ঢাকা ০১:১৪ পূর্বাহ্ন, রবিবার, ১৮ মে ২০২৫, ৩ জ্যৈষ্ঠ ১৪৩২ বঙ্গাব্দ
সংবাদ শিরোনাম ::
সংবাদমাধ্যমের স্বাধীনতা এখনো আক্রমণের মুখে: সম্পাদক পরিষদ হিউম্যান রাইটস ওয়াচ ট্রাষ্টের মাসবপ্যাপী সেহরি বিতরণ চলমান সিলেটে রবিবার যে সব এলাকায় বিদ্যুৎ থাকবে না বিপিজেএ সিলেট বিভাগীয় কমিটির নতুন সভাপতি পাভেল ও সাধারণ সম্পাদক রাব্বী বিশ্বনাথের ১৩৩টি প্রাথমিক বিদ্যালয়ে গাছের চারা বিতরণ করলেন- ইউএনও সিলেটে চোরাই পণ্যের বিশাল চালান আটক রাষ্ট্র যদি ন্যায়বিচার নিশ্চিত না করে, তবে জনগণের নিরাপত্তা ও স্বাধীনতা চরম হুমকির মুখে পড়বে-সাকি বলিউড নায়িকাদের রূপের রহস্য ফাঁস করলেন চিকিৎসক নারীর ক্ষমতায়ন নিয়ে কানে যা বললেন বর্ষা বছরে রোনালদো পান সাড়ে তিন হাজার কোটি, উপার্জন কমেছে মেসির সাফ অনূর্ধ্ব-১৯ চ্যাম্পিয়নশিপ ভারতকে হারিয়েই শিরোপা জিততে হবে বাংলাদেশকে ফিলিস্তিন রাষ্ট্রকে স্বীকৃতি দিতে জুনে আন্তর্জাতিক সম্মেলন

গোলাপগঞ্জে মা-বাবাকে হত্যার দায়ে পুত্র রাহেলের ডাবল মৃত্যুদন্ড

প্রতিনিধির নাম
  • আপডেট সময় : ০৫:০৮:২৮ অপরাহ্ন, শুক্রবার, ৩১ মার্চ ২০২৩ ৮৬ বার পড়া হয়েছে

ভিউ নিউজ ৭১ প্রতিবেদন,

# ৩ শতক জমির জন্যে কুপিয়ে হত্যা করা হয়

স্টাফ রিপোর্টার :সিলেটের গোলাপগঞ্জে মাত্র তিন শতক জমি নিজের নামে লিখে দিতে পিতা-মাতাকে চাপ দিচ্ছিল আতিকুর রহমান রাহেল।কিন্তু সকল সন্তানকে সমানভাবে জমি দেয়া হবে বলে সাফ জানিয়ে দেন পিতা আব্দুল করিম খান। এতে ক্ষুব্ধ হয় রাহেল। সাতসকালে জন্মদাতা পিতা আব্দুল করিম খান (৬৫) ও গর্ভধারিণী মা মিনারা বেগমকে (৫০) ডেকে জমিতে নিয়ে যায়।এরপর ওই জমিতেই কুদাল দিয়ে এলোপাতাড়ি কুপিয়ে পিতা আব্দুল করিম খান ও মা মিনারা বেগমকে হত্যা করে।মা-বাবাকে হত্যার দায়ে ঘাতক আতিকুর রহমান রাহেলকে (৩০) ডাবল মৃত্যুদন্ড দিয়েছেন আদালত।গতকাল বৃহস্পতিবার সকালে সিলেটের সিনিয়র জেলা ও দায়রা জজ মশিউর রহমান চৌধুরী জনাকীর্ণ আদালতে রাহেলকে এই ডাবল মৃত্যুদন্ড দেন।রায়ে পিতাকে হত্যার জন্যে দন্ডবিধির ৩০২ ধারায় মৃত্যুদন্ড এবং একইভাবে মাকে হত্যার জন্যে একই আইনের ৩০২ ধারায় মৃত্যুদন্ড দেয়া হয়। মৃত্যুদন্ডপ্রাপ্ত রাহেল গোলাপগঞ্জ উপজেলার ঢাকাদক্ষিণ ইউনিয়নের সুনামপুর গ্রামের আব্দুল করিম খানের দ্বিতীয় পুত্র।

