ঢাকা ০৯:৩৯ পূর্বাহ্ন, রবিবার, ১৮ মে ২০২৫, ৪ জ্যৈষ্ঠ ১৪৩২ বঙ্গাব্দ
সংবাদ শিরোনাম ::
সংবাদমাধ্যমের স্বাধীনতা এখনো আক্রমণের মুখে: সম্পাদক পরিষদ হিউম্যান রাইটস ওয়াচ ট্রাষ্টের মাসবপ্যাপী সেহরি বিতরণ চলমান সিলেটে রবিবার যে সব এলাকায় বিদ্যুৎ থাকবে না বিপিজেএ সিলেট বিভাগীয় কমিটির নতুন সভাপতি পাভেল ও সাধারণ সম্পাদক রাব্বী বিশ্বনাথের ১৩৩টি প্রাথমিক বিদ্যালয়ে গাছের চারা বিতরণ করলেন- ইউএনও সিলেটে চোরাই পণ্যের বিশাল চালান আটক রাষ্ট্র যদি ন্যায়বিচার নিশ্চিত না করে, তবে জনগণের নিরাপত্তা ও স্বাধীনতা চরম হুমকির মুখে পড়বে-সাকি বলিউড নায়িকাদের রূপের রহস্য ফাঁস করলেন চিকিৎসক নারীর ক্ষমতায়ন নিয়ে কানে যা বললেন বর্ষা বছরে রোনালদো পান সাড়ে তিন হাজার কোটি, উপার্জন কমেছে মেসির সাফ অনূর্ধ্ব-১৯ চ্যাম্পিয়নশিপ ভারতকে হারিয়েই শিরোপা জিততে হবে বাংলাদেশকে ফিলিস্তিন রাষ্ট্রকে স্বীকৃতি দিতে জুনে আন্তর্জাতিক সম্মেলন

মিছিলে না যাওয়ায় তিন শিক্ষার্থীকে কান ধরে ওঠবস করাল ছাত্রলীগ

প্রতিনিধির নাম
  • আপডেট সময় : ০৬:৪৬:১৬ অপরাহ্ন, মঙ্গলবার, ১০ অক্টোবর ২০২৩ ৮২ বার পড়া হয়েছে

নাটোরের বড়াইগ্রাম সরকারি অনার্স কলেজে নবাগত শিক্ষার্থীদের শুভেচ্ছা জানিয়ে ছাত্রলীগের বের করা মিছিলে না যাওয়ায় বিজ্ঞান বিভাগের তিন শিক্ষার্থী জুয়েল রানা, শহিদুল ইসলাম ও ইমনকে কান ধরে ওঠবস করিয়েছেন কলেজ ছাত্রলীগের সভাপতি শিপন আহমেদ ও তার অনুসারীরা।প্রত্যেককে পাঁচবার কান ধরে ওঠবস করানো হয়। আর ঠিকমতো কান না ধরায় ইমনকে আরও পাঁচবার কান ধরে ওঠবস করতে বাধ্য করা হয়।ঝামেলায় পড়ার ভয়ে এসব নিয়ে কোনো অভিযোগ করেননি এসব শিক্ষার্থী।তবে মঙ্গলবার বিষয়টি জানাজানি হয়।কলেজের কয়েকজন শিক্ষক ও শিক্ষার্থী জানান,সারা দেশের মতো রোববার বড়াইগ্রাম সরকারি অনার্স কলেজে একাদশ শ্রেণিতে ভর্তি হওয়া নবাগত শিক্ষার্থীদের উদ্বোধনী ক্লাস হয়। সেদিন তাদের শুভেচ্ছা জানিয়ে মিছিল বের করে কলেজ ছাত্রলীগ। কলেজের সাধারণ শিক্ষার্থীকে বাধ্যতামূলক ওই মিছিলে নিয়ে যাওয়া হয়।এ সময় রসায়ন ক্লাস চলায় বিজ্ঞান বিভাগের শিক্ষার্থীরা মিছিলে যেতে পারেননি।

মিছিল শেষে কলেজ ছাত্রলীগ সভাপতি শিপন আহমেদ ও তার অনুসারীরা বিজ্ঞান বিভাগের তিন শিক্ষার্থী জুয়েল রানা,শহিদুল ইসলাম ও ইমনকে বসে থাকতে দেখে মিছিলে না যাওয়ার কারণ জানতে চান।মিছিলে যেতে না পারায় এ সময় তিনজন তাদের কাছে ক্ষমা চান।কলেজ ছাত্রলীগ সভাপতি শিপন আহমেদ ও তার অনুসারীরা ক্ষমা না করে তাদের পাঁচবার করে কান ধরে ওঠবস করান। ঠিকমতো কান না ধরায় ইমনকে আরও পাঁচবার কান ধরে ওঠবস করতে বাধ্য করেন।এ দৃশ্য অসংখ্য নবাগত শিক্ষার্থী দাঁড়িয়ে দেখলেও কেউ প্রতিবাদ করার সাহস পাননি। ঘটনার পর থেকে এসব শিক্ষার্থী ও তাদের বন্ধুরা ক্লাসে না আসায় বিষয়টি মঙ্গলবার কলেজ শিক্ষকদের নজরে আসে।ভুক্তভোগী ছাত্র জুয়েল রানা বলেন,সেদিনের বিষয়ে কথা বলে আর কষ্ট বাড়াতে চাই না। তবে নবাগত শিক্ষার্থীদের সামনে এমন কাণ্ড করায় খুব মানসিক কষ্ট পেয়েছি।

