ঢাকা ০২:৩৯ পূর্বাহ্ন, রবিবার, ১৮ মে ২০২৫, ৩ জ্যৈষ্ঠ ১৪৩২ বঙ্গাব্দ
সংবাদ শিরোনাম ::
সংবাদমাধ্যমের স্বাধীনতা এখনো আক্রমণের মুখে: সম্পাদক পরিষদ হিউম্যান রাইটস ওয়াচ ট্রাষ্টের মাসবপ্যাপী সেহরি বিতরণ চলমান সিলেটে রবিবার যে সব এলাকায় বিদ্যুৎ থাকবে না বিপিজেএ সিলেট বিভাগীয় কমিটির নতুন সভাপতি পাভেল ও সাধারণ সম্পাদক রাব্বী বিশ্বনাথের ১৩৩টি প্রাথমিক বিদ্যালয়ে গাছের চারা বিতরণ করলেন- ইউএনও সিলেটে চোরাই পণ্যের বিশাল চালান আটক রাষ্ট্র যদি ন্যায়বিচার নিশ্চিত না করে, তবে জনগণের নিরাপত্তা ও স্বাধীনতা চরম হুমকির মুখে পড়বে-সাকি বলিউড নায়িকাদের রূপের রহস্য ফাঁস করলেন চিকিৎসক নারীর ক্ষমতায়ন নিয়ে কানে যা বললেন বর্ষা বছরে রোনালদো পান সাড়ে তিন হাজার কোটি, উপার্জন কমেছে মেসির সাফ অনূর্ধ্ব-১৯ চ্যাম্পিয়নশিপ ভারতকে হারিয়েই শিরোপা জিততে হবে বাংলাদেশকে ফিলিস্তিন রাষ্ট্রকে স্বীকৃতি দিতে জুনে আন্তর্জাতিক সম্মেলন

সিলেট স্ট্রাইকার্সের মালিকানা নিয়ে মাশরাফিকে নিয়ে মুখ খুললেন সারোয়ার

প্রতিনিধির নাম
  • আপডেট সময় : ০৮:১৪:১১ পূর্বাহ্ন, বুধবার, ২ অক্টোবর ২০২৪ ১১৮ বার পড়া হয়েছে

স্টাফ রিপোর্টার :

বাংলাদেশ প্রিমিয়ার লিগের (বিপিএল) ফ্র্যাঞ্চাইজি সিলেট স্ট্রাইকার্সের মালিকানা নিয়ে অভিযোগ ওঠেছে ক্রিকেটার এবং আওয়ামী লীগ দলীয় সাবেক সংসদ সদস্য মাশরাফি বিন মুর্তজার বিরুদ্ধে। তাকে প্রধান আসামি করে মামলা করেছেন সিলেট স্ট্রাইকার্সের সাবেক মালিক সারোয়ার গোলাম চৌধুরী।

গত রোববার রাতে ঢাকার পল্লবী থানায় দায়েরকৃত মামলায় মাশরাফি ছাড়া অন্য আসামিরা হলেন- হেলাল বিন ইউসুফ শুভ্র, মো. ইমাম হাসান, রেজিস্ট্রার অব জয়েন্ট স্টক কম্পানির একজন কর্মকর্তা (অজ্ঞাতপরিচয়), কে এম রাসেল ও বাবলু। এছাড়া অজ্ঞাতনামা আরও ১০-১৫ জনকে আসামি করা হয়েছে।

মামলায় অভিযোগ করা হয়েছে, ২০২৩ সালে মাশরাফির কার্যালয়ে বসে সিলেট স্ট্রাইকার্সের মালিকানা সারোয়ার চৌধুরীর কাছ থেকে কেড়ে নেওয়া হয়। তখন সারোয়ারের মাথায় পিস্তুল ঠেকিয়ে হত্যার হুমকি দেওয়া হয়।

