ঢাকা ১১:৩৭ অপরাহ্ন, মঙ্গলবার, ১৭ জুন ২০২৫, ৩ আষাঢ় ১৪৩২ বঙ্গাব্দ
সংবাদ শিরোনাম ::
সংবাদমাধ্যমের স্বাধীনতা এখনো আক্রমণের মুখে: সম্পাদক পরিষদ হিউম্যান রাইটস ওয়াচ ট্রাষ্টের মাসবপ্যাপী সেহরি বিতরণ চলমান শাকিবের যে সিনেমায় ‘বুবলী’ হয়েছিলেন অপু বিশ্বাস গাজার মুসলমানদের সমর্থনে বলিউড অভিনেত্রীর পোস্ট আরেকটি এফ-৩৫ ধ্বংস, ইসরাইলের জন্য অন্ধকার পূর্বাভাস ইসরাইলের সামরিক গোয়েন্দা স্থাপনায় ইরানের হামলা বিমান দুর্ঘটনায় ভারতীয় ক্রিকেটারের মৃত্যু গল টেস্টের প্রথম দিনে দুই সেঞ্চুরি, ভালো পজিশনে বাংলাদেশ সেনাপ্রধানের সঙ্গে ডব্লিউজিইআইডি ভাইস চেয়ারপারসনের সৌজন্য সাক্ষাৎ জরিপের ফল-পথে বেড়ে উঠা শিশুদের ৫৮ শতাংশেরই নেই জন্মসনদ চুনারুঘাট সীমান্তে বিজিবির হাতে ভারতীয় নাগরিক আটক কুলাউড়ায় ৫০০ চক্ষু রোগীকে ফ্রি চিকিৎসা সেবা দিল ‘এনএসএস’

কক্সবাজারের উখিয়ায় রোহিঙ্গাশিবিরে আরসা নেতাকে গুলি করে ও কুপিয়ে হত্যা

প্রতিনিধির নাম
  • আপডেট সময় : ০৮:৫২:০৮ পূর্বাহ্ন, বুধবার, ৮ মার্চ ২০২৩ ৯৫ বার পড়া হয়েছে

কক্সবাজারের উখিয়ায় রোহিঙ্গাশিবিরে নুর হাবি (৪২) নামের মিয়ানমারের সশস্ত্র গোষ্ঠী আরাকান স্যালভেশন আর্মির (আরসা) এক কমান্ডারকে গুলি করে ও ধারালো অস্ত্র দিয়ে কুপিয়ে হত্যা করা হয়েছে। গতকাল সোমবার দিবাগত রাত সাড়ে ১২টার দিকে বালুখালী রোহিঙ্গা আশ্রয়শিবিরের (ক্যাম্প-৯) সি-৩ ব্লকের রোহিঙ্গা মৌলভি ইয়াছিনের ঘরের সামনে হত্যাকাণ্ডের ঘটনা ঘটে।নিহত নুর হাবি আরসার বালুখালী ক্যাম্প কমান্ডার ছিলেন বলে জানিয়েছে পুলিশ। তিনি ডাক্তার (পল্লিচিকিৎসক) ওয়াক্কাস নামেও পরিচিত ছিলেন। নুর হাবি আশ্রয়শিবিরের (ক্যাম্প-৯) সি-৬ ব্লকের রোহিঙ্গা নুর আবদুল্লাহর ছেলে।স্থানীয় রোহিঙ্গারা বলছেন, গত রোববার বিকেলে বালুখালীর আশ্রয়শিবিরের অগ্নিকাণ্ডের ঘটনায় দুই হাজারের বেশি রোহিঙ্গার ঘর পুড়ে যায়। স্থানীয় রোহিঙ্গাদের দাবি, আগুনের ঘটনায় নুর হাবিসহ আরসার বেশ কয়েকজন সন্ত্রাসী জড়িত ছিলেন।

এ কারণে গভীর রাতে নুর হাবিকে তুলে নিয়ে মিয়ানমারের আরেক সশস্ত্র গোষ্ঠী আরাকান রোহিঙ্গা সলিডারিটি অর্গানাইজেশন (আরএসও) অথবা মাদক চোরাচালানের অন্যতম হোতা নবী হোসেন বাহিনীর সন্ত্রাসীরা হত্যা করতে পারেন।হত্যাকাণ্ডের ঘটনার সত্যতা নিশ্চিত করে উখিয়া থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) শেখ মোহাম্মদ আলী জানান, নিহত নুর হাবি ওরফে ওয়াক্কাস আরসার ক্যাম্প কমান্ডার বলে ছিলেন বলে জানা গেছে। কিন্তু নুর হাবিকে কে বা কারা হত্যা করেছেন কিংবা কেন হত্যাকাণ্ডের ঘটনা ঘটল, সেটা তাৎক্ষণিকভাবে জানানো সম্ভব হচ্ছে না। ঘটনার অনুসন্ধান চলছে। জড়িতদের ধরতে আইনশৃঙ্খলা রক্ষাকারী বাহিনী আশ্রয়শিবিরে অভিযান চালাচ্ছে পুলিশ জানায়, নুর হাবিকে গুলি করে ও ধারালো অস্ত্র দিয়ে কুপিয়ে হত্যা করা হয়েছে।