এসব বিষয়ে জানতে মঙ্গলবার বড়াইগ্রাম সরকারি অনার্স কলেজে গেলে সাধারণ শিক্ষার্থী ও শিক্ষকরা জানান, গত বছরও একইভাবে নবাগতদের শুভেচ্ছা জানিয়ে বের করা মিছিলে না যাওয়ার অভিযোগে সোহেল রানা নামে এক ছাত্রকে প্রকাশ্যে কলেজ মাঠে মারধর করেন কলেজ ছাত্রলীগ সভাপতি শিপন আহমেদ ও তার অনুসারীরা। এর আগে উচ্চমাধ্যমিক পরীক্ষার্থীদের বিদায় অনুষ্ঠানের ব্যানারে বঙ্গবন্ধুর ছবি না থাকায় উপস্থিত শিক্ষকদের লাঞ্ছিত করেন কলেজ ছাত্রলীগ সভাপতি শিপন আহমেদ ও তার অনুসারীরা। শিপন আহমেদ এখন কলেজের কোনো শিক্ষার্থী নন এবং তিনি একজন মাইক্রোচালক বলেও সাধারণ শিক্ষার্থীরা এই প্রতিবেদককে জানিয়েছেন।

এ বিষয়ে জানতে চাইলে কলেজের সহকারী অধ্যাপক আমিনুল হক মতিন বলেন,ঘটনার পর ছাত্রলীগ নেতাকর্মীরা আমার কাছে এসে ক্ষমা চেয়েছে।যদিও কান ধরে ওঠবস করার বিষয়টি অস্বীকার করেছেন ছাত্রলীগ সভাপতি শিপন আহমেদ।তিনি বলেন, ছাত্রলীগের কোনো নেতাকর্মী এমন কাজ করেনি।কলেজের ছাত্রত্বের বিষয়ে জানতে চাইলে শিপন বলেন, আমি ২০১৬ সালে ব্যবস্থাপনা বিষয়ে অনার্সে ভর্তি হই।বর্তমানে ২য় বর্ষে পড়ছি। আরেক প্রশ্নের জবাবে তিনি বলেন, আমার কোনো গাড়ি নেই। গাড়ি চালাইও না।এ বিষয়ে জানতে কলেজের ভারপ্রাপ্ত অধ্যক্ষ বাদশা উল্লাহ জানান, কলেজের কাজে কয়েকদিন থেকে ঢাকায় অবস্থান করায় বিষয়টি আমার জানা নেই।

নিউজটি শেয়ার করুন

আপনার মন্তব্য

Your email address will not be published. Required fields are marked *

আপনার ইমেইল এবং অন্যান্য তথ্য সংরক্ষন করুন

আপলোডকারীর তথ্য
ট্যাগস :

মিছিলে না যাওয়ায় তিন শিক্ষার্থীকে কান ধরে ওঠবস করাল ছাত্রলীগ

আপডেট সময় : ০৬:৪৬:১৬ অপরাহ্ন, মঙ্গলবার, ১০ অক্টোবর ২০২৩

নাটোরের বড়াইগ্রাম সরকারি অনার্স কলেজে নবাগত শিক্ষার্থীদের শুভেচ্ছা জানিয়ে ছাত্রলীগের বের করা মিছিলে না যাওয়ায় বিজ্ঞান বিভাগের তিন শিক্ষার্থী জুয়েল রানা, শহিদুল ইসলাম ও ইমনকে কান ধরে ওঠবস করিয়েছেন কলেজ ছাত্রলীগের সভাপতি শিপন আহমেদ ও তার অনুসারীরা।প্রত্যেককে পাঁচবার কান ধরে ওঠবস করানো হয়। আর ঠিকমতো কান না ধরায় ইমনকে আরও পাঁচবার কান ধরে ওঠবস করতে বাধ্য করা হয়।ঝামেলায় পড়ার ভয়ে এসব নিয়ে কোনো অভিযোগ করেননি এসব শিক্ষার্থী।তবে মঙ্গলবার বিষয়টি জানাজানি হয়।কলেজের কয়েকজন শিক্ষক ও শিক্ষার্থী জানান,সারা দেশের মতো রোববার বড়াইগ্রাম সরকারি অনার্স কলেজে একাদশ শ্রেণিতে ভর্তি হওয়া নবাগত শিক্ষার্থীদের উদ্বোধনী ক্লাস হয়। সেদিন তাদের শুভেচ্ছা জানিয়ে মিছিল বের করে কলেজ ছাত্রলীগ। কলেজের সাধারণ শিক্ষার্থীকে বাধ্যতামূলক ওই মিছিলে নিয়ে যাওয়া হয়।এ সময় রসায়ন ক্লাস চলায় বিজ্ঞান বিভাগের শিক্ষার্থীরা মিছিলে যেতে পারেননি।

