ঢাকা ১১:৪৪ পূর্বাহ্ন, মঙ্গলবার, ২৫ মার্চ ২০২৫, ১১ চৈত্র ১৪৩১ বঙ্গাব্দ
সংবাদ শিরোনাম ::
সংবাদমাধ্যমের স্বাধীনতা এখনো আক্রমণের মুখে: সম্পাদক পরিষদ হিউম্যান রাইটস ওয়াচ ট্রাষ্টের মাসবপ্যাপী সেহরি বিতরণ চলমান সীমান্তবর্তী এলাকায় বিজিবি’র জনসচেতনামূলক সভা অনুষ্ঠিত জেলরোড থেকে আক্তার হোসেন গ্রেফতার মাহে রামাদ্বান উপলক্ষে অসহায় ও হতদরিদ্রদের মধ্যে ফুড প্যাক বিতরণ এনসিপি’র শ্রমিক উইং এর কেন্দ্রীয় সংগঠক হলেন সিলেটের শিব্বির আহমদ পথশিশুদের নিয়ে ইউনিস্যাবের ঈদ উৎসব-২০২৫ উদ্যাপন তিন খানকে নিয়ে আসছে সিনেমা আমার বয়স নিয়ে নায়িকার সমস্যা না হলে আপনার কেন সমস্যা: সালমান সকালে খালি পেটে পানি পান করলে কী হয় শরীরে? মানসিক অবসাদ কাটাতে রাতে যা করবেন গাজীপুরে আইজিপি

দাঁতের ক্ষয় যেভাবে প্রতিরোধ করবেন

প্রতিনিধির নাম
  • আপডেট সময় : ০৪:৫৭:৩৭ অপরাহ্ন, বৃহস্পতিবার, ৯ মার্চ ২০২৩ ১১৭ বার পড়া হয়েছে

স্বাস্থ্যসম্মতভাবে নিয়মিত ব্রাশ করা যেমন দাঁতের ক্ষয় রোধ করে, তেমনি ত্রুটিপূর্ণ স্বাস্থ্যবিধি দাঁতের জন্য ঝুঁকিপূর্ণ। মুখের যত্নে সঠিক স্বাস্থ্যবিধি, তার প্রতিকার ও প্রতিরোধ নিয়ে নিচের আলোচনা।

দন্তক্ষয়ের কারণ

* ক্রটিপূর্ণ মৌখিক স্বাস্থ্যবিধি

▶ আড়াআড়িভাবে ব্রাশ করা।▶ শক্তি দিয়ে জোরে ব্রাশ করা।▶ শক্ত ব্রিসল যুক্ত ব্রাশ ব্যবহার করা।▶ নিয়মিত ব্রাশ পরিবর্তন না করা।▶ দাঁতের প্রলেপ ঘষে তুলে ফেলে এমন টুথপেষ্ট বা মাজন ব্যবহার করা।▶ ২ মিনিটের বেশি সময় ধরে বা দিনে ২ বারের বেশি ব্রাশ করা।▶ ব্যবহারের অনুপযোগী আলগা দাঁত দীর্ঘদিন ব্যবহার করা।▶ খিলাল ব্যবহার করা।

* অস্বাভাবিক মৌখিক অভ্যাস

▶ দাঁত দিয়ে নখ কামড়ানো।▶ দাঁতের আগায় সুই জাতীয় জিনিস নিয়মিত ব্যবহার করা।▶ বরফের টুকরা কামড়ে খাওয়া।▶ ঘুমের মধ্যে দাঁত চাবানো।▶ অতিরিক্ত টকজাতীয় খাবার খাওয়া।▶ অতিরিক্ত কোমল পানীয় খাওয়া।▶ কোমল পানীয় কুলি করে খাওয়া।

* লক্ষণ

▶ যে কোনো বয়সেই হতে পারে, তবে বয়সের সঙ্গে সঙ্গে বাড়তে পারে।▶ মহিলাদের চেয়ে পুরুষদের বেশি হয়।▶ যে হাত দিয়ে ব্রাশ করা হয় তার বিপরীত দিকে এ ক্ষয় দেখা যায়, যেমন-যে ডান হাতে ব্রাশ করে তার ক্ষয় বামে বেশি হয়।▶ গালের দিকের দাঁতের অংশ ক্ষয় হলে সে জায়গাটা পিরিচ, ইংরেজি অক্ষর ‘ভি’-এর মতো, বা কুঠারের মতো খাঁজ কাটা থাকে।▶ ক্ষয়ে যাওয়া জায়গাটা চকচক করে বা খসখসে থাকতে পারে।▶ দাঁতে কামড় দেওয়ার জায়গায় ক্ষয় হলে দাঁতের স্বাভাবিক খাঁজকাটা ভাবগুলো মিশে গিয়ে সমান্তরাল হয়ে যায়, যেন করাত দিয়ে কেটে সমান করা হয়েছে।▶ পুরোনো ফিলিং যদি রুপার হয় সেগুলো অনেক সময় দাঁতের চেয়ে উঁচু হয়ে বের হয়ে থাকে।▶ প্রথম অবস্থায় মিষ্টি, টক, ঠান্ডা পানিতে দাঁতের সংবেদনশীলতা বেড়ে যায়।▶ সময়মতো চিকিৎসা না হলে দাঁতের ভেতরের মজ্জা নষ্ট হয়ে যায় বা দাঁতের ওপরে মুকুট ভেঙে যেতে পারে।▶ অনেক সময় মাড়ির কামড় বদলে যায়, ফলে কানে ব্যথার মতো অন্যান্যশারীরিক সমস্যা হতে পারে।

