ঢাকা ১২:০৬ পূর্বাহ্ন, রবিবার, ২৩ নভেম্বর ২০২৫, ৮ অগ্রহায়ণ ১৪৩২ বঙ্গাব্দ
সংবাদ শিরোনাম ::
সংবাদমাধ্যমের স্বাধীনতা এখনো আক্রমণের মুখে: সম্পাদক পরিষদ হিউম্যান রাইটস ওয়াচ ট্রাষ্টের মাসবপ্যাপী সেহরি বিতরণ চলমান মুরারিচাঁদ কলেজের দর্শন বিভাগের প্রাক্তন শিক্ষক-শিক্ষার্থীদের উদ্যোগে স্মরণসভা ৮ ঘন্টায় তিনবার ভূমিকম্পে কাঁপল দেশ সিলেটে ট্রাক,প্রাইভেট কারসহ গ্রেপ্তার ৩ ট্রাফিক আইন মেনে চলা এবং হেলমেট পরিধানকারী চালকদের ফুল দিয়ে শুভেচ্ছা মুন্সীগঞ্জের গজারিয়ায় প্রবীণ সাংবাদিক আব্দুল আজিজ মাহফুজের মৃত্যু: সাংবাদিকতার অঙ্গনে অপূরণীয় ক্ষতি হবিগঞ্জ সমিতি সিলেট’র অভিষেক সম্পন্ন পরিকল্পিত শিল্পায়ন ও অর্থনৈতিক অঞ্চল উন্নয়নের নতুন দিগন্ত উন্মোচন করবে – আবু তাহের মুহাম্মদ জাবের এক মাস রাতে জিরাপানি খেলে শরীরে যেসব পরিবর্তন দেখবেন মাইলফলকের অপেক্ষায় থেকে লাঞ্চে মুশফিক-মুমিনুল বিশ্বের প্রথম পারমাণবিক বিস্ফোরণ সহনশীল ‘ভাসমান দ্বীপ’ নির্মাণ করছে চীন পশ্চিমতীরের ঐতিহাসিক স্থাপনা দখলের পরিকল্পনা ইসরাইলের

জরাজীর্ণ সিলেট কেন্দ্রীয় বাস টার্মিনাল

প্রতিনিধির নাম
  • আপডেট সময় : ০৬:৩৮:১৫ পূর্বাহ্ন, শনিবার, ২২ নভেম্বর ২০২৫ ২ বার পড়া হয়েছে

ভিউ নিউজ ৭১ ডেস্ক :

সিলেটের ঐতিহ্যবাহী কিন ব্রিজ, আলী আমজাদের ঘড়ি এবং আসাম প্যাটার্নের বাংলোর স্থাপত্যশৈলীর সংমিশ্রণে নির্মিত এই টার্মিনালটি নির্মাণশৈলী ও নান্দনিকতার কারণে একসময় সিলেটের গর্ব ছিল। প্রায় ১১৭ কোটি টাকা ব্যয়ে টার্মিনালটির নির্মাণকাজ শেষ হয় দুই বছর আগে।

যাত্রীদের বসার জন্য রাখা চেয়ারগুলোর অর্ধেকই ভাঙা, কিছু আবার চুরি হয়ে গেছে। ভেঙে গেছে লাইট আর সিলিং ফ্যান। বাথরুমের অবস্থা নাজুক, দেয়ালের পলেস্তারাও খসে পড়ছে একে একে।

এমন দৃশ্য এখন নবনির্মিত সিলেট কেন্দ্রীয় বাস টার্মিনালের; যেটি মাত্র তিন বছর আগে পরীক্ষামূলকভাবে চালু হয়েছিল। কেন্দ্রীয় বাস টার্মিনালটি চালুর মাত্র তিন বছরের মাথায় জরাজীর্ণ অবস্থায় উপনীত হয়েছে। অব্যবস্থাপনা, রক্ষণাবেক্ষণের অভাব ও নিম্নমানের নির্মাণসামগ্রীর অভিযোগে যাত্রীরা পাচ্ছেন না প্রত্যাশিত সেবা। টার্মিনালের বিভিন্ন স্থানে দেখা দিয়েছে ফাটল, ভেঙেছে বহু অবকাঠামো, আর ভেতরে পর্যাপ্ত জায়গা না থাকায় মূল সড়কে বাস দাঁড় করানোয় তৈরি হচ্ছে তীব্র যানজট।