মিছিল শেষে কলেজ ছাত্রলীগ সভাপতি শিপন আহমেদ ও তার অনুসারীরা বিজ্ঞান বিভাগের তিন শিক্ষার্থী জুয়েল রানা,শহিদুল ইসলাম ও ইমনকে বসে থাকতে দেখে মিছিলে না যাওয়ার কারণ জানতে চান।মিছিলে যেতে না পারায় এ সময় তিনজন তাদের কাছে ক্ষমা চান।কলেজ ছাত্রলীগ সভাপতি শিপন আহমেদ ও তার অনুসারীরা ক্ষমা না করে তাদের পাঁচবার করে কান ধরে ওঠবস করান। ঠিকমতো কান না ধরায় ইমনকে আরও পাঁচবার কান ধরে ওঠবস করতে বাধ্য করেন।এ দৃশ্য অসংখ্য নবাগত শিক্ষার্থী দাঁড়িয়ে দেখলেও কেউ প্রতিবাদ করার সাহস পাননি। ঘটনার পর থেকে এসব শিক্ষার্থী ও তাদের বন্ধুরা ক্লাসে না আসায় বিষয়টি মঙ্গলবার কলেজ শিক্ষকদের নজরে আসে।ভুক্তভোগী ছাত্র জুয়েল রানা বলেন,সেদিনের বিষয়ে কথা বলে আর কষ্ট বাড়াতে চাই না। তবে নবাগত শিক্ষার্থীদের সামনে এমন কাণ্ড করায় খুব মানসিক কষ্ট পেয়েছি।

এসব বিষয়ে জানতে মঙ্গলবার বড়াইগ্রাম সরকারি অনার্স কলেজে গেলে সাধারণ শিক্ষার্থী ও শিক্ষকরা জানান, গত বছরও একইভাবে নবাগতদের শুভেচ্ছা জানিয়ে বের করা মিছিলে না যাওয়ার অভিযোগে সোহেল রানা নামে এক ছাত্রকে প্রকাশ্যে কলেজ মাঠে মারধর করেন কলেজ ছাত্রলীগ সভাপতি শিপন আহমেদ ও তার অনুসারীরা। এর আগে উচ্চমাধ্যমিক পরীক্ষার্থীদের বিদায় অনুষ্ঠানের ব্যানারে বঙ্গবন্ধুর ছবি না থাকায় উপস্থিত শিক্ষকদের লাঞ্ছিত করেন কলেজ ছাত্রলীগ সভাপতি শিপন আহমেদ ও তার অনুসারীরা। শিপন আহমেদ এখন কলেজের কোনো শিক্ষার্থী নন এবং তিনি একজন মাইক্রোচালক বলেও সাধারণ শিক্ষার্থীরা এই প্রতিবেদককে জানিয়েছেন।

এ বিষয়ে জানতে চাইলে কলেজের সহকারী অধ্যাপক আমিনুল হক মতিন বলেন,ঘটনার পর ছাত্রলীগ নেতাকর্মীরা আমার কাছে এসে ক্ষমা চেয়েছে।যদিও কান ধরে ওঠবস করার বিষয়টি অস্বীকার করেছেন ছাত্রলীগ সভাপতি শিপন আহমেদ।তিনি বলেন, ছাত্রলীগের কোনো নেতাকর্মী এমন কাজ করেনি।কলেজের ছাত্রত্বের বিষয়ে জানতে চাইলে শিপন বলেন, আমি ২০১৬ সালে ব্যবস্থাপনা বিষয়ে অনার্সে ভর্তি হই।বর্তমানে ২য় বর্ষে পড়ছি। আরেক প্রশ্নের জবাবে তিনি বলেন, আমার কোনো গাড়ি নেই। গাড়ি চালাইও না।এ বিষয়ে জানতে কলেজের ভারপ্রাপ্ত অধ্যক্ষ বাদশা উল্লাহ জানান, কলেজের কাজে কয়েকদিন থেকে ঢাকায় অবস্থান করায় বিষয়টি আমার জানা নেই।