নুর হাবির বুকের বাঁ পাশে ও পিঠে গুলির চিহ্ন পাওয়া গেছে। এ ছাড়া মাথায় ধারালো অস্ত্রের আঘাতের দাগ রয়েছে। গতকাল গভীর রাতে নুর হাবিকে উদ্ধার করে আশ্রয়শিবিরের আইওএম হাসপাতালে নেওয়া হলে সেখানকার কর্তব্যরত চিকিৎসক তাঁকে মৃত ঘোষণা করেন। নিহত ব্যক্তির লাশ ময়নাতদন্তের জন্য আজ মঙ্গলবার সকালে কক্সবাজার সদর হাসপাতালে পাঠানো হয়েছে।রোহিঙ্গাশিবিরের নিরাপত্তার দায়িত্বে থাকা ৮ আর্মড পুলিশ ব্যাটালিয়নের (এপিবিএন) সহকারী পুলিশ সুপার (অপারেশন ও মিডিয়া) মো. ফারুক আহমেদ বলেন, নিহত নুর হাবি ওরফে ওয়াক্কাস আরসার শীর্ষ কমান্ডার ছিলেন। আশ্রয়শিবিরে হত্যাকাণ্ডসহ নানা অপরাধের সঙ্গে তিনি জড়িত ছিলেন। আধিপত্য বিস্তার ও সশস্ত্র গোষ্ঠীগুলোর দীর্ঘদিনের বিরোধের জেরে নুর হাবিকে হত্যা করা হতে পারে।

স্থানীয় রোহিঙ্গা নেতাদের সঙ্গে কথা বলে জানা গেছে, গত রোববার রোহিঙ্গা ক্যাম্পে অগ্নিকাণ্ডের ঘটনায় আরসা জড়িত ছিল। তাঁদের দাবি, ওই দিন নুর হাবির নেতৃত্বে কয়েকজন কিশোর রোহিঙ্গা আশ্রয়শিবিরের কয়েক জায়গায় একসঙ্গে আগুন লাগিয়ে দেয়। কিশোরদের ওই কাজে সহযোগিতা করে আরসা। আগুন নেভাতে সাধারণ রোহিঙ্গারা ঘটনাস্থলে ছুটে গেলে নুর হাবির নেতৃত্বে আরসার কয়েকজন গুলি ছুড়ে সাধারণ রোহিঙ্গাদের হটিয়ে দেন। এ ক্ষোভের কারণে নুর হাবিবকে হত্যা করা হতে পারে। এ ঘটনায় আশ্রয়শিবিরে সংঘাত আরও বেড়ে যেতে পারে বলে আশঙ্কা করছেন তাঁরা।পুলিশ ও রোহিঙ্গা নেতাদের দেওয়া তথ্য অনুযায়ী, গত সাড়ে চার মাসে আশ্রয়শিবিরে একাধিক সংঘর্ষ ও গোলাগুলির ঘটনায় অন্তত ২৯ জন রোহিঙ্গার মৃত্যু হয়েছে। এর মধ্যে ১৩ জন রোহিঙ্গা মাঝি, ৮ জন আরসা সন্ত্রাসী। অন্যরা সাধারণ রোহিঙ্গা।

নিউজটি শেয়ার করুন

আপনার মন্তব্য

Your email address will not be published. Required fields are marked *

আপনার ইমেইল এবং অন্যান্য তথ্য সংরক্ষন করুন

আপলোডকারীর তথ্য
ট্যাগস :

কক্সবাজারের উখিয়ায় রোহিঙ্গাশিবিরে আরসা নেতাকে গুলি করে ও কুপিয়ে হত্যা

আপডেট সময় : ০৮:৫২:০৮ পূর্বাহ্ন, বুধবার, ৮ মার্চ ২০২৩

কক্সবাজারের উখিয়ায় রোহিঙ্গাশিবিরে নুর হাবি (৪২) নামের মিয়ানমারের সশস্ত্র গোষ্ঠী আরাকান স্যালভেশন আর্মির (আরসা) এক কমান্ডারকে গুলি করে ও ধারালো অস্ত্র দিয়ে কুপিয়ে হত্যা করা হয়েছে। গতকাল সোমবার দিবাগত রাত সাড়ে ১২টার দিকে বালুখালী রোহিঙ্গা আশ্রয়শিবিরের (ক্যাম্প-৯) সি-৩ ব্লকের রোহিঙ্গা মৌলভি ইয়াছিনের ঘরের সামনে হত্যাকাণ্ডের ঘটনা ঘটে।নিহত নুর হাবি আরসার বালুখালী ক্যাম্প কমান্ডার ছিলেন বলে জানিয়েছে পুলিশ। তিনি ডাক্তার (পল্লিচিকিৎসক) ওয়াক্কাস নামেও পরিচিত ছিলেন। নুর হাবি আশ্রয়শিবিরের (ক্যাম্প-৯) সি-৬ ব্লকের রোহিঙ্গা নুর আবদুল্লাহর ছেলে।স্থানীয় রোহিঙ্গারা বলছেন, গত রোববার বিকেলে বালুখালীর আশ্রয়শিবিরের অগ্নিকাণ্ডের ঘটনায় দুই হাজারের বেশি রোহিঙ্গার ঘর পুড়ে যায়। স্থানীয় রোহিঙ্গাদের দাবি, আগুনের ঘটনায় নুর হাবিসহ আরসার বেশ কয়েকজন সন্ত্রাসী জড়িত ছিলেন।

