ঢাকা ০৪:০০ অপরাহ্ন, বুধবার, ১৯ মার্চ ২০২৫, ৫ চৈত্র ১৪৩১ বঙ্গাব্দ
সংবাদ শিরোনাম ::
সংবাদমাধ্যমের স্বাধীনতা এখনো আক্রমণের মুখে: সম্পাদক পরিষদ হিউম্যান রাইটস ওয়াচ ট্রাষ্টের মাসবপ্যাপী সেহরি বিতরণ চলমান নারী ও শিশু নির্যাতন দমন আইন সংশোধন হচ্ছে- অস্ত্রসহ আটক বিএনপি নেতার ছেলে এডভোকেট গাফফার ও বাবলুর সুস্থতা কামনায় সিলেট জেলা স্বেচ্ছাসেবক দলের দোয়া ভোর রাতে সিলেটে গোয়াইনঘাটে যুবক খু ন বিশ্বনাথে শিশু নির্যাতন, ইউপি চেয়ারম্যান’সহ ৫ জনের বিরুদ্ধে মা ম লা ৫০কোটি টাকার ভারতীয় চিনির চালান আটক বিশ্বনাথে ঘুষ নেওয়ার অভিযােগে এস আই আলীম উদ্দিন ক্লো জ নারকেল তেলের সঙ্গে যা মেশালে কমবে চু ল পড়া প্রখ্যাত ফিলিস্তিনি সাংবাদিক লতিফেহকে গ্রেফতার করল ইসরাইল অনলাইন এডিটরস অ্যালায়েন্স ও জেসিআই ঢাকা ইউনাইটেডের সমঝোতা চুক্তি

নির্ধারিত দামে ডলার পাওয়া যাচ্ছে না

প্রতিনিধির নাম
  • আপডেট সময় : ১২:৩৪:২৯ অপরাহ্ন, শুক্রবার, ৮ ডিসেম্বর ২০২৩ ১১১ বার পড়া হয়েছে

ভিউ নিউজ ৭১ প্রতিবেদন : প্রিন্ট সংস্করণ

কেন্দ্রীয় ব্যাংক,বাফেদা ও এবিবি বলছে বাজারে ডলারের সরবরাহ বেড়েছে।এ কারণে ডলারের দাম গত এক মাসে দুই দফায় ৭৫ পয়সা কমানো হয়েছে। কিন্তু ব্যাংকগুলোতে ওই দামে ডলার মিলছে না।বেশিরভাগ ব্যাংকেই আমদানির এলসি খুলতে ও আমদানির বকেয়া দেনা পরিশোধ করতে অনেক বেশি দামে ডলার কিনতে হচ্ছে। বেসরকারি প্রতিষ্ঠানের পাশাপাশি সরকারি প্রতিষ্ঠানগুলোও নির্ধারিত দামে ডলার পাচ্ছে না।ফলে তারা ৬ থেকে ১৫ টাকা বেশি দামে ডলার কিনছে।

বাণিজ্যিক ব্যাংকগুলোর প্রধান নির্বাহীদের সংগঠন বাংলাদেশ ফরেন এক্সচেঞ্জ ডিলার্স অ্যাসোসিয়েশন (বাফেদা) ও অ্যাসোসিয়েশন অব ব্যাংকার্স, বাংলাদেশের (এবিবি) যৌথ বৈঠকে ২৯ নভেম্বরের ডলারের দাম ২৫ পয়সা কমানো হয়। ফলে ৩ ডিসেম্বর থেকে ব্যাংকগুলোর প্রতি ডলার সর্বোচ্চ ১০৯ টাকা ৭৫ পয়সা ক্রয় ও ১১০ টাকা ২৫ পয়সায় বিক্রি করার কথা।

এ হিসাবে আমদানিতে ডলারের দাম হওয়ার কথা সর্বোচ্চ ১১০ টাকা ২৫ পয়সা। কিন্তু ব্যাংকগুলো খুব সীমিত খাত ছাড়া বাকিগুলোতে এর চেয়ে বেশি দামে ডলার বেচাকেনা করছে। শুধু কেন্দ্রীয় ব্যাংকের রিজার্ভ থেকে যেসব ব্যাংক ডলার পাচ্ছে তারাই শুধু ওই দামে ডলার দিতে পারছে। এর বাইরে অন্য কেউ পারছে না। বর্তমান নিয়ম অনুযায়ী আন্তঃব্যাংকের গড় দামে কেন্দ্রীয় ব্যাংক রিজার্ভ থেকে ডলার বিক্রি করে।