সারোয়ার চৌধুরীর অভিযোগ, মাশরাফি ও তার লোকজন মিলে ২০২৩ সালে ৪ কোটি ৫০ লাখ টাকার শেয়ার জোরপূর্বক নিয়ে নেন। বিনিময়ে অর্থ পরিশোধ না করে তাকে উল্টো প্রাণনাশের হুমকি দেন। মামলার পর এবার মাশরাফি প্রসঙ্গে মুখ খুলেছেন  সিলেটের সারোয়ার চৌধুরী, যিনি মূলত যুক্তরাষ্ট্র প্রবাসী।

নিজের ব্যক্তিগত ফেসবুক আইডিতে নাতিদীর্ঘ একটি পোস্ট দিয়েছেন সারোয়ার, যেখানে তিনি উল্লেখ করেছেন, মাশরাফির ‘হিংস্র চরিত্র’ দেখার আগে তার বড় ফ্যান ছিলেন তিনি। পুরো বিষয়টি নিয়ে শিগগিরই সংবাদ সম্মেলন করার ঘোষণাও দিয়েছেন সারোয়ার।

সারোয়ার চৌধুরীর ফেসবুক পোস্টটি পরিমার্জিত রূপে তুলে ধরা হলো-

আসসালামুআলাইকুম,
আপনারা অনেকেই হয়তো আমাকে চিনবেন সিলেট স্ট্রাইকার্সের মাধ্যমে। ২০২৩ বিপিএলে সিলেট স্ট্রাইকার্স নিজেদের প্রথম সিজনেই ফাইনাল খেলে, রানার্সআপ হয়। মাঠের সফলতা ছিল অসাধারণ, কিন্তু আমার কাছে ব্যক্তিগতভাবে সবচেয়ে বড় অর্জন ছিল আমাদের দেশি খেলোয়াড়দের চমৎকার পারফরম্যান্স।

মাঠে খেলা ভালোই হয়েছিল, তাই না? সফল একটা সিজন গড়েছিলাম আমরা। সেই সিজনে আমি ছিলাম দলের চেয়ারম্যান; স্বপ্ন বড় হচ্ছিল, স্বপ্ন ছিল বাংলাদেশ ক্রিকেটের জন্য। কিন্তু ২০২৪ সালের বিপিএলের আগে হঠাৎ করেই এক অপ্রত্যাশিত বাধার মুখোমুখি হই। মাঠের সফলতা সত্ত্বেও আমি পরের সিজনে দলের সাথে থাকতে পারিনি, তারা আমাকে থাকতে দেয় নাই। এবং সিলেট ৭ দলের মধ্যে ৬ নাম্বার পজিশনে থেকে বিপিএলটা শেষ করে। আর সিলেট যে আগের সিজনের মত উজ্জীবিত ছিল না, এমনটা দর্শকরাই মনে করেছেন এবং প্রফেশনালিজমের অভাব নিয়ে প্রশ্ন তুলেছিলেন।

আমি মূলত আমেরিকায় ব্যবসা করি, এছাড়াও আমি নিউইয়র্কভিত্তিক (NYBCL Cricket League) এনওয়াইবিসিএল এর সহ-প্রতিষ্ঠাতা এবং দীর্ঘ ৫ বছর এই প্রতিষ্ঠানের সভাপতি হিসেবে দায়িত্ব পালন করেছি এবং নিউইয়র্কভিত্তিক বাংলাদেশ ক্রিকেট লিগে আমার হেলাল বিন ইউসুফের সাথে পরিচয় এবং তার মাধ্যমেই আমার মাশরাফি বিন মুর্তজার সাথে প্রথম সাক্ষাৎ হয়। হ্যাঁ, মাশরাফি বিন মুর্তজা বাংলাদেশ দলের আমার অন্যতম প্রিয় একজন প্লেয়ার ছিলেন। আর সেই প্রিয় প্লেয়ার যখন নিজেই আমাকে বিপিএলে দল নেওয়ার আহ্বান করলেন, তখন আমি সানন্দে, বিশ্বাসের সাথে তা গ্রহণ করলাম। কিন্তু তখনও আমি জানতাম না যে এক পর্যায়ে যেয়ে, যাকে আমি এতটা পছন্দ করতাম সেই মাশরাফি বিন মুর্তজার রাজনৈতিক অফিসে, তার এবং যার মাধ্যমে এখানে আসা, সেই হেলাল বিন ইউসুফে শুভ্রের উপস্থিতিতে অবরুদ্ধ করে এবং অস্ত্র দেখিয়ে আমাকে হুমকি দেওয়া হবে। আমি বিশ্বাস করতে পারছিলাম না—যাকে এতটা ভালোবাসতাম, সেই মানুষই এমনভাবে আমার বিরুদ্ধে দাঁড়াবে! এটা ছিল আমার জীবনের সবচেয়ে দুঃসহ অভিজ্ঞতা।