এ কারণে গভীর রাতে নুর হাবিকে তুলে নিয়ে মিয়ানমারের আরেক সশস্ত্র গোষ্ঠী আরাকান রোহিঙ্গা সলিডারিটি অর্গানাইজেশন (আরএসও) অথবা মাদক চোরাচালানের অন্যতম হোতা নবী হোসেন বাহিনীর সন্ত্রাসীরা হত্যা করতে পারেন।হত্যাকাণ্ডের ঘটনার সত্যতা নিশ্চিত করে উখিয়া থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) শেখ মোহাম্মদ আলী জানান, নিহত নুর হাবি ওরফে ওয়াক্কাস আরসার ক্যাম্প কমান্ডার বলে ছিলেন বলে জানা গেছে। কিন্তু নুর হাবিকে কে বা কারা হত্যা করেছেন কিংবা কেন হত্যাকাণ্ডের ঘটনা ঘটল, সেটা তাৎক্ষণিকভাবে জানানো সম্ভব হচ্ছে না। ঘটনার অনুসন্ধান চলছে। জড়িতদের ধরতে আইনশৃঙ্খলা রক্ষাকারী বাহিনী আশ্রয়শিবিরে অভিযান চালাচ্ছে পুলিশ জানায়, নুর হাবিকে গুলি করে ও ধারালো অস্ত্র দিয়ে কুপিয়ে হত্যা করা হয়েছে।

নুর হাবির বুকের বাঁ পাশে ও পিঠে গুলির চিহ্ন পাওয়া গেছে। এ ছাড়া মাথায় ধারালো অস্ত্রের আঘাতের দাগ রয়েছে। গতকাল গভীর রাতে নুর হাবিকে উদ্ধার করে আশ্রয়শিবিরের আইওএম হাসপাতালে নেওয়া হলে সেখানকার কর্তব্যরত চিকিৎসক তাঁকে মৃত ঘোষণা করেন। নিহত ব্যক্তির লাশ ময়নাতদন্তের জন্য আজ মঙ্গলবার সকালে কক্সবাজার সদর হাসপাতালে পাঠানো হয়েছে।রোহিঙ্গাশিবিরের নিরাপত্তার দায়িত্বে থাকা ৮ আর্মড পুলিশ ব্যাটালিয়নের (এপিবিএন) সহকারী পুলিশ সুপার (অপারেশন ও মিডিয়া) মো. ফারুক আহমেদ বলেন, নিহত নুর হাবি ওরফে ওয়াক্কাস আরসার শীর্ষ কমান্ডার ছিলেন। আশ্রয়শিবিরে হত্যাকাণ্ডসহ নানা অপরাধের সঙ্গে তিনি জড়িত ছিলেন। আধিপত্য বিস্তার ও সশস্ত্র গোষ্ঠীগুলোর দীর্ঘদিনের বিরোধের জেরে নুর হাবিকে হত্যা করা হতে পারে।

স্থানীয় রোহিঙ্গা নেতাদের সঙ্গে কথা বলে জানা গেছে, গত রোববার রোহিঙ্গা ক্যাম্পে অগ্নিকাণ্ডের ঘটনায় আরসা জড়িত ছিল। তাঁদের দাবি, ওই দিন নুর হাবির নেতৃত্বে কয়েকজন কিশোর রোহিঙ্গা আশ্রয়শিবিরের কয়েক জায়গায় একসঙ্গে আগুন লাগিয়ে দেয়। কিশোরদের ওই কাজে সহযোগিতা করে আরসা। আগুন নেভাতে সাধারণ রোহিঙ্গারা ঘটনাস্থলে ছুটে গেলে নুর হাবির নেতৃত্বে আরসার কয়েকজন গুলি ছুড়ে সাধারণ রোহিঙ্গাদের হটিয়ে দেন। এ ক্ষোভের কারণে নুর হাবিবকে হত্যা করা হতে পারে। এ ঘটনায় আশ্রয়শিবিরে সংঘাত আরও বেড়ে যেতে পারে বলে আশঙ্কা করছেন তাঁরা।পুলিশ ও রোহিঙ্গা নেতাদের দেওয়া তথ্য অনুযায়ী, গত সাড়ে চার মাসে আশ্রয়শিবিরে একাধিক সংঘর্ষ ও গোলাগুলির ঘটনায় অন্তত ২৯ জন রোহিঙ্গার মৃত্যু হয়েছে। এর মধ্যে ১৩ জন রোহিঙ্গা মাঝি, ৮ জন আরসা সন্ত্রাসী। অন্যরা সাধারণ রোহিঙ্গা।