ঢাকা ০৫:২৭ অপরাহ্ন, শনিবার, ১৯ জুলাই ২০২৫, ৪ শ্রাবণ ১৪৩২ বঙ্গাব্দ
সংবাদ শিরোনাম ::
সংবাদমাধ্যমের স্বাধীনতা এখনো আক্রমণের মুখে: সম্পাদক পরিষদ হিউম্যান রাইটস ওয়াচ ট্রাষ্টের মাসবপ্যাপী সেহরি বিতরণ চলমান প্রাথমিকে প্রধান শিক্ষকের শূন্যপদে দ্রু ত নিয়োগের নির্দেশ ১৫ টাকা দরে চাল পাবে ৫৫ লাখ পরিবার গাড়ি থামিয়ে ঘুষ আদায়, ওসিসহ ৬ পুলিশ প্রত্যাহার মৌলভীবাজার কুলাউড়ায় চাঁদাবাজি – সন্ত্রাস দমনে কঠোর অবস্থানে পুলিশ ঢাকায় বিমানের সাথে বৈঠক করলেন সিলেটের ব্যবসায়ীরা তিনমাস পর বিমানের সিলেট-ম্যানচেস্টার ফ্লাইট চালু সিলেট শাহ মাদানী ঈদগাহ ইকোপার্ক সড়কের ঢালাই কাজের ভিত্তিপ্রস্তর স্থাপন শ্রীমঙ্গলে টাকার জন্য কলেজ ছাত্র খুন – গ্রেফতার ২ সিলেট সীমান্তে কোটি টাকার চোরাই পণ্য জব্দ ৭ লাখ টাকা নেওয়ার ভিডিও ভাইরাল, যা বললেন এনসিপি নেতা

পানির অভাবে সিলেটে অনাবাদী ৬৫ হাজার হেক্টর জমি

প্রতিনিধির নাম
  • আপডেট সময় : ০৩:৫২:১৯ পূর্বাহ্ন, সোমবার, ১০ এপ্রিল ২০২৩ ১০২ বার পড়া হয়েছে

সিলেট প্রতিনিধি,

চাষের আওতায় আনতে ৫ বছর মেয়াদী পরিকল্পনা

বৃষ্টিবহুল সিলেটে পানির অভাবে শুষ্ক মৌসুমে প্রায় ৬৫ হাজার হেক্টর জমি অনাবাদি (পতিত) থাকছে বলে জানিয়েছে কৃষি বিভাগ। এ অবস্থায় এ অঞ্চলের পতিত জমিসমূহ চাষের আওতায় আনার উদ্যোগ নেয়া হয়েছে। এ বছর (২০২৩ সাল) প্রাথমিকভাবে জেলার ১৩ উপজেলায় ১৩ হাজার হেক্টর জমি চাষের আওতায় আনা হবে। আগামী ৪ বছরে জেলার পতিত সব জমি চাষের আওতায় আনার পরিকল্পনা নেয়া হয়েছে।কৃষি সম্প্রসারণ অধিদপ্তর, সিলেট-এর উপ-পরিচালক মোহাম্মদ খয়ের উদ্দিন মোল্লা এ প্রতিবেদককে জানান, সিলেটে অক্টোবর থেকে মার্চ-পর্যন্ত সময়ে বৃষ্টি কম হয়। এ জন্য পানির সংকট থাকে।

পানির কারণে অনেক জমি চাষাবাদ করা যায় না। এ অবস্থায় এ অঞ্চলের পতিত জমি চাষের আওতায় আনতে বাংলাদেশ এগ্রিকালচারাল ডেভেলপম্যান্ট কর্পোরেশন (বিএডিসি), স্থানীয় সরকার প্রকৌশল অধিদপ্তর (এলজিইডি) ও পানি উন্নয়ন বোর্ড (পাউবো)-কে নির্দেশনা দিয়েছে জেলা কৃষি উন্নয়ন কোর কমিটি। সিলেটের জেলা প্রশাসকের নেতৃত্বে গঠিত কোর কমিটির সভা হবে প্রতি দুই মাস অন্তর অন্তর। উপজেলা পর্যায়ে উপজেলা চেয়ারম্যান, ইউএনও ও কৃষি অফিসার পতিত জমি শনাক্ত করে তা কোর কমিটিকে অবহিত করবেন। সাসটেইনএবল ডেভেলপম্যান্ট গোল (এসডিজি) ও রূপকল্প-২০৪১ বাস্তবায়নের লক্ষ্যে এ পরিকল্পনা নেয়া হয়েছে বলে জানান এ কর্মকর্তা।খয়ের উদ্দিন মোল্লা আরো বলেন, সিলেট জেলায় সবমিলিয়ে ২ লক্ষ হেক্টর চাষযোগ্য জমি রয়েছে। এর মধ্যে ৮৫ হাজার হেক্টরে ধান এবং ৪০/৪২ হাজার হেক্টরে সবজি উৎপন্ন হয়।