মাশরাফি বিন মুর্তজা এতদিন বাংলাদেশের অন্যতম প্রভাবশালী ব্যক্তিদের একজন ছিলেন। ক্রিকেটার হিসেবে তার অবশ্যই অনেক জনপ্রিয়তা  ছিল/আছে। আমি নিজেও উনার এই অজানা হিংস্র চরিত্র দেখার আগে অনেক বড় ফ্যান ছিলাম এবং আমি জানি তখন হয়তো কেউ অভিযোগ করলে আমারও বিশ্বাস করতে কঠিন হত। আমার জন্য সবচেয়ে কঠিন বিষয় ছিল মাশরাফি বিন মুর্তজাকে নতুনভাবে দেখা। তিনি শুধু বাংলাদেশ দলের সাবেক অধিনায়কই নন, তিনি তখন সরকার দলীয় এমপি, এবং সেই সরকার ছিল স্বৈরাচারী। এমন একজন প্রভাবশালী ব্যক্তির বিরুদ্ধে দাঁড়ানো প্রায় অসম্ভব ছিল। তাই আমি আমার এবং আমার পরিবার-পরিজনের যারা অনেকেই বাংলাদেশেই বসবাস করেন তাদের নিরাপত্তার কথা ভেবে কিছু করতে পারিনি।

বিশেষ করে আমাকে যখন অবরুদ্ধ করে হুমকি দেওয়া হল, এবং সেই সময় সরকারের প্রভাবশালী কারও বিরোধিতা করলে গুম হওয়া খুব অবাস্তব আশঙ্কা ছিল না। তাই হুমকি আমাকে সিরিয়াসভাবেই নিতে হয়েছে। কিন্তু এখন? এখন সময় বদলেছে, ছাত্রদের নেতৃত্বে ছাত্র-জনতার গণ-আন্দোলনের সফলতার পর দেশ নতুন আলোর দিকে এগিয়ে যাচ্ছে, এখন আমি ন্যায়বিচার পাবার ব্যাপারে আশাবাদী। আমি বিশ্বাস করি বাংলাদেশ ক্রিকেট এবং বাংলাদেশ একদিন সমস্ত বাধা অতিক্রম করবে।

জীবনের হুমকি একবার সামনে আসার পর স্বাভাবিকভাবে নিরাপত্তার চিন্তা রয়েই যায়। কিন্তু মহান আল্লাহর উপর ভরসা রেখে আমি আইনি লড়াইয়ে নেমেছি এবং লড়াই চালিয়ে যাব, আমি শিগগিরই একটি প্রেস কনফারেন্সের মাধ্যমে সবকিছু পরিষ্কারভাবে তুলে ধরবো, ইন শা আল্লাহ্‌। আশা করি আপনারা পাশে থাকবেন এবং আমাদের জন্য দোয়া করবেন। সারোয়ার গোলাম চৌধুরী।”

