ঢাকা ০৫:৩৯ পূর্বাহ্ন, মঙ্গলবার, ২০ মে ২০২৫, ৫ জ্যৈষ্ঠ ১৪৩২ বঙ্গাব্দ
সংবাদ শিরোনাম ::
সংবাদমাধ্যমের স্বাধীনতা এখনো আক্রমণের মুখে: সম্পাদক পরিষদ হিউম্যান রাইটস ওয়াচ ট্রাষ্টের মাসবপ্যাপী সেহরি বিতরণ চলমান তেলাপোকার উপদ্রব কমাতে যা করবেন এক ঘণ্টায় ৩০ বার বিমান হামলা গাজায় রিউমার স্ক্যানার ‘হাসিনা এখনো প্রধানমন্ত্রী’, এমন কথা বলেননি ট্রাম্প অতিরিক্ত আইজিপি হলেন এসএমপি কমিশনার সিলেটের এমসি কলেজ ছাত্রাবাসে গণধর্ষণ মামলায় ২’জনের সাক্ষী অযত্নে ধুঁকছে পল্লী-কবি জসীমউদ্দীন জাদুঘর সিলেটে যেভাবে ইসলাম প্রচার করেছেন হজরত শাহজালাল ইয়েমেনী (রহ.) সিলেট জেলা আইনজীবী সমিতির মানববন্ধন সিলেটে থেকে প্রত্যাহার হলেন ২ থানার ওসি হবিগঞ্জ আঞ্চলিক পাসপোর্ট অফিসে সেনা-পুলিশের টহলে পালিয়েছে দালাল চক্র

রাজশাহী বিশ্ববিদ্যালয়: উপাচার্যের বাসভবনের সামনে অবস্থান নিয়ে শিক্ষার্থীদের বিক্ষোভ

প্রতিনিধির নাম
  • আপডেট সময় : ০৬:৩৪:৪৫ পূর্বাহ্ন, রবিবার, ১২ মার্চ ২০২৩ ১৮৬ বার পড়া হয়েছে

রাজশাহী বিশ্ববিদ্যালয়ে স্থানীয় লোকজনের সঙ্গে সংঘর্ষের ঘটনায় ক্যাম্পাসে বিক্ষোভ করেছেন শিক্ষার্থীরা।স্থানীয় লোকজনের হামলা ও পুলিশের গুলির’ প্রতিবাদে তাঁরা বিশ্ববিদ্যালয়ের প্যারিস রোডে উপাচার্যের বাসভবনের সামনে অবস্থান নিয়েছেন।এর আগে আজ রোববার সকাল ১০টা থেকে বিশ্ববিদ্যালয়ের সৈয়দ নজরুল ইসলাম প্রশাসনিক ভবনের সামনে জড়ো হতে থাকেন শিক্ষার্থীরা।বেলা সাড়ে ১০টার দিকে তাঁরা প্রশাসনিক ভবনে তালা ঝুলিয়ে দিয়ে বিক্ষোভ শুরু করেন। বেলা পৌনে ১১টার পর শিক্ষার্থীরা প্রশাসনিক ভবনের সামনে থেকে বিক্ষোভ মিছিল শুরু করেন। মিছিলটি ক্যাম্পাসের বিভিন্ন সড়ক প্রদক্ষিণ করে। মিছিলটি প্যারিস রোডে উপাচার্যের বাসভবনের সামনে এসে শেষ হয়। সেখানে অবস্থান নিয়ে বিক্ষোভ করছেন শিক্ষার্থীরা।সেখান তাঁরা এ সময় শিক্ষার্থীরা ‘এসো ভাই, এসো বোন, গড়ে তুলি আন্দোলন’, ‘আমার ভাই আহত কেন, প্রশাসন জবাব চাই’, ‘রক্তের বন্যায় ভেসে যাবে অন্যায়’, ‘পুলিশের হামলা কেন,সন্ত্রাসীদের হামলা কেন, প্রশাসন জবাব চাই’, ‘টোকাইদের কালো হাত, ভেঙে দাও-গুঁড়িয়ে দাও’ ইত্যাদি স্লোগান দিতে থাকেন।