সিসিক সূত্র জানায়, মিউনিসিপ্যাল গভর্নমেন্ট সার্ভিস প্রজেক্ট (এমজিএসপি) এর আওতায় ২০১৯ সালের ফেব্রুয়ারিতে টার্মিনাল আধুনিকায়নের কাজ শুরু হয়। প্রায় ৮ একর জমির ওপর নির্মিত এই প্রকল্পে মোট ব্যয় ধরা হয় ১১৭ কোটি টাকা; এর মধ্যে ডাম্পিং গ্রাউন্ডে ব্যয় হয় ৫৬ কোটি এবং অবকাঠামোগত উন্নয়নে ৬১ কোটি টাকা।

২০১৯ সালে ১১৭ কোটি টাকা ব্যয়ে নির্মাণ শুরু হওয়া এবং ২০২৩ সালে উদ্বোধিত এই আধুনিক টার্মিনালটি তিন বছর আগেও ছিল দেশের অন্যতম নান্দনিক অবকাঠামো। বিমানবন্দরের আদলে নির্মিত এই টার্মিনালের বর্তমান অবস্থা দেখলে যে কেউ অবাক হবেন।

অবস্থান জরাজীর্ণ, নেই যথাযথ রক্ষণাবেক্ষণ- যাত্রীদের বসার জন্য রাখা চেয়ারের অর্ধেকই ভাঙা, কিছু চুরি হয়ে গেছে। নষ্ট হয়ে গেছে টার্মিনালের লাইট ও সিলিং ফ্যান। বাথরুমের অবস্থা নাজুক—দেয়াল থেকে খসে পড়ছে পলেস্তা, বিভিন্ন স্থানে দেখা দিয়েছে ফাটল।

অভিযোগ রয়েছে, নিম্নমানের নির্মাণসামগ্রী ব্যবহারের কারণেই দ্রুত ক্ষতিগ্রস্ত হয়েছে ভবন। তদারকির অভাবেও বাড়ছে সমস্যার সংখ্যা। চুরি হচ্ছে যাত্রীদের মালপত্র, এমনকি গাড়ির মূল্যবান যন্ত্রাংশ পর্যন্ত।

ড্রেনেজ ব্যবস্থা নিয়েও অসন্তোষ রয়েছে যাত্রী ও পরিবহন শ্রমিকদের মাঝে। টার্মিনালের অভ্যন্তরে নিয়মিত জুয়ার আসর বসে বলেও অভিযোগ পাওয়া গেছে।

পর্যাপ্ত পার্কিং না থাকায় মূল সড়কে যানজট- টার্মিনালের ভেতরে পর্যাপ্ত জায়গা না থাকায় বাস রাখতে হচ্ছে মূল সড়কে, ফলে দেখা দিচ্ছে তীব্র যানজট। পরিবহন শ্রমিক নেতাদের দাবি, যাত্রী ও গাড়ির চাপ বিবেচনায় টার্মিনালের জায়গা বাড়ানো জরুরি।

সিলেট জেলা বাস মিনিবাস শ্রমিক ইউনিয়নের সভাপতি মইনুল ইসলাম বলেন, “পার্কিংয়ের সঠিক ব্যবস্থা না থাকায় আমরা বাধ্য হয়ে সড়কেই গাড়ি রাখছি। টার্মিনালের জায়গা বাড়ানো জরুরি।”

দায় এড়ানোর প্রবণতা—সিসিক বনাম ঠিকাদার- ২০২৪–২৫ অর্থবছরে প্রায় ১ কোটি এবং চলতি বছরে আরও দেড় কোটি টাকায় টার্মিনালটি ইজারা দিয়েছে সিলেট সিটি করপোরেশন (সিসিক)। ইজারাদার মো. মিজানুল ইসলাম দাবি করেন, “যে অবস্থায় টার্মিনালটি পেয়েছি, সেইভাবেই যথাসাধ্য দেখভাল করছি।

