ঢাকা ১০:০৯ পূর্বাহ্ন, রবিবার, ১৮ মে ২০২৫, ৪ জ্যৈষ্ঠ ১৪৩২ বঙ্গাব্দ
সংবাদ শিরোনাম ::
সংবাদমাধ্যমের স্বাধীনতা এখনো আক্রমণের মুখে: সম্পাদক পরিষদ হিউম্যান রাইটস ওয়াচ ট্রাষ্টের মাসবপ্যাপী সেহরি বিতরণ চলমান সিলেটে রবিবার যে সব এলাকায় বিদ্যুৎ থাকবে না বিপিজেএ সিলেট বিভাগীয় কমিটির নতুন সভাপতি পাভেল ও সাধারণ সম্পাদক রাব্বী বিশ্বনাথের ১৩৩টি প্রাথমিক বিদ্যালয়ে গাছের চারা বিতরণ করলেন- ইউএনও সিলেটে চোরাই পণ্যের বিশাল চালান আটক রাষ্ট্র যদি ন্যায়বিচার নিশ্চিত না করে, তবে জনগণের নিরাপত্তা ও স্বাধীনতা চরম হুমকির মুখে পড়বে-সাকি বলিউড নায়িকাদের রূপের রহস্য ফাঁস করলেন চিকিৎসক নারীর ক্ষমতায়ন নিয়ে কানে যা বললেন বর্ষা বছরে রোনালদো পান সাড়ে তিন হাজার কোটি, উপার্জন কমেছে মেসির সাফ অনূর্ধ্ব-১৯ চ্যাম্পিয়নশিপ ভারতকে হারিয়েই শিরোপা জিততে হবে বাংলাদেশকে ফিলিস্তিন রাষ্ট্রকে স্বীকৃতি দিতে জুনে আন্তর্জাতিক সম্মেলন

রাসুল (সা.)–এর মুজিজা

প্রতিনিধির নাম
  • আপডেট সময় : ০১:৫৯:১৯ পূর্বাহ্ন, রবিবার, ৯ এপ্রিল ২০২৩ ১৩৬ বার পড়া হয়েছে

ভিউ নিউজ ৭১ ডেস্ক,

রাসুল (সা.)–এর মুজিজা

হজরত বারা ইবন আযিব (রা.)-এর বরাতে এই হাদিসটির বর্ণনা আছে।হজরত বারা ইবন আযিব (রা.)বর্ণনা করেন, আবু বকর (রা.)একদিন আমাদের বাড়িতে আমার বাবার কাছে এসে তাঁর কাছ থেকে একটি হাওদা (উটের পিঠে বসার জন্য আসন) কিনলেন। তারপর বললেন, তোমার ছেলে বারাকে আমার সঙ্গে হাওদাটি বয়ে নিয়ে যেতে বলো।আমি হাওদাটি বয়ে তাঁর সঙ্গে চললাম।আমার বাবাও জিনিসটার মূল্য বুঝে নিতে আমাদের সঙ্গী হলেন। বাবা তাঁকে বললেন, হে আবু বকর (রা.), দয়া করে আপনি আমাদের বলুন, যে রাতে আপনি নবী (সা.)-এর সঙ্গী ছিলেন,(সে দিন) আপনারা কী করেছিলেন?

তিনি বললেন, হ্যাঁ, অবশ্যই।সারা রাত পথ চলে পরদিন দুপুর অব্দি আমরা চললাম।রাস্তাঘাট যখন নির্জন হয়ে পড়ল, কোনো মানুষের আনাগোনা নেই, হঠাৎ একটি লম্বা–চওড়া পাথর আমাদের নজরে পড়ল। সেটির ছায়ায় সূর্যের তাপ ছিল না।আমরা সেখানে গিয়ে নেমে নবী (সা.)-এর জন্য নিজ হাতে একটি জায়গা সাফ–সুতরা করে দিলাম,যাতে সেখানে তিনি ঘুমাতে পারেন।ওখানে একটি চামড়ার বিছানা পেতে আমি বললাম, হে আল্লাহর রাসুল (সা.),আপনি শুয়ে পড়ুন। আমি আপনার নিরাপত্তার জন্য পাহারায় থাকলাম।তিনি শুয়ে পড়লেন। চারপাশের অবস্থা দেখার জন্য আমি বেরিয়ে পড়লাম। হঠাৎ দেখি, এক রাখাল তার মেষপাল নিয়ে এই পাথরের দিকে ছুটে আসছে।সেও আমাদের মতো পাথরটির ছায়ায় আশ্রয় নিতে চায়।