সিলেট জেলার পিপি এডভোকেট নিজাম উদ্দিন সিলেটের ডাককে রায়ের বিষয়টি নিশ্চিত করে বলেন,এটি দেশের একটি আলোচিত মামলা।সামান্য জমি-জমার জন্য পিতা-মাতাকে ডেকে নিয়ে হত্যা করেছিল পুত্র। আদালতে ঘটনাটি প্রমানিত হওয়ায় আসামি রাহেলকে ডাবল মৃত্যুদন্ড দেয়া হয়েছে। মৃত্যুদন্ডপ্রাপ্ত রাহেলকে ৭ দিনের মধ্যে অবশ্যই আপিল করতে হবে।রায় ঘোষণার পর তাকে জিজ্ঞেস করা হয়েছিল আপিল করবে কি না।সে জানিয়েছে জেল আপিল করবে।আদালত সংশ্লিষ্ট সূত্র ও নথিপত্র পর্যালোচনা করে জানা গেছে, গোলাপগঞ্জের সুনামপুর গ্রামের আব্দুল করিম খান তার ৩ পুত্র সন্তানকে নিয়ে নিজ বাড়িতে বসবাস করে আসছেন। তার ৩ কন্যা সন্তানও রয়েছে। কন্যাদের বিবাহ হওয়ায় বাড়িতে কেবল পুত্ররা পৃথকভাবে বসবাস করছিলেন।পুত্রদের মধ্যে সম্পত্তি নিয়ে বিরোধ সৃষ্টি হলে গণ্যমান্য ব্যক্তিগণ পিতামাতাকে নিয়ে তাদের বিরোধ মীমাংসা করে দেন। এরপরেও দ্বিতীয় পুত্র আতিকুর রহমান রাহেল বাড়ির পার্শ্ববর্তী দক্ষিণ পশ্চিম কোনার ৩ শতক জমি তার নামে লিখে দেয়ার জন্যে পিতামাতাকে চাপ দেয়। পিতা আব্দুল করিম খান তিন পুত্রের মধ্যে সমানভাবে জমি-জমা ভাগ-বাটোয়ারার কথা বলেন।
২০২০ সালের ২৭ মার্চ ভোর প্রায় সাড়ে ৬ টায় আব্দুল করিম খান ঘুম থেকে উঠলে রাহেল তাকে জমির পাশে লাগানো গাছপালা কাটার জন্য নিয়ে যায়। এসময় রাহেলের মা মিনারা বেগমও তাদের পিছু পিছু যান।জমিতে যাওয়ার পর কথাবার্তার এক পর্যায়ে রাহেল তার পিতা আব্দুল করিম খানকে আবারো ওই ৩ শতক জমি তার নামে লিখে দেয়ার জন্য চাপ সৃষ্টি করে।এসময় এনিয়ে পিতা-পুত্রের মধ্যে কথা কাটাকাটি শুরু হয়।কথা কাটাকাটির এক পর্যায়ে রাহেল উত্তেজিত হয়ে হাতে থাকা কোদাল দিয়ে মা মিনারা বেগমকে কোপ দেয়।এসময় স্ত্রীকে রক্ষায় স্বামী আব্দুল করিম খান এগিয়ে আসলে মাথায় গুরুতর আঘাত পেয়ে তিনি মাটিতে লুটিয়ে পড়েন। মিনারা বেগম এগিয়ে আসলে রাহেল তাকেও এলোপাতাড়ি কুপিয়ে ও পিটিয়ে গুরতর আহত করে। পুত্রের আঘাতে ঘটনাস্থলেই হতভাগ্য পিতা আব্দুল করিম খান মারা যান। মিনারা বেগমকে দ্রুত ওসমানী হাসপাতালে নিয়ে যাওয়া হয়।ওসমানী হাসপাতালে চিকিৎসা গ্রহণ শেষে বাড়িতে আসার দু’দিন পর তিনিও মারা যান। এ ঘটনার পরদিন ২৮ মার্চ গোলাপগঞ্জ থানায় একটি হত্যা মামলা দায়ের করা হয় (মামলা নম্বর-২০)।