প্রতিকার

* স্বাস্থ্যসম্মত মৌখিক স্বাস্থবিধি মেনে চলা

▶ নিয়মিত ২ মিনিট সময় নিয়ে দিনে ২ বার মুখের পরিচর্চা করা।▶ ব্রাশ ব্যবহারে সচেতন হওয়া।▶ নরম ব্রাশ ব্যবহার করা।▶ প্রতি ৩ মাস পর ব্রাশ পরিবর্তন করা।▶ দাঁত সাদা করে এমন টুথপেস্ট ডাক্তারের পরামর্শ ছাড়া ব্যবহার না করা।▶ মাজনের ব্যবহার পরিহার করা।▶ খিলালের ব্যবহার পরিহার করা, ডেন্টাল ফ্লস বা ইন্টারডেন্টাল ব্রাশ ডাক্তারের পরামর্শে ব্যবহার করা।

* খাদ্যাভ্যাস পরিবর্তন

▶ প্রতিদিন অন্তত পক্ষে ২-৫ লিটার পানি পান করা।▶ দুধ, দই, পনির ইত্যাদি ক্যালসিয়াম সংবলিত খাবার খাওয়া যা দাঁতের ক্ষয় রোধ করে।▶ কোমল পানীয়, অ্যালকোহল ইত্যাদি পরিহার করা।

প্রতিরোধ-

* বিএমডিসি কর্তৃক রেজিস্ট্রার্ড ডাক্তারের শরণাপন্ন হতে হবে

▶ শিরশির করা প্রাথমিক সমস্যা, এ অবস্থায় যদি গর্ত না থাকে শুধু ফ্লোরাইডযুক্ত বা শিরশির রোধক টুথপেস্ট ব্যবহার করা ।▶ গভীরতা অনুযায়ী ফিলিং করা যাবে যা আল্ট্রাভায়োলেট রশ্মি দিয়ে দাঁতের সঙ্গে রং মিলিয়ে ফিলিং করা।▶ লেজার দিয়েও এ চিকিৎসা করা যায়।▶ যদি মজ্জা আক্রান্ত হয় তখন মজ্জার চিকিৎসা করতে হবে।▶ মাড়ি ক্ষতিগ্রস্ত হলে এর চিকিৎসা করতে হবে।

লেখক : সহযোগী অধ্যাপক, ইউনিভার্সিটি ডেন্টাল কলেজ, ঢাকা

নিউজটি শেয়ার করুন

আপনার মন্তব্য

Your email address will not be published. Required fields are marked *

আপনার ইমেইল এবং অন্যান্য তথ্য সংরক্ষন করুন

আপলোডকারীর তথ্য
ট্যাগস :

দাঁতের ক্ষয় যেভাবে প্রতিরোধ করবেন

আপডেট সময় : ০৪:৫৭:৩৭ অপরাহ্ন, বৃহস্পতিবার, ৯ মার্চ ২০২৩

স্বাস্থ্যসম্মতভাবে নিয়মিত ব্রাশ করা যেমন দাঁতের ক্ষয় রোধ করে, তেমনি ত্রুটিপূর্ণ স্বাস্থ্যবিধি দাঁতের জন্য ঝুঁকিপূর্ণ। মুখের যত্নে সঠিক স্বাস্থ্যবিধি, তার প্রতিকার ও প্রতিরোধ নিয়ে নিচের আলোচনা।

দন্তক্ষয়ের কারণ

* ক্রটিপূর্ণ মৌখিক স্বাস্থ্যবিধি

▶ আড়াআড়িভাবে ব্রাশ করা।▶ শক্তি দিয়ে জোরে ব্রাশ করা।▶ শক্ত ব্রিসল যুক্ত ব্রাশ ব্যবহার করা।▶ নিয়মিত ব্রাশ পরিবর্তন না করা।▶ দাঁতের প্রলেপ ঘষে তুলে ফেলে এমন টুথপেষ্ট বা মাজন ব্যবহার করা।▶ ২ মিনিটের বেশি সময় ধরে বা দিনে ২ বারের বেশি ব্রাশ করা।▶ ব্যবহারের অনুপযোগী আলগা দাঁত দীর্ঘদিন ব্যবহার করা।▶ খিলাল ব্যবহার করা।