এ হিসাবে প্রতি ডলারের দাম পড়ে ১১০ টাকা ২৫ পয়সা। ব্যাংকগুলোকেও একই দামে বিক্রি করতে হচ্ছে। এতে কেন্দ্রীয় ব্যাংক থেকে ডলার কেনায় তাদের যে জনবল ও অবকাঠামো ব্যবহার হচ্ছে তার খরচ বাবদ অর্থ লোকসান হচ্ছে। কয়েকজন ব্যাংকার বলেছেন, এভাবে লোকসান দিয়ে ডলার কিনে আমদানি দায় মেটানো সম্ভব হবে না।

কেন্দ্রীয় ব্যাংক শুধু জ্বালানি তেল, গ্যাস, শিশু খাদ্যসহ অত্যাবশ্যকীয় পণ্য আমদানিতে ডলারের জোগান দিচ্ছে। অন্য কোনো খাতে দিচ্ছে না। বেঁধে দেওয়া নিয়ম অনুযায়ী বাণিজ্যিক ব্যাংকগুলো এখন রেমিট্যান্স কিনতে পারবে সর্বোচ্চ ১১৫ টাকা ২৪ পয়সা দামে। কিন্তু বেশিরভাগ ব্যাংকই রেমিট্যান্স কিনছে ১১৭ থেকে ১২৩ টাকা দামে। ডলারের দাম কমালে রেমিট্যান্স কমে যাচ্ছে।

এ কারণে এ খাতে ডলারের দামে কেন্দ্রীয় ব্যাংকও শিথিলতা দেখাচ্ছে। বাড়তি দামে কেনা ডলার আমদানিতে বাড়তি দামেই বিক্রি করছে। বাণিজ্যিক আমদানিতে ১১৮ থেকে ১২৫ টাকা পর্যন্ত ডলার বিক্রি হচ্ছে। পুরোনো ঢাকার একজন খাদ্যপণ্য আমদানিকারকের কাছ একটি বেসরকারি ব্যাংক ১২৫ টাকা করে ডলার বিক্রি করেছে। এর কম দামে তারা ডলার বিক্রি করছে না।

তিনি এরচেয়ে কম দামে অন্য কোনো ব্যাংকে ডলার পাননি।ফলে বাড়তি দামেই ডলার কিনে এলসি খুলেছেন। এতে খাদ্যপণ্য আমদানির খরচ বেশি পড়ছে।সরকারি প্রতিষ্ঠান বাংলাদেশ এনার্জি রেগুলেটেরি কমিশন এলপিজি আমদানির ক্ষেত্রে ডলারের দাম বেশি ধরে পণ্যটির মূল্য হিসাব করছে। প্রতিষ্ঠানটি আমদানিকারকদের গত এক মাসের গড় আমদানিতে ডলারের খরচ ধরে দাম নির্ধারিত করে।ডিসেম্বরের জন্য দাম নির্ধারণ করেছে ১১৬ টাকা ৩৯ পয়সা।

অথচ ব্যাংকে ডলারের সর্বোচ্চ দাম ১১০ টাকা ২৫ পয়সা হওয়ার কথা। নভেম্বরে এ দর ছিল ১১৩ টাকা ৯২ পয়সা। অথচ ওই সময়ে ব্যাংকে ছিল ১১০ টাকা ৫০ পয়সা। একটি সরকারি ব্যাংক বাংলাদেশ পেট্রোলিয়াম করপোরেশনের এলসি খোলার ক্ষেত্রে চলতি মাসে ডলারের দাম ধরেছে গড়ে ১১৬ টাকা ৪৫ পয়সা।সূত্র জানায়,ডলার কেনার খরচ বেড়েছে, এ কারণে বিক্রিও হচ্ছে বেশি দামে। নির্ধারিত দামে এলসির দেনা নিষ্পত্তি করা সম্ভব হচ্ছে না।বেশিরভাগ ক্ষেত্রেই ১২০ থেকে ১২২ টাকা দরে পরিশোধ করতে হচ্ছে।কোনো কোনো ক্ষেত্রে ১২৫ টাকা নেওয়া হচ্ছে বিশেষ করে ছোট ব্যাংকগুলো বেশি দামে ডলার কিনছে। তারাই বেশি দামে বিক্রি করছে।

এদিকে ব্যাংকগুলোতে নগদ ডলার বিক্রির দাম অফার করা হচ্ছে সর্বোচ্চ ১১৬ টাকা। কিন্তু এই দামে কোনো ব্যাংকে ডলার মিলছে না। মানি চেঞ্জার্স প্রতিষ্ঠানগুলোতে ডলার বিক্রি হচ্ছে সর্বোচ্চ ১২৫ টাকা দামে। এর কমে ডলার পাওয়া যাচ্ছে না। অথচ এসব প্রতিষ্ঠানে ডলার বিক্রির সর্বোচ্চ দর হওয়ার কথা ১১৬ টাকা।আমদানিতে ডলারের দাম বেড়ে যাওয়ায় পণ্য আমদানির খরচও বাড়ছে। আমদানি পণ্যের দাম বেড়ে যাচ্ছে। এ অজুহাতে আমদানি পণ্যের দাম বাড়ানোর প্রক্রিয়া চলছে। ইতোমধ্যে ভোজ্যতেলের দাম বাড়ানোর আবেদন করেছেন মিল মালিকরা। অন্যান্য পণ্যের দামও বাড়ছে।

নিউজটি শেয়ার করুন

আপনার মন্তব্য

Your email address will not be published. Required fields are marked *

আপনার ইমেইল এবং অন্যান্য তথ্য সংরক্ষন করুন

আপলোডকারীর তথ্য
ট্যাগস :

নির্ধারিত দামে ডলার পাওয়া যাচ্ছে না

আপডেট সময় : ১২:৩৪:২৯ অপরাহ্ন, শুক্রবার, ৮ ডিসেম্বর ২০২৩

ভিউ নিউজ ৭১ প্রতিবেদন : প্রিন্ট সংস্করণ

কেন্দ্রীয় ব্যাংক,বাফেদা ও এবিবি বলছে বাজারে ডলারের সরবরাহ বেড়েছে।এ কারণে ডলারের দাম গত এক মাসে দুই দফায় ৭৫ পয়সা কমানো হয়েছে। কিন্তু ব্যাংকগুলোতে ওই দামে ডলার মিলছে না।বেশিরভাগ ব্যাংকেই আমদানির এলসি খুলতে ও আমদানির বকেয়া দেনা পরিশোধ করতে অনেক বেশি দামে ডলার কিনতে হচ্ছে। বেসরকারি প্রতিষ্ঠানের পাশাপাশি সরকারি প্রতিষ্ঠানগুলোও নির্ধারিত দামে ডলার পাচ্ছে না।ফলে তারা ৬ থেকে ১৫ টাকা বেশি দামে ডলার কিনছে।

বাণিজ্যিক ব্যাংকগুলোর প্রধান নির্বাহীদের সংগঠন বাংলাদেশ ফরেন এক্সচেঞ্জ ডিলার্স অ্যাসোসিয়েশন (বাফেদা) ও অ্যাসোসিয়েশন অব ব্যাংকার্স, বাংলাদেশের (এবিবি) যৌথ বৈঠকে ২৯ নভেম্বরের ডলারের দাম ২৫ পয়সা কমানো হয়। ফলে ৩ ডিসেম্বর থেকে ব্যাংকগুলোর প্রতি ডলার সর্বোচ্চ ১০৯ টাকা ৭৫ পয়সা ক্রয় ও ১১০ টাকা ২৫ পয়সায় বিক্রি করার কথা।

এ হিসাবে আমদানিতে ডলারের দাম হওয়ার কথা সর্বোচ্চ ১১০ টাকা ২৫ পয়সা। কিন্তু ব্যাংকগুলো খুব সীমিত খাত ছাড়া বাকিগুলোতে এর চেয়ে বেশি দামে ডলার বেচাকেনা করছে। শুধু কেন্দ্রীয় ব্যাংকের রিজার্ভ থেকে যেসব ব্যাংক ডলার পাচ্ছে তারাই শুধু ওই দামে ডলার দিতে পারছে। এর বাইরে অন্য কেউ পারছে না। বর্তমান নিয়ম অনুযায়ী আন্তঃব্যাংকের গড় দামে কেন্দ্রীয় ব্যাংক রিজার্ভ থেকে ডলার বিক্রি করে।

এ হিসাবে প্রতি ডলারের দাম পড়ে ১১০ টাকা ২৫ পয়সা। ব্যাংকগুলোকেও একই দামে বিক্রি করতে হচ্ছে। এতে কেন্দ্রীয় ব্যাংক থেকে ডলার কেনায় তাদের যে জনবল ও অবকাঠামো ব্যবহার হচ্ছে তার খরচ বাবদ অর্থ লোকসান হচ্ছে। কয়েকজন ব্যাংকার বলেছেন, এভাবে লোকসান দিয়ে ডলার কিনে আমদানি দায় মেটানো সম্ভব হবে না।

