ঢাকা ০৯:২৮ অপরাহ্ন, শুক্রবার, ৩১ অক্টোবর ২০২৫, ১৬ কার্তিক ১৪৩২ বঙ্গাব্দ
সংবাদ শিরোনাম ::
সংবাদমাধ্যমের স্বাধীনতা এখনো আক্রমণের মুখে: সম্পাদক পরিষদ হিউম্যান রাইটস ওয়াচ ট্রাষ্টের মাসবপ্যাপী সেহরি বিতরণ চলমান বয়স নয়, ইচ্ছাশক্তিই বড়—৬৯ বছরে পিএইচডি করে বাবার স্বপ্ন পূরণ সিলেটের জকিগঞ্জ থানার অংশীজনদের সাথে এসপি’র মতবিনিময় সভা অনুষ্ঠিত আজকের পরই বাতিল হবে অতিরিক্ত সিম হবিগঞ্জ নবীগঞ্জে অবৈধ বন্যপ্রাণী শিকার দুজনকে জরিমানা শান্তি,নিরাপত্তা ও সার্বভৌমত্বের ভারসাম্য রক্ষায় পার্বত্য চট্টগ্রামে সেনা মোতায়েন সিলেটের জুলাই যোদ্ধা-২৭ জনের নাম বাদ সিলেট জৈন্তাপুর সীমান্তে ভারতীয় গরু,মহিষ আটক সিলেট গোলাপগঞ্জে ইয়াবাসহ গ্রেপ্তার২ সিলেটে অনলাইনে তীর-শিলং জুয়া খেলার অভিযোগে গোয়েন্দারা ধরলো ১৫ জনকে ঘরে বসে ই-পাসপোর্টের আবেদন করবেন যেভাবে

সিলেটে ভেঙে ফেলা হচ্ছে ঐতিহ্যবাহী – বাড়ি

প্রতিনিধির নাম
  • আপডেট সময় : ১২:১১:৪৫ অপরাহ্ন, বুধবার, ২২ অক্টোবর ২০২৫ ১২ বার পড়া হয়েছে

ভিউ নিউজ ৭১ ডেস্ক :

ভেঙে ফেলা হচ্ছে সিলেটের ঐতিহ্যবাহী একটি বাড়ি। হাতুড়ি-শাবলের আঘাতে গুঁড়িয়ে দেওয়া হচ্ছে নগরীর পাঠানটুলা এলাকার ‘মিনিস্টার বাড়ি’ হিসেবে পরিচিত ঐতিহ্যবাহী বাড়িটি।

ব্যবহার অনুপযোগী হয়ে যাওয়ায় মালিকপক্ষই ঐতিহাসিক এ বাড়িটি ভেঙে ফেলছে বলে জানা গেছে। তবে নান্দনিক স্থাপত্যশৈলীর দৃষ্টিনন্দন ও প্রাচীন এই বাড়িটি ভাঙার কার্যক্রম শুরু হওয়ায় আক্ষেপ করেছেন স্থানীয়রা।

আইনজীবী, শিক্ষাবিদ ও রাজনীতিবিদ আব্দুল হামিদ এ বাড়িটি নির্মাণ করেন। তিনি ব্রিটিশ ভারতের আসাম ব্যবস্থাপক সভার সদস্য ও শিক্ষা মন্ত্রী ছিলেন। এরপর ১৯৪৭ থেকে ১৯৫৪ সাল পর্যন্ত তিনি পূর্ব পাকিস্তানের শিক্ষামন্ত্রী ছিলেন। তার কারণেই এই বাড়িটি ‘মিনিস্টার বাড়ি’ নামে পরিচিত।

তবে এই বাড়িটি কবে নির্মিত হয়েছিল তা নিশ্চিত হওয়া যায়নি। কেউ কেউ বাড়িটির বয়স শতবর্ষ বলে জানিয়েছেন। তবে তা নিশ্চিত হওয়া যায়নি। আব্দুল হামিদ ১৯৬৩ সালে মৃত্যুবরণ করেন।

মঙ্গলবার দুপুরে সরেজমিনে পাঠানটুলা এলাকায় গিয়ে দেখা যায়, হাতুড়ি শাবল দিয়ে পুরনো বাড়িটি ভাঙার কাজ করছেন কয়েকজন শ্রমিক। তারা জানিয়েছেন, বাড়িটি পুরনো হয়ে যাওয়ায় মালিকপক্ষই বাড়িটি ভেঙে ফেলছেন। পুরনো ভবন ভেঙে এখানে নতুন ভবন নির্মাণ করা হবে।