অন্যদিকে সিসিকের ভারপ্রাপ্ত প্রধান প্রকৌশলী মো. আলী আকবর জানান, তিন বিভাগের সমন্বয়ে সমস্যাগুলো চিহ্নিত করার কাজ চলছে। ভবনের ফাটল মেরামতের কাজও প্রক্রিয়াধীন বলে জানান তিনি।

সিসিকের প্রধান নির্বাহী কর্মকর্তা মোহাম্মদ রেজাউল রাফিন সরকার বলেন, “রক্ষণাবেক্ষণ নিশ্চিতে সংশ্লিষ্টদের আরও দায়িত্বশীল হতে হবে। আসাম প্যাটার্ন বাংলোর স্থাপত্যে নির্মিত হওয়ায় শুরুতেই দেশজুড়ে আলোচিত হয়েছিল সিলেট কেন্দ্রীয় বাস টার্মিনাল।

নিউজটি শেয়ার করুন

আপনার মন্তব্য

Your email address will not be published. Required fields are marked *

আপনার ইমেইল এবং অন্যান্য তথ্য সংরক্ষন করুন

আপলোডকারীর তথ্য
ট্যাগস :

জরাজীর্ণ সিলেট কেন্দ্রীয় বাস টার্মিনাল

আপডেট সময় : ০৬:৩৮:১৫ পূর্বাহ্ন, শনিবার, ২২ নভেম্বর ২০২৫

ভিউ নিউজ ৭১ ডেস্ক :

সিলেটের ঐতিহ্যবাহী কিন ব্রিজ, আলী আমজাদের ঘড়ি এবং আসাম প্যাটার্নের বাংলোর স্থাপত্যশৈলীর সংমিশ্রণে নির্মিত এই টার্মিনালটি নির্মাণশৈলী ও নান্দনিকতার কারণে একসময় সিলেটের গর্ব ছিল। প্রায় ১১৭ কোটি টাকা ব্যয়ে টার্মিনালটির নির্মাণকাজ শেষ হয় দুই বছর আগে।

যাত্রীদের বসার জন্য রাখা চেয়ারগুলোর অর্ধেকই ভাঙা, কিছু আবার চুরি হয়ে গেছে। ভেঙে গেছে লাইট আর সিলিং ফ্যান। বাথরুমের অবস্থা নাজুক, দেয়ালের পলেস্তারাও খসে পড়ছে একে একে।

এমন দৃশ্য এখন নবনির্মিত সিলেট কেন্দ্রীয় বাস টার্মিনালের; যেটি মাত্র তিন বছর আগে পরীক্ষামূলকভাবে চালু হয়েছিল। কেন্দ্রীয় বাস টার্মিনালটি চালুর মাত্র তিন বছরের মাথায় জরাজীর্ণ অবস্থায় উপনীত হয়েছে। অব্যবস্থাপনা, রক্ষণাবেক্ষণের অভাব ও নিম্নমানের নির্মাণসামগ্রীর অভিযোগে যাত্রীরা পাচ্ছেন না প্রত্যাশিত সেবা। টার্মিনালের বিভিন্ন স্থানে দেখা দিয়েছে ফাটল, ভেঙেছে বহু অবকাঠামো, আর ভেতরে পর্যাপ্ত জায়গা না থাকায় মূল সড়কে বাস দাঁড় করানোয় তৈরি হচ্ছে তীব্র যানজট।

সিসিক সূত্র জানায়, মিউনিসিপ্যাল গভর্নমেন্ট সার্ভিস প্রজেক্ট (এমজিএসপি) এর আওতায় ২০১৯ সালের ফেব্রুয়ারিতে টার্মিনাল আধুনিকায়নের কাজ শুরু হয়। প্রায় ৮ একর জমির ওপর নির্মিত এই প্রকল্পে মোট ব্যয় ধরা হয় ১১৭ কোটি টাকা; এর মধ্যে ডাম্পিং গ্রাউন্ডে ব্যয় হয় ৫৬ কোটি এবং অবকাঠামোগত উন্নয়নে ৬১ কোটি টাকা।