অন্যান্য ফসল হয় ১০/১২ হেক্টর জমিতে। বাকি জমি শুষ্ক মৌসুমে পতিত থাকে। এ পতিত জমিই মূলত তারা চাষের আওতায় আনার পরিকল্পনা নিয়েছে। এ বছর পরীক্ষামূলকভাবে সিলেট জেলার ১৮০০ হেক্টর জমিতে তারা রবিশস্য আবাদ করে সফল হয়েছেন বলে জানান এ কৃষি কর্মকর্তা।কোর কমিটির সভাপতি ও সিলেটের জেলা প্রশাসক মো: মজিবর রহমান জানিয়েছেন, আগামী বোরো মৌসুমে প্রতিটি উপজেলায় ১০০০ হেক্টর করে জমি চাষের আওতায় আসবে। উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তাদের উপজেলা কৃষি উন্নয়ন বিষয়ক কোর কমিটি ও উপজেলা সেচ কমিটির সঙ্গে সভা করে অগ্রাধিকার ভিত্তিতে খননযোগ্য খালের তালিকা প্রেরণ করতে বলা হয়েছে।

‘মাঠপর্যায়ে এক ইঞ্চি জমিও অনাবাদি রাখা যাবে না’-প্রধানমন্ত্রীর এমন নির্দেশনা বাস্তবায়নের উদ্দেশ্যে এ পরিকল্পনা গ্রহণ করা হয়েছে বলে জানান জেলা প্রশাসক। তিনি জানান, বোরো মৌসুমে সিলেটে প্রায় ৬৫ হাজার হেক্টর জমি অনাবাদি থাকে। অনাবাদি জমি কীভাবে চাষের আওতায় নিয়ে আসা যায়-সে লক্ষ্যেই তারা পরিকল্পনা গ্রহণ করেছেন। তিনি জানান, পতিত জমিতে আবাদের লক্ষ্যে কৃষকদের যথাসময়ে সার ও বীজ সরবরাহের জন্য বিএডিসি-কে নির্দেশনা প্রদান করা হয় এবং ফসল উৎপাদনে প্রয়োজনীয় সেচ নিশ্চিতকরণে বিএডিসি (সেচ), পানি উন্নয়ন বোর্ড ও এলজিইডি-কে ব্যবস্থা গ্রহণ করতে বলা হয়।সিলেট আবহাওয়া অফিসের সাবেক আবহাওয়াবিদ ও বর্তমানে ঢাকা আবহাওয়া অফিসে কর্মরত সাঈদ আহমদ চৌধুরী জানান, সারাদেশে এক বছরে গড় বৃষ্টিপাত ২৪২৮ মিলিমিটার। কিন্তু, গত বছর সিলেটে দ্বিগুণেরও বেশী অর্থাৎ ৪৯৮৯ মিলিমিটার বৃষ্টিপাত রেকর্ড হয়েছে। ওই বছরের জুন মাসে মাসভিত্তিক হিসেবে সিলেটে ৬২ বছরের মধ্যে সর্বোচ্চ ১৪৬০ মিলিমিটার বৃষ্টিপাত রেকর্ড করে সিলেট আবহাওয়া অফিস।

নিউজটি শেয়ার করুন

আপনার মন্তব্য

Your email address will not be published. Required fields are marked *

আপনার ইমেইল এবং অন্যান্য তথ্য সংরক্ষন করুন

আপলোডকারীর তথ্য
ট্যাগস :

পানির অভাবে সিলেটে অনাবাদী ৬৫ হাজার হেক্টর জমি

আপডেট সময় : ০৩:৫২:১৯ পূর্বাহ্ন, সোমবার, ১০ এপ্রিল ২০২৩

সিলেট প্রতিনিধি,

চাষের আওতায় আনতে ৫ বছর মেয়াদী পরিকল্পনা

বৃষ্টিবহুল সিলেটে পানির অভাবে শুষ্ক মৌসুমে প্রায় ৬৫ হাজার হেক্টর জমি অনাবাদি (পতিত) থাকছে বলে জানিয়েছে কৃষি বিভাগ। এ অবস্থায় এ অঞ্চলের পতিত জমিসমূহ চাষের আওতায় আনার উদ্যোগ নেয়া হয়েছে। এ বছর (২০২৩ সাল) প্রাথমিকভাবে জেলার ১৩ উপজেলায় ১৩ হাজার হেক্টর জমি চাষের আওতায় আনা হবে। আগামী ৪ বছরে জেলার পতিত সব জমি চাষের আওতায় আনার পরিকল্পনা নেয়া হয়েছে।কৃষি সম্প্রসারণ অধিদপ্তর, সিলেট-এর উপ-পরিচালক মোহাম্মদ খয়ের উদ্দিন মোল্লা এ প্রতিবেদককে জানান, সিলেটে অক্টোবর থেকে মার্চ-পর্যন্ত সময়ে বৃষ্টি কম হয়। এ জন্য পানির সংকট থাকে।