এদিকে শিক্ষার্থীদের বিক্ষোভের একপর্যায়ে প্যারিস রোডে উপাচার্য অধ্যাপক গোলাম সাব্বির সাত্তার উপস্থিত হন। এ সময় তিনি শিক্ষার্থীদের শান্ত হওয়ার জন্য আহ্বান জানালে শিক্ষার্থীরা ‘ভুয়া,ভুয়া’বলে স্লোগান দিতে থাকেন।বিক্ষোভ থেকে প্রাথমিকভাবে বেশ কয়েকটি দাবি সামনে এনেছেন শিক্ষার্থীরা। এর মধ্যে রয়েছে শিক্ষার্থীদের ওপর হামলাকারী স্থানীয় লোকজন ও পুলিশ সদস্যদের বিচার, বিশ্ববিদ্যালয়ে বহিরাগত ব্যক্তিদের প্রবেশ বন্ধ ও শিক্ষার্থীদের নিরাপত্তা নিশ্চিত, বিশ্ববিদ্যালয়কে শতভাগ আবাসিক করা, আহত শিক্ষার্থীদের সুচিকিৎসা নিশ্চিত করা, ঘটনার ২৪ ঘণ্টার মধ্যে প্রয়োজনীয় ব্যবস্থা গ্রহণ করা ও বিশ্ববিদ্যালয়ের বিভিন্ন নীতি নির্ধারণে শিক্ষার্থী প্রতিনিধিত্ব নিশ্চিত করা।বিক্ষোভে অংশ নেওয়া বিশ্ববিদ্যালয়ের পপুলেশন সায়েন্স ও হিউম্যান রিসোর্স ডেভেলপমেন্ট বিভাগের শিক্ষার্থী আমানুল্লাহ খান বলেন, গতকালের ঘটনায় পুলিশের ভূমিকা অনেকটা নিষ্ক্রিয় ছিল। তাদের নিষ্ক্রিয়তার সুযোগে স্থানীয় সন্ত্রাসীরা হামলা করেছে। শিক্ষার্থীদের দাবিগুলো না মানলে আন্দোলন চলবেই।

গতকাল শনিবার বগুড়া থেকে রাজশাহী বিশ্ববিদ্যালয়ে আসার পথে বাসের আসনে বসাকে কেন্দ্র করে চালক ও চালকের সহকারীর সঙ্গে এক শিক্ষার্থীর কথা-কাটাকাটি হয়। পরে বাসটি বিশ্ববিদ্যালয়ের বিনোদপুর ফটকে পৌঁছালে ওই শিক্ষার্থীর সঙ্গে আবার বাগ্‌বিতণ্ডা হয়।এ সময় স্থানীয় এক দোকানদার এসে ওই শিক্ষার্থীর সঙ্গে তর্কে জড়ান। একপর্যায়ে উভয়ের মধ্যে ধাক্কাধাক্কি হয়।পরে সমাজবিজ্ঞান বিভাগের শিক্ষার্থীরা ঘটনাস্থলে জড়ো হয়ে ওই দোকানদারের ওপর চড়াও হন।একপর্যায়ে স্থানীয় ব্যবসায়ীরা জড়ো হয়ে বিশ্ববিদ্যালয়ের শিক্ষার্থীদের ওপর হামলা চালান।তখন শিক্ষার্থীরাও তাঁদের পাল্টা ধাওয়া করেন।একপর্যায়ে দুই পক্ষের মধ্যে সংঘর্ষ বেধে যায়।দফায় দফায় এ সংঘর্ষে স্থানীয় মানুষের হামলায় দুই শতাধিক শিক্ষার্থী আহত হন। পুলিশ কাঁদানে গ্যাসের শেল ও রাবার বুলেট ছোড়ে। শিক্ষার্থীরা বিনোদপুর এলাকায় দোকানে ও পুলিশ বক্সে আগুন ধরিয়ে দেন। এ ঘটনায় পুলিশ, র‌্যাবের পাশাপাশি সাত প্লাটুন বিজিবি কাজ করছে।গতকাল ঘটনার পর আজ সকালে ক্যাম্পাস ও আশপাশের এলাকায় থমথমে পরিস্থিতি বিরাজ করছে। পরিস্থিতি স্বাভাবিক রাখতে বিশ্ববিদ্যালয়–সংলগ্ন বিনোদপুর বাজারে অতিরিক্ত পুলিশ মোতায়েন করা হয়েছে।