প্রসঙ্গত, বিপিএলে ফ্র্যাঞ্চাইজি নিতে ‘ফিউচার স্পোর্টস বাংলাদেশ লিমিটেড’ নামে একটি জয়েন্ট স্টক কোম্পানির নিবন্ধন করেন সারোয়ার চৌধুরী। ৬০ শতাংশ শেয়ার নিয়ে যার চেয়ারম্যান ছিলেন তিনি। বাকি ৪০ শতাংশ শেয়ার নিয়ে কোম্পানির ব্যবস্থাপনা পরিচালক হন ইমাম হাসান, যাকে মাশরাফি নিজের বন্ধু হিসেবে পরিচয় করিয়ে দিয়েছিলেন সারোয়ারের সঙ্গে। ২০২২ সালের অক্টোবরে ‘ফিউচার স্পোর্টস বাংলাদেশ লিমিটেড কোম্পানি’ বিসিবি থেকে তিন বছরের জন্য  সিলেট স্ট্রাইকার্সের স্বত্ব পায়।

নিউজটি শেয়ার করুন

আপনার মন্তব্য

Your email address will not be published. Required fields are marked *

আপনার ইমেইল এবং অন্যান্য তথ্য সংরক্ষন করুন

আপলোডকারীর তথ্য
ট্যাগস :

সিলেট স্ট্রাইকার্সের মালিকানা নিয়ে মাশরাফিকে নিয়ে মুখ খুললেন সারোয়ার

আপডেট সময় : ০৮:১৪:১১ পূর্বাহ্ন, বুধবার, ২ অক্টোবর ২০২৪

স্টাফ রিপোর্টার :

বাংলাদেশ প্রিমিয়ার লিগের (বিপিএল) ফ্র্যাঞ্চাইজি সিলেট স্ট্রাইকার্সের মালিকানা নিয়ে অভিযোগ ওঠেছে ক্রিকেটার এবং আওয়ামী লীগ দলীয় সাবেক সংসদ সদস্য মাশরাফি বিন মুর্তজার বিরুদ্ধে। তাকে প্রধান আসামি করে মামলা করেছেন সিলেট স্ট্রাইকার্সের সাবেক মালিক সারোয়ার গোলাম চৌধুরী।

গত রোববার রাতে ঢাকার পল্লবী থানায় দায়েরকৃত মামলায় মাশরাফি ছাড়া অন্য আসামিরা হলেন- হেলাল বিন ইউসুফ শুভ্র, মো. ইমাম হাসান, রেজিস্ট্রার অব জয়েন্ট স্টক কম্পানির একজন কর্মকর্তা (অজ্ঞাতপরিচয়), কে এম রাসেল ও বাবলু। এছাড়া অজ্ঞাতনামা আরও ১০-১৫ জনকে আসামি করা হয়েছে।

মামলায় অভিযোগ করা হয়েছে, ২০২৩ সালে মাশরাফির কার্যালয়ে বসে সিলেট স্ট্রাইকার্সের মালিকানা সারোয়ার চৌধুরীর কাছ থেকে কেড়ে নেওয়া হয়। তখন সারোয়ারের মাথায় পিস্তুল ঠেকিয়ে হত্যার হুমকি দেওয়া হয়।

সারোয়ার চৌধুরীর অভিযোগ, মাশরাফি ও তার লোকজন মিলে ২০২৩ সালে ৪ কোটি ৫০ লাখ টাকার শেয়ার জোরপূর্বক নিয়ে নেন। বিনিময়ে অর্থ পরিশোধ না করে তাকে উল্টো প্রাণনাশের হুমকি দেন। মামলার পর এবার মাশরাফি প্রসঙ্গে মুখ খুলেছেন  সিলেটের সারোয়ার চৌধুরী, যিনি মূলত যুক্তরাষ্ট্র প্রবাসী।

নিজের ব্যক্তিগত ফেসবুক আইডিতে নাতিদীর্ঘ একটি পোস্ট দিয়েছেন সারোয়ার, যেখানে তিনি উল্লেখ করেছেন, মাশরাফির ‘হিংস্র চরিত্র’ দেখার আগে তার বড় ফ্যান ছিলেন তিনি। পুরো বিষয়টি নিয়ে শিগগিরই সংবাদ সম্মেলন করার ঘোষণাও দিয়েছেন সারোয়ার।