এদিকে, ঘটনার পরপরই ঘাতক রাহেল পালিয়ে যায়। পরে মৌলভীবাজারের বড়লেখা থেকে ২৮ মার্চ ভোরে রাহেলকে গ্রেফতার করে পুলিশ। গ্রেফতারের পর আদালতে পিতামাতা হত্যার বর্ণনা দিয়ে ফৌজদারি কার্যবিধির ১৬৪ ধারায় স্বেচ্ছায় স্বীকারোক্তিমূলক জবানবন্দি দেয়। সিলেটের সিনিয়র জুডিশিয়াল ম্যাজিস্ট্রেট মোহাম্মদ হারুন-অর- রশিদ তার জবানবন্দি রেকর্ড করেন।তদন্ত শেষে গোলাপগঞ্জ থানার উপ-পরিদর্শক পিন্টু সরকার ২০২১ সালের ২৮ ফেব্রুয়ারি আসামি আতিকুর রহমান রাহেলের বিরুদ্ধে প্যানাল কোড, ১৮৬০ এর ৩০২ ধারায় আদালতে অভিযোগপত্র দাখিল করেন (অভিযোগপত্র নম্বর-৫২)। এরপর মামলাটি বিচারের জন্য সিনিয়র জুডিশিয়াল ম্যাজিস্ট্রেট, ২নং আমলী আদালত, সিলেট থেকে সিলেটের দায়রা জজ আদালতে প্রেরণ করা হয়। ২০২২ সালের ২০ জুন আসামি রাহেলের বিরুদ্ধে সিলেটের দায়রা জজ অভিযোগ গঠন করেন। এরপর ১৬ আগস্ট বাদীর সাক্ষ্য গ্রহণের মধ্য দিয়ে আদালত সাক্ষীদের সাক্ষ্য গ্রহণ শুরু করেন।মামলার ১৬ সাক্ষীর মধ্যে ১৪ জনের সাক্ষ্য গ্রহণ করেন আদালত। গেল ১৯ মার্চ আদালতে মামলার যুক্তিতর্ক হয়।গতকাল বৃহস্পতিবার সকাল ১১ টায় সিলেটের সিনিয়র জেলা ও দায়রা জজ মশিউর রহমান চৌধুরী চাঞ্চল্যকর এ মামলার রায় ঘোষণা করেন।রায়ে জন্মদাতা পিতাকে হত্যার জন্যে দন্ডবিধির ৩০২ ধারায় মৃত্যুদন্ড এবং একইভাবে গর্ভধারিণী মাকে হত্যার জন্যে একই আইনের ৩০২ ধারায় মৃত্যুদন্ড দেয়া হয়। পাশাপাশি ২০ হাজার টাকা অর্থদন্ডে দন্ডিত করা হয়েছে।
রায় ঘোষণাকালে মৃত্যুদন্ডপ্রাপ্ত রাহেল আদালতে আসামির কাঠগড়ায় হাজির ছিল। পরে তাকে পুলিশের কড়া প্রহরায় সিলেট কেন্দ্রীয় কারাগারে নিয়ে যাওয়া হয়।আদালতে রাষ্ট্রপক্ষে সিলেট জেলার পিপি এডভোকেট নিজাম উদ্দিন ও আসামি পক্ষে স্টেইট ডিফেন্স হিসেবে এডভোকেট মো. ইকবাল হোসেন মামলাটি পরিচালনা করেন।

নিউজটি শেয়ার করুন

আপনার মন্তব্য

Your email address will not be published. Required fields are marked *

আপনার ইমেইল এবং অন্যান্য তথ্য সংরক্ষন করুন

আপলোডকারীর তথ্য
ট্যাগস :