কেন্দ্রীয় ব্যাংক শুধু জ্বালানি তেল, গ্যাস, শিশু খাদ্যসহ অত্যাবশ্যকীয় পণ্য আমদানিতে ডলারের জোগান দিচ্ছে। অন্য কোনো খাতে দিচ্ছে না। বেঁধে দেওয়া নিয়ম অনুযায়ী বাণিজ্যিক ব্যাংকগুলো এখন রেমিট্যান্স কিনতে পারবে সর্বোচ্চ ১১৫ টাকা ২৪ পয়সা দামে। কিন্তু বেশিরভাগ ব্যাংকই রেমিট্যান্স কিনছে ১১৭ থেকে ১২৩ টাকা দামে। ডলারের দাম কমালে রেমিট্যান্স কমে যাচ্ছে।

এ কারণে এ খাতে ডলারের দামে কেন্দ্রীয় ব্যাংকও শিথিলতা দেখাচ্ছে। বাড়তি দামে কেনা ডলার আমদানিতে বাড়তি দামেই বিক্রি করছে। বাণিজ্যিক আমদানিতে ১১৮ থেকে ১২৫ টাকা পর্যন্ত ডলার বিক্রি হচ্ছে। পুরোনো ঢাকার একজন খাদ্যপণ্য আমদানিকারকের কাছ একটি বেসরকারি ব্যাংক ১২৫ টাকা করে ডলার বিক্রি করেছে। এর কম দামে তারা ডলার বিক্রি করছে না।

তিনি এরচেয়ে কম দামে অন্য কোনো ব্যাংকে ডলার পাননি।ফলে বাড়তি দামেই ডলার কিনে এলসি খুলেছেন। এতে খাদ্যপণ্য আমদানির খরচ বেশি পড়ছে।সরকারি প্রতিষ্ঠান বাংলাদেশ এনার্জি রেগুলেটেরি কমিশন এলপিজি আমদানির ক্ষেত্রে ডলারের দাম বেশি ধরে পণ্যটির মূল্য হিসাব করছে। প্রতিষ্ঠানটি আমদানিকারকদের গত এক মাসের গড় আমদানিতে ডলারের খরচ ধরে দাম নির্ধারিত করে।ডিসেম্বরের জন্য দাম নির্ধারণ করেছে ১১৬ টাকা ৩৯ পয়সা।

অথচ ব্যাংকে ডলারের সর্বোচ্চ দাম ১১০ টাকা ২৫ পয়সা হওয়ার কথা। নভেম্বরে এ দর ছিল ১১৩ টাকা ৯২ পয়সা। অথচ ওই সময়ে ব্যাংকে ছিল ১১০ টাকা ৫০ পয়সা। একটি সরকারি ব্যাংক বাংলাদেশ পেট্রোলিয়াম করপোরেশনের এলসি খোলার ক্ষেত্রে চলতি মাসে ডলারের দাম ধরেছে গড়ে ১১৬ টাকা ৪৫ পয়সা।সূত্র জানায়,ডলার কেনার খরচ বেড়েছে, এ কারণে বিক্রিও হচ্ছে বেশি দামে। নির্ধারিত দামে এলসির দেনা নিষ্পত্তি করা সম্ভব হচ্ছে না।বেশিরভাগ ক্ষেত্রেই ১২০ থেকে ১২২ টাকা দরে পরিশোধ করতে হচ্ছে।কোনো কোনো ক্ষেত্রে ১২৫ টাকা নেওয়া হচ্ছে বিশেষ করে ছোট ব্যাংকগুলো বেশি দামে ডলার কিনছে। তারাই বেশি দামে বিক্রি করছে।

এদিকে ব্যাংকগুলোতে নগদ ডলার বিক্রির দাম অফার করা হচ্ছে সর্বোচ্চ ১১৬ টাকা। কিন্তু এই দামে কোনো ব্যাংকে ডলার মিলছে না। মানি চেঞ্জার্স প্রতিষ্ঠানগুলোতে ডলার বিক্রি হচ্ছে সর্বোচ্চ ১২৫ টাকা দামে। এর কমে ডলার পাওয়া যাচ্ছে না। অথচ এসব প্রতিষ্ঠানে ডলার বিক্রির সর্বোচ্চ দর হওয়ার কথা ১১৬ টাকা।আমদানিতে ডলারের দাম বেড়ে যাওয়ায় পণ্য আমদানির খরচও বাড়ছে। আমদানি পণ্যের দাম বেড়ে যাচ্ছে। এ অজুহাতে আমদানি পণ্যের দাম বাড়ানোর প্রক্রিয়া চলছে। ইতোমধ্যে ভোজ্যতেলের দাম বাড়ানোর আবেদন করেছেন মিল মালিকরা। অন্যান্য পণ্যের দামও বাড়ছে।