সারোয়ার চৌধুরীর ফেসবুক পোস্টটি পরিমার্জিত রূপে তুলে ধরা হলো-

আসসালামুআলাইকুম,
আপনারা অনেকেই হয়তো আমাকে চিনবেন সিলেট স্ট্রাইকার্সের মাধ্যমে। ২০২৩ বিপিএলে সিলেট স্ট্রাইকার্স নিজেদের প্রথম সিজনেই ফাইনাল খেলে, রানার্সআপ হয়। মাঠের সফলতা ছিল অসাধারণ, কিন্তু আমার কাছে ব্যক্তিগতভাবে সবচেয়ে বড় অর্জন ছিল আমাদের দেশি খেলোয়াড়দের চমৎকার পারফরম্যান্স।

মাঠে খেলা ভালোই হয়েছিল, তাই না? সফল একটা সিজন গড়েছিলাম আমরা। সেই সিজনে আমি ছিলাম দলের চেয়ারম্যান; স্বপ্ন বড় হচ্ছিল, স্বপ্ন ছিল বাংলাদেশ ক্রিকেটের জন্য। কিন্তু ২০২৪ সালের বিপিএলের আগে হঠাৎ করেই এক অপ্রত্যাশিত বাধার মুখোমুখি হই। মাঠের সফলতা সত্ত্বেও আমি পরের সিজনে দলের সাথে থাকতে পারিনি, তারা আমাকে থাকতে দেয় নাই। এবং সিলেট ৭ দলের মধ্যে ৬ নাম্বার পজিশনে থেকে বিপিএলটা শেষ করে। আর সিলেট যে আগের সিজনের মত উজ্জীবিত ছিল না, এমনটা দর্শকরাই মনে করেছেন এবং প্রফেশনালিজমের অভাব নিয়ে প্রশ্ন তুলেছিলেন।

আমি মূলত আমেরিকায় ব্যবসা করি, এছাড়াও আমি নিউইয়র্কভিত্তিক (NYBCL Cricket League) এনওয়াইবিসিএল এর সহ-প্রতিষ্ঠাতা এবং দীর্ঘ ৫ বছর এই প্রতিষ্ঠানের সভাপতি হিসেবে দায়িত্ব পালন করেছি এবং নিউইয়র্কভিত্তিক বাংলাদেশ ক্রিকেট লিগে আমার হেলাল বিন ইউসুফের সাথে পরিচয় এবং তার মাধ্যমেই আমার মাশরাফি বিন মুর্তজার সাথে প্রথম সাক্ষাৎ হয়। হ্যাঁ, মাশরাফি বিন মুর্তজা বাংলাদেশ দলের আমার অন্যতম প্রিয় একজন প্লেয়ার ছিলেন। আর সেই প্রিয় প্লেয়ার যখন নিজেই আমাকে বিপিএলে দল নেওয়ার আহ্বান করলেন, তখন আমি সানন্দে, বিশ্বাসের সাথে তা গ্রহণ করলাম। কিন্তু তখনও আমি জানতাম না যে এক পর্যায়ে যেয়ে, যাকে আমি এতটা পছন্দ করতাম সেই মাশরাফি বিন মুর্তজার রাজনৈতিক অফিসে, তার এবং যার মাধ্যমে এখানে আসা, সেই হেলাল বিন ইউসুফে শুভ্রের উপস্থিতিতে অবরুদ্ধ করে এবং অস্ত্র দেখিয়ে আমাকে হুমকি দেওয়া হবে। আমি বিশ্বাস করতে পারছিলাম না—যাকে এতটা ভালোবাসতাম, সেই মানুষই এমনভাবে আমার বিরুদ্ধে দাঁড়াবে! এটা ছিল আমার জীবনের সবচেয়ে দুঃসহ অভিজ্ঞতা।