এ ব্যাপারে বাড়ির মালিকপক্ষের কারো সাথে যোগাযোগ করা সম্ভব হয়নি। তারা দেশের বাইরে থাকেন বলে জানা গেছে।

স্থানীয় কয়েকজন জানিয়েছেন, কিছুদিন আগে এই বাড়িটি বিক্রির জন্য বাড়ির সমানে সাইনবোর্ড টানানো ছিলো। তবে বিক্রি হয়েছে কী না নিশ্চিত হওয়া যায়নি।

সরেজমিনে দেখা যায়, বাড়ির দরজা জানালা ইতোমধ্যে খুলে ফেলা হয়েছে। এখন ছাদ ভাঙার কাজ চলছে।

বাড়ির মালিকপক্ষের বরাত দিয়ে নির্মাণ শ্রমিকরা জানান, স্থাপনাটি ‘ব্যবহার অনুপযোগী’ হয়ে পড়েছিল। বাড়ির ছাদে ফাটল দেখা দেয়ায় নিরাপত্তার স্বার্থে ভেঙে ফেলা হচ্ছে।

তবে এ নিয়ে হতাশা প্রকাশ করে পরিবেশবাদী সংগঠন ধরিত্রী রক্ষায় আমরা-ধরা, সিলেটের সাধারণ সম্পাদক আব্দুল করিম কিম বলেন, সিলেটে ঐতিহ্যবাহী পুরনো স্থাপনা নেই বললেই চলে। নতুন করে আরেকটি স্থাপনা ভেঙে ফেলার খুব দুঃখজনক।

তিনি বলেন, এটি একটি ব্যক্তিমালিকানাধীন সম্পদ। তাই আমাদের কিছু করার নেই। তবে মালিকপক্ষ ভবনটি না ভেঙে সংস্কার করে রক্ষার চেষ্টা করতে পারতেন। কারণ এটি কেবল একটি ভবন নয়- এই অঞ্চলের ইতিহাসের সাক্ষী, প্রাচীন স্থাপত্যশৈলীরও একটি উদাহরণ হিসেবে টিকে ছিল।

তবে বাড়ি ভাঙার খবর ছড়িয়ে পড়ায় সামাজিক যোগাযোগমাধ্যমেও ক্ষোভ প্রকাশ করেছেন অনেকে।

উল্লেখ্য, আব্দুল হামিদ ছিলেন তৎকালীন আসামের এমএলএ এবং বৃহত্তর আসামের শিক্ষামন্ত্রী। তিনি তৎকালীন বিধানসভার স্পিকারও ছিলেন। পরবর্তীতে দেশ ভাগের পর তৎকালীন পাকিস্তান সরকারে শিক্ষামন্ত্রী ও বিভিন্ন সরকারি গুরুত্বপূর্ণ দায়িত্ব পালন করেন।

আব্দুল হামিদের বোন হাফিজা বানু ছিলেন আইনজীবি আবু আহমদ আব্দুল হাফিজের মা এবং বাংলাদেশের সাবেক অর্থমন্ত্রী আবুল মাল আবদুল মুহিত, সাবেক পররাষ্ট্রমন্ত্রী এ কে আবুল মোমেনের দাদী।

নিউজটি শেয়ার করুন

আপনার মন্তব্য

Your email address will not be published. Required fields are marked *

আপনার ইমেইল এবং অন্যান্য তথ্য সংরক্ষন করুন

আপলোডকারীর তথ্য
ট্যাগস :

সিলেটে ভেঙে ফেলা হচ্ছে ঐতিহ্যবাহী – বাড়ি

আপডেট সময় : ১২:১১:৪৫ অপরাহ্ন, বুধবার, ২২ অক্টোবর ২০২৫

ভিউ নিউজ ৭১ ডেস্ক :

ভেঙে ফেলা হচ্ছে সিলেটের ঐতিহ্যবাহী একটি বাড়ি। হাতুড়ি-শাবলের আঘাতে গুঁড়িয়ে দেওয়া হচ্ছে নগরীর পাঠানটুলা এলাকার ‘মিনিস্টার বাড়ি’ হিসেবে পরিচিত ঐতিহ্যবাহী বাড়িটি।

ব্যবহার অনুপযোগী হয়ে যাওয়ায় মালিকপক্ষই ঐতিহাসিক এ বাড়িটি ভেঙে ফেলছে বলে জানা গেছে। তবে নান্দনিক স্থাপত্যশৈলীর দৃষ্টিনন্দন ও প্রাচীন এই বাড়িটি ভাঙার কার্যক্রম শুরু হওয়ায় আক্ষেপ করেছেন স্থানীয়রা।

