প্রতিবেদনের বিষয়ে চূড়ান্ত সিদ্ধান্ত গ্রহণ করা হয়নি। এ সিন্ডিকেটের পর থেকে উপাচার্য চৌহাট্টাস্থ কার্যালয়ে অফিস করেননি। তিনি পূর্বের ভিসির রেখে যাওয়া স্বৈরাচার দোসরের মতালম্বী মানুষ দিয়ে দৈনিক মজুরি ভিত্তিতে সিলেট এম এ জি ওসমানী মেডিকেল কলেজে পরীক্ষা নিয়ন্ত্রকের অস্থায়ী কার্যালয়ে অফিসিয়াল কার্যক্রম পরিচালনা করছেন।

উপাচার্যকে ৪৮ ঘন্টার সময় বেঁধে দিয়ে কাজী মাসুদ বলেন, আগামী ১ সপ্তাহের মধ্যে সিন্ডিকেট সভা আহ্বান করে উক্ত সুপারিশের বিষয়ে চূড়ান্ত সিদ্ধান্ত গ্রহণের জন্য আমরা অনুরোধ করছি। এছাড়া উদ্ভুত পরিস্থিতি নিয়ন্ত্রণের লক্ষ্যে উপাচার্য মহোদয়কে ৪৮ ঘন্টার মধ্যে বিদ্যমান কর্মকর্তা-কর্মচারীদের সাথে আলোচনা করে এ বিষয়ে সুস্পষ্ট নির্দেশনা প্রদানের অনুরোধ করা হলো। অন্যথায় দাবি আদায়ে আমরা ব্লকেড কর্মসূচীসহ অন্যান্য কঠোর কর্মসূচি ঘোষণা করব।

সংবাদ সম্মেলন সিলেট মেডিকেল বিশ্ববিদ্যালয়ের অর্ধশতাধিক কর্মকর্তা-কর্মচারী উপস্থিত ছিলেন।