আমি বললাম, যুবক, তুমি কার রাখাল? সে মদিনার কি মক্কার এক লোকের নাম বলল।আমি জিজ্ঞেস করলাম, তোমার মেষপালে কি দুধেল মেষ আছে? সে বলল,হ্যাঁ,আছে। আমি বললাম, তুমি কি দুইয়ে দেবে? সে বলল, হ্যাঁ।সে একটা মেষ ধরে নিয়ে এলে আমি বললাম,এর বাঁটের ধুলাবালু, পশম আর ময়লা পরিষ্কার করে নাও।দেখি, সে এক হাত আরেক হাতের ওপর রেখে ঝাড়ছে।তারপর একটি কাঠের বাটিতে কিছু দুধ দোহন করল।

আমার কাছেও একটা চামড়ার পাত্র ছিল। আমি নবী (সা.)-এর জন্য ওজুর আর খাওয়ার পানি নিয়ে গিয়েছিলাম। আমি দুধ নিয়ে নবী (সা.)-এর কাছে এলাম। তাঁকে জাগানো ঠিক মনে হলো না।কিছুক্ষণ পর তিনি জাগলে আমি দুধ নিয়ে হাজির হলাম। আমি দুধে কিছু পানি ঢেলেছিলাম।তাতে দুধের নিচ পর্যন্ত ঠান্ডা হয়ে গেল।আমি বললাম,হে আল্লাহর রাসুল, আপনি দুধ খান।তিনি খেলেন,আমিও সন্তুষ্ট হলাম। নবী (সা.) বললেন,আমাদের যাত্রা শুরুর সময় কি এখনো হয়নি?আমি বললাম,হ্যাঁ,হয়েছে।

আবার আমাদের সফর শুরু হলো। ততক্ষণে সূর্য পশ্চিম আকাশে ঢলে পড়েছে। সুরাকা ইবন মালিক আমাদের পিছু নিয়েছিল। আমি বললাম, হে আল্লাহর রাসুল (সা.),আমাদের অনুসরণ করে কে যেন আসছে।তিনি বললেন, চিন্তা কোরো না, নিশ্চয়ই মহান আল্লাহ আমাদের সঙ্গে রয়েছেন। তখন নবী (সা.) দোয়া করলেন।তৎক্ষণাৎ আরোহীসহ ঘোড়া তার পেট পর্যন্ত শক্ত মাটিতে দেবে গেল।

সুরাকা বলল, আমার বিশ্বাস, আপনারা আমার বিরুদ্ধে দোয়া করেছেন।আপনারা আমার জন্য দোয়া করে দিন। আল্লাহর কসম আপনাদের অনুসন্ধানকারীদের আমি ফিরিয়ে নিয়ে যাব।নবী (সা.) তার জন্য দোয়া করলেন। সে বেঁচে গেল।ফিরে যাওয়ার পথে যার সঙ্গেই তার দেখা হতো, সে বলত, আমি সব দেখে এসেছি।যাকেই পেয়েছে, ফিরিয়ে দিয়েছে।

আবু বকর (রা.) বলেন, সে আমাদের সঙ্গে করা অঙ্গীকার পূর্ণ করেছে।

সহিহ্‌ বুখারি, হাদিস: ৩৬১৫

নিউজটি শেয়ার করুন

আপনার মন্তব্য

Your email address will not be published. Required fields are marked *

আপনার ইমেইল এবং অন্যান্য তথ্য সংরক্ষন করুন

আপলোডকারীর তথ্য
ট্যাগস :

রাসুল (সা.)–এর মুজিজা

আপডেট সময় : ০১:৫৯:১৯ পূর্বাহ্ন, রবিবার, ৯ এপ্রিল ২০২৩

ভিউ নিউজ ৭১ ডেস্ক,

রাসুল (সা.)–এর মুজিজা

হজরত বারা ইবন আযিব (রা.)-এর বরাতে এই হাদিসটির বর্ণনা আছে।হজরত বারা ইবন আযিব (রা.)বর্ণনা করেন, আবু বকর (রা.)একদিন আমাদের বাড়িতে আমার বাবার কাছে এসে তাঁর কাছ থেকে একটি হাওদা (উটের পিঠে বসার জন্য আসন) কিনলেন। তারপর বললেন, তোমার ছেলে বারাকে আমার সঙ্গে হাওদাটি বয়ে নিয়ে যেতে বলো।আমি হাওদাটি বয়ে তাঁর সঙ্গে চললাম।আমার বাবাও জিনিসটার মূল্য বুঝে নিতে আমাদের সঙ্গী হলেন। বাবা তাঁকে বললেন, হে আবু বকর (রা.), দয়া করে আপনি আমাদের বলুন, যে রাতে আপনি নবী (সা.)-এর সঙ্গী ছিলেন,(সে দিন) আপনারা কী করেছিলেন?