গোলাপগঞ্জে মা-বাবাকে হত্যার দায়ে পুত্র রাহেলের ডাবল মৃত্যুদন্ড

আপডেট সময় : ০৫:০৮:২৮ অপরাহ্ন, শুক্রবার, ৩১ মার্চ ২০২৩

ভিউ নিউজ ৭১ প্রতিবেদন,

# ৩ শতক জমির জন্যে কুপিয়ে হত্যা করা হয়

স্টাফ রিপোর্টার :সিলেটের গোলাপগঞ্জে মাত্র তিন শতক জমি নিজের নামে লিখে দিতে পিতা-মাতাকে চাপ দিচ্ছিল আতিকুর রহমান রাহেল।কিন্তু সকল সন্তানকে সমানভাবে জমি দেয়া হবে বলে সাফ জানিয়ে দেন পিতা আব্দুল করিম খান। এতে ক্ষুব্ধ হয় রাহেল। সাতসকালে জন্মদাতা পিতা আব্দুল করিম খান (৬৫) ও গর্ভধারিণী মা মিনারা বেগমকে (৫০) ডেকে জমিতে নিয়ে যায়।এরপর ওই জমিতেই কুদাল দিয়ে এলোপাতাড়ি কুপিয়ে পিতা আব্দুল করিম খান ও মা মিনারা বেগমকে হত্যা করে।মা-বাবাকে হত্যার দায়ে ঘাতক আতিকুর রহমান রাহেলকে (৩০) ডাবল মৃত্যুদন্ড দিয়েছেন আদালত।গতকাল বৃহস্পতিবার সকালে সিলেটের সিনিয়র জেলা ও দায়রা জজ মশিউর রহমান চৌধুরী জনাকীর্ণ আদালতে রাহেলকে এই ডাবল মৃত্যুদন্ড দেন।রায়ে পিতাকে হত্যার জন্যে দন্ডবিধির ৩০২ ধারায় মৃত্যুদন্ড এবং একইভাবে মাকে হত্যার জন্যে একই আইনের ৩০২ ধারায় মৃত্যুদন্ড দেয়া হয়। মৃত্যুদন্ডপ্রাপ্ত রাহেল গোলাপগঞ্জ উপজেলার ঢাকাদক্ষিণ ইউনিয়নের সুনামপুর গ্রামের আব্দুল করিম খানের দ্বিতীয় পুত্র।

সিলেট জেলার পিপি এডভোকেট নিজাম উদ্দিন সিলেটের ডাককে রায়ের বিষয়টি নিশ্চিত করে বলেন,এটি দেশের একটি আলোচিত মামলা।সামান্য জমি-জমার জন্য পিতা-মাতাকে ডেকে নিয়ে হত্যা করেছিল পুত্র। আদালতে ঘটনাটি প্রমানিত হওয়ায় আসামি রাহেলকে ডাবল মৃত্যুদন্ড দেয়া হয়েছে। মৃত্যুদন্ডপ্রাপ্ত রাহেলকে ৭ দিনের মধ্যে অবশ্যই আপিল করতে হবে।রায় ঘোষণার পর তাকে জিজ্ঞেস করা হয়েছিল আপিল করবে কি না।সে জানিয়েছে জেল আপিল করবে।আদালত সংশ্লিষ্ট সূত্র ও নথিপত্র পর্যালোচনা করে জানা গেছে, গোলাপগঞ্জের সুনামপুর গ্রামের আব্দুল করিম খান তার ৩ পুত্র সন্তানকে নিয়ে নিজ বাড়িতে বসবাস করে আসছেন। তার ৩ কন্যা সন্তানও রয়েছে। কন্যাদের বিবাহ হওয়ায় বাড়িতে কেবল পুত্ররা পৃথকভাবে বসবাস করছিলেন।পুত্রদের মধ্যে সম্পত্তি নিয়ে বিরোধ সৃষ্টি হলে গণ্যমান্য ব্যক্তিগণ পিতামাতাকে নিয়ে তাদের বিরোধ মীমাংসা করে দেন। এরপরেও দ্বিতীয় পুত্র আতিকুর রহমান রাহেল বাড়ির পার্শ্ববর্তী দক্ষিণ পশ্চিম কোনার ৩ শতক জমি তার নামে লিখে দেয়ার জন্যে পিতামাতাকে চাপ দেয়। পিতা আব্দুল করিম খান তিন পুত্রের মধ্যে সমানভাবে জমি-জমা ভাগ-বাটোয়ারার কথা বলেন।
২০২০ সালের ২৭ মার্চ ভোর প্রায় সাড়ে ৬ টায় আব্দুল করিম খান ঘুম থেকে উঠলে রাহেল তাকে জমির পাশে লাগানো গাছপালা কাটার জন্য নিয়ে যায়। এসময় রাহেলের মা মিনারা বেগমও তাদের পিছু পিছু যান।জমিতে যাওয়ার পর কথাবার্তার এক পর্যায়ে রাহেল তার পিতা আব্দুল করিম খানকে আবারো ওই ৩ শতক জমি তার নামে লিখে দেয়ার জন্য চাপ সৃষ্টি করে।এসময় এনিয়ে পিতা-পুত্রের মধ্যে কথা কাটাকাটি শুরু হয়।কথা কাটাকাটির এক পর্যায়ে রাহেল উত্তেজিত হয়ে হাতে থাকা কোদাল দিয়ে মা মিনারা বেগমকে কোপ দেয়।এসময় স্ত্রীকে রক্ষায় স্বামী আব্দুল করিম খান এগিয়ে আসলে মাথায় গুরুতর আঘাত পেয়ে তিনি মাটিতে লুটিয়ে পড়েন। মিনারা বেগম এগিয়ে আসলে রাহেল তাকেও এলোপাতাড়ি কুপিয়ে ও পিটিয়ে গুরতর আহত করে। পুত্রের আঘাতে ঘটনাস্থলেই হতভাগ্য পিতা আব্দুল করিম খান মারা যান। মিনারা বেগমকে দ্রুত ওসমানী হাসপাতালে নিয়ে যাওয়া হয়।ওসমানী হাসপাতালে চিকিৎসা গ্রহণ শেষে বাড়িতে আসার দু’দিন পর তিনিও মারা যান। এ ঘটনার পরদিন ২৮ মার্চ গোলাপগঞ্জ থানায় একটি হত্যা মামলা দায়ের করা হয় (মামলা নম্বর-২০)।