মাশরাফি বিন মুর্তজা এতদিন বাংলাদেশের অন্যতম প্রভাবশালী ব্যক্তিদের একজন ছিলেন। ক্রিকেটার হিসেবে তার অবশ্যই অনেক জনপ্রিয়তা  ছিল/আছে। আমি নিজেও উনার এই অজানা হিংস্র চরিত্র দেখার আগে অনেক বড় ফ্যান ছিলাম এবং আমি জানি তখন হয়তো কেউ অভিযোগ করলে আমারও বিশ্বাস করতে কঠিন হত। আমার জন্য সবচেয়ে কঠিন বিষয় ছিল মাশরাফি বিন মুর্তজাকে নতুনভাবে দেখা। তিনি শুধু বাংলাদেশ দলের সাবেক অধিনায়কই নন, তিনি তখন সরকার দলীয় এমপি, এবং সেই সরকার ছিল স্বৈরাচারী। এমন একজন প্রভাবশালী ব্যক্তির বিরুদ্ধে দাঁড়ানো প্রায় অসম্ভব ছিল। তাই আমি আমার এবং আমার পরিবার-পরিজনের যারা অনেকেই বাংলাদেশেই বসবাস করেন তাদের নিরাপত্তার কথা ভেবে কিছু করতে পারিনি।

বিশেষ করে আমাকে যখন অবরুদ্ধ করে হুমকি দেওয়া হল, এবং সেই সময় সরকারের প্রভাবশালী কারও বিরোধিতা করলে গুম হওয়া খুব অবাস্তব আশঙ্কা ছিল না। তাই হুমকি আমাকে সিরিয়াসভাবেই নিতে হয়েছে। কিন্তু এখন? এখন সময় বদলেছে, ছাত্রদের নেতৃত্বে ছাত্র-জনতার গণ-আন্দোলনের সফলতার পর দেশ নতুন আলোর দিকে এগিয়ে যাচ্ছে, এখন আমি ন্যায়বিচার পাবার ব্যাপারে আশাবাদী। আমি বিশ্বাস করি বাংলাদেশ ক্রিকেট এবং বাংলাদেশ একদিন সমস্ত বাধা অতিক্রম করবে।

জীবনের হুমকি একবার সামনে আসার পর স্বাভাবিকভাবে নিরাপত্তার চিন্তা রয়েই যায়। কিন্তু মহান আল্লাহর উপর ভরসা রেখে আমি আইনি লড়াইয়ে নেমেছি এবং লড়াই চালিয়ে যাব, আমি শিগগিরই একটি প্রেস কনফারেন্সের মাধ্যমে সবকিছু পরিষ্কারভাবে তুলে ধরবো, ইন শা আল্লাহ্‌। আশা করি আপনারা পাশে থাকবেন এবং আমাদের জন্য দোয়া করবেন। সারোয়ার গোলাম চৌধুরী।”

প্রসঙ্গত, বিপিএলে ফ্র্যাঞ্চাইজি নিতে ‘ফিউচার স্পোর্টস বাংলাদেশ লিমিটেড’ নামে একটি জয়েন্ট স্টক কোম্পানির নিবন্ধন করেন সারোয়ার চৌধুরী। ৬০ শতাংশ শেয়ার নিয়ে যার চেয়ারম্যান ছিলেন তিনি। বাকি ৪০ শতাংশ শেয়ার নিয়ে কোম্পানির ব্যবস্থাপনা পরিচালক হন ইমাম হাসান, যাকে মাশরাফি নিজের বন্ধু হিসেবে পরিচয় করিয়ে দিয়েছিলেন সারোয়ারের সঙ্গে। ২০২২ সালের অক্টোবরে ‘ফিউচার স্পোর্টস বাংলাদেশ লিমিটেড কোম্পানি’ বিসিবি থেকে তিন বছরের জন্য  সিলেট স্ট্রাইকার্সের স্বত্ব পায়।