নিউজটি শেয়ার করুন

আপনার মন্তব্য

Your email address will not be published. Required fields are marked *

আপনার ইমেইল এবং অন্যান্য তথ্য সংরক্ষন করুন

আপলোডকারীর তথ্য
ট্যাগস :

রাজশাহী বিশ্ববিদ্যালয়: উপাচার্যের বাসভবনের সামনে অবস্থান নিয়ে শিক্ষার্থীদের বিক্ষোভ

আপডেট সময় : ০৬:৩৪:৪৫ পূর্বাহ্ন, রবিবার, ১২ মার্চ ২০২৩

রাজশাহী বিশ্ববিদ্যালয়ে স্থানীয় লোকজনের সঙ্গে সংঘর্ষের ঘটনায় ক্যাম্পাসে বিক্ষোভ করেছেন শিক্ষার্থীরা।স্থানীয় লোকজনের হামলা ও পুলিশের গুলির’ প্রতিবাদে তাঁরা বিশ্ববিদ্যালয়ের প্যারিস রোডে উপাচার্যের বাসভবনের সামনে অবস্থান নিয়েছেন।এর আগে আজ রোববার সকাল ১০টা থেকে বিশ্ববিদ্যালয়ের সৈয়দ নজরুল ইসলাম প্রশাসনিক ভবনের সামনে জড়ো হতে থাকেন শিক্ষার্থীরা।বেলা সাড়ে ১০টার দিকে তাঁরা প্রশাসনিক ভবনে তালা ঝুলিয়ে দিয়ে বিক্ষোভ শুরু করেন। বেলা পৌনে ১১টার পর শিক্ষার্থীরা প্রশাসনিক ভবনের সামনে থেকে বিক্ষোভ মিছিল শুরু করেন। মিছিলটি ক্যাম্পাসের বিভিন্ন সড়ক প্রদক্ষিণ করে। মিছিলটি প্যারিস রোডে উপাচার্যের বাসভবনের সামনে এসে শেষ হয়। সেখানে অবস্থান নিয়ে বিক্ষোভ করছেন শিক্ষার্থীরা।সেখান তাঁরা এ সময় শিক্ষার্থীরা ‘এসো ভাই, এসো বোন, গড়ে তুলি আন্দোলন’, ‘আমার ভাই আহত কেন, প্রশাসন জবাব চাই’, ‘রক্তের বন্যায় ভেসে যাবে অন্যায়’, ‘পুলিশের হামলা কেন,সন্ত্রাসীদের হামলা কেন, প্রশাসন জবাব চাই’, ‘টোকাইদের কালো হাত, ভেঙে দাও-গুঁড়িয়ে দাও’ ইত্যাদি স্লোগান দিতে থাকেন।