তিনি বললেন, হ্যাঁ, অবশ্যই।সারা রাত পথ চলে পরদিন দুপুর অব্দি আমরা চললাম।রাস্তাঘাট যখন নির্জন হয়ে পড়ল, কোনো মানুষের আনাগোনা নেই, হঠাৎ একটি লম্বা–চওড়া পাথর আমাদের নজরে পড়ল। সেটির ছায়ায় সূর্যের তাপ ছিল না।আমরা সেখানে গিয়ে নেমে নবী (সা.)-এর জন্য নিজ হাতে একটি জায়গা সাফ–সুতরা করে দিলাম,যাতে সেখানে তিনি ঘুমাতে পারেন।ওখানে একটি চামড়ার বিছানা পেতে আমি বললাম, হে আল্লাহর রাসুল (সা.),আপনি শুয়ে পড়ুন। আমি আপনার নিরাপত্তার জন্য পাহারায় থাকলাম।তিনি শুয়ে পড়লেন। চারপাশের অবস্থা দেখার জন্য আমি বেরিয়ে পড়লাম। হঠাৎ দেখি, এক রাখাল তার মেষপাল নিয়ে এই পাথরের দিকে ছুটে আসছে।সেও আমাদের মতো পাথরটির ছায়ায় আশ্রয় নিতে চায়।

আমি বললাম, যুবক, তুমি কার রাখাল? সে মদিনার কি মক্কার এক লোকের নাম বলল।আমি জিজ্ঞেস করলাম, তোমার মেষপালে কি দুধেল মেষ আছে? সে বলল,হ্যাঁ,আছে। আমি বললাম, তুমি কি দুইয়ে দেবে? সে বলল, হ্যাঁ।সে একটা মেষ ধরে নিয়ে এলে আমি বললাম,এর বাঁটের ধুলাবালু, পশম আর ময়লা পরিষ্কার করে নাও।দেখি, সে এক হাত আরেক হাতের ওপর রেখে ঝাড়ছে।তারপর একটি কাঠের বাটিতে কিছু দুধ দোহন করল।

আমার কাছেও একটা চামড়ার পাত্র ছিল। আমি নবী (সা.)-এর জন্য ওজুর আর খাওয়ার পানি নিয়ে গিয়েছিলাম। আমি দুধ নিয়ে নবী (সা.)-এর কাছে এলাম। তাঁকে জাগানো ঠিক মনে হলো না।কিছুক্ষণ পর তিনি জাগলে আমি দুধ নিয়ে হাজির হলাম। আমি দুধে কিছু পানি ঢেলেছিলাম।তাতে দুধের নিচ পর্যন্ত ঠান্ডা হয়ে গেল।আমি বললাম,হে আল্লাহর রাসুল, আপনি দুধ খান।তিনি খেলেন,আমিও সন্তুষ্ট হলাম। নবী (সা.) বললেন,আমাদের যাত্রা শুরুর সময় কি এখনো হয়নি?আমি বললাম,হ্যাঁ,হয়েছে।

আবার আমাদের সফর শুরু হলো। ততক্ষণে সূর্য পশ্চিম আকাশে ঢলে পড়েছে। সুরাকা ইবন মালিক আমাদের পিছু নিয়েছিল। আমি বললাম, হে আল্লাহর রাসুল (সা.),আমাদের অনুসরণ করে কে যেন আসছে।তিনি বললেন, চিন্তা কোরো না, নিশ্চয়ই মহান আল্লাহ আমাদের সঙ্গে রয়েছেন। তখন নবী (সা.) দোয়া করলেন।তৎক্ষণাৎ আরোহীসহ ঘোড়া তার পেট পর্যন্ত শক্ত মাটিতে দেবে গেল।

সুরাকা বলল, আমার বিশ্বাস, আপনারা আমার বিরুদ্ধে দোয়া করেছেন।আপনারা আমার জন্য দোয়া করে দিন। আল্লাহর কসম আপনাদের অনুসন্ধানকারীদের আমি ফিরিয়ে নিয়ে যাব।নবী (সা.) তার জন্য দোয়া করলেন। সে বেঁচে গেল।ফিরে যাওয়ার পথে যার সঙ্গেই তার দেখা হতো, সে বলত, আমি সব দেখে এসেছি।যাকেই পেয়েছে, ফিরিয়ে দিয়েছে।

আবু বকর (রা.) বলেন, সে আমাদের সঙ্গে করা অঙ্গীকার পূর্ণ করেছে।

সহিহ্‌ বুখারি, হাদিস: ৩৬১৫