* অস্বাভাবিক মৌখিক অভ্যাস

▶ দাঁত দিয়ে নখ কামড়ানো।▶ দাঁতের আগায় সুই জাতীয় জিনিস নিয়মিত ব্যবহার করা।▶ বরফের টুকরা কামড়ে খাওয়া।▶ ঘুমের মধ্যে দাঁত চাবানো।▶ অতিরিক্ত টকজাতীয় খাবার খাওয়া।▶ অতিরিক্ত কোমল পানীয় খাওয়া।▶ কোমল পানীয় কুলি করে খাওয়া।

* লক্ষণ

▶ যে কোনো বয়সেই হতে পারে, তবে বয়সের সঙ্গে সঙ্গে বাড়তে পারে।▶ মহিলাদের চেয়ে পুরুষদের বেশি হয়।▶ যে হাত দিয়ে ব্রাশ করা হয় তার বিপরীত দিকে এ ক্ষয় দেখা যায়, যেমন-যে ডান হাতে ব্রাশ করে তার ক্ষয় বামে বেশি হয়।▶ গালের দিকের দাঁতের অংশ ক্ষয় হলে সে জায়গাটা পিরিচ, ইংরেজি অক্ষর ‘ভি’-এর মতো, বা কুঠারের মতো খাঁজ কাটা থাকে।▶ ক্ষয়ে যাওয়া জায়গাটা চকচক করে বা খসখসে থাকতে পারে।▶ দাঁতে কামড় দেওয়ার জায়গায় ক্ষয় হলে দাঁতের স্বাভাবিক খাঁজকাটা ভাবগুলো মিশে গিয়ে সমান্তরাল হয়ে যায়, যেন করাত দিয়ে কেটে সমান করা হয়েছে।▶ পুরোনো ফিলিং যদি রুপার হয় সেগুলো অনেক সময় দাঁতের চেয়ে উঁচু হয়ে বের হয়ে থাকে।▶ প্রথম অবস্থায় মিষ্টি, টক, ঠান্ডা পানিতে দাঁতের সংবেদনশীলতা বেড়ে যায়।▶ সময়মতো চিকিৎসা না হলে দাঁতের ভেতরের মজ্জা নষ্ট হয়ে যায় বা দাঁতের ওপরে মুকুট ভেঙে যেতে পারে।▶ অনেক সময় মাড়ির কামড় বদলে যায়, ফলে কানে ব্যথার মতো অন্যান্যশারীরিক সমস্যা হতে পারে।

প্রতিকার

* স্বাস্থ্যসম্মত মৌখিক স্বাস্থবিধি মেনে চলা

▶ নিয়মিত ২ মিনিট সময় নিয়ে দিনে ২ বার মুখের পরিচর্চা করা।▶ ব্রাশ ব্যবহারে সচেতন হওয়া।▶ নরম ব্রাশ ব্যবহার করা।▶ প্রতি ৩ মাস পর ব্রাশ পরিবর্তন করা।▶ দাঁত সাদা করে এমন টুথপেস্ট ডাক্তারের পরামর্শ ছাড়া ব্যবহার না করা।▶ মাজনের ব্যবহার পরিহার করা।▶ খিলালের ব্যবহার পরিহার করা, ডেন্টাল ফ্লস বা ইন্টারডেন্টাল ব্রাশ ডাক্তারের পরামর্শে ব্যবহার করা।

* খাদ্যাভ্যাস পরিবর্তন

▶ প্রতিদিন অন্তত পক্ষে ২-৫ লিটার পানি পান করা।▶ দুধ, দই, পনির ইত্যাদি ক্যালসিয়াম সংবলিত খাবার খাওয়া যা দাঁতের ক্ষয় রোধ করে।▶ কোমল পানীয়, অ্যালকোহল ইত্যাদি পরিহার করা।

প্রতিরোধ-

* বিএমডিসি কর্তৃক রেজিস্ট্রার্ড ডাক্তারের শরণাপন্ন হতে হবে

▶ শিরশির করা প্রাথমিক সমস্যা, এ অবস্থায় যদি গর্ত না থাকে শুধু ফ্লোরাইডযুক্ত বা শিরশির রোধক টুথপেস্ট ব্যবহার করা ।▶ গভীরতা অনুযায়ী ফিলিং করা যাবে যা আল্ট্রাভায়োলেট রশ্মি দিয়ে দাঁতের সঙ্গে রং মিলিয়ে ফিলিং করা।▶ লেজার দিয়েও এ চিকিৎসা করা যায়।▶ যদি মজ্জা আক্রান্ত হয় তখন মজ্জার চিকিৎসা করতে হবে।▶ মাড়ি ক্ষতিগ্রস্ত হলে এর চিকিৎসা করতে হবে।

লেখক : সহযোগী অধ্যাপক, ইউনিভার্সিটি ডেন্টাল কলেজ, ঢাকা