এদিকে শিক্ষার্থীদের বিক্ষোভের একপর্যায়ে প্যারিস রোডে উপাচার্য অধ্যাপক গোলাম সাব্বির সাত্তার উপস্থিত হন। এ সময় তিনি শিক্ষার্থীদের শান্ত হওয়ার জন্য আহ্বান জানালে শিক্ষার্থীরা ‘ভুয়া,ভুয়া’বলে স্লোগান দিতে থাকেন।বিক্ষোভ থেকে প্রাথমিকভাবে বেশ কয়েকটি দাবি সামনে এনেছেন শিক্ষার্থীরা। এর মধ্যে রয়েছে শিক্ষার্থীদের ওপর হামলাকারী স্থানীয় লোকজন ও পুলিশ সদস্যদের বিচার, বিশ্ববিদ্যালয়ে বহিরাগত ব্যক্তিদের প্রবেশ বন্ধ ও শিক্ষার্থীদের নিরাপত্তা নিশ্চিত, বিশ্ববিদ্যালয়কে শতভাগ আবাসিক করা, আহত শিক্ষার্থীদের সুচিকিৎসা নিশ্চিত করা, ঘটনার ২৪ ঘণ্টার মধ্যে প্রয়োজনীয় ব্যবস্থা গ্রহণ করা ও বিশ্ববিদ্যালয়ের বিভিন্ন নীতি নির্ধারণে শিক্ষার্থী প্রতিনিধিত্ব নিশ্চিত করা।বিক্ষোভে অংশ নেওয়া বিশ্ববিদ্যালয়ের পপুলেশন সায়েন্স ও হিউম্যান রিসোর্স ডেভেলপমেন্ট বিভাগের শিক্ষার্থী আমানুল্লাহ খান বলেন, গতকালের ঘটনায় পুলিশের ভূমিকা অনেকটা নিষ্ক্রিয় ছিল। তাদের নিষ্ক্রিয়তার সুযোগে স্থানীয় সন্ত্রাসীরা হামলা করেছে। শিক্ষার্থীদের দাবিগুলো না মানলে আন্দোলন চলবেই।

গতকাল শনিবার বগুড়া থেকে রাজশাহী বিশ্ববিদ্যালয়ে আসার পথে বাসের আসনে বসাকে কেন্দ্র করে চালক ও চালকের সহকারীর সঙ্গে এক শিক্ষার্থীর কথা-কাটাকাটি হয়। পরে বাসটি বিশ্ববিদ্যালয়ের বিনোদপুর ফটকে পৌঁছালে ওই শিক্ষার্থীর সঙ্গে আবার বাগ্‌বিতণ্ডা হয়।এ সময় স্থানীয় এক দোকানদার এসে ওই শিক্ষার্থীর সঙ্গে তর্কে জড়ান। একপর্যায়ে উভয়ের মধ্যে ধাক্কাধাক্কি হয়।পরে সমাজবিজ্ঞান বিভাগের শিক্ষার্থীরা ঘটনাস্থলে জড়ো হয়ে ওই দোকানদারের ওপর চড়াও হন।একপর্যায়ে স্থানীয় ব্যবসায়ীরা জড়ো হয়ে বিশ্ববিদ্যালয়ের শিক্ষার্থীদের ওপর হামলা চালান।তখন শিক্ষার্থীরাও তাঁদের পাল্টা ধাওয়া করেন।একপর্যায়ে দুই পক্ষের মধ্যে সংঘর্ষ বেধে যায়।দফায় দফায় এ সংঘর্ষে স্থানীয় মানুষের হামলায় দুই শতাধিক শিক্ষার্থী আহত হন। পুলিশ কাঁদানে গ্যাসের শেল ও রাবার বুলেট ছোড়ে। শিক্ষার্থীরা বিনোদপুর এলাকায় দোকানে ও পুলিশ বক্সে আগুন ধরিয়ে দেন। এ ঘটনায় পুলিশ, র‌্যাবের পাশাপাশি সাত প্লাটুন বিজিবি কাজ করছে।গতকাল ঘটনার পর আজ সকালে ক্যাম্পাস ও আশপাশের এলাকায় থমথমে পরিস্থিতি বিরাজ করছে। পরিস্থিতি স্বাভাবিক রাখতে বিশ্ববিদ্যালয়–সংলগ্ন বিনোদপুর বাজারে অতিরিক্ত পুলিশ মোতায়েন করা হয়েছে।