সিলেটে ২ দিনব্যাপী আন্তর্জাতিক শানে রিসালত মহাসম্মেলন সম্পন্ন
কাদিয়ানিদের অমুসলিম ঘোষণার দাবি

- আপডেট সময় : ০৮:২১:১৪ পূর্বাহ্ন, রবিবার, ৫ মার্চ ২০২৩ ১২৬ বার পড়া হয়েছে
নবীর সাথে যত বেশি সম্পর্ক হবে ঈমান তত বৃদ্ধি পাবে : শায়খ কিত্তানী
সিলেটে ২ দিনব্যাপী আন্তর্জাতিক শানে রিসালত মহাসম্মেলন সম্পন্ন হয়েছে। গতকাল শনিবার সিলেট সরকাীর আলিয়া মাদরাসা ময়দানে সম্মেলনের সমাপনী অনুষ্ঠিত হয়। সম্মেলনে সভাপতিত্ব করেন আল্লামা ইমাদ উদ্দিন চৌধুরী ফুলতলী। সম্মেলনে মিশরের প্রখ্যাত বুযুর্গ আল্লামা মুহাম্মদ ইবরাহীম আব্দুল বাইছ আল কিত্তানী বলেন, একজন মুমিনের জন্য কর্তব্য হলো নবীজির সাথে সম্পর্ক সুদৃঢ় করা। কারণ নবীর সাথে অন্তরের দূরত্ব থাকলে মানুষ কুফরীর দিকে ধাবিত হয়। নবীজি থেকে দূরে থাকার শেষ পরিণতি হয় নাস্তিক্যবাদ। নবীর সাথে যত বেশি সম্পর্ক হবে ঈমান তত বৃদ্ধি পাবে। তিনি বলেন, নবীজির বিষয়ে কথা বলতে হলে সাবধানতার সাথে বলতে হবে। তার প্রসঙ্গে যত আয়াত নাযিল হয়েছে, সেগুলোর ক্ষেত্রে শুধু বাহ্যিক অর্থের উপর নির্ভর করলে হবে না; বরং এর অন্তর্নিহিত ও সূক্ষ্ম ব্যাখ্যা অনুসন্ধান করতে হবে।
বিপুলসংখ্যক মুসল্লিদের উপস্থিতিতে দুইদিনব্যাপী এ মহাসেম্মলনে এ ধরনের আয়োজনের উদ্দেশ্য ও প্রয়োজনীয়তা তুলে ধরেন সম্মেলন বাস্তবায়ন কমিটির আহবায়ক, বাংলাদেশ আনজুমানে আল ইসলাহর সভাপতি মাওলানা হুছামুদ্দীন চৌধুরী ফুলতলী। তিনি বলেন, হযরত মুহাম্মদ (সা.) শেষ নবী। তাঁর পরে নবুওয়াতের সকল দাবি বাতিল ও ভ্রান্ত এবং এ ধরনের নবুওয়াত দাবিকারী ও তাদের অনুসারীরা কাফির। আশ্চর্যের বিষয় হলো, ‘আমাদের দেশে কাদিয়ানীরা নিজেদের মুসলিম জামাত দাবি করে সমাবেশ করার দুঃসাহস দেখাচ্ছে। এমনকি এটিকে কেন্দ্র করে একজন মুসলিম শহীদ হয়েছেন। আমরা এর তীব্র নিন্দা জানাচ্ছি এবং কাদিয়ানীদের অমুসলিম ঘোষণা করছি। আমরা জোর দাবি জানাচ্ছি, এদের যেন মুসলিম হিসাবে বিবেচনা করা না হয় এবং তাদের পক্ষাবলম্বন করে সরকারের বাহিনী যেন মুসলমানদের রক্ত না ঝরায়।’
সম্মেলন বাস্তবায়ন কমিটির সদস্য সচিব ও বাংলাদেশ আনজুমানে আল ইসলাহর যুগ্ম মহাসচিব মাওলানা আহমদ হাসান চৌধুরী, প্রচার ও প্রকাশনা সম্পাদক মাওলানা নজমুল হুদা খান ও ছাত্রবিষয়ক সম্পাদক মাওলানা রেদওয়ান আহমদ চৌধুরীর যৌথ পরিচালনায় অনুষ্ঠিত সম্মেলনে সম্মানিত অতিথির বক্তব্য রাখেন বন ও পরিবেশমন্ত্রী শাহাবউদ্দিন আহমদ, সিলেট সিটি মেয়র আরিফুল হক চৌধুরী, বর্তমান বিশে^র অন্যতম শীর্ষস্থানীয় মুহাদ্দিস, মিশরের প্রখ্যাত বুযুর্গ আল্লামা মুহাম্মদ ইবরাহীম আব্দুল বাইছ আল কিত্তানী, মক্কা মুকাররামার প্রখ্যাত বুযুর্গ সায়্যিদ আল হাবীব উবায়দুল্লাহ আল আত্তাস, তুরস্কের ইয়ালোভা ইউনিভিার্সিটির অধ্যাপক প্রফেসর ড. আব্দুল কাদির আল হোসাইন, মিশরের ড. আহমদ আশ শরীফ আল আযহারী, ব্রিটেনের সায়্যিদ মাআন আল হাসানী আল ইদরিসী আল মক্কী, ভারতের উজানডিহির পীর সায়্যিদ মোস্তাক আহমদ আল মাদানী, সায়্যিদ জুনাইদ আহমদ আল মাদানী, সাবেক শিক্ষামন্ত্রী নুরুল ইসলাম নাহিদ এমপি, হাবিবুর রহমান হাবিব এমপি, সাবেক সংসদ সদস্য আলহাজ্ব শফিকুর রহমান চৌধুরী, বাংলাদেশ জমিয়াতুল মোদার্রেছীনের মহাসচিব অধ্যক্ষ মাওলানা শাব্বির আহমদ মোমতাজী, ঢাকা বিশ^বিদ্যালয়ের ফার্সি বিভাগের সাবেক চেয়ারম্যান প্রফেসর ড. কে এম সাইফুল ইসলাম খান, আল্লামা নজমুদ্দীন চৌধুরী ফুলতলী, গাউসুল আজম জামে মসজিদ ঢাকার খতিব মাওলানা কবি রুহুল আমীন খান, মাওলানা মুফতি গিয়াস উদ্দিন চৌধুরী ফুলতলী, নেছারাবাদের পীর মাওলানা খলীলুর রহমান নেছারাবাদী।
মহাসম্মেলনে আরো বক্তব্য রাখেন-বাংলাদেশ সুপ্রিম কোর্টের বিশিষ্ট আইনজীবী এডভোকেট মাওলানা আব্দুর রকিব, বাংলাদেশ আনজুমানে আল ইসলাহর মহাসচিব মাওলানা এ.কে.এম মনোওর আলী, চরমোনাই আহসানাবাদ রশিদিয়া কামিল মাদরাসা বরিশালের প্রিন্সিপাল মাওলানা সৈয়দ মোসাদ্দিক বিল্লাহ আল মাদানী, দারুন্নাজাত সিদ্দিকীয়া কামিল মাদরাসার অধ্যক্ষ মাওলানা আ খ ম আবু বকর সিদ্দীক, ঢাকা মহাখালী হুসাইনিয়া কামিল মাদরাসা অধ্যক্ষ মাওলানা ড. নজরুল ইসলাম আল মারুফ, দৈনিক উত্তর পূর্ব এর সম্পাদক ও প্রকাশক শফিউল আলম চৌধুরী নাদেল, বাংলাদেশ আনজুমানে আল ইসলাহর সহ-সভাপতি অধ্যক্ষ মাওলানা ছরওয়ারে জাহান, সাংগঠনিক সম্পাদক মাওলানা মঈনুল ইসলাম পারভেজ, ভবানীপুর কামিল মাদরাসার প্রিন্সিপাল অধ্যক্ষ হাসান মাসুদ, মৌলভীবাজার টাউন কামিল মাদরাসার প্রিন্সিপাল মাওলানা শামসুল ইসলাম, বুরাইয়া কামিল মাদরাসা উপাধ্যক্ষ মাওলানা সিরাজুল ইসলাম ফারুকী, আনজুমানে আল ইসলাহর কেন্দ্রীয় অফিস সম্পাদক মাওলানা আতাউর রহমান, ঢাকা মহানগরীর সাধারণ সম্পাদক মাওলানা আনোয়ার হোসেন ছালেহী, বাংলাদেশ আনজুমানে তালামীযে ইসলামিয়ার কেন্দ্রীয় সভাপতি মাহবুবুর রহমান ফরহাদ, সাধারণ সম্পাদক মনজুরুল করিম মহসিন, সাবেক সাধারণ সম্পাদক মাওলানা মোস্তফা হাসান চৌধুরী গিলমান, বাংলাদেশ আনজুমানে আল ইসলাহ সুনামগঞ্জ জেলা সভাপতি মাওলানা তাজুল ইসলাম আলফাজ, নিউইয়র্ক আল ইসলাহর সভাপতি মাওলানা আবুল কাশেম ইয়াহইয়া, সিলেট মহানগর সাধারণ সম্পাদক মাওলানা আজির উদ্দিন পাশা, মৌলভীবাজার জেলা সাধারণ সম্পাদক মাওলানা এনাম উদ্দিন ও কুমিল্লা জেলা কারী সোসাইটির সভাপতি মাওলানা রুহুল আমীন ফকির প্রমুখ।
সায়্যিদ আল হাবীব উবায়দুল্লাহ আল আত্তাস বলেন, কারো মধ্যে জামাল (সৌন্দর্য), কামাল (পরিপূর্ণতা) ও ইহসান (সদ্ব্যবহার) এই তিন গুণের যেকোনো একটি থাকলেও মানুষ তাকে ভালোবাসে। আর প্রিয়নবী (সা.) এর মধ্যে এ তিনটি গুণই পরিপূর্ণরূপে ছিল। তিনি চরিত্রগত ও সৃষ্টিগত দিক থেকে সবচেয়ে সুন্দর। দুনিয়ার কোনো সৌন্দর্য তাঁর সৌন্দর্যকে অতিক্রম করতে পারে না।
বিদেশি অতিথিবৃন্দের বক্তব্য অনুবাদ করেন ঢাকা বিশ^বিদ্যালয়ের আরবি বিভাগের সহযোগী অধ্যাপক মাওলানা আহমদ হাসান চৌধুরী ও এরফোর্ট ইউনিভার্সিটির গবেষক মাওলানা মারজান আহমদ চৌধুরী। সম্মেলনের ঘোষণাপত্র পাঠ করেন আহবায়ক মাওলানা হুছামুদ্দীন চৌধুরী ফুলতলী।