আইনজীবী, শিক্ষাবিদ ও রাজনীতিবিদ আব্দুল হামিদ এ বাড়িটি নির্মাণ করেন। তিনি ব্রিটিশ ভারতের আসাম ব্যবস্থাপক সভার সদস্য ও শিক্ষা মন্ত্রী ছিলেন। এরপর ১৯৪৭ থেকে ১৯৫৪ সাল পর্যন্ত তিনি পূর্ব পাকিস্তানের শিক্ষামন্ত্রী ছিলেন। তার কারণেই এই বাড়িটি ‘মিনিস্টার বাড়ি’ নামে পরিচিত।

তবে এই বাড়িটি কবে নির্মিত হয়েছিল তা নিশ্চিত হওয়া যায়নি। কেউ কেউ বাড়িটির বয়স শতবর্ষ বলে জানিয়েছেন। তবে তা নিশ্চিত হওয়া যায়নি। আব্দুল হামিদ ১৯৬৩ সালে মৃত্যুবরণ করেন।

মঙ্গলবার দুপুরে সরেজমিনে পাঠানটুলা এলাকায় গিয়ে দেখা যায়, হাতুড়ি শাবল দিয়ে পুরনো বাড়িটি ভাঙার কাজ করছেন কয়েকজন শ্রমিক। তারা জানিয়েছেন, বাড়িটি পুরনো হয়ে যাওয়ায় মালিকপক্ষই বাড়িটি ভেঙে ফেলছেন। পুরনো ভবন ভেঙে এখানে নতুন ভবন নির্মাণ করা হবে।

এ ব্যাপারে বাড়ির মালিকপক্ষের কারো সাথে যোগাযোগ করা সম্ভব হয়নি। তারা দেশের বাইরে থাকেন বলে জানা গেছে।

স্থানীয় কয়েকজন জানিয়েছেন, কিছুদিন আগে এই বাড়িটি বিক্রির জন্য বাড়ির সমানে সাইনবোর্ড টানানো ছিলো। তবে বিক্রি হয়েছে কী না নিশ্চিত হওয়া যায়নি।

সরেজমিনে দেখা যায়, বাড়ির দরজা জানালা ইতোমধ্যে খুলে ফেলা হয়েছে। এখন ছাদ ভাঙার কাজ চলছে।

বাড়ির মালিকপক্ষের বরাত দিয়ে নির্মাণ শ্রমিকরা জানান, স্থাপনাটি ‘ব্যবহার অনুপযোগী’ হয়ে পড়েছিল। বাড়ির ছাদে ফাটল দেখা দেয়ায় নিরাপত্তার স্বার্থে ভেঙে ফেলা হচ্ছে।

তবে এ নিয়ে হতাশা প্রকাশ করে পরিবেশবাদী সংগঠন ধরিত্রী রক্ষায় আমরা-ধরা, সিলেটের সাধারণ সম্পাদক আব্দুল করিম কিম বলেন, সিলেটে ঐতিহ্যবাহী পুরনো স্থাপনা নেই বললেই চলে। নতুন করে আরেকটি স্থাপনা ভেঙে ফেলার খুব দুঃখজনক।

তিনি বলেন, এটি একটি ব্যক্তিমালিকানাধীন সম্পদ। তাই আমাদের কিছু করার নেই। তবে মালিকপক্ষ ভবনটি না ভেঙে সংস্কার করে রক্ষার চেষ্টা করতে পারতেন। কারণ এটি কেবল একটি ভবন নয়- এই অঞ্চলের ইতিহাসের সাক্ষী, প্রাচীন স্থাপত্যশৈলীরও একটি উদাহরণ হিসেবে টিকে ছিল।

তবে বাড়ি ভাঙার খবর ছড়িয়ে পড়ায় সামাজিক যোগাযোগমাধ্যমেও ক্ষোভ প্রকাশ করেছেন অনেকে।

উল্লেখ্য, আব্দুল হামিদ ছিলেন তৎকালীন আসামের এমএলএ এবং বৃহত্তর আসামের শিক্ষামন্ত্রী। তিনি তৎকালীন বিধানসভার স্পিকারও ছিলেন। পরবর্তীতে দেশ ভাগের পর তৎকালীন পাকিস্তান সরকারে শিক্ষামন্ত্রী ও বিভিন্ন সরকারি গুরুত্বপূর্ণ দায়িত্ব পালন করেন।

আব্দুল হামিদের বোন হাফিজা বানু ছিলেন আইনজীবি আবু আহমদ আব্দুল হাফিজের মা এবং বাংলাদেশের সাবেক অর্থমন্ত্রী আবুল মাল আবদুল মুহিত, সাবেক পররাষ্ট্রমন্ত্রী এ কে আবুল মোমেনের দাদী।