এদিকে, ঘটনার পরপরই ঘাতক রাহেল পালিয়ে যায়। পরে মৌলভীবাজারের বড়লেখা থেকে ২৮ মার্চ ভোরে রাহেলকে গ্রেফতার করে পুলিশ। গ্রেফতারের পর আদালতে পিতামাতা হত্যার বর্ণনা দিয়ে ফৌজদারি কার্যবিধির ১৬৪ ধারায় স্বেচ্ছায় স্বীকারোক্তিমূলক জবানবন্দি দেয়। সিলেটের সিনিয়র জুডিশিয়াল ম্যাজিস্ট্রেট মোহাম্মদ হারুন-অর- রশিদ তার জবানবন্দি রেকর্ড করেন।তদন্ত শেষে গোলাপগঞ্জ থানার উপ-পরিদর্শক পিন্টু সরকার ২০২১ সালের ২৮ ফেব্রুয়ারি আসামি আতিকুর রহমান রাহেলের বিরুদ্ধে প্যানাল কোড, ১৮৬০ এর ৩০২ ধারায় আদালতে অভিযোগপত্র দাখিল করেন (অভিযোগপত্র নম্বর-৫২)। এরপর মামলাটি বিচারের জন্য সিনিয়র জুডিশিয়াল ম্যাজিস্ট্রেট, ২নং আমলী আদালত, সিলেট থেকে সিলেটের দায়রা জজ আদালতে প্রেরণ করা হয়। ২০২২ সালের ২০ জুন আসামি রাহেলের বিরুদ্ধে সিলেটের দায়রা জজ অভিযোগ গঠন করেন। এরপর ১৬ আগস্ট বাদীর সাক্ষ্য গ্রহণের মধ্য দিয়ে আদালত সাক্ষীদের সাক্ষ্য গ্রহণ শুরু করেন।মামলার ১৬ সাক্ষীর মধ্যে ১৪ জনের সাক্ষ্য গ্রহণ করেন আদালত। গেল ১৯ মার্চ আদালতে মামলার যুক্তিতর্ক হয়।গতকাল বৃহস্পতিবার সকাল ১১ টায় সিলেটের সিনিয়র জেলা ও দায়রা জজ মশিউর রহমান চৌধুরী চাঞ্চল্যকর এ মামলার রায় ঘোষণা করেন।রায়ে জন্মদাতা পিতাকে হত্যার জন্যে দন্ডবিধির ৩০২ ধারায় মৃত্যুদন্ড এবং একইভাবে গর্ভধারিণী মাকে হত্যার জন্যে একই আইনের ৩০২ ধারায় মৃত্যুদন্ড দেয়া হয়। পাশাপাশি ২০ হাজার টাকা অর্থদন্ডে দন্ডিত করা হয়েছে।
রায় ঘোষণাকালে মৃত্যুদন্ডপ্রাপ্ত রাহেল আদালতে আসামির কাঠগড়ায় হাজির ছিল। পরে তাকে পুলিশের কড়া প্রহরায় সিলেট কেন্দ্রীয় কারাগারে নিয়ে যাওয়া হয়।আদালতে রাষ্ট্রপক্ষে সিলেট জেলার পিপি এডভোকেট নিজাম উদ্দিন ও আসামি পক্ষে স্টেইট ডিফেন্স হিসেবে এডভোকেট মো. ইকবাল হোসেন মামলাটি পরিচালনা করেন।