২০১৯ সালে ১১৭ কোটি টাকা ব্যয়ে নির্মাণ শুরু হওয়া এবং ২০২৩ সালে উদ্বোধিত এই আধুনিক টার্মিনালটি তিন বছর আগেও ছিল দেশের অন্যতম নান্দনিক অবকাঠামো। বিমানবন্দরের আদলে নির্মিত এই টার্মিনালের বর্তমান অবস্থা দেখলে যে কেউ অবাক হবেন।

অবস্থান জরাজীর্ণ, নেই যথাযথ রক্ষণাবেক্ষণ- যাত্রীদের বসার জন্য রাখা চেয়ারের অর্ধেকই ভাঙা, কিছু চুরি হয়ে গেছে। নষ্ট হয়ে গেছে টার্মিনালের লাইট ও সিলিং ফ্যান। বাথরুমের অবস্থা নাজুক—দেয়াল থেকে খসে পড়ছে পলেস্তা, বিভিন্ন স্থানে দেখা দিয়েছে ফাটল।

অভিযোগ রয়েছে, নিম্নমানের নির্মাণসামগ্রী ব্যবহারের কারণেই দ্রুত ক্ষতিগ্রস্ত হয়েছে ভবন। তদারকির অভাবেও বাড়ছে সমস্যার সংখ্যা। চুরি হচ্ছে যাত্রীদের মালপত্র, এমনকি গাড়ির মূল্যবান যন্ত্রাংশ পর্যন্ত।

ড্রেনেজ ব্যবস্থা নিয়েও অসন্তোষ রয়েছে যাত্রী ও পরিবহন শ্রমিকদের মাঝে। টার্মিনালের অভ্যন্তরে নিয়মিত জুয়ার আসর বসে বলেও অভিযোগ পাওয়া গেছে।

পর্যাপ্ত পার্কিং না থাকায় মূল সড়কে যানজট- টার্মিনালের ভেতরে পর্যাপ্ত জায়গা না থাকায় বাস রাখতে হচ্ছে মূল সড়কে, ফলে দেখা দিচ্ছে তীব্র যানজট। পরিবহন শ্রমিক নেতাদের দাবি, যাত্রী ও গাড়ির চাপ বিবেচনায় টার্মিনালের জায়গা বাড়ানো জরুরি।

সিলেট জেলা বাস মিনিবাস শ্রমিক ইউনিয়নের সভাপতি মইনুল ইসলাম বলেন, “পার্কিংয়ের সঠিক ব্যবস্থা না থাকায় আমরা বাধ্য হয়ে সড়কেই গাড়ি রাখছি। টার্মিনালের জায়গা বাড়ানো জরুরি।”

দায় এড়ানোর প্রবণতা—সিসিক বনাম ঠিকাদার- ২০২৪–২৫ অর্থবছরে প্রায় ১ কোটি এবং চলতি বছরে আরও দেড় কোটি টাকায় টার্মিনালটি ইজারা দিয়েছে সিলেট সিটি করপোরেশন (সিসিক)। ইজারাদার মো. মিজানুল ইসলাম দাবি করেন, “যে অবস্থায় টার্মিনালটি পেয়েছি, সেইভাবেই যথাসাধ্য দেখভাল করছি।

অন্যদিকে সিসিকের ভারপ্রাপ্ত প্রধান প্রকৌশলী মো. আলী আকবর জানান, তিন বিভাগের সমন্বয়ে সমস্যাগুলো চিহ্নিত করার কাজ চলছে। ভবনের ফাটল মেরামতের কাজও প্রক্রিয়াধীন বলে জানান তিনি।

সিসিকের প্রধান নির্বাহী কর্মকর্তা মোহাম্মদ রেজাউল রাফিন সরকার বলেন, “রক্ষণাবেক্ষণ নিশ্চিতে সংশ্লিষ্টদের আরও দায়িত্বশীল হতে হবে। আসাম প্যাটার্ন বাংলোর স্থাপত্যে নির্মিত হওয়ায় শুরুতেই দেশজুড়ে আলোচিত হয়েছিল সিলেট কেন্দ্রীয় বাস টার্মিনাল।