পানির কারণে অনেক জমি চাষাবাদ করা যায় না। এ অবস্থায় এ অঞ্চলের পতিত জমি চাষের আওতায় আনতে বাংলাদেশ এগ্রিকালচারাল ডেভেলপম্যান্ট কর্পোরেশন (বিএডিসি), স্থানীয় সরকার প্রকৌশল অধিদপ্তর (এলজিইডি) ও পানি উন্নয়ন বোর্ড (পাউবো)-কে নির্দেশনা দিয়েছে জেলা কৃষি উন্নয়ন কোর কমিটি। সিলেটের জেলা প্রশাসকের নেতৃত্বে গঠিত কোর কমিটির সভা হবে প্রতি দুই মাস অন্তর অন্তর। উপজেলা পর্যায়ে উপজেলা চেয়ারম্যান, ইউএনও ও কৃষি অফিসার পতিত জমি শনাক্ত করে তা কোর কমিটিকে অবহিত করবেন। সাসটেইনএবল ডেভেলপম্যান্ট গোল (এসডিজি) ও রূপকল্প-২০৪১ বাস্তবায়নের লক্ষ্যে এ পরিকল্পনা নেয়া হয়েছে বলে জানান এ কর্মকর্তা।খয়ের উদ্দিন মোল্লা আরো বলেন, সিলেট জেলায় সবমিলিয়ে ২ লক্ষ হেক্টর চাষযোগ্য জমি রয়েছে। এর মধ্যে ৮৫ হাজার হেক্টরে ধান এবং ৪০/৪২ হাজার হেক্টরে সবজি উৎপন্ন হয়।

অন্যান্য ফসল হয় ১০/১২ হেক্টর জমিতে। বাকি জমি শুষ্ক মৌসুমে পতিত থাকে। এ পতিত জমিই মূলত তারা চাষের আওতায় আনার পরিকল্পনা নিয়েছে। এ বছর পরীক্ষামূলকভাবে সিলেট জেলার ১৮০০ হেক্টর জমিতে তারা রবিশস্য আবাদ করে সফল হয়েছেন বলে জানান এ কৃষি কর্মকর্তা।কোর কমিটির সভাপতি ও সিলেটের জেলা প্রশাসক মো: মজিবর রহমান জানিয়েছেন, আগামী বোরো মৌসুমে প্রতিটি উপজেলায় ১০০০ হেক্টর করে জমি চাষের আওতায় আসবে। উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তাদের উপজেলা কৃষি উন্নয়ন বিষয়ক কোর কমিটি ও উপজেলা সেচ কমিটির সঙ্গে সভা করে অগ্রাধিকার ভিত্তিতে খননযোগ্য খালের তালিকা প্রেরণ করতে বলা হয়েছে।

‘মাঠপর্যায়ে এক ইঞ্চি জমিও অনাবাদি রাখা যাবে না’-প্রধানমন্ত্রীর এমন নির্দেশনা বাস্তবায়নের উদ্দেশ্যে এ পরিকল্পনা গ্রহণ করা হয়েছে বলে জানান জেলা প্রশাসক। তিনি জানান, বোরো মৌসুমে সিলেটে প্রায় ৬৫ হাজার হেক্টর জমি অনাবাদি থাকে। অনাবাদি জমি কীভাবে চাষের আওতায় নিয়ে আসা যায়-সে লক্ষ্যেই তারা পরিকল্পনা গ্রহণ করেছেন। তিনি জানান, পতিত জমিতে আবাদের লক্ষ্যে কৃষকদের যথাসময়ে সার ও বীজ সরবরাহের জন্য বিএডিসি-কে নির্দেশনা প্রদান করা হয় এবং ফসল উৎপাদনে প্রয়োজনীয় সেচ নিশ্চিতকরণে বিএডিসি (সেচ), পানি উন্নয়ন বোর্ড ও এলজিইডি-কে ব্যবস্থা গ্রহণ করতে বলা হয়।সিলেট আবহাওয়া অফিসের সাবেক আবহাওয়াবিদ ও বর্তমানে ঢাকা আবহাওয়া অফিসে কর্মরত সাঈদ আহমদ চৌধুরী জানান, সারাদেশে এক বছরে গড় বৃষ্টিপাত ২৪২৮ মিলিমিটার। কিন্তু, গত বছর সিলেটে দ্বিগুণেরও বেশী অর্থাৎ ৪৯৮৯ মিলিমিটার বৃষ্টিপাত রেকর্ড হয়েছে। ওই বছরের জুন মাসে মাসভিত্তিক হিসেবে সিলেটে ৬২ বছরের মধ্যে সর্বোচ্চ ১৪৬০ মিলিমিটার বৃষ্টিপাত রেকর্ড করে সিলেট আবহাওয়া অফিস।